ক্রিয়েটিভ রাইটিং || অ্যাডভেঞ্চার গল্প : একদিন জঙ্গলে (পর্ব-০৩)
নমস্কার,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি। |
---|
আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে একটি অ্যাডভেঞ্চার গল্প শেয়ার করবো। গল্পের নাম "একদিন জঙ্গলে"। গল্পটির তৃতীয় পর্ব নিচে দেখে নেওয়া যাক।
রাতের বেলা বাঘের যাতায়াত গাছের উপর শুয়ে শুয়ে যখন তারা দেখছিল, তারা প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেছিল। কিন্তু ভয় পেলেও তারা চিৎকার করেনি। তারা হয়তো কখনো কল্পনাও ভাবেনি একটা রাত তাদের এভাবে জঙ্গলের গাছে কাটাতে হবে। কিন্তু পরিস্থিতি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছিল, তাদের এটা করতেই হচ্ছিল। অন্যদিকে প্রবীণ এবং তপনের বাবা-মা কান্নাকাটি করতে করতে একপ্রকার শোকে চলে যায়। সারারাত ধরে তাদের বাড়ির লোকজন এই কান্নাকাটি করে যায়। তাদের পাশে এই সময় কিছু গ্রামের লোকজনও ছিল যারা তাদের সান্ত্বনা দিয়ে যাচ্ছিল। প্রবীণ এবং তপনকে জীবিত পাওয়ার আশা তারা এক প্রকার ছেড়েই দিয়েছে, তাদের কান্নার সুরে এরকমটাই মনে হচ্ছিল ।
রাতের বেলায় জঙ্গল এক ভয়ানক পরিস্থিতিতে পরিণত হয়। সেদিন পূর্ণিমা রাত ছিল, সেই জন্য আশেপাশের কিছু কিছু জিনিস তারা দুই বন্ধু দেখতেও পাচ্ছিল। তারা রাতের বেলায় খেয়াল করে, তারা যে গাছের উপরে শুয়ে ছিল সেই গাছে শত শত পাখির বাসা এবং রাতের বেলায় পাখিগুলো তাদের মাথার উপরের জায়গাতেই শুয়ে রয়েছে। কিছু কিছু পাখি একদম তাদের কাছেই চলে এসেছিল। হয়তো পাখিগুলো না বুঝেই কাছে চলে এসেছিল কারণ এটা তাদেরই থাকার জায়গা ছিল। এইখানে তো প্রবীণ এবং তপন অতিথির মতো এসে হাজির হয়ে গেছিল। রাতের এই পরিস্থিতি তাদের যেমন অনেক ভয় দিয়েছিল, সেই সাথে কিছু সারপ্রাইজও দিয়েছিল।
রাতের বেলা তারা বানরের মারামারি দেখারও সুযোগ পায়। বানরদেরও যে আলাদা আলাদা গ্রুপ থাকে তারা প্রথম সেটা এই জঙ্গলে গিয়েই বুঝতে পেরেছিল। গাছের নিচ দিয়ে তারা শিয়ালের বড় বড় ঝাঁক যেতে দেখে। আর শিয়ালের সেই ভয়ানক হুক্কা হুয়া ডাকও তারা শুনতে পায়। শিয়াল একবার ডাকা শুরু করলে তারা আর থামতেই চায় না। কারণ একটা শিয়াল ডাক দিলেই সব কয়টা শিয়াল একসাথে ডাকা শুরু করে দেয়। যা এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করে দেয়। সেই রাতে তারা এটাও খেয়াল করে, জঙ্গল কিছু সময়ের জন্য একদম শান্ত হয়ে যাচ্ছিল আবার কিছু কিছু সময় পর চারিদিক থেকে ভয়ঙ্কর সব আওয়াজের ধ্বনি ভেসে আসছিল।
তাদের বয়স বেশি ছিল না কিন্তু তারা এই যে ব্যাপার গুলো এক্সপেরিয়েন্স করছিল তা তাদের জন্য স্বাভাবিক ছিল না। এইভাবে তাদের রাত কোন মতন কেটে যায়। সকাল হতেই তারা জঙ্গলের আরেক রকম দৃশ্য দেখতে পায়। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে তাদের খিদেও লেগে যায়। কারণ গতকাল থেকেই তারা না খেয়ে রয়েছে। তাছাড়া গত কাল রাতে তাদের জল তেষ্টাও পেয়েছিল কিন্তু তারা সামান্য জলটুকুও রাতে খেতে পারেনি। তাই সকালে দুই বন্ধু প্রথমে জলের সন্ধান করতে যায়। তারা জঙ্গলের মধ্যে অনেক খোঁজাখুঁজি করার পরে ছোট্ট একটা জলাশয়ের মত জায়গা পায়। যদিও সেই জলাশয়ের জলটা পরিষ্কার ছিল না কিন্তু তাদের এতটাই জলতেষ্টা পেয়েছিল যে এই জল খাওয়ার জন্য তারা অনেকটাই বাধ্য হয়।
তারা সেই জলাশয় থেকে জল খেয়ে যখন সেই জলাশয়ের পাশে কিছু সময়ের জন্য বসে, ঠিক সেই সময় তারা খেয়াল করে জলাশয়ের অন্যপাশে কুমির শুয়ে রয়েছে। তারা হঠাৎ করেই ভয় পেয়ে যায় এত কাছ থেকে কুমির দেখতে পেয়ে! জলাশয় থেকে তারা যখন জল খাচ্ছিলো সেই সময় কুমিরের আক্রমণও তাদের সাথে হতে পারতো। তবে সেটা তখন হয়নি, এটা তাদের ভালো ভাগ্য বলা চলে। আসলে এই জলাশয়ে অনেক কুমিরই ছিল যা তারা কিছু সময় পরেই দেখতে পায়।
চলবে...
