ক্রিয়েটিভ রাইটিং || অ্যাডভেঞ্চার গল্প : একদিন জঙ্গলে (পর্ব-০৬) শেষ পর্ব
নমস্কার,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি। |
---|
আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে একটি অ্যাডভেঞ্চার গল্প শেয়ার করবো। গল্পের নাম "একদিন জঙ্গলে"।গল্পটির ষষ্ঠ পর্ব বা শেষ পর্ব টি নিচে দেখে নেওয়া যাক।
এইসময় তারা যে একটু সাহস করে সেই বাঘে খাওয়া মৃত মানুষটার কাছে যাবে, এরকম ক্ষমতা তাদের ছিল না। এরকম দৃশ্য যে তাদের কোনো দিন দেখতে হবে, হয়তো তারা তা কোনদিন স্বপ্নেও ভাবে নি। তারা এই দৃশ্য দেখে চিৎকার করে পাশে থাকা একটি গাছের উপরে উঠে পড়ে। তারা এই জঙ্গলে বারবার গাছের উপরে উঠে পড়ছিল। তারা এই কাজটাকে নিরাপদ মনে করছিল, এই জন্যই হয়তো এমনটা বারবার করছিল।
যাইহোক, কয়েক মিনিট গাছে থাকার পরে তারা এটা লক্ষ্য করে, কোথা থেকে বাঘ চলে এসেছে সেই মৃত মানুষটির পাশে। বাঘের শিকার বলে কথা, সেখানে এসে সে তার শিকার খাওয়া শুরু করে। প্রবীন এবং তপন চোখের সামনে এরকম দৃশ্য দেখে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মত অবস্থায় চলে যায়। কিন্তু কোন রকম করে তারা গাছের ডাল ধরে বসে থাকে এই সময়। তারা তখন শুধু সৃষ্টিকর্তার কাছে এটা প্রার্থনা করতে থাকে যে, তাদের বাড়ির লোকজনরা যেন তাদের সেখানে খুঁজতে চলে আসে। এভাবে ১৫ থেকে ২০ মিনিট কেটে যায়। তারপর তারা খেয়াল করে তাদের পরিবারের লোকজন চিৎকার করতে করতে সেই জায়গায় উপস্থিত হয়ে পড়েছে।
যেহেতু তারা অনেক জনের একটা গ্রুপ করে এসেছিল, তাই তারা অনেক জন মিলে চিৎকার করে সেই বাঘটিকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয় এবং সেই মৃত মানুষের দেহটাকে উদ্ধার করে। এই দেখে প্রবীণ ও তপন কিছুটা স্বস্তি পায় এবং চিৎকার ও কান্না করতে করতে গাছ থেকে নেমে আসে। এই জঙ্গলে এসে তারা বাঘের শিকার না হয়েও যে বেঁচে গেছে, এই দেখে তাদের পরিবারের লোকজন অনেক খুশি হয়ে যায়। হঠাৎ করে দুঃখের মুহূর্তের মধ্যেও কেমন জানি একটা আনন্দের ছোঁয়া খুঁজে পায় সবাই। তবে যে লোকটি মারা গেছিল তাই নিয়ে সবাই দুঃখী হয়। মৃত মানুষটির পরিবারের দুইজন লোকও ছিল সেখানে, তারা কান্নায় ভেঙে পড়ে সেই মুহূর্তে।
অতঃপর সেইখানে থাকা সবাই মিলে মৃত লোকের দেহটিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা করতে থাকে।গ্রামে যখন খবর ছড়িয়ে যায় প্রবীণ এবং তপনকে জঙ্গলের মধ্যে থেকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া গেছে, গ্রামের মানুষের মধ্যেও একটা খুশির জোয়ার দেখা যাচ্ছিল। সেই সময়টাতে পরিস্থিতি এমন হয়েছিল একদিকে আনন্দ অন্যদিকে দুঃখ। যারা বাড়ি ফিরে এসেছে জীবিত অবস্থায় তার খুশি, অন্যদিকে কেউ বাঘের শিকার হয়ে মারা গেছে সেই দুঃখ। এক অদ্ভুত পরিস্থিতি সেই সময় সেই গ্রামের মানুষ গুলোর মধ্যে দেখা যায়। তবে পরিস্থিতি যেখানে যেমন তাই মেনে নিয়েই জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়। প্রবীণ এবং তপন গ্রামে ফেরার পর প্রত্যেকেই তাদের কাছে তাদের এই জঙ্গল অভিযান সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করে।
যদিও সেই মুহূর্তে প্রবীণ এবং তপন অনেকটা ঘোরের মধ্যে ছিল। ভয় যেন তখনো কাটেনি এরকম একটা ব্যাপার ছিল তাদের মধ্যে। প্রবীণ এবং তপনের স্বাভাবিক হতে তিন থেকে চার দিনের মতো সময় লেগেছিল। কারণ তারা যেসব পরিস্থিতি দেখেছে এবং যে সিচুয়েশনের মধ্য দিয়ে এসেছে, সেটা সত্যিই অনেক বড় ঘটনা ছিল তাদের জন্য। তিন থেকে চার দিন পরে গিয়ে তারা সবার সামনে তাদের এই জঙ্গল অভিযানের পুরো ঘটনা বলে, আর সবাই মুগ্ধ হয়ে তাদের এই ঘটনাগুলো শোনে। এক অদ্ভুত সুন্দর ভয়ংকর জঙ্গল অভিযানের অভিজ্ঞতা হয়েছিল তাদের। তবে তারা যে বেঁচে ফিরতে পেরেছিল এত বড় জঙ্গলের মধ্যে হারিয়ে গিয়েও, এটাই সবাইকে অবাক করেছিল।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ক্রিয়েটিভ রাইটিং (অ্যাডভেঞ্চার গল্প) |
---|---|
লোকেশন | বারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল। |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাইয়া আপনার শেয়ার করা এই গল্পটার প্রত্যেকটা পর্ব আমার পড়া হয়েছে। আর এতদিন তো শেষ পর্বের জন্যই অপেক্ষায় ছিলাম। শেষ পর্বটা যে এত সুন্দর হবে এটা ভাবতেই পারিনি। তাদের দুজনকে তাদের গ্রামবাসী খুজে পেয়েছিল এটা ভাবতেই ভালো লাগতেছে। তবে ওই মানুষটার জন্যও খারাপ লাগতেছে। কারণ ওনাকে তো বাঘে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছিল খেয়ে। তাদের একেবারে ভয়ংকর ভিন্ন রকমের একটা অভিজ্ঞতা হয়েছিল জঙ্গলে এই কয়েকদিন থেকে। অনেক রকমের সিচুয়েশনের মধ্য দিয়ে তারা এসেছিল। তবে বেঁচে ফিরতে পেরেছে এটাতেই অনেক।
আপু, আমার শেয়ার করা এই গল্পের প্রত্যেকটা পর্ব যে আপনি পড়েছেন, সেটা জেনে অনেক ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, আপনার এত সুন্দর মন্তব্যটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
https://twitter.com/ronggin0/status/1777405879534673925?t=npYd1LjXTlgAMY-8sJZGTQ&s=19