ভাগ্নের বিয়েতে কাটানো মুহূর্ত শেষ পর্ব
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর সকল ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন? নিশ্চয় মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করছি ।
ভাগ্নের বিয়েতে কাটানো মুহূর্ত শেষ পর্ব
বরাবরের মতো আজও আমি আপনাদের মাঝে এসেছি নতুন একটা পোস্ট নিয়ে। আসলে আজ এসেছি আমার ভাগ্নের বিয়েতে কাটানো মূহুর্ত নিয়ে। আসলে বিয়েটা হঠাৎ করে হওয়ায় যেভাবে আয়োজন করতে চেয়েছিল সেভাবে করতে পারেনি। তবে বিয়েতো মানুষ একবারি করে। আর বিয়ের দিনের স্মৃতি সারাজীবন মনে রাখে। সত্যি এমন দিন বারবার ফিরে আসে না। তাই সবাই চেষ্টা করে বিয়েতে একটু আনন্দ করার জন্য।আসলে আমরা কোন অনুষ্ঠান করিনি তবে অল্পতেই বেশি আনন্দ করেছি। আসলে যতটা সম্ভব আমরা আমাদের মতো আনন্দ করেছিলাম। আসলে গত পর্বে আমরা বরযাত্রী রওনা দেওয়া পর্যন্ত শেয়ার করেছিলাম। আজ আমরা শেয়ার করবো কিভাবে আমরা বউ এনেছি।সত্যি বলতে নিজের ওপর দ্বায়িত্ব থাকলে অনুষ্ঠানে তেমন ফটোগ্রাফি করা সম্ভব হয় না। তারপরে ও যতটা সম্ভব ফটোগ্রাফি করার চেষ্টা করেছি।তাহলে চলুন শুরু করি আজকের পোস্ট।
আমরা যখন মেয়ের বাড়িতে পৌঁছালাম। আমরা মোট চারটা গাড়ি নিয়েছি। পৌঁছানো মাত্রই তিনটি গাড়ির লোকজন নেমে গেল। আর বরের গাড়ির ভিতরে দুজন ছিল বর বাদে। সেই দুজন নেমে গেল কিন্তু আমাদের সমাজের নিয়ম অনুযায়ী বরকে মেয়ের পক্ষের লোকজন গাড়ি থেকে নামিয়ে নিতে হয়। কিছু সময়ের মধ্যে মেয়ের মা চলে এলো তাদের জামাইকে নামানোর জন্য। জামাই নামানোর পরপরই কিছু লোকজন দাঁড়িয়ে গেল গেটে।আসলে আমাদের বিয়েতে বেশি সময় ছিল না। তাই তেমন জাঁকজমক ভাবে গেট করতে পারেনি।যাইহোক যেভাবেই করুক গেটে তো সবাই দাঁড়িয়ে রয়েছে বরকে শরবত খাওয়ানোর জন্য। আসলে অনেক গরমের সময় শুধু বরকে না দিয়ে যদি আমাদের সবাইকে দিতে তাহলে অনেক ভালো হতো।তারপর আমরা পাঁচ হাজার টাকা দিলাম আর উনারা আমাদের ছেড়ে দিল
তারপর বরকে নিয়ে স্টেজে বসালো। আসলে আমার মনে হয় হঠাৎ হওয়া অনুষ্ঠানে বেশি আনন্দ থাকে। আসলে আগে থেকে জানা থাকলে তেমন মজা হয় না। আর একদিন দেখলে সেই গুলো সম্পর্কে জানার কৌতূহলটা বেশি থাকে। এদিকে আমরা সবাই গিয়ে খাবারের টেবিলে বসে পড়লাম।আসলে যেমন গরম তেমনি আমরা বসার সাথে সাথে কারেন্ট চলে গেল। তবে সবাইকে তো আর বাতাস করা সম্ভব নয়। আসলে যার বিয়ে তার অনেক মজা হয়। কারণ সবাই তাকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে। কারেন্ট যাবার সাথে সাথে বরকে বাতাস করার জন্য লোকজন চলে আসলো।আবার চার্জার ফ্যান দিল কিন্তু এদিকে আমরা গরমে কষ্ট করছি তা কেউ দেখে না। । কিছু সময়ের মধ্যে টেবিলে খাবার চলে এলো যদিও খাবারের ফটোগ্রাফি আমি করতে পারিনি।কারণ সবাই গরমে কষ্ট করলেও আমি ফ্যানের নিচে বরের কাছেই ছিলাম।তাই বরকে কয়েক ধরের খাবার দিল। আসলে আমাদের এলাকায় বরের এই খাবার গুলোকে বলা হয় স্বাক্ষরখানা। এখানে বিভিন্ন ধরনের পিঠা আস্ত মুরগি ইত্যাদি দিয়ে থাকে বরকে।যদিও অনেক দিন হলো এই খাবার গুলো খায়নি। যাইহোক ভাগ্নের বিয়েতে ঠিক খেয়েছি। খাওয়ানোর শেষে লোকজন দাঁড়িয়ে রয়েছে পয়সা নেবে বলে।আমি টাকা দেওয়ার ভয়ে বরকে রেখে বউয়ের কাছে চলে গেলাম।
