দীর্ঘদিন পর এলাকার বন্ধুবান্ধবদের সাথে কোথাও ঘুরতে যাওয়া (প্রথম পর্ব)।
একটা সময় ছিল যখন সকাল থেকে শুরু করে রাত অব্দি এলাকার বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আড্ডা দিতাম। সারাদিন চলতো খেলাধুলা আর আড্ডাবাজি। কিন্তু একটি বন্ধুর সাথে ভুল বোঝাবুঝির কারণে আমি এলাকার বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে কিছুটা দূরে চলে পরবর্তীতে আবার ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়ে তাদের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়ে যায়। এখন মাঝে মাঝে এলাকার বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আড্ডা দেয়া হয়। তবে এখন সবাই ব্যক্তিগত জীবনে ব্যস্ত থাকায় আড্ডাটা হয় খুবই কম। হয়তো মাসে একবার। কয়েকদিন আগে বন্ধু রুবেল বললো চল আমাদের গ্রামের বাড়ি থেকে ঘুরে আসি। রুবেলের এই প্রস্তাব শোনার সাথেই পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে গেলো।
আজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগে আমরা একবার ওদের গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম ঘুরতে। সেখানে গিয়ে আমরা দারুন মজা করে দুটো দিন কাটিয়েছিলাম। যাই হোক রুবেল প্রস্তাব দেয়ার সাথেই আমি জিজ্ঞেস করলাম আর কে কে যাবে? তখন ও বলল আমাদের আরো ৪-৫ জন বন্ধুবান্ধব সাথে যাবে। ওর প্রস্তাব পাওয়ার সাথে সাথে আমি রাজি হয়ে গেলাম। পরিকল্পনা করা হলো শুক্রবার বেলা বারোটার দিকে আমরা ওদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেবো। ওদের বাড়ি শহর থেকে খুব একটা দূরে নয়। অটো রিক্সা করে সেখানে যেতে সর্বোচ্চ ৪০ থেকে ৫০ মিনিটের মতো লাগে। রুবেল এই প্রস্তাব দিয়েছিল আমাকে দুই তিন দিন আগে।
গতকাল রাতে হঠাৎ আমাকে ফোন দিয়ে বলল ওর দোকানের সামনে যেতে। সেখানে গিয়ে দেখি আমরা যারা ওদের বাড়িতে যাবো তাদের সবাই সেখানে উপস্থিত হয়েছে একজন বাদে। সেখানে পৌঁছে সবাইকে দেখে কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম। তারপর সবাইকে বারবার করে মনে করিয়ে দেয়া হলো সবাই যেন বারোটার ভেতরে রুবেলের দোকানের সামনে চলে আসে। সেখান থেকে আমরা সবাই মিলে একসাথে রওনা দেবো। তবে সবাইকে বলার পরও দু একজনকে নিয়ে আমার চিন্তা হচ্ছিলো। সেই দুজনের ভেতরে একজন হচ্ছে আমাদের এক ইমিডিয়েট ছোট ভাই শোভন। আর একজন হচ্ছে যাদের বাড়িতে যাবো সেই বন্ধু রুবেল। শোভনের সমস্যা হচ্ছে কোথাও যাওয়ার আগে তার তৈরি হতে দীর্ঘ সময় লাগে। সে দীর্ঘ সময় বাথরুমে কাটায়। আর রুবেলের সমস্যা হচ্ছে সে কখনোই তার কমিটমেন্ট ঠিক রাখতে পারেনা। দেখা গেলো সকালে এসে আমরা দাঁড়িয়ে আছি এদিকে রুবেলের কোন খবর নেই।
যাইহোক শেষ পর্যন্ত আজ সকালে আমি ঠিক পৌনে বারোটার সময় রুবেলের দোকানের সামনে উপস্থিত হলাম। সেখানে গিয়ে দেখি আমাদের যাদের একসাথে যাওয়ার কথা তাদের ভেতর একজন ছাড়া আর কেউ সেখানে আসেনি। আর যে একজন এসেছে সেও তৈরি হয়ে আসেনি। সবার এই অবস্থা দেখে আমার মনে সন্দেহ হতে লাগলো যে আজ যাওয়া হবে কিনা? পরে কয়েকজনের সাথে ফোনে কথা বলে জানতে পারলাম তারা তৈরি হচ্ছে কিছুক্ষণের ভেতরেই চলে আসবে। তারপর আমি বন্ধু রুবেলকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম ওর কি অবস্থা? ও জানালো এখনি রেডি হয়ে সে বের হচ্ছে।
সবার সাথে কথা বলা হলে আমি আবার বাসায় ফিরে এলাম। বাসায় ফিরে এসে ওদের ফোনের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। অপেক্ষা করতে করতে প্রায় সাড়ে বারোটা বেজে গেলো। সাড়ে বারোটার সময় বন্ধু রুবেল আমাকে ফোন দিয়ে বলল কিরে তুই এখন কোথায়? আমরা তোর জন্য ওয়েট করছি। আমি বাসা থেকে নিচে নেমে দেখি রুবেলের দোকানের সামনে সবাই দাঁড়িয়ে আছে। আমি একবারে তৈরি হয়ে নেমেছিলাম যার ফলে রুবেলের দোকানের সামনে পৌঁছে আমরা সবাই প্রথমে রিকশাযোগে একটি অটো স্ট্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। কারণ শহর থেকে রুবেলদের এলাকায় যেতে হলে সেই স্ট্যান্ড থেকে অটো রিক্সায় উঠতে হয়। এদিকে আমাদের রওনা দিতে দেরি হয়ে যাওয়ায় আমার চিন্তা হচ্ছিল যে জুম্মার নামাজটা কোথায় পড়বো? (চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
| ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
|---|---|
| ফটোগ্রাফার | @rupok |
| স্থান | মমিনখার হাট |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
| 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বন্ধু রুবেল ভাইয়ার গ্রামের বাড়ি কয়জন বন্ধু মিলে গেলেন।যাওয়ার আগেই এতো অপেক্ষা।কোথাও যাওয়ার কথা হলে অপেক্ষা আর যাওয়া নাও হতে পারে এমন সন্দেহ খুব কষ্ট দেয় আসলে।যাক শেষ পর্যন্ত গেলেন।তারপর কি হলো?? জানব পরের পোস্টে। অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।
এটা তো সেই পুরানো গল্প।বন্ধুরা সবাই কোথাও যেতে হলে তো এ রেডি তো সে রেডি না। বেশ অসহ্য একটি বিষয়। তবে এর মধ্যে কিন্তু মজাও অনেক। এসব না থাকলে কিন্তু বন্ধু্ত্বে কোন মজা নেই। ২০ বছর আগে যে বাড়িতে একবার বেড়ানো হয়েছে আজ আবার সেখানে যাওয়া। কেমন লাগলো আর কেমনই বা সময় কাটলো আপনাদের জানার অপেক্ষায় রইলাম।
ভাইয়া আপনি মাঝে মাঝে আপনার বন্ধুদের সাথে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ান এটা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আপনি যে আপনার সময়কে কিভাবে বন্টন করেন তাই তো বুঝে উঠতে পারিনা। যাই হোক ভাইয়া, ২০ বছর আগে বন্ধু রুবেলের বাড়িতে গিয়েছিলেন আর এখন বিশ বছর পরে আবারও সেই বন্ধুর বাড়িতে সুন্দর সময় কাটাতে গিয়েছেন। আর সেই সুন্দর মুহূর্তগুলো কিভাবে কাটল তা জানার অপেক্ষায় রইলাম।