ক্রিয়েটিভ রাইটিং || অ্যাডভেঞ্চার গল্প : একদিন জঙ্গলে (পর্ব-০১)

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

নমস্কার,

তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই অনেক অনেক ভাল আছো। আমিও মোটামুটি ভালো আছি।

আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে একটি অ্যাডভেঞ্চার গল্প শেয়ার করবো। গল্পের নাম "একদিন জঙ্গলে"। গল্পটির প্রথম পর্ব নিচে দেখে নেওয়া যাক।

tiger-2535888_1280.jpg

ইমেজ সোর্স

দুই বন্ধু তপন এবং প্রবীণ একই গ্রামে বসবাস করে। তাদের দুইজনের বাড়ি একদম পাশাপাশি। তাদের বাড়ি থেকে ২ থেকে ৩ কিলোমিটার পাশেই রয়েছে বিশাল এক জঙ্গল। বাড়ির এতটা কাছে জঙ্গল থাকা সত্ত্বেও কখনো তারা জঙ্গলে যায়নি। সত্যি কথা বলতে তারা যাবেই বা কি করে! কারণ তাদের বয়স একজনের ৯ বছর এবং আরেক জনের ১০ বছর। যেহেতু বয়স অল্প তাই বাড়ি থেকেও তাদের জঙ্গলের ব্যাপারে অনেকটা সচেতন করে দেওয়া হয়েছিল। কারণ এই জঙ্গলের হিংস্র প্রাণী সাপ, বাঘ, শিয়াল, কুমির থেকে শুরু করে আরও অনেক প্রাণী যেমন হরিণ, বানর, হনুমান ইত্যাদি রয়েছে

তাদের পরিবারের বড়রা এই জঙ্গলে নিয়মিত যায় কাঠ কাটার জন্য। কারণ এই জঙ্গল থেকে কাঠ কেটেই তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। তাদের বাড়ির লোকজন বলে দিয়েছে, তারা যখন বড় হবে তখন তারাও কাঠ কাটতে জঙ্গলে যেতে পারবে কিন্তু এখন যাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। এরা যেহেতু ছোট সেজন্য বাড়ির কথা মেনে নিয়ে জঙ্গলে যাওয়ার কথা আর ভাবে না। তবে একদিন দুই বন্ধু খেলা করছিল বাড়ির পাশে , এমন সময় সংবাদ আসে গ্রামের কাকে যেন বাঘে নিয়ে গেছে। এই সংবাদ পাওয়ার পর ওই গ্রামের সব লোকজন ছোটাছুটি শুরু করে দেয় এবং অনেকেই সেই জঙ্গলের দিকে ছুটে যেতে থাকে সেই বাঘে ধরে নিয়ে যাওয়া লোকটাকে খোঁজার জন্য। এই দুই বন্ধুর এই ব্যাপারটা দেখে অনেক কৌতুহল জাগে মনে। তারাও ওই ব্যাপারটা দেখতে যেতে চায়।

তারা ছোট হলেও কৌতূহলের শেষ নেই। কৌতূহলী হয়ে তারা ওই মানুষজন এর পিছনে ছুটতে শুরু করে। গ্রামের অনেক মানুষই লাঠি, বাঁশ , দেশীয় কিছু অস্ত্র নিয়ে জঙ্গলের দিকে যেতে থাকে। এই দুই বন্ধু অত কিছু না বুঝেই তাদের পিছনে ছুটতে থাকে। অনেক সময় এমন দৌড়ানোর পর জঙ্গলের অনেকটা মধ্যে গিয়ে হঠাৎ করে প্রবীণের পা গাছের একটা শিকড়ে বেঁধে সে মাটিতে পড়ে যায়। এই সময় তপন প্রবীণকে উঠাতে যায়। তাদের এইসব করার মাঝে তাদের সামনে বড়দের যে গ্রুপ ছিল তারা দৌড়াতে দৌড়াতে জঙ্গলের অনেকটা ভিতরে চলে যায়। সামান্য কিছু সেকেন্ডের ব্যবধানের মধ্যে সামনে বড়দের সেই গ্রুপ না দেখতে পেয়ে দুই বন্ধু খুব ভয় পেয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে তাদের করণীয় কি তারা বুঝে উঠতে পারে না কারণ তারা অনেকটাই ছোট। এই মুহূর্তে কি করা উচিত এতোটুকু বুদ্ধি তাদের মধ্যে তখনও হয়ে ওঠেনি।

তারা কোন দিকে যাবে বুঝে উঠতেই পারছিল না। কারণ জঙ্গলের শুরু বা শেষ কোন কিছুই বুঝতে পারা যায় না। যেহেতু তারা দৌড়াতে দৌড়াতে জঙ্গলের অনেকটা ভিতরে চলে এসেছে, এরপরে কোন দিকে গেলে তারা বাড়ির রাস্তা পাবে তা কোন অবস্থাতেই বুঝতে পারেনা। তখন দুপুরের সময় ছিল। তারা দুই বন্ধু কোনো কিছু না ভাবতে পেরে উদ্দেশ্য হীন ভাবে রওনা শুরু করে। এই জঙ্গলে তাদের যে কোনো বড় বিপদ হতে পারে এতোটুক চিন্তা তাদের মাথায় আসেনি তখনো। তারা এই জঙ্গলের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে কিছু সময়ের জন্য কেমন জানি সব কিছু ভুলে যায়। তারা জঙ্গলের প্রকৃতি দেখে অনেকটা হতবাক হয়ে যায়।

