জেনারেল রাইটিং || শৈশবের স্মৃতিচারণ: বৃষ্টির দিনে আমার শখের একুরিয়াম এর জন্য ছোট মাছ ধরার গল্প!
নমস্কার,
তোমরা সবাই কেমন আছো? আশা করি, সবাই ভালো আছো। আমিও ভালো আছি। |
---|
বন্ধুরা, আজকের এই ব্লগে তোমাদের সবাইকে স্বাগতম। আজকের এই ব্লগে তোমাদের সাথে একটি স্মৃতিচারণমূলক পোস্ট শেয়ার করবো। এখন বর্ষার সময় চলছে বিগত কিছুদিন ধরে বেশ ভালই বৃষ্টির দেখা পাওয়া যাচ্ছে। আসলে বর্ষাকাল আমার খুবই ভালো লাগে। এই বর্ষাকাল আসলে অতীতের অনেক স্মৃতি মনে পড়ে যায়। অতিরিক্ত বর্ষার সময় বাড়ি থেকে বের হওয়া যায় না। কিন্তু বর্ষার পরবর্তী সময় বাড়ি থেকে বের হলে চারপাশে এক অন্যরকম দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। বর্ষার দিনগুলোতে আশেপাশের প্রকৃতি সজীব হয়ে ওঠে। আর কিছু কিছু জায়গা জলে ডুবে যায়। রাস্তাঘাটেও প্রচুর জল দেখা যায়। অনেক রাস্তাঘাট তো ডুবেও যায় পুকুর নদী কানায় কানায় সব ভরে ওঠে। এক অন্যরকম ব্যাপার ঘটে অনেক বৃষ্টি হওয়ার পরবর্তী সময়। এই বর্ষার সময় অনেক স্মৃতি রয়েছে আমার জীবনে।
আসলে জীবনের এতটা সময় পার করেছি, সেই সময়টাতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো মাঝে মাঝে মনে করলে বেশ ভালই লাগে। বৃষ্টির দিনে ছোটবেলায় প্রচুর ফুটবল খেলেছি। বর্ষার দিনে যখন মাঠে প্রচুর জল জমে যেত বন্ধুরা গিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতাম। আর কাঁদা মাটি মাখিয়ে বাড়ি ফিরতাম। তারপর যখন একটু বড় হয়েছি এই কাজগুলো কম করতাম। তবে বর্ষার পরবর্তী সময়ে যেসব জায়গায় জল জমে যেত সেখানে ছোট ছোট মাছ ধরতে যেতাম। আসলে অনেক আগে থেকেই একুরিয়ামের খুব শখ ছিল আমার। ছোটবেলা থেকেই আমাদের বাড়িতে একুরিয়াম ছিল। প্রথম যখন বাবা আমাকে একুরিয়াম কিনে দেয়। একটা গোল একুরিয়াম কিনে দিয়েছিল এটা হয়তো তোমরা অনেকেই দেখে থাকবে। সেই একুরিয়ামে আমি বর্ষার সময় পাওয়া মাছগুলো এনে রেখে দিতাম। তাছাড়া দোকান থেকে কেনা দু-একটা গোল্ড ফিশও থাকতো এরমধ্যে।
যাইহোক, একুরিয়ামের শখ দেখে বাবা পরবর্তীতে বড় একটা একুরিয়াম আমাকে কিনে দেয়। সেখানে বিভিন্ন ধরনের মাছ আমি পুষে থাকতাম। আমি শহরের যে জায়গাটাতে থাকতাম অনেক বর্ষা হলে প্রায় হাঁটু সমান জল হয়ে যেত আশেপাশের এলাকায়। আর সেই সব জায়গায় আমরা জাল দিয়ে একপ্রকার মাছ ধরার জিনিস বানিয়ে চলে যেতাম ছোট ছোট মাছ ধরতে। এই মাছগুলোকে আমরা গাপ্পি মাছ বলতাম। আসলে এই মাছগুলো কোথা থেকে আসতো বা কি হতো সেই সম্পর্কে আমার কোন ধারণা নেই। তবে বর্ষার সময় প্রচুর পরিমাণে এই মাছ পাওয়া যেত। আর একেকবার অনেক মাছ ধরে নিয়ে এসে একুরিয়ামের ভিতর রেখে দিতাম। এইভাবে এক বর্ষায় প্রায় একশটা মাছ আমি ধরে নিয়ে এসেছিলাম। আসলে একুরিয়ামের ভিতরে এত মাছ রাখার জায়গাও ছিল না। তবে শখের কারণে এনে রেখেছিলাম।
