ক্রিয়েটিভ রাইটিং || অ্যাডভেঞ্চার গল্প : একদিন জঙ্গলে (পর্ব-০৫)

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago (edited)

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি।

আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে একটি অ্যাডভেঞ্চার গল্প শেয়ার করবো। গল্পের নাম "একদিন জঙ্গলে"। গল্পটির পঞ্চম পর্ব টি নিচে দেখে নেওয়া যাক।

angry-4385233_1280.jpg

ইমেজ সোর্স

চতুর্থ পর্বের লিংক

এত বড় জঙ্গলে প্রবীণ এবং তপনকে তারা কি করে খুঁজে পাবে, এটাই অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ ছিল পরিবারের লোকের জন্য। কারণ এই জঙ্গল কোন ছোট জঙ্গল ছিল না, অনেকটা জায়গা নিয়ে এই জঙ্গলের বিস্তৃতি ছিল। এইদিকে, পুরোপুরি একদিন ধরে না খেয়ে থাকার কারণে তপন এবং প্রবীণের অনেক খিদেও পেয়ে গেছিল। কিন্তু এই জঙ্গলে খাদ্য কি করে আহরণ করতে হয়, সেই সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা ছিল না। তারা খিদের কারণে ভালো করে হাঁটতেও পারছিল না। সকালে যদিও তারা একটু জল খেয়েছিল একটা জলাশয় থেকে, তবে তা দিয়ে তো আর পেট ভরে না। এইসবের মধ্যেও প্রবীণ এবং তপন চলতে থাকে নিজেদের মতো করে।

অন্যদিকে তাদের পরিবারের লোকজন তাদেরকে এই জঙ্গলে খুঁজে বেড়াতে থাকে হন্যে হয়ে। তবে কার অবস্থান কোথায় ছিল, এই সম্পর্কে কারো কোন ধারণাও ছিল না। দুই বন্ধু জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে চলার সময়, জঙ্গলের রাস্তার একপাশে একটি মরা হরিণ দেখতে পায়। এটিকে দেখেই বোঝা যাচ্ছিল বাঘে কিংবা অন্য কোন হিংস্র প্রাণীতে শিকার করে মেরে রেখে দিয়েছে এখানে। বেশ কিছুদিন আগে মেরে রাখা মনে হচ্ছিলো হরিণটিকে দেখে কারণ সেখান থেকে অনেক পঁচা দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল যা দেখে দুই বন্ধু দৌড়ে সেখান থেকে সরে যায়।

এই জঙ্গলে অনেকটা সময় হাঁটার পর তারা বেশ কিছু আমগাছ দেখতে পায়। সেই সময় যেহেতু আমের মৌসুম ছিল তাই গাছগুলোতে বেশ ভালই আমের ফলন তারা দেখতে পেয়েছিল। তাই দেখে তাদের আম খাওয়ার ইচ্ছে হয়। তবে সমস্যা হলো, সেই সব গাছে বানরের দল বসে ছিল, যারা এই আমগুলো খাচ্ছিলো। এই দৃশ্য দেখে তারা সেখান থেকে চলে যায়। তবে আরও দশ মিনিট হাঁটার পর তারা আরো কিছু আমগাছ দেখতে পায়। যেখানে কোন বানরের দল ছিল না। যার ফলে সেই জায়গার আম গাছ থেকে তারা আম পেড়ে খায়।

আম খাওয়া শেষ করে তারা পুনরায় হাঁটতে থাকে। হাঁটতে হাঁটতে তারা সেই সময় অনেকটা ক্লান্ত হয়ে গেছিল তাই তাদের কিছুটা বিশ্রাম নেওয়ার দরকার পড়ে। কিন্তু জঙ্গলের মাটিতে বসে বিশ্রাম করা বা ঘুমিয়ে পড়া অনেকটা বিপদজনক ছিল। সেই জন্য তারা জঙ্গলে মাটিতে না শুয়ে, বড় একটি গাছের উপরে কিছু সময়ের জন্য রেস্ট করে নেয়। এইভাবে তারা প্রায় এক ঘন্টা সময়ের মতো রেস্ট করে। অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছিল তারা এই জঙ্গল ঘুরতে ঘুরতে। তাদের সাথে যে কি হচ্ছিলো, সবকিছু তাদের মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছিল। যাইহোক, কিছু সময় বিশ্রাম করার পর তারা একটু এনার্জি পায়। তারপর তারা আবার চলতে শুরু করে। চলতে চলতে তারা এটাও বুঝতে পারছিল তারা আরো গভীর জঙ্গলে ঢুকে পড়েছে। এইখানের জঙ্গলটা আরো বেশি শান্ত হয়ে গেছিল।

