পরিবার নিয়ে বিমান বাহিনীর মিউজিয়াম ভ্রমণের অভিজ্ঞতা (তৃতীয় পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


পূর্ববর্তী পর্বের লিংক

প্লেনে চড়া শেষ হলে আমরা সেখান থেকে বের হয়ে শিশু পার্কে প্রবেশ করলাম। শিশু পার্ক বলতে আলাদা করে কোন গেট সেখানে ছিলো না। তবে আমরা যে প্লেনটাতে উঠেছিলাম তার একটু পর থেকেই বিভিন্ন রকমের রাইড ছিলো বাচ্চাদের জন্য। বেশ খানিকটা জায়গা জুড়ে রাইডগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো। যেটা বাচ্চাদের কাছে ছিলো সবচাইতে আকর্ষণীয় স্থান। আমার মেয়ে তো রাইড গুলো দেখে বেশ খুশি হয়েছিলো। প্রথমে আমরা ঠিক করলাম পার্কের পুরো জায়গাটা ঘুরে ফিরে দেখি। তারপর সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে যে কোনটার জন্য টিকেট কাটবো? প্রথমেই আমরা একটি রাইড দেখতে পেলাম যেটা দেখতে বেশ ভয়ঙ্কর লাগছিলো। পেন্ডুলামের মত একটা জিনিস ভয়ংকর ভাবে দুলছিলো। সেটাতে বেশ কিছু মানুষজন উঠেছিলো যারা সবাই প্রচন্ডভাবে চিৎকার করছিলো।

IMG_20231205_152740.jpg

IMG_20231205_152744.jpg

সেই রাইডটা দেখে আমার ভাগ্নে বলল আমি এটাতে চড়তে চাই। আমি তখন দুষ্টুমি করে বললাম তোমার সাহস হবে এটাতে ওঠার? এটা তো খুবই বিপদজনক দেখাচ্ছে। রাইডটা আসলেই বেশ ভয়ঙ্কর ছিলো। কারণ অনেকেই সেখান থেকে নামার জন্য চিৎকার করছিলো। যাই হোক আমার ভাগ্নে আসলেই বেশ আগ্রহী ছিল রাইডটাতে চড়ার জন্য। আমি প্রথমে তাকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলাম যে এটা অনেক বিপদজনক। যখন দেখলাম যে সে একেবারেই বুঝতে চাচ্ছে না তখন তাকে সেই রাইড এর জন্য টিকেট কিনে দিলাম। তবে সমস্যা হচ্ছে সেই রাইডর চড়তো হলে মিনিমাম আট জন মানুষ লাগে। আমরা যখন পার্কে পৌঁছে ছিলাম তখনও খুব বেশি লোক পার্কে এসে পৌঁছায়নি। তাছাড়া যারা এসেছিল তাদের ভেতর বেশিরভাগই রাইডে চরার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলো না। সেজন্য টিকিট কাটা সত্বেও আমার ভাগিনা শেষ পর্যন্ত রাইডটাতে উঠতে পারেনি। পরে সেই টিকিট দিয়ে সে অন্য রাইডে চড়েছিলো।


IMG_20231205_151936.jpg

IMG_20231205_151947.jpg

সেদিন আমরা বাচ্চাদের জন্য যে রাইটগুলো ঠিক করেছিলাম তার বেশিরভাগই তারা চড়তে পারেনি। কারণ সেদিন পার্কে লোক সংখ্যা ছিল বেশ কম। কারণ সেদিন ঢাকায় হরতাল বা অবরোধ চলছিলো। সেই কারণে অনেকেই বাসা থেকে হয়েছিলো না। যাই হোক তারপরেও আমার মেয়ে ছোট ছোট কয়েকটা রাইডে চড়তে পেরেছিলো। তবে আমার ভাগিনা বয়সে কিছুটা বড় হওয়ার কারণে সে আর কোন রাইডে উঠতে পারেনি। আমরা বেশ কিছু সময় সেখানে বাচ্চাদের নিয়ে কাটিয়েছিলাম। এর ভেতরে আসরের আযান হয়ে গেলে আমি গিয়েছিলাম নামাজ পড়তে। পরিবারের সবাইকে বলে গিয়েছিলাম তোমরা এখানেই আমার জন্য অপেক্ষা কোরো। যার ফলে তারা আমার জন্য সেই শিশু পার্কের ভেতরে অপেক্ষা করছিলো।


