পরিবার নিয়ে বিমান বাহিনীর মিউজিয়াম ভ্রমণের অভিজ্ঞতা দ্বিতীয় পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


পূর্ববর্তী পোষ্টের লিংক

আমরা ঘুরে ফিরে বিভিন্ন রকম বিমান এবং হেলিকপ্টার দেখছিলাম। আর আমি মনে মনে চিন্তা করছিলাম সবাইকে নিয়ে কোন একটা প্লেন বা হেলিকপ্টারে উঠে ভেতরটা দেখাতে হবে। প্রথমে চিন্তা করেছিলাম সেখানে যে কয়েকটি হেলিকপ্টারে ওঠার ব্যবস্থা আছে তার কোনটাতে উঠবো সবাই মিলে। পরে চিন্তা ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিলাম সেই জাদুঘরে একটি বিমান রাখা আছে যেটি একটি সাধারণ যাত্রীবাহী বিমান হলেও সেটাকে কনভার্ট করে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছিলো। চিন্তা করলাম সেই বিমানটার ভেতর থেকে ঘুরে এলে ভালো হবে।

IMG_20231205_151014.jpg

IMG_20231205_150822.jpg

ঘুরতে ঘুরতে পরিবারের সকলকে আমার পরিকল্পনার কথাটা জানালাম। তাছাড়া সেই বিমানটাতে ওঠার আরো একটা কারণ ছিলো সেটা হচ্ছে বিমানটার ভেতরে বেশ ভালো জায়গা রয়েছে। এর আগের বার যখন আমি বিমান বাহিনীর জাদুঘরে এসেছিলাম তখন একটি ফাইটার প্লেনের ককপিটে উঠে বসে ছিলাম। আমার দীর্ঘদিনের ইচ্ছা ছিলো একটি ফাইটার প্লেনের ককপিট কেমন হয় সেটা দেখার। তবে এবার আর সেটা করিনি। কারন সেখানে যে বিমানগুলো রাখা আছে সবই মান্ধাতা আমলের। বর্তমানে আধুনিক বিমানগুলোর ককপিটের সাথে সেগুলোর কোন সাদৃশ্য নেই। যাইহোক শেষ পর্যন্ত ঘুরতে ঘুরতে আমরা একেবারে শেষের দিকে চলে এলাম যেখান থেকে শিশু পার্কের শুরু হয়েছে।


IMG_20231205_150808.jpg

সেখানেই সেই বড় বিমানটা রাখা ছিলো যেটাতে ওঠার পরিকল্পনা করেছিলাম। সেখানে গিয়ে টিকিট কেটে সবাই মিলে সেই প্লেনে প্রবেশ করলাম। প্লেনের ভেতর উঠে দেখি আগে থেকেই দুটো বাচ্চা প্লেনের ককপিটে পাইলটের সিটে গিয়ে বসে রয়েছে। তারা দুজন বিভিন্ন জিনিস নিয়ে টানা-হ্যাঁচরা করছিলো। আমি সেই বাচ্চা দুটোকে নিষেধ করলাম দুষ্টুমি করতে। বাচ্চা দুটো মনে হয় কিছুটা ভয় পেয়েছিলো। কারন আমরা ওঠার সাথে সাথেই তারা প্লেন থেকে নেমে গেলো। এদিকে আমার ভাগ্নে আর মেয়ে গিয়ে তখন বসেছে পাইলটের সিটে। সেখানে বসে আমার ভাগ্নে হঠাৎ করে একটি জিনিস টান দিলে সেটার অপপ্রান্ত এসে আঘাত করে আমার মেয়ের মাথায়। যদিও আঘাতটা গুরুতর কিছু ছিলো না।


IMG_20231205_151341.jpg

IMG_20231205_151521.jpg

যাই হোক আমি সেই বিমানের ভেতর পরিবার নিয়ে ওঠার পরে তাদেরকে বিমানের ঐতিহাসিক ব্যাপারটা সম্বন্ধে বলতে লাগলাম। বিমানটা আসলে ছিলো ভারতের যোধপুরের মহারাজার। ভারত সরকার স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এই বিমান টা তাদের তরফ থেকে বাংলাদেশকে দেয়া হয়েছিলো। যদিও এটা ছিল একটা যাত্রীবাহী বিমান কিন্তু সেটাকে পরে মডিফাই করে বোম্বার প্লেন হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল ১৯৭১ সালে। এই প্লেনটা দিয়ে ১৯৭১ সালে অপারেশন কিলো ফ্লাইট নামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অপারেশন পরিচালনা করা হয়েছিলো। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে এই প্লেনটি ব্যবহারের কারণে প্লেনটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব বেড়ে গিয়েছিলো অনেক। চিন্তা করতেও অবাক হতে হয় যে একটি সাধারন ডিসি তিন বিমানকে কিভাবে বোম্বিং এর কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল এবং সেখান থেকে বোম্বিং এর মাধ্যমে পাকিস্তান বাহিনীর অনেক ক্ষতিসাধন করা হয়েছিল। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের ক্যাপ্টেন আব্দুল খালেক আব্দুস সাত্তার এবং আব্দুল মুকিত এই প্লেনটি পরিচালনা করেছিলেন।


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানঢাকা

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 5 months ago 

আপনারা টিকেট কেটে বড় প্লেনে ওঠাতে বেশ ভালো হয়েছে। কারণ বড় প্লেনে জায়গা বেশি এবং ওঠার পর ঐতিহাসিক ব্যাপারটা সম্বন্ধে বলতে পেরেছেন। এতে করে সেই মুহূর্তে আপনাদের মনে অন্য রকম অনুভূতির সৃষ্টি হয়েছিল মনে হচ্ছে। যাইহোক আপনার মেয়ে গুরুতর আঘাত পায়নি, এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। আসলে বাচ্চারা যেখানেই যায় সেখানেই দুষ্টামি করে। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 5 months ago 

ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন পরিবার নিয়ে বিমান বাহিনীর মিউজিয়াম ভ্রমণের দ্বিতীয় পর্ব। আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে অনেক শিক্ষানীয় বিষয় পেয়েছি ভাই। সেখানে টিকিট কেটে আপনারা প্রথমেই বিমানের মধ্যে প্রবেশ করেছিলেন জানতে পেরে সত্যি বেশ ভালো লাগলো। ১৯৭১ সালে ক্যাপ্টেন আব্দুল খালেক সহ আরো অনেকেই বিমান পরিচালনা করেছিল। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago (edited)

যদিও আমি জাতীয় বিমান জাদুঘরে ঘুরতে গিয়েছিলাম, তবে আপনাদের মত করে এত গভীর ভাবে ঘুরে দেখা হয় নাই। আপনার পোস্টের মাধ্যমে জাদুঘরে রাখা বিমান গুলোর সম্বন্ধে অনেক অজানা তথ্যই আমার জানা হয়ে গেল। ধন্যবাদ ভাইয়া পরিবার সহ জাতীয় বিমান জাদুঘর ভ্রমন করে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 5 months ago 

পরিবার নিয়ে খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন ভাইয়া। জেনে ভীষণ ভালো লেগেছে। বাচ্চা দুই থেকে তিনজন হলেই দুষ্টমির পরিমান বাড়তে থাকে।তবে মেয়ে তেমন ব্যথা পায়নি জেনে ভালো লাগলো। আশাকরি সবাই মূহুর্তটিকে খুব ইনজয় করলেন। অনেক ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.11
JST 0.031
BTC 68846.60
ETH 3872.96
USDT 1.00
SBD 3.66