সকলকে দীপাবলী র আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি আজ আমার পোস্ট শুরু করছি। আশা করি ঈশ্বরের আশির্বাদে সকলে ভালো আছেন।আমিও ভালোই আছি। তবে কিছুদিন খুব টেনশনে ছিলাম। কেনো ভাবছেন? থাকবো না? অ্যাডমিন প্যানেল থেকে একটা কঠিন বিষয় দেওয়া হয়েছে যে প্রতিযোগিতার জন্য।

আচার তৈরী মোটেই সহজ কাজ নয় হে বন্ধু! অনেক সময় আচার তৈরী করতে গিয়ে অনেক আচ্ছা আচ্ছা লোক আছাড় খেয়েছে যে।

হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। সুস্বাদু না হলে অথবা ফাঙ্গাস ধরে গেলে তো আচার আর আচার থাকে না। আছাড় হয়ে ফেরত আসে। তাই ভীষণ চিন্তায় ছিলাম।তবে ফাইনাল রেজাল্ট বেশ তুষ্টিজনক হয়েছে, সেটাই বড় পাওনা। আসুন আর বকবক না করে উপকরণ এবং প্রণালী জানিয়ে দি। একটু ধৈর্য্য ধরবেন দয়া করে। কারণ লিস্ট লম্বা হবে। 😊

বাপরে! উপকরণ লিখতে লিখতেই তো হাত ব্যথা হয়ে গেলো।যাই হোক এবার বানানোর পদ্ধতি নীচে বর্ণনা করলাম।

প্রত্যেকটা সব্জি কে ভালো করে ধুয়ে একদম এয়ার ড্রাই করে নিতে হবে। যাতে একদমই ময়েশ্চার না থাকে।

ছবিতে যে ভাবে দেখিয়েছি, সেই ভাবেই, না খুব পাতলা আর না খুব মোটা করে সব্জি কেটে নিতে হবে সমান মাপের।

সব্জি কাটা হয়ে গেল সব্জি তে হলুদ এবং নুন মাখিয়ে ৩০ মিনিট ফ্যানের তলায় রেখে দেব। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে হলুদ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল হওয়ায় হলুদ দিয়ে মাখলে এই আচার দীর্ঘদিন ঘরে রেখে খেতে পারবেন।তাই হলুদ মাখা টা জরুরি।

নুন মাখানোর কারণে সব্জি থেকে যে টুকু অতিরিক্ত জল বার হওয়ার তা বেড়িয়ে গেলে একটা থালায় করে নিয়ে কোন সুতির কাপড় অথবা কোন নেট দিয়ে ঢেকে অন্ততঃ একটা দিন রোদ খাওয়াতে হবে।এক্ষেত্রে যাদের বাড়িতে রোদ খাওয়ানোর ব্যাবস্থা নেই তারা টানা ৭-৮ ঘন্টা ফ্যানের তলায় রেখে দিতে পারেন। তবে আমি এই ক্ষেত্রে রোদে একটা দিন রেখেছিলাম। আর রাতের বেলা ফ্যান চালিয়ে ঘরে রেখেছিলাম।

একটা কড়াই গরম বসিয়ে শুকনো কড়াইয়ে ২ টেবিল চামচ সরষে,১ টেবিল চামচ জিরে প্রথমে ভালো করে লো ফ্লেমে রোস্ট করে নেব।

এরপর এক এক করে ১ চা চামচ মেথি(বেশী দিলে তেতো হয়ে যাবে), ১.৫ টেবিল চামচ ধোনে,২টেবিল চামচ মৌরি, ১ চা চামচ জোয়ান, ১ টেবিল চামচ গোলমরিচ,শুকনো লংকা কড়াইয়ে দিয়ে হাল্কা রোস্ট করে নিলাম।

মশলাগুলো সম্পূর্ণ ঠান্ডা হলে মিক্সার গ্রাইন্ডারে দিয়ে পিষে নিলাম। তবে একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, এই গুঁড়োটা মসৃণ যেনো না হয়। ঠিক আমি যেমন দেখিয়েছি এই ভাবে অমসৃণ করেই গুঁড়ো করতে হবে।

এবার আধ-শুকনো সব্জি গুলোকে বাটিতে নিয়ে পরিমাণ মত মশলা দিয়ে মাখাতে হবে। এই পর্যায়ে আপনি হাত ব্যবহার করতেই পারেন। এতে যেমন লবন প্রয়োজন তার চেয়ে অল্প বেশীই লবন আর হলুদ এবং চাট মশলা টা দেবেন।

এবার এতে হাফ কাপ সরষের তেল আর এক ছিপি ভিনিগার দেবেন।তেল পড়ে যাওয়ার পর আর হাত না দেওয়াই ভালো আচারে। এতে আচার নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।ভালো করে চামচ দিয়ে নাড়িয়ে দিতে হবে। এরপর ঢেকে ওভার নাইট রেখে দেব যাতে ভালো করে ভিজে যায় সব্জিগুলো তেল এবং মশলার সাথে।

পরের দিন শুকনো পরিষ্কার কোন কাঁচের পাত্রে ট্রান্সফার করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে কাঁচের পাত্র ব্যবহার করাই ভালো। এতে আচার দীর্ঘদিন থাকে।

এরপর পাত্রটিকে দুদিন ভালো মত রোদ খাইয়ে রেখে দিন। এই আচার টা এমন একটি আচার যা আপনি ভাত, মুড়ি বা পরোটা, রুটি দিয়েও খেতে পারবেন। ঠিক আমি যে ভাবে খাচ্ছি। 😋

আর স্বাদ? সে কথা তো আর বলে বোঝাতে পারব না। একবার কষ্ট করে আমার বাড়ি আসতে হবে চেখে দেখতে, অথবা এই পদ্ধতি অবলম্বন করে ঝটপট বানিয়ে ফেলতে হবে। আর অবশ্যই আমায় জানাতে হবে কেমন লাগলো। 😊

আজ এখানেই শেষ করলাম। আবার আসব নতুন কিছু নিয়ে। সকলে ভালো থাকবেন।