ক্রিয়েটিভ রাইটিং || গল্প : জঙ্গলে দীনু (পর্ব -০২)
নমস্কার,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও ভালো আছি। |
---|
আজকের এই ব্লগে তোমাদের সাথে একটি গল্প শেয়ার করবো । গল্পটির নাম "জঙ্গলে দীনু"। গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব নিচে দেখে নেওয়া যাক।
দীনু এই ব্যাপারটা দেখতে পেয়ে মনে মনে কিছুটা খুশিও হয়ে যায়। দীনুরা যেহেতু অনেক গরিব ছিল তাই ডাকাতদের ডাকাতি করা ওই স্বর্ণের অলংকার গুলো দেখে মনে মনে অনেক স্বপ্নই বেঁধে ফেলে দীনু। এগুলো সে বিক্রি করে সংসারের সুখ ফিরিয়ে আনবে, কিছু সময়ের জন্য সে সেই কল্পনায় হারিয়ে যায় একপ্রকার। সে পুরোপুরিভাবে ডাকাতরা কোন জায়গায় স্বর্ণের অলংকার গুলো পুঁতে রেখেছে, সেটা খেয়াল করে এবং নিরিবিলি সেই জায়গা থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করে। সেই সময় ডাকাতরা বুঝতেও পারে না কেউ তাদের ফলো করেছে এবং তারা কোথায় স্বর্ণের অলংকার পুঁতে রেখেছে সেটা কেউ দেখেছে। সেদিন রাতের বেলা বাড়িতে আসার পর দীনু আর ঘুমায় না। সারারাত এসব নিয়েই ভাবতে থাকে। সে মনে মনে এই প্ল্যান করতে থাকে, কি করে সে স্বর্ণের অলংকার গুলো নিয়ে আসবে, কোথায় বিক্রি করবে কি, অনেক টাকা হাতে পেলে কি করবে, এইসব তার মাথায় ঘোরাঘুরি করতে থাকে।
দীনুর বাবা সেই রাতে আবার দীনুর সাথে কথা বলতে আসে এবং দীনুকে শহরে গিয়ে ভালো কিছু করার পরামর্শ দেয়। তখন দীনু তার বাবাকে বলে, "আমাদের আর দুঃখ থাকবে না, কিছুটা সময় অপেক্ষা করো আমি সবকিছু ঠিক করে দেবো"। এভাবে তাদের মধ্যে কথা শেষ হয়। পরের দিন সকাল বেলা দীনু সেই জঙ্গলের উদ্দেশে রওনা করে এবং চারিদিকে খেয়াল রাখতে রাখতে এমন করে যায় যেন কেউ তাকে না দেখে। ডাকাত গুলো রাতের বেলায় স্বর্ণের অলংকার গুলো সেখানে পুঁতে রেখেছিল সে সেই স্থানটাতে যায়। জায়গাটা জঙ্গলের অনেক গভীরেই ছিল। যেহেতু মাটির মধ্যে পুঁতে রেখেছিল স্বর্ণের অলংকার গুলো তাই দীনু সাথে ছোট একটা কোদালও নিয়ে যায় এই মাটিগুলো খুঁড়ে স্বর্ণের অলংকার গুলো নিয়ে আসার জন্য। অনেক টাকার স্বর্ণের অলংকার সেখানে পুঁতে রাখা ছিল। এসব দেখে তো সে প্রথমে চমকে যায়। তারপর অনেকটা ভয়ে ভয়ে সে সব কিছু নিয়ে বাড়িতে চলে আসে।
সে যে এগুলো নিয়ে এসেছে, কেউ সেদিন আর দেখতে পায় না। দীনু কয়দিন পর সেই স্বর্ণের অলংকার থেকে কিছুটা বিক্রি করে অনেক টাকা হাতে পাই। সেই টাকা দিয়ে তারাও কিছু দিন বেশ সুন্দরভাবে থাকে। কত যুগ পরে যে তাদের মুখে হাসি ফুটেছে, সেটা বলা মুশকিল। অন্যদিকে ডাকাতের দল সেই জঙ্গলে এসে, যেখানে স্বর্ণের অলংকার গুলো পুঁতে রেখেছিল, সেই জায়গা খুঁড়ে ডাকাতের দল তো হতবাক হয়ে যায়। কি থেকে কি হয়ে গেল, তারা বুঝতেই পারে না! তাদের লোকেশন ঠিক আছে কিনা, সেই ভেবে অন্যান্য আরও অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তাদের পুঁতে রাখা স্বর্ণের অলংকার গুলো। তবে তারা কোন জায়গায়ই আর সেগুলো খুঁজে পায় না। তখন তারা বুঝতে পারে এগুলো কেউ চুরি করে নিয়ে গেছে।