IMG_20231205_152137.jpg

IMG_20231205_152141.jpg

আমি নামাজ পড়ে ফেরার পরে দেখতে পেলাম একটি রাইডে কিছু বাচ্চা চড়ছে। তখন আমি একটা টিকেট কিনে আনলাম আমার মেয়ের জন্য। রাইডটা শুধু ছোট বাচ্চাদের জন্য হওয়ার কারণে আমার ভাগিনা সেটাতেও উঠতে পারেনি। সেই শিশু পার্কের ভেতর ঘুরতে ঘুরতে আমরা যখন শিশু পার্কের শেষ দিকে গেলাম তখন দেখলাম পার্কের একেবারে শেষের দিকে বিশাল বড় একটি বিমান রাখা হয়েছে। সেটা ছিল এক ধরনের ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্রাফ্ট। তবে যখন আমরা সেই বিমানের দিকে যেতে লাগলাম তখন কিছু লোক আমাদেরকে বাধা দিলো এই কথা বলে যে সেদিকের কাজ এখনো শেষ হয়নি। তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম ওখানে কি চলছে? তখন তারা জানালো ওই বিমানটির ভেতরে একটি রেস্টুরেন্ট বানানো হয়েছে। সব কাজ শেষ হলে কিছুদিন পরে রেস্টুরেন্টটি সমস্ত দর্শনার্থীর জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। ব্যাপারটা শুনে আমার কাছে বেশ ভালই লাগলো। মনে মনে চিন্তা করলাম এরপরে আসলে সেই রেস্টুরেন্ট থেকে ঘুরে যাওয়া যাবে। কারণ সেই বিমানটা দেখতে কিছুটা আধুনিক বিমান মনে হচ্ছিলো।


IMG_20231205_152313.jpg

অন্তত মিউজিয়ামে যে বিমানগুলো রাখা ছিল সেগুলোর থেকে এটা অনেক নতুন। তাছাড়া আমার কখনো এই ধরনের রেস্টুরেন্টে যাওয়া হয়নি। যাই হোক সেই বিমান দেখতে না পারলেও দেখতে পেলাম মিউজিয়ামের সীমানার ওপারেই একটু পর পর বিভিন্ন রকমের ছোট সাইজের বিমান এবং হেলিকপ্টার উঠানামা করছে। বিশেষ করে বেশ কিছু হেলিকপ্টারের উঠানামা দেখতে পেলাম একেবারে কাছ থেকে। সেই দৃশ্যগুলো দেখে আমার মেয়ে আর ভাগ্নে বেশ খুশি হোলো। (চলবে)


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানঢাকা

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 6 months ago (edited)

এই রাইডটি বেশ ভয়ংকর, অনেকেই চিৎকার করে এই রাইডে উঠলে। টিকেট কাটার পরও আপনার ভাগ্নে এই রাইডে উঠতে পারলো না আটজন মানুষ ছিলো না বলে। আমার মতে বেশ ভালো হয়েছে যে উঠতে পারেনি। নয়তো বেশ ভয় পেতো উঠার পর। হরতাল অবরোধ থাকলে মানুষ অনেক কম বের হয় ঘুরাঘুরি করতে। আপনার মেয়ে বেশ কয়েকটি রাইডে চড়তে পেরেছে,এটা জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। পার্কে বেশিরভাগ রাইড ছোটদের জন্যই। যাইহোক পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago (edited)

বিমান বন্দর জাদুঘরে যে এত সুন্দর রাইডের ব্যবস্থা আছে সেটা তো জানতাম না ভাইয়া। আসলে সত্যি বলতে কি বাচ্চারা তো আর বোঝে না কোন রাইডার বিপদ জনক । তাই তারা যেই রাইড দেখে সেটাতেই উঠতে চায়। বেশ ভালোই উপভোগ করেছেন সবাইকে নিয়ে। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর সময়গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 6 months ago 

ভাইয়া, আমার একটি বিষয় ভালো লাগে যে আপনি বেশিরভাগ সময় পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে ভ্রমন করেন।আসলে পরিবারকে সময় দেওয়াটা আসলেই জরুরি।বাচ্চাদের জন্য দারুণ বিনোদনের কাজ করে এই রাইডগুলি।আসলেই ভাইয়া, প্রথম রাইডটি দেখে আমার-ই ভয় লাগছে।শেষমেষ আপনার ভাগ্নের ইচ্ছে পূরণ হলো না জেনে খারাপ লাগলো,তবে একদিক থেকে ভালোই হয়েছে।এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ রাইড দেখে বোঝা যায়,ধন্যবাদ আপনাকে।

 6 months ago 

পরিবার নিয়ে সময় খুব সুন্দর কাটিয়েছেন।বিমান বাহিনীর যাদুঘরে বাচ্চাদের জন্য পার্ক আছে। এতে বাচ্চারা ভীষণ আনন্দিত হয়।মেয়েও ভাগ্নের জন্য বেশ ভালোই হয়েছে।আপনার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুব ভালো লাগলো। সবাইকে নিয়ে সুন্দর মূহুর্ত কাটিয়েছেন । ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.028
BTC 64467.84
ETH 3492.64
USDT 1.00
SBD 2.54