দীর্ঘদিন পর বন্ধু ফেরদৌসের সাথে ঘোরাফেরা ও নদীতে গোসল করার গল্প (শেষ পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


পূর্ববর্তী পর্বের লিংক


পুকুরপাড়ে ঘোরাফেরা শেষ হলে আমরা রাফসানদের বাড়ির উঠোনে চলে এলাম। সেখানে দেখলাম নানা রকমের ফলে গাছ লাগিয়েছে। ওদের বাড়িতে আগেও বেশ কিছু ফলের গাছ ছিলো। তবে এবার গিয়ে দেখলাম সেই ফলের গাছগুলো বেশিরভাগই কেটে ফেলা হয়েছিলো। নতুন করে ওরা আরো বেশ কিছু ফলের গাছ সেখানে লাগিয়েছে। গ্রামের বাড়ি গুলোর এই বিষয়টা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। প্রতিটা বাড়িতেই নানা রকম ফলের গাছ থাকে। এবার রাফসানদের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পেলাম আমড়া গাছ, কামরাঙ্গা গাছ, পেয়ারা গাছ, লেবু গাছ, আম গাছ, মালবেরি গাছ, রয়েল গাছ সহ আরো বেশ কয়েক রকমের ফলের গাছ সেখানে ছিলো। আমি এমনিতেও ফল খেতে খুব ভালোবাসি। রাফসানদের বাড়িতে এতগুলো ফলের গাছ দেখে আমার মনে হচ্ছিলো এখানেই থেকে যায়।

IMG_20240405_161857.jpg

ফলের গাছগুলো দেখছিলাম আর রাফসানের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা গল্প করছিলাম। এর ভেতর রাফসানের বাচ্চাদের দেখলাম তারা ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছে। একজন তার সাইকেল চালাচ্ছিলো। আর একজন হেঁটে ঘুরে বেড়াচ্ছিলো। বেশ কিছুক্ষণ এইভাবে গল্প করার পর আমরা রাফসানকে বললাম চল এখন গোসল করতে যাই। এমনিতেও ততক্ষণে অনেক বেলা হয়ে গিয়েছিলে। ফেরদৌস বললো তার আবার বেলা পাঁচটার ভেতরে শহরে ফিরতে হবে। এই কথা বলতেই রাফসান ওর বড় ছেলেকে সাথে নিয়ে আমাদের সাথে রওনা দিলো। আমি প্রথমে মনে করেছিলাম ও মনে হয় ওর ছেলেকে গোসল করাতে নিচ্ছে। কিন্তু নদীর পাড়ে পৌঁছে দেখলাম ও ছেলেকে নদীর পাড়ে দাঁড়াতে বলে আমাদের সাথে নদীর পানিতে নেমে গেলো। নদীর পাড়ে পৌঁছে নদীর স্বচ্ছ কাঁচের মতো পানি দেখে আমার আর তর সইলো না। আমি সাথে সাথে কাপড়চোপড় পাল্টে নদীর পানিতে নেমে গেলাম। বাইরে যেমন ছিলো প্রচন্ড গরম নদীর পানিটা ছিলো ঠিক তেমনি ঠান্ডা। দীর্ঘদিন পর নদীর পানিতে নামতে পেরে দারুণ লাগছিলো।


IMG_20240405_151414.jpg

IMG_20240405_151700.jpg

IMG_20240405_151327.jpg

যদিও আমাদের ইচ্ছা ছিলো নদীর মাঝখানে জেগে ওঠা ছোট্ট এক চরে গিয়ে গোসল করার। কিন্তু হাতে খুব একটা বেশি সময় না থাকায় সেদিন আর সেটা করা হয়ে ওঠেনি। আমরা গোসল করতে নামার সময় রাফসানের ছেলেকে একটা জায়গায় বসিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু ছোট মানুষ ও সেখানে বসে থাকতে চাচ্ছিল না। ও বারবার সেখান থেকে উঠে নদীর পাড়ে এসে দাঁড়াচ্ছিলো। আমাদের ভয় করছিলো যে কোনো সময় গড়িয়ে আবার নদীতে পড়ে না যায়। যাই হোক বাচ্চাটা বারবার নদীর পাড়ে এসে দাঁড়ানোর কারণে রাফসান কিছুক্ষণ পরেই উঠে গেলো। রাফসান উঠে আমাদেরকে বলল ওকে নিয়ে আমি বাড়ি চলে যাই। তোরা গোসল করতে থাক।


IMG_20240405_161919_1.jpg

রাফসানকে বিদায় দিয়ে আমি আর ফেরদৌস গোসল করতে লাগলাম। অনেকদিন পর নদীতে নামার কারণে সহজে উঠতে ইচ্ছা করছিলো না। আমি ফেরদৌস কে বললাম চলো কিছুটা সাঁতার দেই। ফেরদৌস বললো প্রচন্ড স্রোত এর ভেতরে সাঁতরানো যাবে না। আমি বললাম আমার তো মনে হয় না খুব একটা স্রোত আছে। চলো দুজন মিলে সাঁতার কাটার চেষ্টা করে দেখি। যদিও আমি সাঁতারে খুব একটা পটু না। যাইহোক ফেরদৌস আমার প্রস্তাবে রাজি হয়ে দুজন মিলে কিছুদূর সাতরালাম। কিন্তু সাঁতার শেষ হওয়ার পর খেয়াল করে দেখি আমরা যেখান থেকে সাঁতার কাটা শুরু করেছিলাম এখন স্রোতের টানে তার থেকে বেশ খানিকটা সরে এসেছি। বুঝতে পারলাম আসলেই অনেক স্রোত আছে। তারপর দুজন মিলে তাড়াতাড়ি পারের দিকে সাঁতরাতে লাগলাম। এভাবে আরও কিছুক্ষণ গোসল করার পর দুই বন্ধু উঠে পড়লাম। তারপর কাপড় চোপড় পাল্টে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। যাওয়ার পথে দুজনের পরিকল্পনা করেছি আরও একদিন আমরা গোসল করতে যাবো।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসHONOR 90
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 3 months ago 

