ট্রাভেল || উদ্দেশ্য বাঁকুড়া (পর্ব - ০২)
নমস্কার,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমি যদিও খুব বেশি ভালো নেই কারণ বিগত কিছুদিন ধরে আমার শরীরটা একটু খারাপ। |
---|
আজকের নতুন একটি ব্লগে সবাইকে স্বাগতম। আজকের এই ব্লগে আমি তোমাদের সাথে "উদ্দেশ্য বাঁকুড়া" ভ্রমনমূলক ব্লগটির দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করবো।
আমি যখন আমাদের নির্দিষ্ট প্লাটফর্মের উদ্দেশ্যে রওনা করেছিলাম তখন আশেপাশের সবকিছু দেখতে দেখতেই আমি এগিয়ে যাচ্ছিলাম। এই সময় বেশ ইন্টারেস্টিং কিছু বিষয় আমার নজরে আসে। এর মধ্যে সবথেকে বেশি যে বিষয়টি ভালো লেগেছিল তা হলো প্ল্যাটফর্মের একবারে উপরের অংশে আমাদের কলকাতার বিভিন্ন বিষয়কে তুলে ধরা হয়েছিল আর্টের মাধ্যমে। তবে সেই আর্ট গুলো টাইলস দিয়ে তৈরি করা ছিল। দূর থেকে দেখে তো সেটাই মনে হচ্ছিল। আমাদের কলকাতার বিখ্যাত কিছু স্থাপত্য, বিখ্যাত কিছু মানুষের চিত্র সেখানে দেখা যাচ্ছিল।
এগুলো করার ফলে দেশের বাইরে থেকে বা অন্য কোনো রাজ্য থেকে কেউ যখন আমাদের রাজ্যের এই হাওড়া স্টেশনে আসবে তখন তারা এই সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা অর্জন করতে পারবে। যাইহোক, এই হাওড়া স্টেশন কিন্তু অনেক বড়, আমাদের পশ্চিমবঙ্গের সব থেকে বড় স্টেশন হলো এটি। এই স্টেশনটি বেশ ফেমাসও । তোমরা বিভিন্ন সিনেমাতে এই হাওড়া স্টেশন অনেক জায়গায় দেখতে পাবে। এই হাওড়া স্টেশনে আসার পর হাওড়া স্টেশনের বিভিন্ন জায়গায় অনেক অসহায় মানুষকে আমি দেখতে পাই। এর মধ্যে অনেকে এমন ছিল যাদের থাকার জায়গা ছিল না, তাই স্টেশনে এসে নিজেদের থাকার করে নিয়েছে। আবার অনেক যাত্রীও সেখানে ছিল যারা এখানে বসে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিল অথবা ট্রেন থেকে এখানে নেমে অন্য কারো জন্য অপেক্ষা করছিল।
যাইহোক, এসব আশেপাশের সবকিছু দেখতে দেখতে আমরা এগিয়ে যেতে থাকি। খুব দ্রুত দ্রুত চারপাশে চোখ বুলিয়ে আমরা এক অংশ থেকে বেরিয়ে অন্য আরেকটা অংশে চলে যাই। যাইহোক, কয়েক মিনিট হেঁটে যাওয়ার পর আমরা আমাদের নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মটিতে পৌঁছে গেছিলাম। সেখানে আসার পর চোখে পড়ে হাজার হাজার মানুষের ভিড়। আমরা পূর্বে যে প্ল্যাটফর্মটিতে ছিলাম সেখানে কিন্তু এত মানুষের ভিড় ছিল না। এখানে আরো বেশি মানুষের ভিড় দেখতে পাই।