তাছাড়া দেখতাম প্রতিদিন দুই একটা দুই একটা করে এই মাছগুলো মারা যেত। আসলে অনেক রাখলে এই সমস্যাটা হয়ে থাকে। অনেক সময় এত মাছ আনার কারণে বাড়ি থেকে বকাও দিত। কারণ তারা তো দোকান থেকে মাছ কিনে এনে দিত তারপরও যখন দেখত এই হাঁটু সমান জল থেকে আমি এই মাছগুলো ধরে বেড়াচ্ছি এই ব্যাপারটা তারা ভালোভাবে দেখত না। যাইহোক, তবে কোন বাধাই আমি কানে নিতাম না। এই কাজগুলো আমরা ভাই দাদা সবাই মিলে করতাম। তাছাড়া দেখতাম আমার কিছু বন্ধুও ছিল যাদের বাড়িতে একুরিয়াম ছিল, তারাও আমাদের সাথে এই মাছগুলো ধরতো। একবার এই ধরনের মাছ ধরার পাশাপাশি কিছু ছোট শোল মাছও ধরে এনে একুরিয়ামে রেখেছিলাম। তবে পরের দিন দেখি আমার একুরিয়ামের অর্ধেক ছোট ছোট মাছ শেষ। আসলে হয়েছিল কি এই শোল মাছ আমার ছোট ছোট একুরিয়ামের মাছগুলোকে খেয়ে নিয়েছিল। তবে এখানে আমার বোকামি ছিল।
আসলে সেই সময়টাতে এই ব্যাপার গুলো বুঝতাম না। পরে সেই শোল মাছটাকে নিয়ে আমি জলাশয়ে ছেড়ে দিয়েছিলাম। তারপরেও অনেক মাছ ছিল একুরিয়ামে। আসলে বর্ষার সময় এই কাজগুলো বেশ করা হতো। লাস্ট দুই দিন ধরে আমাদের এখানে বেশ বৃষ্টি হলো। তবে আমাদের এইখানে তেমন একটা জল উঠতে দেখা যায় না কোথাও। পূর্বে শহরের যে অংশে ছিলাম সেখানে এই ব্যাপারটা হতো। হঠাৎ স্মৃতিটা মনে পড়লো তাই তোমাদের সাথে শেয়ার করলাম।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
লোকেশন | বারাসাত , ওয়েস্ট বেঙ্গল। |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
একুরিয়ামে বৃষ্টির জলে ধরে মাছ রাখা ব্যাপারটা বেশ ভালোই লাগলো।আসলে একুরিয়ামে মাছ পুষতে ও দেখতে অনেক ভালো লাগে।আপনার একুরিয়ামে মাছ পোষার নেশা দেখে খুব ভালো লাগলো।আপনার কষ্ট করে ধরে রাখা মাছ গুলো কমে গেছে কারণ আপনার একুরিয়ামে রাখা শোল মাছ অন্য সব মাছ গুলোকে খেয়ে নিয়েছে জেনে খারাপ লাগলো।ধন্যবাদ স্মৃতিচারণ করে পোস্ট টি ভাল করে নেয়ার জন্য।
তখন দিদি এই বিষয়টা আসলে বুঝতাম না, এই জন্যই এই ঘটনাটা ঘটেছিল। তবে পরবর্তী সময়ে আর এরকম ভুল কখনো করিনি।
আপনার পূর্বের মাছ পালনের শখ টা অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া ।একুরিয়ামে মাছ পালন করেছেন আগে বৃষ্টির জল ধরে।তবে শৈল মাছ যেহেতু খেয়ে ফেলেছে অনেক মাছ তাহলে আপনার অনেক গুলো মাছ কমে গিয়েছে এটা দুঃখের একটি বিষয়।ওকে বের করে দিয়ে ভালো করেছিলেন ভাইয়া সেই সময়। সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ভাইয়া। স্মৃতিমুলক পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো।বৃষ্টির দিনে অনেক পুরোনো দিনের স্মৃতি মাথায় আসে এটা সত্যি।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু, বৃষ্টির দিনে আসলেই অনেক পুরনো স্মৃতিগুলো মনে পড়ে যায়। আমার এই স্মৃতিচারণ মূলক পোস্টটি পড়ে যে আপনার অনেক ভালো লেগেছে, সেটা জেনে অনেক খুশি হলাম আমি।
আপনার মাছ পালনের শখের কথা শুনে খুবই ভালো লাগছে। ছোটবেলায় আমারও এরকম শখ ছিল৷ সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে আপনি একুরিয়াম এর মাছ পালন করেছেন বৃষ্টির পানি ধরে৷ তবে সে মাছগুলোকে শৈল মাছ খেয়ে ফেলেছে শুনে খুবই খারাপ লাগছে এবং এর পরবর্তীতে আপনি সেই মাছকে বের করে দিয়েছেন, ভালোই করেছেন৷ ধন্যবাদ আজকের সুন্দর পোস্টে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য৷ খুব ভালো লাগলো আপনার সুন্দর পোস্ট পড়ে৷
ছোটবেলায় আপনারও যে এরকম শখ ছিল, সেটা জেনে অনেক ভালো লাগলো ভাই। যাইহোক, আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার যে খুব ভালো লেগেছে তা জেনে অনেক খুশি হলাম আমি।
আসলেই আপনার এই পোস্টের মাধ্যমে আমার শৈশবের স্মৃতি মনে পড়ে গেল।