সমাপ্তির জীবনের কাহিনী —(পর্ব-৩)
আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আজকের নতুন ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজও আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। টাইটেল দেখে হয়তো এতোক্ষণে বুঝে গিয়েছেন আজ আমি আপনাদের সাথে কি পোস্ট শেয়ার করবো।হ্যাঁ,,, আজ সমাপ্তির জীবনের কাহিনীর ৩য় পার্ট শেয়ার করবো। গত পর্বে ছিলো— সমাপ্তি আসলে খুবই সুন্দর এবং মেধাবী একজন ছাত্রী। সে তার বাবা-মায়ের সব থেকে ছোট সন্তান। দশটা বোনের মধ্যে সেই ছিল সবথেকে ছোট এবং তার কোন ভাই নাই। তার বাবার অনেক সম্পত্তি। সমাপ্তির বাবা সমাপ্তি অর্থাৎ ছোট মেয়েকে অনেক লেখাপড়া করাতে চেয়েছিল এবং তাদের আশা ছিল সে অনেক বড় একটি চাকরি করবে। তারপর তাকে ধুমধাম সহিত বিবাহ দিবে । লেখাপড়া করানো শেষ হলেও ভালো কোন চাকরি এবং বিয়ে হচ্ছিল না। অনেক ভালো ভালো জায়গা থেকে দেখতে আসতো, পছন্দ হতো কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিয়েটা আর হতো না। অবশেষে ঢাকায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গেলে সেখান থেকে একটি পরিবার তাকে খুব পছন্দ করে এবং তাদের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। অবশেষে দুই পরিবার রাজিও হয়ে যায়।
দুই পরিবারের সম্মতিতে তাদের ধুমধাম সহিত বিবাহ হয়। বিয়ের পর সে তার শ্বশুরবাড়ি ঢাকাতে চলে গেল। সমাপ্তি তার শ্বশুরবাড়িতে মন দিয়ে সংসার করছিল। কিন্তু কিছুদিন পর জানতে পারল তার স্বামী অনেক টাকার দেনা রয়েছে এবং তাদের গ্রামের বাড়িতে কোন সম্পত্তি ও ছিল না। তারা শুধুমাত্র ঢাকায় একটি বাসা ভাড়া করে থাকতো। এসব জানার পর সমাপ্তি এবং তার বাবা-মা অনেক ভেঙ্গে পড়েছিল। অবশেষে সমাপ্তির একটি চাকরি হলো তার বাবার বাড়ির এলাকায়। তাই সমাপ্তি তার স্বামীসহ বাবার বাড়িতে চলে আসলো। সমাপ্তি বাবার বাড়ি থেকেই তার স্কুলে পড়াতে যেতেন। যেহেতু সমাপ্তির সরকারি প্রাইমারি স্কুলে চাকরি হয়েছিল তাই তার বেতনটাও মোটামুটি ভালই ছিল। কিন্তু তার স্বামী বেকার ছিল এবং শ্বশুরবাড়িতে ঘরজামাই থাকতো জন্য গ্রামের মানুষজনেরা অনেক কটু কথা বলতো।এমনকি সমাপ্তির বাবার কাছেও কটুকথা বলতে দ্বিধাবোধ করত না।
অনেক চেষ্টার পর বিয়ের ৮ বছরের মাথায় সমাপ্তির গর্ভে সন্তাম এসেছিলো। সবাই এটা জেনে খুবই খুশি হয়েছিলো। সমাপ্তি যেহেতু প্রাইমারি শিক্ষক ছিলেন। তাই সে এই অবস্থাতেও প্রতিনিয়ত স্কুলে যাওয়া আসা করত। একদিন সমাপ্তি স্কুল থেকে আসার পথে হঠাৎ পা পিছলে রাস্তার উপর পড়ে যায়। বাড়িতে আসার পরই তার ব্লিডিং শুরু হয়। তখন সমাপ্তি আড়াই মাসের গর্ভবতী ছিলেন। তার এই পড়ে যাওয়ার কারণে আড়াই মাসের বাবুটি মিসক্যারেজ হয়ে যায়। যার ফলে সমাপ্তি সহ সমাপ্তির হাসবেন্ড এবং পরিবার অনেক ভেঙে পড়ে। এরপর থেকে অনেক ডাক্তার দেখিও আর কোন কাজ হচ্ছিলো না।
সমাপ্তির কিছুতেই বাচ্চা কনসিভ হয় না।ডাক্তাররা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ও তাদের কোন সমস্যা খুঁজে পাইনি। বর্তমানে তাদের বিবাহিত জীবন ১৪ বছর। তাদের বিবাহিত জীবন ১৪ বছর হওয়া সত্ত্বেও তারা একটি সন্তানের জন্য মনে আশা বেঁধে রয়েছে। বর্তমানে সমাপ্তি প্রাইমারি স্কুলের জব করে তার দিনটি কাটিয়ে দিচ্ছে। বাচ্চা না হওয়ার কারণে সমাপ্তির কিন্তু অনেকের থেকে অনেক কথা শুনতে হয়। সে সবকিছু মুখ বুজে সহ্য করে। আর গ্রামের মানুষেরা এসব বিষয়ে একটু বেশি খোঁচাখুঁচি করে। যেগুলো সমাপ্তি খুব ধৈর্য সহকারে শুনতো কিন্তু কোন উত্তর দিত না।
চলবে.....!!