তারপর আমরা বউকে কিছু গহনা দিয়েছিলাম। সেগুলো বুঝিয়ে দিতে চলে আসলাম।আসলে নাক ফুল আমরা পড়িয়ে দেয়নি। যদিও কোন গহনা আমরা পড়ায়নি তবে তাদের বুঝিয়ে দিয়েছি।তারপর আবার এসে দেখি উনারা টাকার জন্য দাঁড়িয়ে রয়েছে। এদিকে আবার বরের জুতা চুরি করেছে।আসলে বিয়েতে টুকিটাকি একটু হয় আরকি।তারপর দুই হাজার টাকা দিল তখন লোকজন বিদায় হলো।
তারপর আমরা অনেকেই ভিতরে গিয়ে বউয়ের সাথে বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করে নিলাম। আসলে বর্তমান মেয়েরা বিয়েতে কোন কান্নাকাটি করে না। তবে আমি কিন্তু অনেক কেঁদেছিলাম। বিয়েতে তারা অনেক আনন্দ অনুভব করে।আমরা বউয়ের সাথে ফটোগ্রাফি করতে করতে বিয়ে পড়ানো হয়ে গেল। সত্যি বলতে বর্তমান ছেলেমেয়েরা সবাই তারাতাড়ি সই করে দেয়। তারজন্য বিয়ে পড়াতে আর সময় লাগে না।
বিয়ে পড়ানো শেষ হলেই শুরু হল মালা বদল। তারপর আয়না দেখা আরো কতো ধরনের আইন আমাদের সমাজের সেগুলো মানতে হয় আরকি।সব কিছু শেষ হলেই দুজনকে এক জায়গায় বসিয়ে পায়েস খাওয়ানো হলো।আসলে কোন শুভ কাজের আগে মিষ্টি দিয়েই শুরু করতে হয়। সব কাজ শেষ করে আমরা আমাদের বউকে নিয়ে গাড়িতে তুলে রওনা দিলাম। এদিকে বউয়ের মা বোন আরো অনেকেই কান্না করতে লাগলো।যাইহোক সব মিলে বেশ ভালো একটা সময় কাটিয়েছি বিয়েতে। আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
প্রয়োজনীয় | তথ্য |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @parul19 |
ডিভাইস | redmi note 12 |
লোকেসন | ফরিদ পুর |
আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগে অন্য কোন লেখা নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
আমি পারুল। আমার ইউজার নেম@parul19। আমার মাতৃভাষা বাংলা। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি।আমি ফরিদ পুর জেলায় বসবাস করি।আমার দুটি মেয়ে আছে। আমি বাংলাই লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। আমি নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে ও ঘুরতে পছন্দ করি।এই অপরুপ বাংলার বুকে জন্ম নিয়ে নিজেকে ধন্যবাদ মনে করি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপু আপনার ভাগ্নের বিয়ে নিয়ে এর আগেও বেশ কিছু পর্ব দেখেছি। আর এবারের পর্বটি সত্যি অনেক স্পেশাল ছিল। কারণ দেখতে দেখতে শেষ পর্ব চলে এসেছে। বর এবং বউ দুজনকে একসাথে দেখে অনেক ভালো লাগলো। দুজনের জন্যই অনেক অনেক শুভকামনা এবং দোয়া রইল আপু।