জঙ্গলের এই সবুজ প্রকৃতি তাদের অনেকটা মুগ্ধ করে। তারা জঙ্গলের মধ্যে এসে এমন কিছু আবিষ্কার করেছিল যা তাদের কাছে প্রথম অনুভূতি ছিল। জঙ্গলের মধ্যে পাখির ডাক, বানরের ছোটাছুটি এগুলো প্রথম অবস্থায় তাদের চোখে পড়ে। তারা দুই বন্ধু মিলে অনেকটা গাছের আড়ালে লুকিয়ে লুকিয়ে এই জিনিসগুলো বেশ মজা করেই দেখে। এদিকে সময় আস্তে আস্তে গড়িয়ে যেতে থাকে। ২ ঘণ্টা সময় ধরে তারা জঙ্গলের মধ্যে ঘুরে, জঙ্গল থেকে বাইরে যাওয়ার পরিবর্তে জঙ্গলের গভীরে চলে যায়।

চলবে...


পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীক্রিয়েটিভ রাইটিং (অ্যাডভেঞ্চার গল্প)
লোকেশনবারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল।
বন্ধুরা, আমার আজকে শেয়ার করা "একদিন জঙ্গলে" গল্পের প্রথম পর্ব টি তোমাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে






আমার পরিচয়

IMG_20220728_164437.jpg

আমি সুবীর বিশ্বাস( রঙিন)। কলকাতার বারাসাতে আমি বসবাস করি। আমি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস এন্ড ফিসারিস সাবজেক্ট নিয়ে। বর্তমানে আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যানরত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু শান্ত স্বভাবের । চুপচাপ থাকতেই বেশি ভালোবাসি আমি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে আমার খুব ভালো লাগে। মাঝে মাঝে আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা, রেসিপি করা , গল্প লেখা আমার বেশ ভালো লাগে। আমি স্টিমিটকে অনেক ভালোবাসি এবং সব সময় স্টিমিটে কাজ করতে চাই।

🌷🌷 সমাপ্ত 🌷🌷

Sort:  
 6 months ago 

আপনার আজকের লেখা এই গল্পটা আমার কাছে সত্যি খুব ভালো লেগেছে। কিন্তু তপন এবং প্রবীণের জন্য একটু ভয় লাগতেছে। আজকে তো আপনি এই গল্পের প্রথম অংশটা সবার মাঝে শেয়ার করেছেন। তারা দুইজন বড়দের সাথে কৌতুহলী হয়ে এসেছিল। কিন্তু একজনের পা আটকে যাওয়াতে, অনেকজন তাকে উঠাতে গিয়ে বড়দেরকে হারিয়ে ফেলেছিল। যদিও প্রথমে বাড়ির পথ খোঁজার জন্য হাঁটছিল। কিন্তু জঙ্গলের প্রকৃতি উপভোগ করার জন্য তারা দেখতে দেখতে জঙ্গলের আরো গভীরে চলে গিয়েছিল। এখন দেখা যাক তোদের সাথে কি হয়। তবে আশা করছি খারাপ কোন কিছু হবে না।

 6 months ago 

গল্পটি সম্পূর্ণ পড়ে, এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে । তপন এবং প্রবীণের সাথে কি কি ঘটেছিল তা সামনের কয়েকটি পর্বের মাধ্যমে পুরোপুরি জানতে পারবেন আপু।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

একদিন জঙ্গলে গল্পটার প্রথম পর্বটা দারুন ছিল। তপন এবং প্রবীণ আগে যদিও জঙ্গলের দিকে যেত না, কিন্তু ঐদিন একটা মানুষকে বাঘে নিয়ে যাওয়ার পর বড়দের সাথে তারাও গিয়েছিল। কিন্তু তারা তো দেখছি গভীর জঙ্গলে গিয়ে ফেঁসে গিয়েছিল। কারণ বড়দের দলকে তারা খুঁজে পাচ্ছিল না। আর এক সময় তারা একেবারে গভীর জঙ্গলে পৌঁছে গিয়েছিল, প্রাকৃতিক দৃশ্য গুলোকে উপভোগ করতে করতে। এখন তাদের সাথে খারাপ কিছু হবে কিনা এটাই ভাবতেছি আমি। কারণ তারা বয়সে এখনো অনেক বেশি ছোট ছিল। আশা করছি এরকম কিছু হবে না। জঙ্গল যেহেতু অনেক বড় ছিল তাই তারা বের হওয়ার রাস্তাও খুজে পাচ্ছিল না। দ্বিতীয় পর্বটা দেখার অপেক্ষায় আছি।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.031
BTC 60893.72
ETH 2624.62
USDT 1.00
SBD 2.56