ক্রিয়েটিভ রাইটিং || অ্যাডভেঞ্চার গল্প : একদিন জঙ্গলে (পর্ব-০২)

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি।

আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে একটি অ্যাডভেঞ্চার গল্প শেয়ার করবো। গল্পের নাম "একদিন জঙ্গলে"। গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব নিচে দেখে নেওয়া যাক।

ai-generated-8394702_1280.jpg

ইমেজ সোর্স

প্রথম পর্বের লিংক

এই জঙ্গল তাদের কাছে পুরোটাই অজানা ছিল। তারা যে কোনদিন এরকম পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে পারে তারা হয়তো কখনো স্বপ্নেও ভেবে দেখেনি। এইবার তাদের মধ্যে অনেক বেশি ভয়ের সঞ্চার ঘটে। কারণ সূর্যের আলো নিভে যাওয়ার সময় চলে আসে। অন্যদিকে গ্রামের যে লোকগুলো জঙ্গলে বাঘে ধরে নিয়ে যাওয়া লোকটিকে খোঁজার জন্য এসেছিল, তারাও সেই বাঘে ধরা লোকটিকে খুঁজে না পেয়ে বাড়িতে চলে যায়

দুপুরের পর থেকে প্রবীণ এবং তপন বাড়িতে না আসায় তাদের বাড়ির লোকজনও অনেক চিন্তায় পড়ে যায়। তারা চারপাশে খোঁজাখুঁজি শুরু করে এবং যে লোক গুলো বাঘে ধরে যাওয়া লোকটিকে খোঁজার জন্য জঙ্গলে গেছিল তাদের কাছেও খোঁজ নিতে থাকে। তবে তারাও এই সম্পর্কে বেশি কিছু বলতে পারেনা। কারণ ওই পরিস্থিতিতে কেউ কারো খেয়াল রাখতে পারবে না, এটাই স্বাভাবিক। তবে তাদের মধ্যে থাকা কয়েকজন লোক এটা কনফার্ম করে দেয় যে, প্রবীণ এবং তপন জঙ্গলের মধ্যে ঢুকেছিল। এই কথা শোনার পরে প্রবীণের এবং তপনের বাবা-মা অনেক চিন্তিত হয়ে পড়ে। তারা তখন গ্রামের কিছু লোকজন জড়ো করে ওই সময়েই জঙ্গলের ভিতরে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে রওনা করে।

তবে এত বড় জঙ্গলে চাইলেই খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয় না। আর তারা কোন দিক থেকে জঙ্গলে গেছে আর এখনই বা কোন দিকে রয়েছে, সেটা জানাও অনেকটা মুশকিল কাজ ছিল। তবে বাবা মায়ের মন আর স্থির হতে পারে না। তারা ১০ থেকে ১৫ জনের একটা গ্রুপ করে এই জঙ্গলে চলে যায়। প্রবীণ এবং তপন দু'জনেই গ্রামের ছেলে ছিল। সেই জন্য তারা গাছে উঠতে পারত। যখন বিকেলের সময় হয়, তারা আর সামনের দিকে না গিয়ে একটা গাছের উপরে গিয়ে বসে পড়ে। তারা নিজেদেরকে নিরাপদ রাখার জন্য তৎক্ষণাৎ ভাবে এই বুদ্ধিটি বের করে। তবে জঙ্গলে কোন জায়গাই নিরাপদ নয়। কারণ অনেক হিংস্র পশু গাছেও উঠতে পারে। তাছাড়া গাছে সাপেরও ভয় থাকে। তবে গাছের উপরে থাকলে বাঘের থেকে কিছুটা নিরাপদে তারা থাকতে পারবে, এটা তারা সেই মুহূর্তে মনে করে।

তারা জঙ্গলে থাকা একটা মোটা গাছে উঠেছিল। যেখানে গিয়ে তারা বসে থাকার পাশাপাশি শুয়েও থাকতে পারবে এরকম ছিল গাছটি। সারাদিনে অনেকটা হাঁটাহাঁটি করার পর তাদের জল তেষ্টাও পেয়ে গেছিল। কিন্তু এই জঙ্গলের মধ্যে তারা জল কোথায় পাবে তাই নিয়েই তারা চিন্তা শুরু করে। জঙ্গলে অনেক জলাশয় থাকে আর যেখানে পানীয় জল পাওয়া যেতে পারে। তবে সেই সব জায়গার জল পান করলে মানুষ অনেক সময় অসুস্থও হয়ে যেতে পারে। কারণ সব জায়গার জল নিরাপদ নাও হতে পারে। তবে ওরা ছোট মানুষ ছিল, এগুলো বুঝবে কি করে! যদিও তখন চারিদিকে অন্ধকার নেমে এসেছিল, সেই জন্য তারা আর জল খোঁজার জন্য যায় না।

