ক্রিয়েটিভ রাইটিং || অ্যাডভেঞ্চার গল্প : একদিন জঙ্গলে (পর্ব-০৪)
নমস্কার,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি। |
---|
আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে একটি অ্যাডভেঞ্চার গল্প শেয়ার করবো। গল্পের নাম "একদিন জঙ্গলে"। গল্পটির চতুর্থ পর্ব নিচে দেখে নেওয়া যাক।
কুমিরের জায়গা থেকে তারা বেরিয়ে এসে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে হাঁটা শুরু করে। তখন যেহেতু সকালের সময় ছিল তাই তারা সকালের অন্যরকম এক পরিবেশ জঙ্গলের মধ্যে দেখতে পায়। চারিদিকে তারা পাখির কিচিরমিচির আওয়াজ শুনতে পায়। হাজার হাজার পাখি একসাথে ডাকাডাকি করছিল তখন। অনেক প্রকারের পাখি তারা জঙ্গলে এই সময় দেখতে পেয়েছিল। পাখিগুলোর কিছু কিছু গাছের উপরে বসে ছিল আর কিছু কিছু উপর দিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছিল। তারা এই সময় আরও একটা জিনিস খেয়াল করে যে, গাছের উপর থেকে বানর ডাকাডাকি করছে। তবে একটা দুটো বানর ডাকাডাকি করছিল না, অনেকগুলো বানর একসাথে ডাকাডাকি করছিল।
সেই সময় বানরগুলো গাছের এই পাশ থেকে ওই পাশে লাফালাফিও করে বেড়াচ্ছিল। বিভিন্ন বয়সের বানর ছিল সেখানে। এইসব দেখতে দেখতে, তারা হঠাৎ করে লক্ষ্য করে জঙ্গল শান্ত হয়ে গেছে। চারিদিকের সব আওয়াজ কেমন জানি ম্যাজিকের মত বন্ধ হয়ে গেছে। জঙ্গলের এই অদ্ভুত ব্যাপার তাদেরকে অবাক করে। তারা এই অবস্থায় কিছুটা ভয়ও পেয়ে যায়। তারা এই ভয় পেয়ে চলতে চলতে লক্ষ্য করে, হরিণের দল ছুটে যাচ্ছে এক পাশ থেকে অন্য পাশে। হরিণের দ্রুত ছুটে চলা দেখে তারা গাছের উপরে উঠে পড়ে। এই সবকিছুর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই তারা সবচেয়ে ভয়ানক একটা জিনিস দেখতে পায়। সেটা হলো, একটা বাঘ এই সবগুলো হরিণের পিছনে দৌড়াচ্ছে। তখন তারা বুঝতে পারে বানর এবং পাখি গুলো কেন ডাকাডাকি করছিল।
বাঘ ছুটতে ছুটতে একটা হরিণও ধরে ফেলে তখন। দুই বন্ধু প্রথমবার কোন পশুর শিকার করা দেখতে পায় তখন। এই জঙ্গলের সব অভিজ্ঞতাই তাদের কাছে নতুন ছিল। তারা একটা অন্য জগতে এসে পৌঁছেছে, এমনটা মনে হচ্ছিল তাদের কাছে। বাঘের হরিণ শিকারের ব্যাপারটা তাদের মধ্যে আরো অনেকটা ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল। তারা গাছ থেকে আর নামতেই সাহস পাচ্ছিল না এইসব দেখার পর। ৫ থেকে ৭ মিনিট পরে জঙ্গল পুনরায় আবার শান্ত হয়ে যায়। তখন তারা একটু সাহস করে গাছ থেকে নামে এবং অনেকটা ছুটে চলার মত সেই জায়গা থেকে সামনের দিকে এগিয়ে যায়।
