তিন বন্ধুর আড্ডাবাজি ঘোরাফেরা ও হালকা খাওয়া-দাওয়া (শেষ পর্ব)।
আমি সাথে সাথেই রাফসানকে বললাম তাহলে চল এখনই গিয়ে সেখান থেকে কাবাব খেয়ে আসি। তখন রাফসান বলল তাহলে হালিম কি করবো? আমি বললাম যেহেতু এখনো দেয়নি তাই হালিমের অর্ডার ক্যানসেল করে দে। এতক্ষন দেড়ি দেখে খাওয়ার ইচ্ছাও চলে গিয়েছিলো। তখন দেখি ফেরদৌস একটু আমতা আমতা শুরু করেছে। কারণ আমরা যেখানে কাবাব খেতে যাবো সেই জায়গাটা দূরত্বের রাফসানের দোকান থেকে বেশ কিছুটা দূরে। প্রায় ১০-১২ কিলোমিটার দূরে হবে। সেই কথা চিন্তা করেই ফেরদৌস বললো অন্য একদিন গেলে হয় না। আমি তখন ফেরদৌসকে চেপে ধরলাম বললাম না এখনই আমরা সেখানে কাবাব খেতে যাবো। পরবর্তীতে ফেরদৌস আর দ্বিমত করার সুযোগ পায়নি। হালিমের অর্ডার ক্যানসেল করার কিছুক্ষণের ভেতরেই আমরা ফেরদৌসের মোটরসাইকেলে করে তিন বন্ধু রওনা দিলাম সেই কাবাবের দোকানের উদ্দেশ্যে। তবে রওনা দিয়ে বুঝতে পারলাম ফেরদৌস কেনো এখন যেতে চাচ্ছিলো না। কারণ সেদিন ছিলো প্রচন্ড ঠান্ডা। তাছাড়া সন্ধ্যার পরে ঠান্ডাটা আরো বেড়ে যায়। এই প্রচন্ড শীতে মোটরসাইকেল চালানো আসলেই বেশ কষ্টের। আমি বসেছিলাম তিনজনের মাঝে। তারপরও ঠান্ডায় আমার পা দুটো মনে হয় অবশ হয়ে যাচ্ছিলো। আর এদিকে ফেরদৌসের হাতে কোন হ্যান্ড গ্লাভস ছিলো না মাথায় হেলমেট ছিলো না। শুধু আমার কাছে মাথায় পড়ার একটা টুপি ছিলো সেটা দিয়েছিলাম পড়ার জন্য। আমি বুঝতে পারছিলাম এই শীতে মোটরসাইকেল চালাতে আসলেই ফেরদৌসের প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে।
আমরা তিন বন্ধু গল্প করতে করতে আস্তে আস্তে যাচ্ছিলাম। কারণ মোটরসাইকেল জোরে চালালে বাতাস আরো বেশি লাগে। তখন ঠান্ডাটা আরো বেশি অনুভূত হয়। যাই হোক শেষ পর্যন্ত আমরা আধা ঘন্টা পরে আমাদের সেই কাঙ্খিত কাবাবের দোকানের সামনে পৌঁছে গেলাম। সেখানে পৌঁছে আমরা কিছুক্ষণ চিন্তা করে প্রথমে কাবাব এর দোকানেই ঢুকলাম। এই কাবাব এর দোকানদার আমাদের অনেক আগের পরিচিত। আমরা দীর্ঘদিন থেকেই এই দোকানের কাবাব খাই। যার ফলে তার সাথে একটা অন্যরকম সম্পর্ক হয়ে গিয়েছে। সেখানে বসে আমরা প্রথমে তিনজনের জন্য মাটন শিক কাবাব অর্ডার করলাম। সাথে অর্ডার করলাম তিন প্লেট চটপটি। এখানকার শিককাবাবটা আমাদের মতে শহরের সবচাইতে সেরা শিক কাবাব। বেশ মজা করে তিনজনে কাবাবটা খেলাম। এই কাবাবের বিশেষত্ব হচ্ছে কাবাবের সাথে কাবাবের মসলা দিয়ে বন রুটি আগুনে ঝলসে দেয়া হয়। সেই বন রুটি দিয়ে কাবাব খেতে বেশ মজা লাগে। যাইহোক কাবাব শেষ করে আমরা চটপটি খেতে শুরু করলাম।
তবে আমি মাঝে মাঝে যে ভুলটি করি সেদিনও সেই কাজটি করেছিলাম। প্রচন্ড শীতের ভেতর থেকে এসে সামনে গরম গরম কাবাব পেয়ে আর দেরি করতে পারিনি। ছবি তোলার আগেই সব শেষ করে ফেলেছিলাম। যাই হোক কাবাব খাওয়া শেষ হলে বিল মিটিয়ে আমরা সেখান থেকে বের হয়ে এলাম। কাবাবের দোকান থেকে বের হয়ে সামনে ছিল আরো একটি দোকান। যেখানে কবুতরের মাংসের চপ পাওয়া যায়। একসময় এই কবুতরের চপ ছিলো ফরিদপুরের ভেতর অন্যতম জনপ্রিয় একটা খাবার। ফরিদপুরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এখানে আসতো কবুতরের চপ খেতে। আমরা সেখানে বসে তিনজনে মিলে কবুতরের মাংস দিয়ে তৈরি চপ খেলাম। তবে চপটা খেয়ে মনে হল সাদটা আর আগের মতো নেই। যাইহোক চপ খাওয়া শেষ হলে আমরা বিলমিটিয়ে দ্রুত যার যার বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। কারণ ততক্ষণে বাইরে ঠান্ডা আরো বেড়ে গিয়েছে। তখন শুধু মনে হচ্ছিল কখন বাসায় পৌঁছে লেপের ভেতরে গিয়ে শুতে পারবো। আর এভাবেই আমাদের এবারের ঘোরাফেরা আর খাওয়া-দাওয়ার পর্ব শেষ হলো।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | ফরিদপুর |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সন্ধ্যার পর বাইক চালাতে আসলেই বেশ কষ্ট হয়। যাইহোক অবশেষে তিনজন মিলে কাবাব খেতে চলেই গেলেন। মাটন শিক কাবাব আমার ভীষণ পছন্দ। তবে আমরা কাবাবের ফটোগ্রাফি গুলো মিস করলাম। যাইহোক কবুতরের মাংসের চপ কখনো খাওয়া হয়নি। মাটন শিক কাবাব খাওয়ার পর,কবুতরের মাংসের মজার মজার চপ ও খেলেন। শীতকালে ভাজাপোড়া খাওয়ার মজাই আলাদা। পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। যাইহোক এতো চমৎকার মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।