বিকালের স্নিগ্ধ আবহাওয়ায় দুই বন্ধুর ঘোরাফেরা।
গত বেশ কিছুদিন প্রচন্ড গরম আবহাওয়ার পরে গত দুদিন ধরে আবহাওয়া বেশ ঠান্ডা রয়েছে। আমি দীর্ঘদিন হলো ঘরেই বসে ছিলাম। কি কারনে আমি ঘরে বসে ছিলাম কারণটা আপনারা সবাই জানেন। বন্ধু ফেরদৌস ফরিদপুরের বাইরে থাকার কারণে আমি অনেকটা গৃহবন্দী হয়ে পড়েছিলাম। কয়েকদিন হল ফেরদৌস ফরিদপুরে ফিরেছে। তারপর থেকে আবার দুই বন্ধুর ঘোরাফেরা শুরু হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় দুদিন আগে আমি আর ফেরদৌস পদ্মা নদীতে গোসল করেছিলাম।
গোসল করার পরে দুজনে পরিকল্পনা করেছিলাম বিকালে হাজীগঞ্জের দিকে ঘুরতে যাবো। অবশ্য সেখানে ফেরদৌসের একটি ব্যক্তিগত কাজও ছিল। তবে বিকালে দুজনের ভেতর যোগাযোগ না হওয়ায় আর হাজিগঞ্জ যাওয়া হয়নি। যদিও বিকালে ফেরদৌস আমাকে ফোন দিয়েছিল। কিন্তু আমি ফোন চেক না করায় সময়মতো তার কল দেখতে পায়নি। পরদিন যখন আমি ফেরদৌসকে ফোন দিলাম ফোন দিয়ে ফেরদৌসকে পেলাম না। তারপরের দিনও একই অবস্থা। শেষ পর্যন্ত আজকে ফোনে ফেরদৌসের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছিলাম। ফেরদৌস ফোন রিসিভ করার পরে তাকে জিজ্ঞেস করলাম এই দুইদিন তোমার কি হয়েছিলো ? ফোন ধরোনি কেন? ফেরদৌস তখন জানালো ওর মোবাইলটা হঠাৎ করে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তাই মোবাইল রিপেয়ার করার জন্য সার্ভিসিং সেন্টারে দিয়েছে। সে কারণেই গত দুদিন আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি।
যাই হোক কিছুক্ষণ কথা বলার পরে দুজনে মিলে ঠিক করলাম বিকালে ঘুরতে বের হবো। তারপর দুজন মিলে ঠিক করলাম বিকালে আমরা দুজন ট্যাপাখোলা নামক একটি জায়গায় মিলিত হবো। কিন্তু ফেরদৌস আমাকে বলল তার কাছে তো ফোন নেই। তাহলে আমাদের ভেতর যোগাযোগ হবে কিভাবে? আমি তখন তাকে জানালাম ঠিক চারটা ৩০ মিনিটে তুমি নির্ধারিত জায়গায় থাকবে। তাহলে আর কোন সমস্যা হবে না। তারপর আমি সময় মতো নির্ধারিত সেই জায়গায় গিয়ে পৌঁছলাম। সেখানে গিয়ে দেখি একটি চায়ের দোকানের ভেতরে ফেরদৌস ক্যারাম খেলা দেখছে। সেই চায়ের দোকানটি আমাদের সবার অত্যন্ত পরিচিত একটি চায়ের দোকান। আমরা দীর্ঘদিন এই চায়ের দোকানে আড্ডা দিয়েছি। যাই হোক আমি সেখানে পৌঁছানোর পর দুই বন্ধু মিলে রাস্তায় এসে চিন্তা করতে লাগলাম কোন দিকে যাবো।
তখন আমি ফেরদৌসকে পরামর্শ দিলাম চলো আমরা সেই নদীর পাড়ে যাই। আমাদের দু'জনের অত্যন্ত প্রিয় একটি জায়গা আছে। সেই জায়গাটি শহর থেকে বেশ কিছুটা দূরে অবস্থিত। সেখানে বিস্তীর্ণ খোলা মাঠের পরে ছোট্ট একটি নদী রয়েছে। যদিও সেই নদীটা শুকনো মৌসুমে একেবারেই শুকিয়ে যায়। তারপরও জায়গাটি আমাদের কাছে অত্যন্ত পছন্দের। তাই আমরা সময় পেলেই সেখানে যায়। পরিকল্পনা করার সাথে সাথেই আমরা সেই জায়গার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। তবে কিছুদূর যাওয়ার পর ফেরদৌস বলতে লাগলো হালকা কিছু খেতে হবে। আমরা দুই বন্ধু গ্রামের দিকে আসলে সাধারণত সেখান থেকে ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার খাই। তাই ফেরদৌসের প্রস্তাবটা আমারও পছন্দ হলো।
