সেদিনের বর্ষা যেমন ছিল- সিরিজ ১।। বর্ষায় লেখা অনুভূতি।। ক্রিয়েটিভ রাইটিং
☔নমস্কার বন্ধুরা☔
নীলমের লেখামিতে আপনাদের স্বাগত
কেমন আছেন বন্ধুরা? আশা করি ঈশ্বরের কৃপায় আপনারা সবাই বেশ ভালই আছেন। আপনাদের ভালো থাকা কামনা করি শুরু করছি আজকের ব্লগ।
সারাদিনই প্রায় বৃষ্টি। দিনশেষে তাই পুরনো লেখাগুলোর কথা খুব মনে পড়ছিল। এখন তো আর হার্ট কপি লিখে রাখার থাকে না, বেশিরভাগ লেখাই ফোনে নোটপ্যাডে জমানো থাকে। সেইসব লেখা পড়তে পড়তে হঠাৎ একটা লেখা চোখে পড়ল মনে হল আপনাদের সাথে শেয়ার করি।
গতকাল রাত্রিবেলায় কে পোস্ট করে শুতে শুতে প্রায় ভোর হয়ে গেছিল। সারারাত জাগলে আমার খুব ক্লান্ত লাগে। প্রয়োজনের থেকে একটু বেশি ঘুমাই বলে আমাকে সবাই লেডি কুম্ভকর্ণ বলে। সারাদিনটা যে কিভাবে কেটে গেল সেটা নিজেই বুঝতে পারলাম না। এদিকে কবিতার কাজ মাথার ওপর যেন ঘন্টা বাজাচ্ছে। সন্ধ্যা থেকে সেই সব নিয়েই বসেছিলাম টানা। পোস্ট করার কথা আর মনেই হয়নি। তারপর হ্যাং আউট। হাতের মাঝে এই অনুষ্ঠানটি বেশ রিফ্রেশমেন্ট এর মত। যদিও আজ সবারই মন ভারাক্রান্ত। কিন্তু যে সমস্ত গানগুলো বাজছিল সেগুলো চোখে জল এনে দিলেও ভালোই লাগে। জীবনে দুঃখ নেই এমনটা তো সত্য নয়। জীবনের লড়াই আছে দুঃখ আছে আনন্দ আছে সবই আছে। তাই আমি মনে করি সব কিছু নিয়েই এগিয়ে যাওয়া ভালো। দুঃখ পেতে কষ্ট হয় বলে দুঃখ কখনো পাবোনা এই কথা জীবন বলে না। এই প্রথমবার হ্যাঁ ওকে রবি ঠাকুরের কবিতা পাঠ করলাম। রবি ঠাকুর যেন সবেতেই রয়েছে। আমাদের সমস্ত অন্ধকারের কিংবা আলোর আশ্রয় সাথে সাথে নিরাময়ও তিনি।
এখনো বাইরে ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়ছে। তাই ভাবলাম একটা পোস্ট করেই ফেলি। এটা করোনার সময় লেখা। তার আগে বেশ কিছু মাস আমি লেখা থেকে বিরতি নিয়েছিলাম। তারপর যখন শুরু করলাম সে যেন ম্যারাথন চলছে তো চলছেই। আজ আর ভাবি না যে লেখা থেমে যায়। কারণ মনে হয় ওইটুকুই আমার। ওইটুকুই আমি পারি। সেদিনের জীবনযাপন যেমন ছিল, যেমন পারিপার্শ্বিক অভিজ্ঞতা হয়েছিল তার উপর এই এই লেখাটা। তখন অতিমারির দিন আর আমি একের পর এক গৃহবন্দীর ডাইরি লিখে চলেছি। সেই ডায়েরির পাতাগুলি ও কখনো কখনো আপনাদের পড়াবো ভেবে রেখেছি। আসলে সেগুলো তো কোথাও প্রকাশ করিনি নিজের জন্য লেখা। এখন মনে হয় এখানে লিখে রাখি।
চলুন বন্ধুরা দেখে নিই আমার সেই বর্ষা সিরিজের গদ্যটি। আশা করি আপনাদের খুব ভালো লাগবে পড়ে। মন্তব্য করে জানাতে ভুলবেন না।
ছবিটি কাঁচের ভেতর থেকে তুলেছিলাম। তারপর ফটোশপ এডিটিং করেছি। কেমন লাগছে বন্ধুরা?
