বিকালের স্নিগ্ধ আবহাওয়ায় দুই বন্ধুর ঘোরাফেরা (শেষ পর্ব)।
দুই বন্ধু ধীরেসুস্থে গল্প করতে করতে আমাদের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের উদ্দেশ্যে আগাচ্ছিলাম। সেখানে যাওয়ার পথে কিছুদুর পরপর প্রাকৃতিক দৃশ্য পরিবর্তিত হচ্ছিল। কখনো আমরা যাচ্ছিলাম খোলা মাঠের ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া পিচ ঢালা রাস্তা দিয়ে আবার। কখনো যাচ্ছিলাম লোকালয়ের ভিতর দিয়ে। আবার কখনো আমাদের রাস্তার পাশেই পরছিলো গ্রামীন হাট। দীর্ঘদিন পর বাইরে এমন ঘুরতে পেরে মন উৎফুল্ল হয়ে উঠেছিল। এভাবে চলতে চলতে যখন দুই বন্ধু আমাদের সেই কাঙ্ক্ষিত নদীর কাছাকাছি পৌঁছলাম। তখন হঠাৎ করে দেখতে পেলাম নদীতে যাওয়ার রাস্তায় ড্রেন তৈরি করা হচ্ছে। আমরা এই নির্মাণ কাজ দেখে খুবই অবাক হলাম।
কারণ এমন অজপাড়া গায়ের একেবারে শেষ মাথার দিকে ড্রেন তৈরি করার তাৎপর্যটা কি আমরা সেটা বুঝতে পারছিলাম না। যাই হোক সেটা আমাদের বোঝার দরকারও নেই। তবে ড্রেন তৈরি করার কারণে আমাদের সেই কাঙ্ক্ষিত স্থানে যাওয়ার জন্য যে রাস্তাটা আছে সেই রাস্তার ইতিমধ্যে সর্বনাশ হয়েছে। কি আর করা আমাদেরকে সেই রাস্তা দিয়েই অতঃপর যেতে হল। তবে আমরা যখন আমাদের সেই প্রিয় স্থানটাতে পৌঁছলাম তখন দুজনেই মুগ্ধ বিস্ময় তাকিয়ে ছিলাম সামনের অপার সৌন্দর্যের দিকে। এই জায়গাটাতে আমরা যতবারই আসি ততবারই ভালো লাগে। কখনো মনে হয়নি যে একই জায়গায় বারবার আসার দরকার কি?
চার পাশে খোলা ফসলের মাঠ। ঠিক সেই ফসলের মাঠের সাথেই লাগোয়া ছোট্ট নদী। একটু দূরে তাকিয়ে দেখতে পেলাম সারবেঁধে জেলেদের নৌকা দাড়িয়ে রয়েছে। হয়তো নদীতে পানি কমে গিয়েছে তাই এই নৌকা গুলি কর্মহীনভাবে বসে রয়েছে। আর কিছুদিন পরেই এই মরা নদীতেই অনেক পানি হবে। তখন আবার এই জেলে নৌকা গুলি কর্মব্যস্ত হয়ে পড়বে। আমি আর ফেরদৌস অনেকবার পরিকল্পনা করেছি আমরা একবার এই নদীটা পার হয়ে ওপারে গিয়ে দেখব সেখানে কি রয়েছে। কিন্তু আমাদের সেই পরিকল্পনাটা আজ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি। যাইহোক আমরা সেখানে দাঁড়িয়ে মন ভরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করছিলাম।
এমন চমৎকার এক বিকেলে অমন অসাধারন সুন্দর একটি জায়গাতে দাঁড়িয়ে জীবনটাকে অনেক সুন্দর মনে হচ্ছিলো। মনে হচ্ছিল এই তো বেশ আছি। এক জীবনে আর কি চাই? সেখানে পৌঁছে দুই বন্ধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকনে এতটাই মশগুল হয়ে গিয়েছিলাম যে দুজনের ভেতর কথাবার্তাও বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পরে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার পরে দুজনের সম্বিত ফিরলো। আমরা খেয়াল করে দেখতে পেলাম নদীর ওপার থেকে মাঝে মাঝে দু চারজন মানুষ এপারে আসছে। একটা ঘোড়ার গাড়ি কেও আসতে দেখলাম নদীর ভেতর দিয়ে। বুঝতে পারলাম যে নদীতে পানি একেবারেই কম। না হলে ঘোড়ার গাড়ি এভাবে হেঁটে পার হয়ে আসতে পারতো না। ঘোড়ার গাড়িটা যখন নদীর মাঝামাঝি জায়গায় পৌঁছালো তখন খেয়াল করে দেখলাম শুধু পা গুলো পানির নিচে ছিল।
ঘোড়ার গাড়িটা যখন নদী পার হয়ে আসছিল তখন দেখতে দারুণ লাগছিল। দৃশ্যটি দেখার সাথে কয়েকটি ছবি তুলে নিয়েছিলাম। আমরা দুই বন্ধু সেখানে দাঁড়িয়ে পরিকল্পনা করছিলাম যখন নদীতে পানি আসবে তখন আবার এখানে আসতে হবে। কারণ আমরা খেয়াল করে দেখেছি এই নদীর পাড়ে আমরা বছরে যখনই আসি না কেন তখনই সেখানে একটা অন্যরকম সৌন্দর্য দেখতে পায়। এখানকার সৌন্দর্য ঋতুর সাথে পরিবর্তিত হয়। সেখানে গিয়ে আমরা দুই বন্ধু বেশ কিছু ছবি তুলেছি। আসলে এমন সুন্দর জায়গা দেখলে তখন ছবি না তুলে থাকা মুশকিল। তাছাড়া এমনিতেও আমরা যখনই বাইরে যায় তখনই সেখানকার ছবি তুলি। বেশ কিছুক্ষণ সেখানে দাঁড়িয়ে দুজন আড্ডা দেয়ার পর আমরা আবার ফিরতি পথে রওনা দিলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | নর্থ চ্যানেল |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
খুবই সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন ভাইয়া।বিকালের স্নিগ্ধ আবহাওয়ায় আপনারা দুই বন্ধু খুবই উপভোগ্য একটি ঘোরাঘুরি করেছেন এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করেছেন। সত্যিই ভাইয়া, ঘোড়ার গাড়িটি যখন নদী পার হচ্ছিল নিশ্চয়ই সেই দৃশ্যটি দেখতে খুবই সুন্দর ছিল। দুই বন্ধু মিলে বিকালের স্নিগ্ধ আবহাওয়ায় ঘোরাঘুরি করা মুহূর্তটুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
বিকেল বেলা এমন জায়গায় ঘুরতে আমারও খুব ভালো লাগে ভাইয়া। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে চোখ দুটি একেবারে জুড়িয়ে গেল। এমন দৃশ্য বরাবরই আমাকে মুগ্ধ করে। অনেক দিন পর আপনি মন ভরে ঘুরাঘুরি করেছেন এবং সেই অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। পোস্টটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।