স্বরচিত কবিতা - লাশের বোঝা(বর্তমানে ঘটে যাওয়া ট্রাজেডিকে ভিত্তি করে)

---

---

🌼হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম।সবাই কেমন আছেন? করছি সবাই খুব ভালো আছেন,আমিও আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভালো আছি।

---

---

শিল্পীপ্রেমীদের উদ্দেশ্য সামান্য কথা

---

---

আমি জানি এখানে অনেক অনেক শিল্পীপ্রেমী রয়েছে। আর আমি চাই আমি ওই শিল্পীপ্রেমীদের মনের এক কোণায় জায়গা করে নিতে। তবে তা চাই সম্পূর্ণই নিজের যোগ্যতা,নিজের সৃজনশীলতা প্রদর্শন করেই।তাই জন্য আমার আজকের এই সামান্য প্রচেষ্টা। @amarbanglablog কমিউনিটিতে আমার আরো একটি নিজের লিখা কবিতা ।আশা করি সবার ভালো লাগবে,

আজকে লেখার মনটাই আজ পাচ্ছিনা।গতকাল দুপুরের সময় ভেবে রেখেছিলাম একটা ফুড রিভিউ করবো।তবে সত্যি বলতে যে আনন্দ নিয়ে আর কিছুতেই লিখতে পারছিনা।বারবার কাল রাতের সে ট্রাজেডির কথাগুলো মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।হয়তো প্রাণপ্রিয় চট্টগ্রামের নিউজ বলে আরো বেশিই মানতে কষ্ট হচ্ছে।জন্ম থেকে বেড়ে উঠা সবটাই এ চট্টগ্রামে তাই খারাপটাও আরো বেশি লাগছে।ঘরে বসে শান্তিতে নিউজ গুলো দেখতে এতোটা খারাপ লাগছে!না জানি আগুনে জীবন্ত দগ্ধ হয়ে যাওয়া মানুষগুলোর কেমন কষ্ট হয়েছে।

• যারা এখনো জানেন না তাদের জন্য ছোট করে লিখি,

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের "BM Container Depot Ltd" এ আগুন লেগেছে গতকাল রাতে।ঘটনাস্থল থেকে ৫ কি.মি দূরত্বেও ঘর বাড়ি,মসজিদ ইত্যাদি জায়গার গ্লাস,কাঁচ ভেঙ্গে গিয়েছে কম্পন আর শব্দে।ক্যামিক্যাল ডিপো হওয়াতে একের পর এক বিষ্ফোরণ এ চারপাশ অন্ধকার হয়ে আসছে।ভেতরের মানুষজন ও মারা যাচ্ছেই,সেই সাথে আশেপাশে যারা দূরত্ব মেনেও লাইভ করছিলো বা ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তাদের মধ্যেও মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।কোন কন্টেইনার এ কোন ক্যামিকেল আছে তা কেও ই জানেনা।তাই পানি দেওয়াতে আরো বেশি ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে।বাংলাদেশে এমন খুব কম ই হয়েছে।অগ্নিকান্ডের শিকার কয়েক শত,লাশ এখনো বের করা হচ্ছে।

এসব নিয়েই আসলে সারাদিন মন একেবারেই ভালো নেই।জানিনা লাশগুলোর স্বজনেরা কেমন আছে বা যারা বেঁচে থেকেও মৃত্যুর সমান।সৃষ্টিকর্তা সবাইকে ভালো করুক।

---

---

কবিতার নাম: লাশের বোঝা

---

---

রক্তের ঘ্রাণ চারপাশটায়,

সবুজ শহর রক্তে ভরা।
রক্ত পঁচা দুর্গন্ধটায় খসছে মোদের প্রাণ।
জীবিকার তরে রক্ত দিতেও রাজি আজ যে কর্মী,
তাদের প্রাণের ই দাম নেই যে হিসেব করে বা লাভ কি!

