ট্রাভেল || উদ্দেশ্য বাঁকুড়া (পর্ব - ০৩)
নমস্কার,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ঠিক আছি। |
---|
আজকের নতুন একটি ব্লগে সবাইকে স্বাগতম। আজকের এই ব্লগে আমি তোমাদের সাথে "উদ্দেশ্য বাঁকুড়া" ভ্রমনমূলক ব্লগটির তৃতীয় পর্ব শেয়ার করবো।
অনেক রাত হয়ে যাওয়ার কারণে ট্রেনের মধ্যে আমি শুয়ে পড়লেও ঘুমাই না। একদিনের জার্নি হলেও আমি সাধারণত ট্রেনের মধ্যে রাতে ঘুমাই না । কারণ ট্রেনের ভিতরে ফোন চুরি হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। আর যেহেতু আগে একবার আমার ফোন চুরি হয়েছে, এজন্য আমি এই ব্যাপারে অনেক সচেতন থাকি। তাছাড়া এখন ব্যাংকিং থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় কাজের সমস্ত কিছুই ফোনে থাকে। ফোন হারিয়ে গেলে অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়, এজন্য আমি সাধারণত ট্রেনে ঘুমাই না।
যেহেতু এইবার আমাদের এসি কম্পার্টমেন্ট ছিল তাই ফোন চুরি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল না বললেই চলে। কারণ এসি কম্পার্টমেন্টে গার্ড থাকে রাতে। তবে আমি কোন প্রকার রিস্ক নিতে চাইনি এইবার, এই জন্য জেগে ছিলাম। জেগে জেগে ফোনে বিভিন্ন ধরনের কাজও করছিলাম। সেদিন আমাদের এই ব্লগিং এর অনেক কাজও আমি ট্রেনের মধ্যে শুয়ে শুয়ে করছিলাম। এক ঘন্টা ট্রেনে থাকার পর এই প্রচন্ড গরমের মধ্যেও আমার ঠাণ্ডা লাগছিল কারণ তখন ট্রেনের এসিটা বেশ ঠান্ডা করে দিয়েছিল আমাদের কম্পার্টমেন্টটাকে। যাইহোক, ট্রেনে কম্বলেরও ব্যবস্থা ছিল, এইজন্য সেই কম্বল গায়ে দিয়ে আমি অপেক্ষা করতে থাকি ভোরের জন্য। কারণ ভোর হলেই আমার আমাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবো।
আমি যেহেতু জেগে ছিলাম, সেই জন্য আমার পরিবারের সবাইকে আমি ঘুমিয়ে যেতে বলি। আর ব্যাগ এবং যা কিছু আমাদের ছিল সেগুলো আমি আমার দায়িত্বের মধ্যে নিয়ে নি। কয়েক ঘন্টা যাওয়ার পর আমারও প্রচন্ড ঘুম পেয়ে গেছিল। তবে ঘুমাতে পারছিলাম না সবকিছু চিন্তা করে। আমার পরিকল্পনা এরকম ছিল, সকালে আমাদের গন্তব্যে পৌঁছে গিয়ে সেখানে কিছু সময় আমি ঘুমিয়ে নেব। সেই জন্য মূলত আমি ট্রেনে পুরোটা সময় জেগে ছিলাম। কিছুটা ভোর হওয়ার পর আমি একটু বাইরে আসি। বাইরে এসে বাইরের প্রকৃতিটাকেও ট্রেন থেকে উপভোগ করার চেষ্টা করি।
ভোর হতে হতেই আমাদের ট্রেন পৌঁছে যায় আমাদের গন্তব্যে অর্থাৎ বাঁকুড়া স্টেশনে। এই বাঁকুড়া স্টেশনে আমি সেদিন প্রথমবারই পা রেখেছিলাম। এর আগে কখনোই এই স্টেশনে যাওয়া হয়নি আমার। বাঁকুড়া সম্পর্কে অনেক আগে অনেক গল্প শুনেছি, তবে অভিজ্ঞতা ঐদিন প্রথম গিয়েই হয়েছিল। আমরা যেহেতু অনেকটা জার্নি করে এইখানে এসে পৌঁছেছিলাম সেজন্যে আমরা কিছুটা সময় স্টেশনের একটা অংশে বসে রেস্ট করি। তাছাড়া রাতে যেহেতু আমাদের তেমন কিছু খাওয়া হয়েছিল না, সেজন্য আমরা কিছু খাবার কিনে খেয়ে নি এই স্টেশনে বসেই। যেহেতু নতুন জায়গায় এসেছি, তাই চারপাশটা একটু ভালো করে ঘুরে দেখার ইচ্ছে হয় এখানে পৌঁছে। স্টেশনের এই মাথা থেকে ওই মাথা সমস্ত জায়গাটাই ঘুরে দেখি আমরা।
সত্যি কথা বলতে, নতুন জায়গায় গিয়ে নতুন পরিবেশ দেখতে বেশ ভালই লাগে। নতুন নতুন মানুষ, নতুন নতুন কথা বলার স্টাইল, এগুলো বেশ ভালোই লাগে। তাছাড়া এই ব্যাপারটা বেশ এনজয় করি আমি । আমরা বাঁকুড়া পৌঁছে গেলেও আমাদের মূল গন্তব্য বাঁকুড়া স্টেশন ছিল না। সেখান থেকে আরও দূরের একটি জায়গায় ছিল। যেহেতু আমাদের অন্য একটি জায়গায় যেতে হবে তাই এই ট্রেন জার্নির পরে কিছুটা সময় এই স্টেশনেই আমরা রেস্ট করে নিতে চাই। এই স্টেশনে নেমে, এই স্টেশনের একটি জায়গা থেকে চোখে মুখে জল দিয়ে নিজেকে একটু ফ্রেশও করে নি আমি।
যাইহোক, চারপাশের সবকিছু দেখা শেষে স্টেশনের চারপাশ দিয়ে অনেক ফটোগ্রাফি করার পরে আমরা স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে নেমে টোটো রিজার্ভ করি, অন্য একটি বাস স্ট্যান্ডে যাওয়ার জন্য। আমাদের গন্তব্য ওই বাস স্ট্যান্ড থেকে বাসে করে উঠে যেতে হতো। যাইহোক, এখানে ওভারল একটি ভালো সময় অতিবাহিত করি আমরা । তাছাড়া আমরা নিরাপদে যে এই বাঁকুড়া স্টেশন পর্যন্ত আমাদের সমস্ত বেডিং নিয়ে পৌঁছাতে পারি, সেটা বেশ ভালো ব্যাপার ছিল আমাদের জন্য। পরবর্তীতে আমরা কোথায় গেছিলাম তা নিয়ে তোমাদের সাথে অন্য আরেকটি ব্লগে শেয়ার করবো।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ট্রাভেল |
---|---|
ডিভাইস | Samsung Galaxy M31s |
ফটোগ্রাফার | @ronggin |
লোকেশন | বাঁকুড়া , ওয়েস্ট বেঙ্গল। |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.