এখন নদীতে খুব একটা স্রোত থাকার কথা না। কিন্তু তারপরও সাঁতার দেওয়ার পর অনেক টা সরে গিয়েছিলেন। আপনার বন্ধু রাফসান এর বাড়িতে দেখছি সবরকম ফলের গাছই আছে। গ্রামের এটাই একটা সুবিধা। বেশ চমৎকার সময় কাটিয়েছেন নদীতে গোসল করার সময়। যদিও রাফসান ভাই আপনাদের কে বেশিক্ষণ সময় দিতে পারে নি তার ছেলের জন্য।।

Posted using SteemPro Mobile

 3 months ago 

বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের ফল গাছ থাকলে এমনিতেই খুব ভালো লাগে। গাছের ছায়াও পাওয়া যায়, আবার ফলও খাওয়া যায়। যাইহোক এই তীব্র গরমে নদীতে গোসল করতে আসলেই খুব ভালো লাগে। যদিও এই অভিজ্ঞতা আমার হাতেগোনা কয়েকবার হয়েছিল ছোটবেলায়। তারপর আর এই ধরনের অভিজ্ঞতা হয়নি। কারণ প্রথমত শীতলক্ষ্যা নদীর পানি একেবারেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে, আর দ্বিতীয়ত আমি সাঁতার কাটতে পারি না। যাইহোক তিন বন্ধু মিলে বেশ মজা করে নদীতে গোসল করেছেন। যদিও রাফসান ভাইয়ের ছেলের জন্য উনি তাড়াতাড়ি উঠে গিয়েছিলেন নদী থেকে, নয়তো আরও বেশি ভালো লাগতো আপনাদের। যাইহোক সবমিলিয়ে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন আপনারা। এতো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 3 months ago 

বাড়িতে গাছ থাকলেই আমার কাছে অনেক সুন্দর লাগে , তারউপর যদি ফলের গাছ হয় তাহলে তো কথাই নেই। এইগুলো দেখলে আসলেই বেশ আকর্ষণীয় লাগে। আর তা ঠিক কথা বলেছেন ভাইয়া , বাইরে যতই রোদ বা গরম থাকুক না কেন পুকুর বা নদীর পানি প্রচুর ঠান্ডা হয়।

 3 months ago 

সত্যি ভাইয়া নদীর পানি বেশ ঠান্ডা থাকে। তাইতো গরমের সময় নদীতে গোসল করলে অনেক ভালো লাগে। অনেকদিন নদীতে গোসল করি না। গ্রামের বাসায় গেলেই আগে নদীতে গোসল করা হতো। নদীর সেই স্বচ্ছ পানি এখন আর দেখতেই পাই না। ভাইয়া আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে নদীতে গোসল করতে গিয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো। রাফসান ভাইয়ার ছেলেটি যেহেতু ছোট ছিল তাই তো উনি ভয়েছিলেন যে বাচ্চাটি পানিতে যেন পড়ে না যায়। এজন্যই উনি তাড়াতাড়ি উঠে গিয়ে ভালোই করেছেন। কারণ বিপদ কখন আসে কেউ জানে না।

 3 months ago 

বাড়ির চারিদিকে গাছ থাকলে দেখতে খুবই সুন্দর লাগে। গাছগুলো তখন বাড়ির সৌন্দর্যকে আরো বৃদ্ধি করে দেয়। গ্রামে সচরাচর এমন বাড়ি দেখা যায় যেখানে বাড়ির চারিপাশে বিভিন্ন ফল ও ফুলের গাছ লাগানো থাকে। নদীর পানিতে গোসল করার মজাই আলাদা। আর গরমের দিনে গোসল করতে ভীষণ ভালো লাগে। গরমের দিনে পানিগুলো এতটাই ঠান্ডা থাকে যা শরীরকে ঠান্ডা করে দেয়। আমিও ছোটবেলায় নদীতে অনেক গোসল করেছি। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে নদীর পাড়ে যাওয়া সত্যিই খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক সুন্দর একটি অনুভূতি শেয়ার করেছেন ভাইয়া। আপনার শেয়ার করা পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 3 months ago 

আসলে এটা ঠিক বলেছেন গ্রামের গাড়িগুলাতে অনেক ফলের গাছ দেখা যায়। যাই হোক দীর্ঘদিন পর আপনার বন্ধু ফিরদাউস এর সাথে ঘুরাঘুরিও নদীতে গোসল করার মুহূর্তটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আপনার নদীতে গোসল করার কথা শুনে তো আমারও সেই পুকুরে গোসল করার কথা মনে পড়ে গেল। যাই হোক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এই সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 63718.61
ETH 3390.60
USDT 1.00
SBD 2.62