জঙ্গলের অন্যান্য জায়গায় অনেক জোরে জোরে পশু পাখির ডাক তারা শুনতে পেলেও, এই জায়গাটাতে তেমন ছিল না। একটা অন্যরকম ব্যাপার নিজেদের মধ্যেও তারা অনুভব করে এইখানে এসে। এইভাবে তারা অনেকটা জঙ্গলের গভীরে যাওয়ার পরে, একটা বিষয় দেখে পুরোপুরি আকাশ থেকে পড়ে। একজন মৃত মানুষের দেহ ক্ষত বিক্ষত অবস্থায় পড়ে ছিল একটি গাছের নিচের একটা অংশে। তখন তারা ধারণা করে নেয়, গ্রামের যে লোকটিকে বাঘে ধরে নিয়ে গেছিল, সেই লোকটিই হবে হয়তো। যদিও লোকটির চেহারার এমন অবস্থা হয়েছিল তাকে দেখে চেনার উপায় ছিল না। তারা এই দৃশ্য দেখে ভয়ে প্রচন্ড চিৎকার করে ওঠে। জঙ্গল কেঁপে ওঠে তাদের এই চিৎকার শুনে

চলবে...


পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীক্রিয়েটিভ রাইটিং (অ্যাডভেঞ্চার গল্প)
লোকেশনবারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল।
বন্ধুরা, আমার আজকে শেয়ার করা "একদিন জঙ্গলে" গল্পের পঞ্চম পর্ব টি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

IMG_20220728_164437.jpg

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago 

গহীন জঙ্গলের মধ্যে এরকম অবস্থায় কোন মানুষকে যদি কেউ দেখে, তাহলে ভয় পেয়ে চিৎকার দিয়ে উঠবে এটা স্বাভাবিক। ‌ গল্পের প্রতিটা পর্বের শেষে টানটান উত্তেজনা পরবর্তী পর্বর অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

 2 months ago 

গহীন জঙ্গলের মধ্যে এরকম অবস্থায় কোন মানুষকে যদি কেউ দেখে, তাহলে ভয় পেয়ে চিৎকার দিয়ে উঠবে এটা স্বাভাবিক। ‌

হ্যাঁ ভাই, ঠিক বলেছেন। যাইহোক, আপনার এই মন্তব্যটির জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 months ago 

দেখতে দেখতে একদিন জঙ্গলে গল্পটার পাঁচটা পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত দুই বন্ধুর কোন খোঁজ পেল না তাদের ফ্যামিলি। যদিও সবাই খোঁজ করার জন্য বেরিয়েছে কিন্তু এত বড় জঙ্গলে কোথায় খুঁজবে। আর দুই বন্ধু দেখছি এখনো জঙ্গলেই রয়েছে, আর আরো জঙ্গলের গভীরে ঢুকে যাচ্ছে। তবে তারা খাওয়ার জন্য কিছু আম পেয়েছিল শুনে ভালো লেগেছে। ওই মানুষের মৃত দেহটার কথা শুনে তো গা শিউরে উঠেছে। এরকম দৃশ্য দেখলে তারা তো চিৎকার করবেই। যাইহোক এখন দেখা যাক তাদের ফ্যামিলি তাদেরকে খুঁজে পাবি কিনা। তাদের জন্য অনেক বেশি চিন্তা হচ্ছে। আশা করছি তাদের সাথে খারাপ কিছু হবে না।

 2 months ago 

যাইহোক এখন দেখা যাক তাদের ফ্যামিলি তাদেরকে খুঁজে পাবি কিনা।

এই ব্যাপারটা সামনের পর্বেই জানতে পারবেন আপু। আপনার এই মন্তব্যটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 months ago 

আপনার শেয়ার করা এই গল্পটার প্রত্যেকটা পর্বই আমার পড়া হয়েছে। আজকে পঞ্চম পর্ব করে ভালো লেগেছে তবে দুই বন্ধুর জন্য অনেক বেশি চিন্তা হচ্ছে। কারণ তারা যেহেতু ছোট তাই তাদের সাথে কখন কি হয় এটাই বুঝতে পারতেছি না। জঙ্গলটা যেহেতু অনেক বড় এবং গভীর, তাই জঙ্গলের যে কোন জায়গা তাদের জন্য অনিরাপদ। যেকোনো সময় যে কোন কিছুই হতে পারে। ওই মানুষটাও হিংস্র বাঘের শিকার হয়েছে। আর তারা এরকম একটা অবস্থায় লোকটাকে দেখে খুবই ভয় পেয়েছে মনে হয়। ভয় তো পাওয়ারই কথা। এরকম একটা ক্ষতবিক্ষত শরীর দেখলে যে কেউ ভয় পেয়ে যাবে।

 2 months ago 

তবে দুই বন্ধুর জন্য অনেক বেশি চিন্তা হচ্ছে।

সামনের পর্বে আশা করি আপনার চিন্তা চলে যাবে ভাই। যাইহোক, সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.12
JST 0.033
BTC 70910.93
ETH 3657.39
USDT 1.00
SBD 3.76