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ক্রিয়েটিভ রাইটিং (অ্যাডভেঞ্চার গল্প) |
---|---|
লোকেশন | বারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল। |
একদিন জঙ্গলে এই গল্পটার প্রথম দুই পর্ব আমার পড়া হয়েছে। আর তৃতীয় পর্বের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। আজকে আপনি তৃতীয় পর্বটা এত সুন্দর করে শেয়ার করেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। তারা দুইজন অনেক কিছুই দেখেছিল জঙ্গলের মধ্যে গাছের উপর থেকে। পানি খাওয়ার সময় তাদেরকে কুমির আক্রমণ করেনি শুনে ভালো লাগলো। আমি তো শুধু এটা ভাবতেছি তাদেরকে তাদের বাবা-মা জীবিত অবস্থায় ফিরে পাবে কিনা। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়। অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য। ধন্যবাদ আপনাকে এই পর্ব টা শেয়ার করার জন্য।
আর দুটি পর্ব অপেক্ষা করলেই এই ব্যাপারটা জানতে পারবেন ভাই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সুন্দর করে আপনি এই পর্বটা শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লেগেছে। আমার কাছে আপনার লেখা গল্প খুব ভালো লেগেছে। আপনি এই গল্পটার সবগুলো পর্ব সুন্দর করে শেয়ার করতেছেন আমাদের মাঝে। দেখতে দেখতে গল্পটার তিনটা পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে আর তিনটা পর্ব আমি পড়েছি। দ্বিতীয় পর্ব পড়ার পর আমি শুধু ভাবছিলাম তারা দুইজন গাছের উপর থেকে কখন নামবে, আর তাদের সাথে খারাপ কোন কিছু হবে না তো?? যেহেতু পানির তৃষ্ণা তাদের বেশি পেয়েছিল, তাই পানি নোংরা হলেও তাদের খাওয়া লেগেছে। আশা করছি তারা ভালোভাবেই পারবে জঙ্গল থেকে বের হতে। গল্পটার শেষে আশা করছি খারাপ কিছু হবে না। তাদের দুজনের জন্য খুব ভয় লাগতেছে আমার সেই প্রথম থেকেই।
গল্পের সমীকরণ আস্তে আস্তে যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে ভয় লাগাটাই স্বাভাবিক আপু। তাদের সাথে আসলে কি হয়েছিল, সেটা শেষের পর্বেই জানা যাবে আপু।
খুব সুন্দর একটি গল্প আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করে যাচ্ছেন। এই গল্পের পূর্ববর্তী পর্ব আমি পড়েছিলাম৷ আজকের পর্ব পড়েও খুবই ভালো লাগলো৷ আসলে সে দুজন ব্যক্তি যখন গাছের উপরে উঠে গিয়েছিল এবং তাদের অনেকটাই ভয় লাগছিল আমারও অনেক ভয় লাগছিল। তাদের এখন কি হবে এবং তারা কোন খারাপ পরিস্থিতির শিকার হবে৷ এই ভাবতে ভাবতে অনেক ভয় লাগছিল৷ তবে তাদের অনেক পানির তৃষ্ণা লেগেছিল৷ আসলে এরকম পরিস্থিতিতে মানুষের মাথা কাজ করাটাও অনেক কঠিন একটি ব্যাপার৷ কারণ ভয় এর ফলে মানুষ এতটাই আতঙ্কিত হয়ে যায় যে কোন কিছুই করতে পারে না৷ আশা করি পরবর্তী পর্বে আরো অনেক কিছু জানতে পারবো৷
হ্যাঁ ভাই, পরবর্তী পর্বে আরো অনেক কিছু জানতে পারবেন। আপনার এই মন্তব্যটির জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
https://twitter.com/ronggin0/status/1770404946661523483?t=XYe2gdPnZx10olYv43yosw&s=19