নরবলি নাকি অবৈধ এখন,
সত্যি কি তা হয়েছে?
নরবলি আজ নাম বদলিয়ে রাজ করছে এ শহরেতে।
নরবলির নাম পেশায় বদলেছে,
বদলেছে তার ধরণ ও।

বলি এখন স্রষ্টার নয়,
সবটাই সৃষ্টির জন্য।
নরবলি দিতো স্রষ্টার কাছে পেতে অলৌকিক শক্তি,
আজ সে তো হয়েছে বন্ধ।
তবে হয় আজ সব জীবিকার দায়েতে,
নরবলি হয় নামে,বেনামে ঠিকানা বদলিয়ে।

প্রাণের প্রিয় শহরটা আজ অন্ধকারের হাতছানি,
ডুবেছে স্বপ্ন,ভেঙ্গেছে হৃদয়,বেদনা আর আহাজারি।
যেদিকে তাকাই অশ্রুজলে ভাসছে আজ এ শহর,
যে শহর ছিলো স্বর্গের ন্যায়,হলো আজ রূপান্তর।

নিশ্চুপ রাত,মিষ্টি আঁধার সবটাই ঠিক ছিলো,
কি যেনো হলো,শহর কাঁপলো আর শত তাজা প্রাণ গেলো।
নিশ্চুপ রাতের আঁধার আকাশ হঠাৎ আলোকিত হলো,
আগুনের ফুলকি আকাশপানে যেনো আলো জ্বেলে দিলো,
জ্বলে যেনো আর নিভতে চায়না,দিন ফুরিয়ে গেলো।

হাসি মুখখানা,স্বপ্ন হঠাৎ ধোঁয়াশায় রূপ নিলো,
হাসি মুখ এখন উৎকণ্ঠা আর হতাশায় ডুব দিলো।
আগুনের সে কি তেজ!
সে কি রণমূর্তি ধারণ হলো।
সভ্যতার সিঁড়ি কাল হলো যে,
প্রাণবাতি নিভিয়ে গেলো।

তাজা রক্তেমাখা প্রাণের শীতল চাহনির ভয়ংকর কি রূপ,
সে রুপ সর্বদা ছিলো কাজে নিয়োজিত,নিশ্চুপ হলো মুখ।
শহরটা আজ বড্ড ক্লান্ত কাঁধে লাশের বোঝা,
শহরটা আজ হত্যাকান্ডের লাল রক্তে রাঙ্গা।

শহরটা আজ ঢুকরে কাঁদছে,
নিতে না পেরে আহাজারি।
শহরটা আজ কালোয় ঢাকা,
অন্ধকারে আত্মচিৎকার,আহাজারি।
শহরটা আজ শূন্য চোখে অবাক হয়ে আছে,
শহরটা আজ নিরুপায় হয়ে অশ্রুতে ডুবে যাচ্ছে।
শহরটা ছিলো খুব করে প্রিয়,
শহরটা ছিলো প্রিয় মাতৃভূমি।
এ শহরটাই আজ হায়েনারা খেলো,
তাজা রক্তের উৎসব আর লাশের আর্তনাদ কে শুনে!

বলার মতো নেই আজ ভাষা,
লেখার মতোও নেই মন।
সত্যি চাই নির্দ্ধিধায় মানুষ বাঁচুক,
প্রাণপ্রিয় চট্টগ্রাম আবার হাসুক।

---

---

সমাপ্তি

---

---

কবিতা ব্যাপারটি ভীষণ স্পেশাল।অনেকের কাছে কবিতা মানে শুধু যা মন চায় লিখে দেওয়া।তবে আমার মতো কবিতা প্রেমী মানুষদের কাছে কবিতা মানে ভাবের বহিঃপ্রকাশ,কবিতা মানে ভালোবাসা,কবিতা মানে কোনো গল্পকে ছন্দে বাঁধা,কবিতা মানে ছন্দে ছন্দে গল্প গুলোকে সকলের সামনে উপস্থাপনা করা।তাই আজকাল কবিতা লেখার ট্রাই করছি অল্পস্বল্প।খুব একটা ভালো না হলেও ,আপনাদের যে ভালোবাসা পাই তা ই আমার জন্য যথেষ্ট।

ধন্যবাদ সকলকে আমার কবিতা পড়ার জন্যে।

আজকের ভিন্ন ধরণের কিছু চেষ্টা করেছি। জানিনা কতোটুকু ফুটিয়ে তুলতে পারলাম।আমার আজকের কাজটি কেমন লাগলো তা অবশ্যই আপনাদের মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে জানাবেন।
ভালো থাকবেন সবাই।

ভালোবাসা নিবেন ❤️
ইতি,
@nusuranur

---

---