দুই বন্ধুর কমলা বাগান দর্শন (শেষ পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


পূর্ববর্তী পর্বের লিংক

যাইহোক তাতে খুব একটা সমস্যা হয়নি। আমরা লোকজনের কাছ থেকে শুনে সঠিক স্থানেই বাস থেকে নেমেছিলাম। আমরা যখন সেখানে পৌঁছেছিলাম তখন আসরের নামাজের সময় হয়ে গিয়েছিলো। বাস থেকে নেমে আমি রাসুকে অপেক্ষা করতে বলে আসরের নামাজ পড়তে গেলাম। নামাজ পড়ে বের হওয়ার পরে রাসু আমাকে বলল এখান থেকে ভ্যানে করে সেই কমলা বাগানে যাওয়া যাবে। তারপর আমরা একটি ভ্যানের জন্য এক ভ্যানওয়ালার সাথে কথা বললাম। তিনি জানালেন আমরা যে বাগানের উদ্দেশ্যে এসেছি সে বাগানটি সাত দিন আগে কেটে ফেলেছে। তারা নাকি আবার নতুন করে সেখানে কমলার গাছ লাগাবে। খবরটা শুনে আমরা দুজনেই হতাশ হলাম। কারণ এত দূর আসার পরে যদি শুনি যে স্থানে ঘোরার উদ্দেশ্যে এসেছি সেই জায়গাটা আর আগের মত নেই তখন খারাপ লাগাটাই স্বাভাবিক।

IMG_20231215_163250.jpg

তারপর আমি আশেপাশের লোকজনকে জিজ্ঞেস করতে লাগলাম এলাকায় কি আর কোনো কমলা বাগান আছে নাকি? তখন দু একজন আমাকে পরামর্শ দিলো কিছুটা দূরে আরও একটি কমলা বাগান রয়েছে। সেখানে আমরা গিয়ে দেখতে পারি। আমি কিছুটা আশার আলো দেখতে পেলাম। পরবর্তীতে একটি ভ্যান নিয়ে আমরা চলে গেলাম সেই কমলা বাগানের উদ্দেশ্যে। কিন্তু কমলা বাগানে পৌঁছে যা দেখলাম তাতে খুব একটা ভালো লাগলো না। কারণ খেয়াল করে দেখলাম দুটি গাছ বাদে আর কোনো কাছেই প্রায় কমলা নেই। আমরা চিন্তা করেছিলাম কমলা বাগানে ঘোরাফেরা শেষে কিছু টাটকা কমলা কিনে বাড়িতে নিয়ে যাবো। কিন্তু দুটি গাছে অল্প কিছু কমলা ছাড়া পুরো বাগান খালি পড়ে রয়েছে। এজন্য আমরা ডাকাডাকি করেও কাউকে সেখানে দেখতে পেলাম না। গাছ থেকে ছোট্ট একটি কমলা পেরে মুখে দিয়ে দেখলাম কমলাটা কেমন যেন ভেতরে একেবারে শুকিয়ে গিয়েছে। যার ফলে খেতেও ভালো লাগেনি।


IMG_20231215_163608.jpg

কমলা বাগানে কিছুক্ষণ ঘুরে ফিরে সবগুলো গাছ দেখছিলাম। তবে এর ভিতরে খেয়াল করে দেখি প্রায় সন্ধ্যা হয়ে আসছে। আসলে শীতের দিনের বিকালটা এতো ছোট হয় যে আপনি কোথাও ঘুরতে গিয়ে সময় মতো ফিরতে পারবেন না। যেহেতু শহর থেকে অনেকটা দূরে এসেছি তাই আর দেরি না করে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। তবে আমরা যেই কমলা বাগানে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে বাস পাবো কিনা সেটা নিয়ে কিছুটা চিন্তিত ছিলাম। সেই কারণে আমরা প্রথমে একটি অটো রিক্সায় উঠে মাঝকান্দি নামক স্থানে এসে পৌঁছলাম। মাঝকান্দি জায়গাটা এমন ফরিদপুরে যে বাস গুলো খুলনার দিক থেকে আসে বা বোয়ালমারীর দিক থেকে আসে তারা সবাই সেখানে কিছুক্ষণের জন্য থামে। যার ফলে সেখানে গেলে সহজেই ফরিদপুরে যাওয়ার বাস পাওয়া যাবে। সেই কারণে আমরা দুজন মাঝকান্দি স্ট্যান্ডে পৌঁছলাম। তবে সেখানে পৌঁছে দেখি মাঝকান্দি স্ট্যান্ডে একটি ছোট্ট হাটের মতো বসেছে। সেখানে একদম গ্রামীণ হাটের মতো পরিবেশ ছিলো। সেই হাটে দেখলাম গরম গরম সিঙ্গারা ভাজা হচ্ছে। তখন আমি বন্ধু রাসুকে বললাম চল আগে আমরা এখান থেকে সিঙ্গারা খায়। তারপর বাসের জন্য অপেক্ষা করবো।


