দীর্ঘদিন পর এলাকার বন্ধু-বান্ধবদের সাথে ঘুরতে যাওয়া (দ্বিতীয় পর্ব)।
আমরা অটো স্ট্যান্ডে পৌঁছে সেখান থেকে একটি অটো রিজার্ভ করলাম। তারপর রওনা দিলাম আমাদের কাঙ্খিত গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। যে রাস্তা দিয়ে আমরা রুবেলের বাড়িতে যাচ্ছিলাম সে রাস্তাটা ছিল বেশ নিরিবিলি। আমরা গল্প করতে করতে বেশ আনন্দের সাথেই যাচ্ছিলাম। আসলে কাছের বন্ধু-বান্ধব এক জায়গায় মিলিত হলে সময়টা এমনিতেই ভালো কাটে। আমাদের গন্তব্যের দিকে আগাচ্ছিলাম আর পুরনো স্মৃতি রোমন্থন করছিলাম। ২০ বছর আগে যখন আমরা রুবেলদের বাড়িতে গিয়েছিলাম তখন আমরা কি কি করেছিলাম সেটাই ছিল আমাদের গল্পের বিষয়। সেবার আমরা অনেক মজা করেছিলাম।
এখনো মনে পড়ে আমরা একটা এয়ারগান নিয়ে পাখি শিকার করতে বের হয়েছিলাম। সারাদিন ঘুরে কোন পাখি আমরা মারতে পেরেছিলাম না। শেষ পর্যন্ত যার এয়ারগান সে একটি পাখি শীকার করতে সক্ষম হয়েছিলো। এ সারাদিন ঘোরাঘুরি করে আমরা পাখি পেয়েছিলাম মাত্র একটা। এদিকে লোক ছিলাম প্রায় ৬-৭ জন। সেই কারণে আমি আর আমার এক বন্ধু দুজন মিলে চিন্তা করলাম যদি এই পাখি সবাই মিলে খেতে চায়। তাহলে ভাগে কিছুই পাবো না। পাখিটা আমরা ফ্রাই করতে বলেছিলাম। পাখিটা ভাজা শেষ হতেই আমরা দুই বন্ধু বড় দুই পিস মাংস নিয়ে দৌড়ে অন্য দিকে চলে যায়। আর সবার জন্য পড়ে থাকে পাখির হাড়গোড়।
এ কথা মনে পড়লে এখনো হাসি পায়। অবশ্য যখনই সেই ঘটনার কথা মনে পড়ে তখনই বুকের ভেতরে একটু মোচড় দিয়ে ওঠে। কারণ যে বন্ধুর সাথে আমি পাখির মাংস ভাগাভাগি করেছিলাম সেই বন্ধু আর এখন দুনিয়াতে নেই। প্রায় বছর ১০ বছর আগে সে মারা গিয়েছে। যাই হোক বিভিন্ন রকম গল্প করছিলাম আমরা। এদিকে মাঝে মাঝে হাতের ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছিলাম। একসময় তো মনে হচ্ছিল হয়তো জুমার নামাজ মিস হয়ে যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জুম্মার নামাজের অল্প কিছুক্ষণ আগে আমরা রুবেলদের বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছে যায়। তখন রুবেল বলে আমরা এই মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে নেই। এখান থেকে আমাদের বাড়ি একেবারে কাছে।
তখন আমরা সেখান থেকে অটো রিক্সা থেকে নেমে মসজিদে ঢুকি নামাজ পড়ার জন্য। নামাজ পড়া শেষ হলে আমরা যখন রুবেলের বাড়ির দিকে রওনা করবো। তখনই হঠাৎ মনে পড়ল আমরা কারো বাড়ি বেড়াতে যাচ্ছি সাথে করে কিছু নিয়ে যাওয়া উচিত। গল্প করতে করতে আমরা এই বিষয়টা ভুলে গিয়েছিলাম। তাই তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়ে আমরা রুবেলের সাথে আমাদের এক বন্ধুকে পাঠালাম মিষ্টি বা এই জাতীয় কিছু কেনার জন্য। পরে সেই বন্ধু কাছের বাজারে ভালো মিষ্টি না পেয়ে নিয়ে এসেছিল ২ লিটার আইসক্রিম এবং ২ লিটারের তিনটা কোক। পরে আমরা এগুলো নিয়ে রুবেলের বাড়ির দিকে রওনা দিই।
আমরা যেখান থেকে অটোতে নেমেছিলাম সেখান থেকে রুবেলের বাড়ি পৌঁছাতে আমাদের মিনিট দশেক হাঁটতে হয়েছিলো। রুবেলদের বাড়িতে পৌঁছতেই দেখতে পেলাম ওর চাচাতো ভাইরা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলো। আমরা বাড়ির উপর পৌঁছাতে কয়েকটি চেয়ার বাইরে এনে দিল আমাদের বসার জন্য। ওদের বাড়িতে অনেক দিন আগে এসেছিলাম বিধায় বাড়ির লোকেশনটা মনে ছিল না। কিন্তু বাড়ির উপর পৌছে আমাদের কাছে বাড়ির অবস্থানটা বেশ ভালো লাগলো। কারণ বাড়ির সামনেই বিলের মত যেখানে পানি জমে নদীর মত অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। আমি খুবই অবাক হয়ে গেলাম এটা দেখে যে এই এলাকাতে গত দুই তিন বছর যাবত আমি প্রতিবারই আসি। কিন্তু রুবেলদের বাড়ি যে এখানে সেটা আমার একেবারেই মনে ছিল না।
আসলে দীর্ঘদিন আগে এই এলাকাতে এসেছিলাম যার ফলে অনেক কিছুই ভালোভাবে মনে ছিলো না। বাড়ির সামনে এমন খোলা জায়গা দেখে আমরা পরিকল্পনা করলাম বিকালে নৌকায় ঘুরতে হবে। তখন আমাদের মনে পড়ে গেলো এর আগে যখন এসেছিলাম তখন রাত দুটোর দিকে আমরা নৌকা নিয়ে এই নদীর মতো জায়গাটাতে বের হয়েছিলাম ঘুরতে। তখন সেখানে প্রচুর পানি ছিলো। রাতের বেলা হওয়াতে আমরা মনে করেছিলাম সেটা বড় কোন নদী। কিন্তু এখন বুঝতে পারলাম সেটা কোন নদী ছিল না। সেটা ছিল আসলে ফসলের নিচু মাঠ যেখানে প্রতিবছর বর্ষার সময় পানি এসে নদীর মত দেখায়। (চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
| ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
|---|---|
| ফটোগ্রাফার | @rupok |
| স্থান | মমিনখার হাট |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
| 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বন্ধু রুবেল ভাইয়ার বাসায় অবশেষে গেলেন।কারো বাসায় গেলে কিছু তো নিতেই হয়।আর তাই মিষ্টি না পেয়ে আইসক্রিম আর কোক নিয়ে গেলেন।খুব ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে। ফটোগ্রাফিগুলো চমৎকার লাগলো।শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।