এখানে কেউ বসেছিল আবার কেউবা দাঁড়িয়েছিল। তবে প্রত্যেকেরই চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল কেউ ভালো নেই। সেদিন প্রচন্ড গরমও পড়েছিল, এই গরমে প্রত্যকের অবস্থা খারাপ হয়ে দাঁড়িয়েছিল আর কি। এই প্লাটফর্মে আসার পর আমারও প্রচন্ড গরম লাগছিল। এইখানে গিয়ে বসারও কোন জায়গা পাচ্ছিলাম আমরা । তাছাড়া ফ্যানেরও সেরকম কোন ব্যবস্থা ছিল না এই জায়গায়। এইজন্য এখানে আসার পরে প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছিল। এখানে এসে আমি আমাদের বাঁকুড়ার উদ্দেশ্যে যে ট্রেন যাবে, সেই সম্পর্কে আশেপাশের লোকদের কাছে ইনফরমেশন নেওয়া শুরু করি। আর প্রত্যেকেরই একটা কথা কমন ছিল সেইটা হলো, "এই ট্রেনটা অনেক লেট করে আসে এবং লেট করে ছাড়ে"। এই কথা শুনে আমাদের চিন্তা আরও বেড়ে গেছিল।
যাইহোক, এই গরমের মধ্যে বেশিক্ষণ বাইরে থাকাও যাচ্ছিল না। সেদিন আমার ব্লগিং এর কাজও কমপ্লিট হয়নি, সেজন্য আমি প্লাটফর্মের এই অংশ থেকে বের হয়ে, বাইরের একটা নিরিবিলি জায়গায় এসে আমার ব্লগিং এর কাজ কমপ্লিট করি। তারপর পুনরায় এই প্লাটফর্মে এসে আরও ৩০ মিনিট এর মত অপেক্ষা করতে হয় আমাদের ট্রেনের জন্য। অবশেষে ট্রেন আমাদের প্ল্যাটফর্মে চলে আসে। তবে ১৯ নাম্বার প্ল্যাটফর্মে ট্রেন দেওয়ার কথা থাকলেও তার পাশের প্ল্যাটফর্ম অর্থাৎ ২০ নাম্বারে আমাদের এই ট্রেনটি আসে। মাঝে মাঝে এরকমটা হয়, যে প্লাটফর্মে দেওয়ার কথা থাকে সেটাতে না দিয়ে পাশে বা অন্য কোন প্লাটফর্মে ট্রেনগুলো দিয়ে থাকে। যাইহোক, যেহেতু এসি কম্পার্টমেন্টের টিকিট কেটেছিলাম, সেজন্যই মূলত আমরা তাড়াতাড়ি করে আমাদের কম্পার্টমেন্ট খুঁজতে চলে যাই । কারণ বাইরে যে গরমের পরিস্থিতি ছিল তাতে ভিতরে গিয়ে একটু শান্তি অনুভব করা যাবে, এমনটাই আমাদের ধারণা ছিল।
অবশেষে খোঁজাখুঁজি করে আমরা আমাদের নির্দিষ্ট কম্পার্টমেন্টে পৌঁছে যাই এবং আমরা আমাদের নির্দিষ্ট বসার ও ঘুমানোর জায়গা খুঁজে পাই। আমাদের ট্রেন যে টাইমে ছাড়ার কথা ছিল সেই টাইমে ছাড়েনি। তার থেকে প্রায় ৩০ মিনিট লেট করে আমাদের ট্রেন ছাড়ে। আমাদের আশেপাশে যে মানুষগুলো ছিল তাদের দেখে বেশ ভালই লাগছিল। যদিও আমরা তাদের কারো সাথে কথা বলিনি, যে যার মত করেই ছিলাম। যেহেতু অনেকটা রাত হয়ে গেছিল তাই সবাই কিছু সময় বসে থেকে, তারপর গিয়ে যে যার মত করে শুয়ে পড়ে। আমরাও সেই সময় শুয়ে পড়ি। তারপর আমাদের ট্রেন চলতে থাকে।
চলবে..