তবে এই জঙ্গলের ভিতরে ওই রাতের বেলা কে দেখলো আর কে চুরি করলো, এটাই তাদের মনে প্রশ্ন জাগতে থাকে। তাদের ডাকাতি করা জিনিস কেউ চুরি করে নিয়ে গেছে, এটা তারা কখনোই কোন অবস্থাতেই মানতে পারে না। তবে সেই মুহূর্তে যারা চুপ থাকে এবং অপেক্ষা করতে থাকে কে এই কাজটা করেছে সেটা জানার জন্য। অন্যদিকে, দীনু এতগুলো স্বর্ণের অলংকার পাওয়ার পরেও তার মনে আরও লোভের জন্ম নেয়। সে জঙ্গলের আশেপাশেই ঘোরাঘুরি করতে থাকে সন্ধ্যা হলেই এবং লক্ষ্য করতে থাকে, সেই ডাকাতের দল আরও কোন সময় তাদের ডাকাতি করা জিনিস গুলো নিয়ে যায় নাকি জঙ্গলে পুঁতে রাখার জন্য।
বহুদিন যাওয়ার পর হঠাৎ করে দীনু লক্ষ্য করে, সেই ডাকাতের দল জঙ্গলে চুপি চুপি প্রবেশ করছে। ডাকাতের দল এবার সব দিকে প্রচণ্ড ভাবে খেয়াল রাখে আর দীনুও চালাকী বুদ্ধি করে। সে অনেক দূরে থাকে আর যেহেতু ডাকাতদের কাছে আলো ছিল, সে সেই আলো ফলো করে। অতঃপর সে দেখে ডাকাতগুলো একটা জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়ে গেছে। তখন দীনুর আর বুঝতে বাকি রইলো না, এই বার এটাই সেই লোকেশন হবে যেখানে ডাকাত গুলো তাদের ডাকাতি করা জিনিস পুঁতে রাখবে।
চলবে...
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ক্রিয়েটিভ রাইটিং (গল্প) |
---|---|
লোকেশন | বারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল। |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে মানুষ যদি ভুল কাজ করেও সহজে টাকা পেয়ে যায় এবং বড়লোক হয়ে যায়, তাহলে সেই মানুষগুলোর ভেতরে আরও অনেক বেশি লোভ জন্ম নেয়। যেটা তাদের কে আরো বেশি ধ্বংস করে দেয় পরবর্তীতে। আমার তো মনে হয় দীনুর আর এখন উচিত হচ্ছে না আবারও চুরি করা। আগের চুরি করা স্বর্ণগুলো নিয়ে ভালোভাবে থাকতে পারতো। কিন্তু তার ভেতরে দেখছি লোভ জেগেছে। আর আবারো ডাকাতদের স্বর্ণ গয়না চুরি করার জন্য তাদের উপর খেয়াল রেখেছে। এখন দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়।
এই লোভ জিনিসটাই তো খারাপ জিনিস আপু। দীনুর ভিতর সেই জিনিসটাই দেখা গেছে যা তার বিপদের কারণ হবে।
আমি তো ভেবেছিলাম দীনু ডাকাতদের চুরি করা জিনিস লুকানোর সময় যখন দেখছিল, তখন দিনুকে হয়তো ডাকাতের দল ধরে ফেলবে। অথবা তাকে দেখে ফেলবে। কিন্তু এই পর্বে দেখছি এরকম কিছুই হলো না। উল্টো ডাকাতদের চুরি করা স্বর্ণ গহনা দীনু চুরি করে নিয়ে গিয়েছে সকালবেলায়। ডাকাতের দলের লোকেরা যেমন চালাক, তেমনি দিনু তো দেখছি তাদের থেকে বড় চালাক। সে তো দূর থেকেই তাদের উপর নজর রেখেছে। আমার তো মনে হয় সে পরবর্তীতে আবারো চুরি করতে গেলে হয়তো ধরা পড়ে যাবে। তার কিন্তু এতটা লোভ করা উচিত হচ্ছে না।
এই বিষয়টা পরবর্তী পর্বেই জানতে পারবেন ভাই। তাছাড়া এটা আপনি ঠিক কথা বলেছেন, দীনুর এতটা লোভ করা মোটেও উচিত হয়নি।
https://x.com/ronggin0/status/1803388620600123548?t=KkDPcF31ieQdJ_Kx3tczgQ&s=19