ট্রাভেল || উদ্দেশ্য বাঁকুড়া (পর্ব - ০১)
নমস্কার,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি। |
---|
ভ্রমন করতে ভালোবাসে না, এরকম মানুষ হয়তো খুঁজলেও পাওয়া যাবে না। সুযোগ পেলেই সবাই ভ্রমণ করতে চায়। তবে এই গরমের মধ্যে ভ্রমণ করা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং একটা ব্যাপার। এই গরমে চাইলেও সব সময় কমফোর্ট ভাবে জার্নি করাটাও সম্ভব হয় না । যাইহোক, এবার একটা বিশেষ কারণে পরিবারের সাথে বাঁকুড়া ভ্রমণের সুযোগ পেয়েছিলাম। ভ্রমণের প্ল্যানটা হঠাৎ করেই হয়ে গেছিল। এই ভ্রমনের জন্য মানসিকভাবেও প্রস্তুত ছিলাম না আমি। যাইহোক, সিদ্ধান্ত নেওয়ার একদিনের মধ্যেই বাঁকুড়া যাওয়ার জন্য হাওড়া টু বাঁকুড়া ট্রেনের টিকিট কাটা হয়।
যাইহোক, আমাদের বাড়ি থেকে হাওড়া অনেক দূরের পথ। টিকিট কাটার পরের দিন আমাদের ট্রেন ছিল রাত ১২ঃ০৫ am এর সময় । তবে আমরা বাড়ি থেকে রওনা করেছিলাম পূর্বের দিন রাত ৯ টার দিকেই । হাতে ৩ ঘন্টা রেখেই বাড়ি থেকে রওনা করেছিলাম কারণ আমাদের বাড়ি থেকে হাওড়া পৌঁছাতে পৌঁছাতে মোটামুটিভাবে দুই ঘন্টার মত সময় লেগে যায়। তাছাড়া হাতে ১ ঘন্টা এক্সট্রা রেখেছিলাম নিজেদের অন্যান্য কাজের সুবিধার্থে। দূরত্ব অনেক বেশি না হলেও প্রথমে আমাদের বাড়ি থেকে শিয়ালদহ নামার পরে , পুনরায় আবার শিয়ালদহ থেকে হাওড়া যেতে অনেকটা সময় লেগে যায়, কোনো সময় জ্যামের কারণে আবার কোনো সময় বাস দেরি করে আসার কারণে।
আর বিশেষ করে রাতের দিকেই এই জ্যামটা বেশি দেখা যায়। তাছাড়া বাড়ি থেকে একটু আগে আগে রওনা হওয়ার প্রধান আর একটা কারণ হলো অনেক সময় ট্রেন লেটে আসে আমাদের এই জায়গা দিয়ে শিয়ালদহ যাওয়ার ট্রেন গুলো । এইসব কথা ভেবেই অনেকটা আগে বাড়ি থেকে রওনা করে দিয়েছিলাম আর কি আমরা সবাই। আমাদের নিকটবর্তী রেলস্টেশনে ট্রেন নির্ধারিত যে টাইমে আসার কথা ছিল তার থেকেও ৩০ মিনিট লেটে এসেছিল, যেমনটা আমারাও আগেই ভেবে রেখেছিলাম। যাইহোক, আমরা মোটামুটি সাড়ে নয়টার একটু পরের ট্রেন ধরে রওনা করি প্রথমে শিয়ালদহ স্টেশনের উদ্দেশ্যে। শিয়ালদহ পৌঁছাতে পৌঁছাতে মোটামুটি এক ঘণ্টার মতো সময় লেগে গেছিল আমাদের। তারপর সেখান থেকে হাওড়া বাসে যেতে অনেকটা সময় লেগে যেত, সেজন্য আমরা হলুদ ট্যাক্সি করে হাওড়া যাওয়ার সিদ্ধান্ত নি ।
এই হলুদ ট্যাক্সিগুলো অন্য জায়গায় পাওয়া যায় কিনা আমি তা জানি না। তবে আমাদের কলকাতাতে অনেক বেশি দেখা যায়। যাইহোক, প্রথমে হলুদ ট্যাক্সি ঠিক করার পূর্বে অনেক ট্যাক্সি ড্রাইভার আমাদের কাছে আমাদের ডেস্টিনেশন জিজ্ঞেস করে। আমরা ডেস্টিনেশন বললে, আমাদের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া চেয়ে বসে তারা। শিয়ালদহ থেকে হাওড়া খুব বেশি দূরের পথ নয়। তবে বাসে করে যেতে অনেকটা সময় লেগে যায় রাতে যানযটের কারণে। যাইহোক, আমরা আমাদের পছন্দ মত একটা হলুদ ট্যাক্সি ঠিক করার পর রওনা করি হাওড়া স্টেশনের উদ্দেশ্যে। যেহেতু আমরা ট্যাক্সিতে করে গেছিলাম তাই আমাদের খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন পড়েনি। আমরা আমাদের নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পূর্বেই হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে যাই।
হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে ইচ্ছে ছিল হাওড়া ব্রিজ দেখবো। কিন্তু আমাদের গাড়ি চালক অনেকটা স্টেশনের গেটের কাছে আমাদের নামিয়ে দেয়। সেই জন্য আর আমরা উল্টো ঘুরে হাওড়া ব্রিজ দেখতে যাইনি। হাওড়া স্টেশনের বাইরে নেমে আমরা আমাদের বেডিংগুলো নিয়ে হাওড়া স্টেশনের মধ্যে প্রবেশ করি। এই হাওড়া স্টেশন কিন্তু অনেক বড় একটা স্টেশন। সেখানে গিয়ে আমরা প্রথমে শিওর ছিলাম না আমাদের বাঁকুড়া যাওয়ার ট্রেন কোন প্লাটফর্ম থেকে ছাড়বে। যাইহোক, আমরা অনেক লোকের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে আমাদের ট্রেন কোন প্লাটফর্ম থেকে যাবে সেই সম্পর্কে কনফার্ম হই। আমরা স্টেশনের যে দিকটাতে ছিলাম তার বিপরীত দিকে ছিল আমাদের যাওয়ার জায়গা। অর্থাৎ সেখান থেকে আমাদের ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল।
আমরা প্রথমে এই স্টেশনে পৌঁছেই কিছু খাবার কিনে নিয়েছিলাম নিজেদের জন্য কারণ রাতে আমরা না খেয়েই বেরিয়েছিলাম। আর ট্রেনে খাওয়ার পাওয়া যাবে কিনা ঐ রাতে, সেই সম্পর্কে আমরা শিওরও ছিলাম না। তাই কিছু খাবার আমরা স্টেশনে গিয়েই কিনে ফেলি । এই স্টেশনে এসে যেহেতু অনেকটা সময় পেয়েছিলাম তাই স্টেশনের চারপাশে একটু ঘুরাঘুরিও করে নিয়েছিলাম। অনেক ফটোগ্রাফিও করেছিলাম এই স্টেশনে এসে। এই স্টেশনে আমি এর আগেও অনেকবার এসেছি। যাইহোক, খাবার কেনা ও আশেপাশে একটু ঘুরাঘুরি শেষ হলে আমরা রওনা করি আমাদের নির্দিষ্ট প্লাটফর্মের উদ্দেশ্যে।
চলবে...
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ট্রাভেল |
---|---|
ডিভাইস | Samsung Galaxy M31s |
ফটোগ্রাফার | @ronggin |
লোকেশন-০১: ফটোগ্রাফি -০২ | শিয়ালদহ , ওয়েস্ট বেঙ্গল। |
লোকেশন- ০২: ফটোগ্রাফি- ০১, ০৩-১৫ | হাওড়া , ওয়েস্ট বেঙ্গল। |
এই প্রচন্ড গরমে ঘোরাঘুরি করা সত্যিই অস্বস্তিকর ।যদিও ঘোরাঘুরি করতে খুবই পছন্দ করি কিন্তু মন থেকে ইচ্ছা করে না এই সময় কোথাও যাওয়ার। যাই হোক হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মাধ্যমে ঘুরতে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হওয়া। আসলে সেই মুহূর্তটা অনেক আনন্দের হয়ে থাকে। আপনার মত আমরাও কোথাও ঘুরতে গেলে যেখানে লাগবে দুই ঘন্টা আমরা তিন থেকে চার ঘন্টা আগে বের হই। কারণ আমাদের গন্তব্যে যাওয়ার জন্য ট্রেন বা বাসে যাওয়ার মুহূর্তের আগে সেই মুহূর্তটা ভালই উপভোগ করি । আপনার যাত্রা পথের গল্প পড়ে ভালই লাগলো।
কোথাও ঘুরতে যাওয়ার আগে বাড়ি থেকে একটু আগে আগে বের হওয়াই উচিত কাজ ভাই। যাইহোক, আমার এই ভ্রমণের গল্প পড়ে আপনার ভালো লেগেছে, জেনে আমারও ভালো লাগলো ভাই।
আপনাদের পশ্চিমবাংলার সিনেমা গুলোতে এই স্টেশন সম্পর্কে অনেক দেখেছি ও শুনেছি। হাওড়া বাঁকুড়া সহ আরো অনেক স্টেশনের ভিডিও লক্ষ্য করা যায় সিনেমার মধ্যে। যাহোক খুবই ভালো লাগলো ভাই। আপনার ভ্রমণ বিষয়ক পোস্টটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। খুব চমৎকার ভাবে আপনি অনেকগুলো ভিডিওর সাথে বর্ণনা সাথে উপস্থাপন করেছেন। হয়তো ব্রিজটা দেখার সুযোগ হয়নি স্টেশনের নিকটে আপনাদের নামিয়ে দিয়েছে, তবে পরবর্তীতে হয়তো যে কোন মুহূর্তে দেখার সুযোগ পেয়ে যাবেন।
ভাই, আমি তো কোন ভিডিও শেয়ার করিনি। আপনি হয়তো ফটো বলতে গিয়ে ভিডিও বলে ফেলেছেন।
এটা ঠিক কথা বলেছেন ভাই।
ঠিকই বলেছেন,এই গরমে ঘোরাঘুরি করাটাও অনেকটা চ্যালেঞ্জিং এর একটা ব্যাপার। যাইহোক হঠাৎ করে প্ল্যান করে ফেলেছিলেন ফ্যামিলির সাথে , তাই চটজলদি একটা ট্যুরও হয়ে গেল। তবে হাওড়া ব্রিজটা আপনারা দেখতে পেলেন না জেনে একটু খারাপ লাগলো। পরবর্তীতে আশা করি সেটিও দেখা হয়ে যাবে।
দিদি, হাওড়া ব্রিজ দেখতে গেলে উল্টো দিকে আমাদের যেতে হতো, সেই জন্য আর এইবার দেখা হয়নি হাওড়া ব্রিজ ওইখানে গিয়ে।