IMG_20231215_163341.jpg

কারণ সেখানে যে সিঙ্গারা গুলো ভাজা হচ্ছিল সেই ধরনের সিঙ্গারা শহরে পাওয়া যায় না। এই ধরনের সিঙ্গারা গুলো সাধারণত গ্রামের দিকেই দেখা যায়। সিঙ্গারা বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানতে পারলাম পাঁচ থেকে দশ মিনিট সময় লাগবে তার ভাজা শেষ হতে। ততক্ষণ আমরা সেই হাটের ভেতরে ঘুরে বেড়ালাম। তারপর সিঙ্গারা ভাজা শেষ হলে আমরা দুজন কয়েকটি সিঙ্গারা নিয়ে সিঙ্গারা খেতে খেতে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। তবে আমাদের বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। অল্প কিছুক্ষণের ভেতরেই একটি বাস চলে এলো। তারপর দুই বন্ধু সেই বাসে উঠে বসলাম। ফেরার সময় পরিকল্পনা করেছি সামনের বছর যদি আবার এদিকে কমলা চাষ হয়। তাহলে সময় মতো একবার কমলা বাগান থেকে ঘুরে যাবো। কারণ আমরা যে বাগানে গিয়েছিলাম সেখানে গিয়ে মনে হল কমলার সিজন শেষ হয়ে গিয়েছে অথবা যে গাছগুলো লাগিয়েছিলো তাদের ফল দেয়ার সময় শেষ হয়ে গিয়েছিলো। যাইহোক অনেক আশা নিয়ে কমলার বাগান দেখতে এসেছিলাম। তেমন কিছু দেখতে না পেয়ে কিছুটা হতাশ হয়ে সেদিনের মতো বাড়ি ফিরে গেলাম।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানমাঝকান্দি

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 7 months ago 

হতাশার কিছু নেই। ইনশাল্লাহ্ আগামী বছর আগে আগে যাবেন। তখন দেখবেন শুধু কমলা বাগান দেখা নয় বস্তা ভরে কমলাও নিয়ে আসতে পারবেন। তবে আশার বাণী হলো সিঙ্গারা তো খেতে পেরেছেন। হিহিহি। ধন্যবাদ ভাইয়া বেদনা ভরা একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 7 months ago 

আসলে কোনো কিছুর উদ্দেশ্যে এতো দূরে যাওয়ার পর যদি আশা পূরণ না হয়,তাহলে মন খারাপ হয় কিছুটা। যাইহোক কমলা বাগান কেটে ফেলার পর ও আপনারা অন্য একটি কমলা বাগানের সন্ধান পেয়েছিলেন,এতে করে কিন্তু এতো দূরে আপনাদের যাওয়াটা কিছুটা হলেও সার্থক হয়েছে। একেবারেই যদি কমলা বাগান দেখতে না পারতেন, তাহলে আরো বেশি খারাপ লাগতো। বিকেলে বা সন্ধ্যার পর গরম গরম সিঙ্গারা খাওয়ার মজাই আলাদা। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

আপনারা তো দেখছি হতাশ হয়ে গেলেন কমলা বাগানে ঘুরতে যেয়ে। অনেক দূর থেকে গেলেন কিন্তু বাগানটি কেটে ফেললো শুনে আমারও অনেক বেশি খারাপ লাগলো। যঙ্ক তার পরেও অবশেষে দুটি কমলা গাছ দেখতে পেলেন। শীতকালটা খুবই ছোট দিন আসরের আযান দেওয়ার সাথে সাথেই সন্ধ্যা হয়ে যায়। মনে হয় যে দৌঁড়ে দিনটাকে ধরতে পারি না এমন অবস্থা। আর গ্রামের বাজারের তো সিঙ্গারা গুলো খেতে দারুন হয়। আশা করি আপনারা আগামী বছর সুন্দর বাগান দেখতে পাবেন। আপনাদের আশা পূরণ হবে সে কামনা করছি।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 57824.98
ETH 3133.87
USDT 1.00
SBD 2.42