অনেকটা জল তেষ্টা নিয়েই তারা গাছের উপর বসে থাকে এবং অপেক্ষা করতে থাকে এটা ভেবে, হয়তো তাদের পরিবারের লোকজন তাদের খুঁজে নিতে আসবে। এভাবে অনেকটা সময় কেটে যায়। প্রবীণ এবং তপনের বাবা মা যাদের নিয়ে জঙ্গলে এসেছিল, তারা ৪-৫ ঘন্টা ধরে জঙ্গলে ওই দুইজনকে খুঁজে না পেয়ে বাড়িতে ফিরে যায়। তারা অনেকটা আশা ছেড়ে দেয় কারণ এই জঙ্গলে অনেক আগে থেকেই বাঘের ভয় ছিল। সেই রাতে প্রবীণ এবং তপন গাছ থেকে না নেমে, সেই গাছেই ঘুমিয়ে পড়েছিল। তারা যখন রাতের বেলায় গাছের উপরে ছিল তারা এটা খেয়াল করে যে, সেই গাছের নিচ দিয়ে কয়েকবার বাঘের যাতায়াত ঘটেছে

চলবে...


পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীক্রিয়েটিভ রাইটিং (অ্যাডভেঞ্চার গল্প)
লোকেশনবারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল।
বন্ধুরা, আমার আজকে শেয়ার করা "একদিন জঙ্গলে" গল্পের দ্বিতীয় পর্ব টি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

IMG_20220728_164437.jpg

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 4 months ago 

প্রবীণ এবং তপনের বাবা-মা দেখছি গ্রামবাসীকে নিয়ে অনেকক্ষণ পর্যন্ত জঙ্গলে খোঁজাখুঁজি করেছিল তাদেরকে। কিন্তু তাদেরকে তারা পায়নি এটা শুনে সত্যি খুব খারাপ লাগলো। ভাগ্য ভালো ছিল যে তারা একটা গাছ পেয়েছিল আশ্রয় নেওয়ার জন্য। এখন তো দেখছি সেই গাছের মধ্যেই তারা ঘুমিয়ে পড়েছিল রাত হয়ে গিয়েছিল এজন্য। যেহেতু জঙ্গল তাই গাছের নিচ দিয়েও বাঘের যাতায়াত ঘটবে এটা স্বাভাবিক। তবে আশা করছি তাদের কোনরকম কোন ক্ষতি হবে না। দেখতে হবে এই গল্পটার তৃতীয় পর্বে কি হবে।

 4 months ago 

তবে আশা করছি তাদের কোনরকম কোন ক্ষতি হবে না।

এই জঙ্গলে যে কোন কিছুই হতে পারে । যাইহোক, প্রবীণ এবং তপনের সাথে কি হয়, সেটা জানার জন্য তো একটু অপেক্ষা করতে হবে ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

অ্যাডভেঞ্চার গল্প পড়তে আমি খুব পছন্দ করি। আগে বইমেলা থেকে উপন্যাস,গল্প আর অ্যাডভেঞ্চার গল্পের বই অনেক আনা হতো। কিন্তু বর্তমানে সেই সুযোগ আর হয়না। আজ আপনার অ্যাডভেঞ্চার গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো। প্রবীণ আর তপন দেখছি জঙ্গলে ঢুকে খুব বিপদে পড়েছে। এমন রসহ্য ঘেরা গল্প পড়তে খুব ভালো লাগে। অনেক সময় বিপদ থেকে বাঁচার জন্য গাছ নিরাপদ হয়ে থাকে। কিন্তু জঙ্গলের ভিতরে কোনো কিছুই নিরাপদ নয়। তাদের বাবা মা খুঁজে না পেয়ে ফিরে গিয়েছে আর এদিকে প্রবীণ আর তপনের জল তেষ্টা পেলেও তারা নামতে পারছে না। এভাবেই রাত হয়ে যায় আর তারা দু'জন গাছের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়ে। এদিকে রাতের বেলা আবার গাছের নিচে বাঘ ঘোরাঘুরি করছে কয়েকবার। এরপর কি হলো জানার অপেক্ষায় রইলাম।

 4 months ago 

আমার শেয়ার করা এই গল্পটি পড়ে, আপনার সুন্দর এই মন্তব্যটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে। গল্পের পরে কি হল, তা জানার জন্য পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আপু। 🤭

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 67334.64
ETH 3519.34
USDT 1.00
SBD 3.10