এই জঙ্গলের ভেতরে তারা আল্টিমেটলি হারিয়েই গিয়েছিল বলা যায় । কারণ তারা কোনোভাবেই বুঝে উঠতে পারছিল না, তাদের বাড়ি কোন দিকে এবং কোন দিক দিয়ে গেলে তারা বাড়ি পৌঁছাতে পারবে। অন্যদিকে প্রবীণ এবং তপনের বাড়ির লোকজন পুনরায় জঙ্গলে এসে তাদের খোঁজাখুঁজির পরিকল্পনা করতে থাকে। সারারাত ধরে তাদের বাড়ির লোকজন যে কান্নাকাটি করেছিল তাতে তাদের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছিল। তাদের পরিবারের লোকজন কান্নাকাটি করতে করতে একপ্রকার অসুস্থ হয়ে গেছিল পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছিল।
যাইহোক, এর আগের দিন যেমন প্রবীণ এবং তপনের বাড়ির লোকজন দল বেঁধে জঙ্গলের উদ্দেশে এসেছিল, এইদিনও একইভাবে তারা জঙ্গলের উদ্দেশ্যে রওনা করে প্রবীন এবং তপনকে খোঁজার জন্য। এই জঙ্গলের মানুষ খেকো বাঘের ঘটনা তারা নিজেরা দেখেছে অনেক, এই জন্য তারা এতোটা বেশি ভেঙ্গে পড়েছিল। আর ভেঙ্গে পড়াটাই স্বাভাবিক কারণ এই জঙ্গলে একের পর এক বিপদ ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে, সেটা তারা জানতো। তারা জঙ্গলে প্রবেশ করে প্রবীণ এবং তপনের নাম ধরে জোরে জোরে ডাকতে ডাকতে জঙ্গলের ভিতর থেকে ভিতরে আসতে থাকে।
চলবে...
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | ক্রিয়েটিভ রাইটিং (অ্যাডভেঞ্চার গল্প) |
---|---|
লোকেশন | বারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল। |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অ্যাডভেঞ্চার এর গল্প একদিন জঙ্গলে গল্পটির আমরা চতুর্থ তম পর্বে এসে পড়লাম। এখানে প্রবীণ এবং তপন শুরুতেই জঙ্গল সম্বন্ধে নতুন একটি অভিজ্ঞতা পায়। বানর এবং পাখির অস্থির অবস্থা দেখে তারা তো প্রথমে বুঝতেই পারেনি এখন জঙ্গলে কি ঘটতে চলেছে। তারা গাছে উঠেই বিষয়টি বুঝতে পেরেছিল যে একটি বাঘ হরিণকে ধরার জন্য ছুটছিল আর এজন্যই জঙ্গলের এই অবস্থা হয়েছিল। এ অবস্থা দেখে প্রবীণ এবং তপন কেন যে কেউ ওখানে থাকলে নিঃশ্বাস বেরিয়ে যাওয়ার মত অবস্থা হতো। যাই হোক যেহেতু এখন তখন এবং প্রবীণ পরিবার জঙ্গলে তাদের খুঁজতে এসেছে আশা করি খুব তাড়াতাড়ি তাদের খুঁজে পেয়ে যাবে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।
শেষ পর্বে সেটা জানা যাবে ভাই। খুব তাড়াতাড়িই সেই পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
একদিন জঙ্গলে এর আগের পর্বগুলো হয়তো আমার পড়া হয়নি। তবে আপনার গল্পটা পড়ে বুঝতে পারলাম জঙ্গলে ভয়ংকর কিছু ঘটবে। আসলে এমন পরিস্থিতিতে তপন ও প্রবীণ এর বাড়ির লোকজন অসুস্থ হওয়ায় স্বাভাবিক। আর এখানকার মানুষ যেহেতু খেকো বাঘের গল্প নিজেরাই জানে। যাইহোক দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়?