আমি তখন ফেরদৌসকে বললাম তাহলে তেমন কোন জায়গা দেখলে হালকা কিছু খেয়ে নেয়া যাবে। এই কথা বলে দুই বন্ধু ধীরেস্থে গল্প করতে করতে আগাতে লাগলাম। বেশ কিছুদূর যাওয়ার পরে আমরা গ্রামের ভেতরে দেখতে পেলাম একজন লোক তার বাড়ির সামনে বসেই কিছু ভাজাপোড়া বিক্রি করছে। সেখানে মোটরসাইকেল থামিয়ে নেমে দেখি তখন গরম গরম পিয়াজু ভাজছিলো। গরম পেঁয়াজু দেখে না খেয়ে থাকা খুবই মুশকিল। আমরা দুই বন্ধু পেঁয়াজু খেতে লাগলাম। এরপর দেখি লোকটা কাছে ছোলা ভুনাও রয়েছে। ছোলা ভুনা আমার কাছে খুবই পছন্দের একটি খাবার সাথে যদি থাকে পেঁয়াজু তাহলে সেটা হয় আরো মজাদার। এর ভেতরে লোকটা আলুর চপ ভাজতে শুরু করল। গরম গরম পেয়াজু আলুর চপ আর ছোলা ভুনা খাওয়াটার রীতিমতো জমে উঠলো। যদিও বরাবরের মতো এবারও আমি ছবি তুলতে ভুলে গিয়েছিলাম। তবে লোকটার দোকানটা দেখে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। অবশ্য এটাকে দোকান বলার কোন সুযোগ নেই। কারণ সে তার বাড়ির সামনের উঠোনে একটি ত্রিপল টানিয়ে তার নিচে তার এই ভাজাপোড়া নিয়ে বসেছে। যাই হোক সেখান থেকে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে তারপর আমরা আমাদের কাঙ্খিত স্থানের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। (চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | নর্থ চ্যানেল |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলেই গত কয়েকদিন ধরে যে পরিমান গরম তাতে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল ৷ তবে দুদিন ধরে আবহাওয়া বেশ শান্ত ৷ আপনার বন্ধু ফেরদৌস ছিল না বলে আপনার বাইরে ঘোরাঘুরি করতে যাওয়া হয় নি ৷ অনেক দিন পর বন্ধুর সাথে বেশ সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন ৷
ট্যাপাখোলা জায়গাটি দেখতে বেশ সুন্দর লাগছে। বিশেষ করে সবুজ মনোরম পরিবেশ বিরাজমান সেখানে। আর এরকম সুন্দর পরিবেশের মধ্যে আপনার বন্ধু ফেরদৌসের সাথে ঘোরাঘুরি করে নিশ্চয়ই অনেক বেশি আনন্দ উপভোগ করেছেন। আর ঘুরতে গিয়ে হালকা কিছু নাস্তা খাওয়ার বিষয়টি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। সুন্দর একটি ঘোরাঘুরির পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভাইয়া আপনি ফেরদৌস ভাইয়ের সাথে ঘুরতে বেশ পছন্দ করেন, সেটা অনেক আগেই আপনার পোস্ট পড়ে জানতে পেরেছিলাম। যাইহোক আপনারা দুই বন্ধু বিকেলবেলা ঘুরতে বের হয়েছেন এবং ভাজাপোড়া কিনে নিয়েছেন। নদীর পাড়ে বসে ভাজাপোড়া খেতে খেতে আড্ডা দিতে সত্যিই খুব ভালো লাগে। বিকেলবেলা নদীর পাড়ে বসে থাকার মজাই আলাদা। আপনার পোস্টটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।