ফার্মেসি ব্যবসার A to Z. পর্ব - ৩ - খুচরা ব্যবসায়ীঃ ট্রিটমেন্ট ও প্রেসক্রিপশন বেইজড

in আমার বাংলা ব্লগlast month (edited)

আসসালামুয়ালাইকুম। আমি @sabbirakib এবং আমার বাংলা ব্লগে আমি ফার্মেসি বা ঔষধ ব্যবসার যাবতীয় বিষয় নিয়ে একটি সিরিজ লেখার আগ্রহ প্রকাশ করছি। আজকে তার প্রথম পর্ব লিখছি। আপনি যদি ফার্মেসি ব্যবসা সম্পর্কে জানতে চান কিংবা মেডিসিনের গোমর নিয়ে আগ্রহ থাকে, তবে এই লেখাগুলো আপনার জন্য।

প্রথম পর্বে আমি আলোচনা করেছিলাম ফার্মেসির ধরণ নিয়ে। দ্বিতীয় পর্বে আলোচনা করেছি ট্রিটমেন্ট বেইজড খুচরা ব্যবসায়ী নিয়ে। আজ থাকলো তৃতীয় পর্ব। এখানে আমি আলোচনা করবো ট্রিটমেন্ট ও প্রেসক্রিপশন; দুটির উপরেই ফোকাস থাকে এমন ফার্মেসি নিয়ে।

doctor-8264060_1280.jpg

Image by hosny salah from Pixabay

পর্ব ১- ফার্মেসি ব্যবসার A to Z. পর্ব -১ - ফার্মেসির ধরণ
পর্ব ২ ফার্মেসি ব্যবসার A to Z. পর্ব - ২ - খুচরা ব্যবসায়ীঃ ট্রিটমেন্ট বেইজড


অবস্থান

এই ধরণের ফার্মেসিগুলো মূলত মহল্লার মধ্যেই থাকে। মহল্লার অবস্থান, মানুষের আর্থিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে আকার হয় ফার্মেসিগুলোর। গ্রাম এলাকায় গঞ্জ বা বাজারে অবস্থান হয় ফার্মেসিগুলোর। গঞ্জে মানুষের আনাগোনার উপর ভিত্তি করে ফার্মেসির আকার বড় ছোট হয়। এই আকার বলতে আমি ঔষধের মজুত বুঝিয়েছি, দোকানের সাইজ নয়।

ঔষধ কেনার ধরণ

যেহেতু এদের প্রধান টার্গেট থাকে প্রেসক্রিপশন সেলস, তাই এদের বাণিজ্য থাকে কোম্পানিগুলোর সাথেই বেশি। প্রায় সব ধরনের ঔষধ রাখতে হয় এদেরকে। মূলধন অনুযায়ী চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে ঔষধ রাখেন এনারা। আর যেহেতু ট্রিটমেন্টও দিয়ে থাকেন, তাই বোনাস আইটেমও ধরতে পারেন প্রায় সব রকমেরই। ক্ষেত্রবিশেষে, প্রয়োজনে তারা পাইকারি ব্যবসায়ীদের থেকেও ঔষধ রাখেন। পাইকারদের সাথে উনার সম্পর্কই বেশি। কারন, প্রেসক্রিপশনের জন্য এক বক্স ঔষধ না রেখে তারা এক পাতা করে রাখেন যাতে প্রয়োজন মত সার্ভ করতে পারেন। তখন ইনভেস্টের পরিমাণও কিছুটা কমে যায়। এমন অনেক প্রেসক্রিপশন সেলার রয়েছেন যারা বেশির ভাগ লেনদেন পাইকারদের সাথেই করেন কম মূলধনে বেশি আইটেম মজুতের জন্য।

টার্গেটেড ক্রেতা

মহল্লা বা গঞ্জের আশেপাশের মানুষের মধ্যে যারা চিরস্থায়ী রোগী, যেমনঃ ডায়াবেটিস ও কার্ডিয়াক পেশেন্ট, হার্টের প্যাশেন্ট কিংবা এজমা অথবা আর্থাইটিসে ভুগে থাকেন; এমন রোগীরা এই ধরণের ফার্মেসির ক্রেতা। এধরণের রোগে যারা ভুগেন তাদের আমৃত্যু ঔষধ খেয়ে যেতে হয়। উনাদের ঔষধের মজুতই এখানে বেশি থাকে। এই ধরণের কাস্টমাররা সাধারণত স্থায়ী হন। তাই বিক্রিও ফিক্সড হয়ে যায়।

তাছাড়া, স্বল্পকালীন সময়ের রোগী, যেমন জ্বর, সর্দি ইত্যাদি কিংবা এন্টিবায়োটিক সেবন উপযোগী রোগে আক্রান্ত অথবা সিজারিয়ান বা অস্ত্রোপচার করা রোগী, এক্সিডেন্টের রোগীদের সাময়িক মেডিসিন প্রাপ্তির দিকেও তাদের নজর থাকে। শিশুদের মেডিসিনও মজুত থাকে এখানে।

woman-2141808_1280.jpg

Image by Yerson Retamal from Pixabay

ইনভেস্ট

উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো যদি বুঝে থাকেন তাহলে আশাকরি আপনার কিছুটা ধারণা হয়েছে কত টাকা ইনভেস্ট করা লাগতে পারে। আপনি হোলসেলার বা পাইকারদের সাথে বেশি লেনদেন ও সুযোগ অনুযায়ী কোম্পানির সাথেও যদি বিজনেস চলমান রেখে করতে চান, তবেও আপনানে ন্যূনতম ৫ লক্ষ টাকার মেডিসিন মজুত করতে হবে। আরেকটু ভালোভাবে করতে চাইলে ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে শুরু করা যায়। যদি বিক্রি বেশি হয় সেক্ষেত্রে ২০ লক্ষেরও উপরে মজুত করা লাগতে পারে।

বিক্রি

এমন একটি দোকানে স্থান ভেদে ৫ হাজার থেকে ৪০-৫০ হাজার টাকার ঔষধ বিক্রি হয়ে থাকে।


এই ছিল তৃতীয় পর্ব। কেমন লাগলো তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ্য থাকবেন এই কামনায়।

আমার সম্পর্কে
আমি মুহাম্মদ সাব্বির আকিব। জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশি। জেলাঃ চাঁদপুর, থানাঃ ফরিদগঞ্জ। থাকি ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানাধীন দক্ষিণ গাজীরচট নামক স্থানে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রসায়নে স্নাতক (সম্মান) সম্পন্ন করেছি। বর্তমানে একটি ফার্মেসিতে ফার্মাসিস্ট হিসাবে কর্মরত রয়েছি। বিবাহিত এবং আল্লাহ একটি পুত্র সন্তানের জনক করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ।
Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 58180.92
ETH 2477.99
USDT 1.00
SBD 2.42