আপু, পরবর্তী পর্বেই সবকিছু জানতে পারবেন। আর কয়েকদিনের মধ্যেই ওই পর্বটি শেয়ার করবো আপনাদের সাথে।
দাদা আপনার এডভেঞ্চার গল্প পড়ছিলাম আর ছেলেবেলার কথা ভাবছিলাম। ছেলেবেলায় কত যে এভেঞ্চার গল্প পড়েছি। বেশ ভালো লিখেছেন আপনি আপনার গল্প। এতে করে জঙ্গলের পশুপাখি গুলো নিয়ে বেশ কিছু জানতে পারা গেল। ধন্যবাদ এমন সুন্দর করে এডভেঞ্চার গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু, ছোটবেলায় আমরাও অনেক অ্যাডভেঞ্চার গল্প পড়েছি। এগুলো পড়তে আসলে অনেক ভালো লাগে।
আপনার এই গল্পের অনেকগুলো পর্ব দেখা হয়েছে৷ এখানে তপন এবং প্রবীণ প্রথমে বুঝতে পারছিল না যে কি হচ্ছে ৷ তাই তারা গাছের উপরে উঠে গেল৷ পরবর্তীতে তারা বুঝতে পারল যে বাঘ হরিণকে ধরার জন্য তার পরিকল্পনা চালাচ্ছে৷ আসলে বাঘ সাধারণত হরিণকে ধরার জন্য প্রতিনিয়তই ছোটাছুটি করতে থাকে৷ যখনই সে সুযোগ পায় তখন সে হরিণকে দৌড়াতে থাকে৷ এই অবস্থা দেখে তাদের একেবারে যেন মারা যাবে এরকম অবস্থা হয়ে গিয়েছিল৷ যাই হোক পরবর্তী পর্বে কি হয় তা দেখার আশায় রইলাম৷
খুব শীঘ্রই পরবর্তী পর্ব দেখার সুযোগ হবে ভাই। যাইহোক, আপনার এই মন্তব্যটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
অ্যাডভেঞ্চার ভালো তবে পরিবারের মানুষকে চিন্তায় রেখে অ্যাডমেঞ্চার মোটেই ভালো না। তারা তো এইদিকে অ্যাডভেঞ্চারে ব্যস্ত কিন্তু তাদের পরিবারের অবস্থা ঐদিকে খারাপ হয়ে গিয়েছে। তবে তাদের কিছুই দেখা বাকি রইল না। শেষে বাঘের স্বীকার করা পযর্ন্ত দেখে ফেলল। জঙ্গলে অ্যাডভেঞ্চারে যেমন মজা আছে তেমনি ঝুঁকিও রয়েছে।
একটা ভুল সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই ওদের জঙ্গলের অ্যাডভেঞ্চার শুরু হয় ভাই, ইচ্ছাকৃতভাবে যে জঙ্গলে অ্যাডভেঞ্চার করতে গেছে এরকম ব্যাপার না।
একদিন জঙ্গলে গল্পটার ৪ নং পর্ব আমার অনেক ভালো লেগেছে। এই গল্পটার আগের পর্বগুলো আমি পড়েছি। তাদের দুজনের কথা শুনে কিন্তু অনেক খারাপ লেগেছে আমি তো শুধু এটাই ভাবতেছি তাদের পরিবার তাদেরকে জীবিত অবস্থায় পাবে কিনা। অনেক কিছুই ঘটে গিয়েছে ওই জঙ্গলের মধ্যে যেটা তারা খালি চোখেই দেখেছিল। আশা করছি তাদের পরিবার তাদেরকে পাবে। এই গল্পের শেষ পর্বটার শেষ পর্ব পড়ার জন্য অনেক বেশি অপেক্ষায় থাকলাম। তারা জীবিত বাড়ি আছে কিনা এটা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম। ধন্যবাদ সুন্দর করে এটা শেয়ার করার জন্য।
ভাই আর বেশি অপেক্ষা করতে হবে না। এর পরের পর্ব অর্থাৎ পঞ্চম তম পর্বই শেষ পর্ব হবে এই গল্পের। ওই পর্বেই সর্বশেষ কি ঘটেছিল তা জানতে পারবেন।