দোয়া করবেন আপু ওদের জন্য, ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাগ্নের বিয়ের শেষ পর্বটি অনেক সুন্দর হয়েছে আপু। বিয়ের অনেক খুটিনাটি বিষয় সুন্দর করে তুলে ধরেছেন আপনার লেখায়। অনেক সুন্দর হয়েছে পোস্টটি। পোস্টের ছবি গুলোও বরাবরের মত সুন্দর হয়েছে। ভাগ্নে ও ভাগ্নি বউ এর জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা।তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হোক। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপু গঠন মূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
বিয়ে মানে আনন্দ বিয়ে মানে খুশি। আর বিয়ে মানে কবজি ডুবে খাওয়া দাওয়া করা। বর এবং কোণের জন্য দোয়া রইল তারা যেন সারা জীবন সুখে দুঃখে একত্রে থাকতে পারে। এটা ঠিক বলেছেন যে কোন অনুষ্ঠানের আগে থেকে প্রস্তুতি নিলে সেখানে মজা থাকে আর হুট করে কিনা কিছু হলে মজাটা পাওয়া যায় না। তারপরও বেশ আনন্দের সময় কাটিয়েছেন ধন্যবাদ সেই সময়টা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জি ভাইয়া বেশ ভালো মজা হয়েছিল,ধন্যবাদ আপনাকে।
বিয়ের অনুষ্ঠান তো আপু অল্প সময় হোক আর বেশি সময় হোক আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। আপনি পোস্ট লিখেছেন ফটোগ্রাফির সাথে সাথে পড়তে আমার খুবই ভালো লাগছে। আর আপনারা বিয়ের সব অনুষ্ঠান নিয়ম গুলো বেশ ভালোভাবেই পালন করেছেন। তবে বিয়ের সবকিছু শেষে পায়েস খেয়েছেন এই মিষ্টি খাওয়ানোটা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপু।
আপু আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক ভালো লাগলো, ধন্যবাদ আপু।
💯⚜2️⃣0️⃣2️⃣4️⃣ This is a manual curation from the @tipu Curation Project.
Also your post was promoted on 🧵"X"🧵 by the account josluds
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 5/8) Get profit votes with @tipU :)
আপনার ভাগ্নের বিয়েতে দেখছি অনেক নিয়মই পালন হয়েছে। আয়না দেখা, পায়েস খাওয়া, মালা বদল সব নিয়মই পালন হয়েছিল। এই নিয়মগুলো বিয়েতে হলে বেশ মজা হয়। অনেক বিয়েতে এই নিয়ম গুলো খুবই কম দেখা যায়। আপনার ভাগ্নের বিয়েতে সব নিয়ম পালন হয়েছে দেখে ভীষণ ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
সাবলীল মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
নতুন দম্পতির জন্য অনেক অনেক শুভকামনা। বিয়ে বাড়িতে এই বিদায় লগ্নের মুহূর্তটা আমার কাছে খুবই কষ্টদায়ক মনে হয়। বিয়েতে সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন তা আগের পর্বগুলোতে পড়েছি। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনার ভাগ্নের বিয়েতে কাটানো সুন্দর মুহূর্তের শেষ পর্ব শেয়ার করার জন্য।