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ট্রাভেল |
---|---|
ডিভাইস | Samsung Galaxy M31s |
ফটোগ্রাফার | @ronggin |
লোকেশন | হাওড়া , ওয়েস্ট বেঙ্গল। |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ট্রাভেল করতে আমারও অনেক ভালো লাগে। তবে সময়ের অভাবে করা হয় না। ইচ্ছে আছে একদিন অনেক দেশ ট্রাভেল করে নিজের ইচ্ছে পূরণ করবো৷ যাইহোক আপনি বাঁকুড়ার উদ্দেশ্য ট্রাভেল করেছিলেন। আপনি ট্রেনে ট্রাভেল করেছিলেন এটা বেশ মজার জার্নি। তবে এটা জেনে খারাপ লাগলো নির্দিষ্ট সময়ের পরে ট্রেন ছেড়েছিল।
আপনার এই ইচ্ছা পূরণ হোক, সেই শুভকামনা রইলো ভাই আপনার জন্য।
হাওড়া স্টেশনটি দেখে মনে হচ্ছে বেশ উন্নত একটি স্টেশন।আর আপনাদের কলকাতার ট্রেন গুলো তো আরো বেশি উন্নত মনে হচ্ছে। তবে আমার কাছে বিশেষ করে স্টেশনের সৌন্দর্য টি সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে। আপনাদের কলকাতার বেশ কিছু ঐতিহ্য এই স্টেশনের মধ্যে ধারণ করেছে। এরকম সুন্দর একটি ভ্রমণ পোস্ট আমাদের শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
মোটামুটি উন্নত বলা চলে ভাই। বিশেষ করে দূরপাল্লার ট্রেন গুলো একটু বেশি উন্নত হয়ে থাকে।
নির্দিষ্ট সময় পরে ট্রেন ছেড়েছে যানতে পেরে খারাপই লাগলো।যাই হোক আপনার ভ্রমণের মুহূর্তগুলো দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। আসলে ভ্রমণ করতে আমারও অনেক বেশি ভালো লাগে। তবে সময়ের অভাবে ভ্রমন করা হয় না। আর এই ভ্রমণের মুহূর্তগুলো অসাধারণ হয়ে থাকে। কারণ ভ্রমন করলে সেই জায়গা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারা যায়।
এটা আপনি ঠিক কথা বলেছেন ভাই, ভ্রমন করলে সেই জায়গা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারা যায়।
হ্যাঁ ভাই হাওড়ার এই স্টেশনটা খুবই ফেমাস কারণ বিভিন্ন সিনেমায় এই স্টেশন কে ঘিরেই অভিনয় হয়ে থাকে। বেশ ভালো লাগলো আজকে আবারো এই জায়গা নিয়ে আপনি পোস্ট শেয়ার করেছেন দেখে। অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন আজকের পোস্ট। আর এ থেকে অনেক কিছু জানার সুযোগ হলো আমার।
আমার শেয়ার করা এই ভ্রমন মূলক পোস্ট টি আপনার ভালো লেগেছে, জেনে খুব খুশি হলাম ভাই।
হাওড়া স্টেশন পশ্চিমবঙ্গের সব থেকে বড় স্টেশন, তবে এই স্টেশনে এখনো পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ হয়নি। যেহেতু এটা সবচেয়ে বড় স্টেশন তাই বেশ সুন্দরভাবে কিছু পেইন্টিং করেও স্টেশনটি সাজানো হয়েছে দেখছি। ট্রেন টাইম লেট থাকলে আসলে অনেক খারাপ লাগে। তার মধ্যে আবার প্রচন্ড গরমও ছিল। যাইহোক ট্রেন লেট করলেও শেষ পর্যন্ত এসি কম্পার্টমেন্টে গিয়ে নিশ্চয়ই একটু শান্তি পেয়েছিলেন।
সেটা তো ঠিক কথা দিদি, ট্রেন টাইম লেট থাকলে আসলে অনেক খারাপ লাগে। তবে সত্যি বলতে, সে ক্ষেত্রে আমাদের কারোরই কিছু করার থাকে না।
খুবই সুন্দর একটি ভ্রমনের পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি। আপনার কাছ থেকে এরকম সুন্দর একটি ভ্রমণ দেখে খুবই ভালো লাগলো এবং যেভাবে আপনি সুন্দর ভাবে ফটোগ্রাফির মাধ্যমে এবং এখানে উপভোগ করা মুহূর্তগুলো আমাদের মাঝে ফুটিয়ে তুলেছেন তা দেখে খুবই ভালো লাগছে৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