আসসালামু আলাইকুম। আমি নীলিমা আক্তার ঐশী। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। আমি একজন স্টুডেন্ট। আমি অনার্স ৪র্থ বর্ষের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্রী। আর্ট করা,ঘুরতে যাওয়া এবং রান্না আমার খুবই প্রিয়। প্রিয়জনদের পছন্দের খাবার রান্না করে খাওয়াতে এবং তাদের প্রশংসা শুনতে আমার খুবই ভালো লাগে। নতুন নতুন রেসিপি শেখার আমার খুব আগ্রহ রয়েছে। আমি ২০২৩ সালের জুন মাসে স্টিমিটে জয়েন হয়েছি।আমি বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে জয়েন হয়েছি সবার সাথে বিভিন্ন রেসিপি এবং আর্ট শেয়ার করার জন্য এবং সেই সাথে অন্য সবার থেকে দারুন দারুন সব ক্রিয়েটিভিটি শিখতে। বাংলা ব্লগ কমিউনিটি একটি পরিবারের মত আর এই পরিবারের একজন সদস্য হতে পেরে আমি অনেক খুশি।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_Copy.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmQL4SxGA9Sdnn4JMpnVSe79yHzro2uaokTzUcohwupjb2/Heroism_Copy.png)
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপু সমাপ্তির জীবনের খুব সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করেছেন। যদিও এর আগের পর্ব গুলো পড়া হয়নি,তবে ৩য় পর্ব পড়ে খুব ভালো লাগলো। বিয়ে না হলে এক যন্ত্রনা আর বিয়ে হলে যদি সন্তান না হয় তাহলে আরেক যন্ত্রনা সহ্য করতে হয়। তার উপর যদি স্বামী বেকার থাকে তাহলে তো কথার কোনো শেষ নেই। সমাপ্তির জীবনে কষ্টের শেষ নেই। সন্তান হয়েও ছোট্ট একটা এক্সিডেন্টে সব শেষ হয়ে গেলো। এখন প্রায় ১৪ বছর হয়ে গিয়েছে সন্তান হয় না কিন্তু তাদের সমস্যা কি তাও জানেনা। যে এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে সময় পার করে শুধু সেই জানে কতটা কষ্ট হয়। যাই হোক পরবর্তীতে সমাপ্তির কি হলো জানার অপেক্ষায় রইলাম।
গল্পটি পড়ে এত সুন্দর একটি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
আপনার গল্পের সমাপ্তির জীবনের সাথে হয়তো অনেকের বাস্তবের জীবনের মিল আছে। বিয়ের আট বছর পরে তার সন্তান হওয়ার একটা সম্ভাবনা জাগে কিন্তু পা পিছলে পড়ে যাওয়ার কারণে সে আসাটা বন্ধ হয়ে যায়। বিয়ের ১৪ বছর পার হয়ে যাওয়ার পরেও সে সন্তান জন্ম দিতে পারেনি আসলে সবকিছুতো সৃষ্টিকর্তার হাতে মানুষ যতই কথা বলুক করো তো কিছু করার মত ক্ষমতা নেই।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া,, সবকিছুই মহান সৃষ্টিকর্তার হাতে। অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
যদিও আপনার লেখা গল্পটার প্রথম দুই পর্ব আমার পড়া হয়নি, তবে তৃতীয় পর্ব পড়ে ভালো লেগেছে আবার খারাপ লেগেছে। আসলে বিয়ের পর এই একটাই সমস্যা, বাচ্চা না হলে অনেক মানুষ অনেক কথা বলে থাকে। যদিও এত বছর পরে তার প্রেগনেন্সির কথা শুনে সবাই অনেক খুশি হয়েছিল। একটু আশার আলো জাগলেও আড়াই মাসের মধ্যে সেটা ভেঙে যায়। সে যদি পা পিছলে পড়ে না যেতো, তাহলে হয়তো বাচ্চাটা এখন তার সাথে থাকতো আর কিছুটা বড় হতো। এখন সে চাকরি করে দিন কাটাচ্ছে পরিবারের সাথে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত তাদের ঘরে বাচ্চা আসে কিনা।
গল্পটি পড়ে মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপু।
আপনার লেখা আজকের গল্পের তিন নাম্বার পর্ব পড়ে ভালো লেগেছে অন্য পর্বগুলো না পড়লেও। এত বছর পর যদিও সমাপ্তির গর্ভে সন্তান এসেছিল, কিন্তু ছোট্ট একটা এক্সিডেন্টে সন্তানটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আর এখন তো ১৪ বছর হয়ে গিয়েছে তার বিবাহ জীবনের, কিন্তু এখনো পর্যন্ত আর কোন সন্তান হলো না কথাটা ভাবতেই খুব খারাপ লাগতেছে। ফ্যামিলির সবার মুখে যদিও একটু আনন্দ এসেছিল, কিন্তু সেই আনন্দটা নিমিশেই চলে গেলো। আসলে বাচ্চা না হলে অনেক কিছুই শোনা লাগে ফ্যামিলির সবাইকে বিশেষ করে সেই মেয়েটাকে। সমাপ্তি তো ধৈর্য ধরে রয়েছে, দেখা যাক তার ধৈর্যের ফল মিষ্টি হয় কিনা। অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী পর্বের জন্য।
গল্পটি পড়ার মাধ্যমে এত সুন্দর একটি মতামত প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।