বর্ষা সিরিজ ১
'জলের দরে জিনিস বিকোচ্ছে' - জানতে পারলাম জলের দাম খুব কম। স্বাভাবিক৷ রাস্তা ঘাটে, নালা নর্দমায়, এমনকি বাড়তি গ্লাসেও জল পড়ে থাকে। অথচ জল খেতে হয় টাকা দিয়ে৷
ভোরবেলায় ই-নিউজপেপার খুলতেই চোখে পড়ল 'আগামী পাঁচদিন ভারি বর্ষণ'। ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সবকটা জামায় লাগিয়ে দিচ্ছিলাম এক একটা ক্লিপ। গত মাসেও চড়া রোদ ছিল। এখন মেঘ। জামাগুলোতে তাই জল লেগে থাকে সারাদিন৷
আজ ৪ঠা শ্রাবণ।
সমস্ত মিঠা আম নাম ডুবিয়ে ঝালিয়ে নিচ্ছে 'নৌকাডুবি'র গল্প। আমের কথা বলতেই মনে পড়ল এই অতিমারির দিনেও মানুষ ভিন রাজ্যে। ফুটপাতের মাঝে একটু যায়গায় ত্রিপল খাটিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছে হিসাব শেষের দর। থরে থরে সাজানো মালদা, নাগপুর, রত্নাগড় আরও কত কি৷
দোকানী দাড়িপাল্লা হাতে তুললে আমি স্পষ্ট দেখতে পাই একদিকে খিদে অন্যদিকে অসুখ। ভারে নেমে যাচ্ছে খিদের দিক। ঠিক এই সময় লাল সাদা নয়নতারাগুলোও বুঝে যায় কোন দিকে ঝুলিয়ে রাখবে নরম শিরদাঁড়া৷
এইসব ভাবতে ভাবতেই বৃষ্টি নেমে এলো। আস্তে করে পা বাড়িয়ে দিই৷ এক ফোঁটা দু ফোঁটা করে জল গড়িয়ে পড়ে। জল এসে বসে পড়ে মুখের ওপর। আমি, ভিজিছি।
আমি ভিজেই চলি। স্বভাবে। অভাবে। জল যে অসম্ভব সস্তা৷ পড়ে থাকে ভাঙা রাস্তায়, নতুন ঘরে, এবং সারা শরীরে৷
তুই ছিল আমার আজকে নিবেদন। আপনাদের কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন।
আবার কাল আসবো অন্য কোন লেখা নিয়ে। ততক্ষণ আপনারা ভীষণ ভালো থাকুন। সবাইকে ভাল রাখুন। সৃষ্টিতে জীবনকে নতুন নতুন ভাবে দেখুন।
টাটা।
৫% বেনিফিসিয়ারি এবিবি স্কুল কে আর ১০% বেনিফিসিয়ারি লাজুক খ্যাঁককে
~লেখক পরিচিতি~
আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। তবে বর্তমানে বেশ কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ বর্তমানে ভারতবর্ষের পুনে তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশ ও ইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
একদম ঠিক বলেছ কালকের হ্যাংআউটের
প্রতিটা গান শুনে চোখ দিয়ে যেমন অশ্রু ঝরছিল,, তেমনি অন্যরকম একটা ভালো লাগার অনুভূতি অনুভূত হচ্ছিল মনে প্রাণে।
তবে তোমার কন্ঠে কালকের আবৃত্তিটা ছিল অসাধারণ। আমার কাছে দারুন লেগেছে।
সেদিনের বর্ষা যেমন ছিল সিরিজ চালিয়ে যাও।
শুভকামনা 💞
বর্ষাকাল চলছে তো তাই চেষ্টা করব এক একটা করে অনুভূতি এইভাবে শেয়ার করবার তুমি পড়ো, আমার খুব ভালো লাগবে। গানগুলো আমারও খুব পছন্দের সকাল থেকে আমি নিজেই মনে মনে গাইছি আবার কখনো জোরে জোরেও গাইছি।
আমি তো আবৃত্তিকার নই চেষ্টা করি মাত্র তোমার ভালো লেগেছে শুনে আমি খুব খুশি হলাম। ভালো থেকো তোমাদের মন্তব্যই আমার পরবর্তী লেখার প্রেরণা দেয়।
আপনার এই পোস্টটা পড়ে সত্যিই মন ছুঁয়ে গেল। বৃষ্টির মধ্যে লেখা গদ্যগুলোর এমন গভীরতা আর আবেগ আমাদের হৃদয়কে মুগ্ধ করেছে। সত্যিই, জীবনের দুঃখ-সুখ মিলে এক অনন্য সমষ্টি।
"বর্ষা সিরিজ " লেখাটি অসাধারণ হয়েছে। প্রতিটি শব্দে, প্রতিটি লাইনে বৃষ্টির ছোঁয়া আর জীবনের বাস্তবতা যেন ফুটে উঠেছে। আপনার লেখার গভীরতা আর ভাষার মাধুর্য আমাদেরকে মোহিত করেছে। অপেক্ষায় থাকবো পরবর্তী লেখাগুলোর জন্য। আশা করি আপনি আরও এমন সুন্দর লেখা নিয়ে আমাদের মাঝে আসবেন।
[@redwanhossain]
আপনার যে এতটা ভাল লেগেছে সেটা জানতে পেরে আমি সত্যিই ভীষণ খুশি হয়েছি। এখানে লিখে এই উৎসাহটুকু না পেলে পরবর্তী লেখার ইচ্ছে মনি একেবারেই জাগে না। অবশ্যই আমি পরবর্তী পর্বগুলো এখানে লিখব আর আশা করব কেউ পড়বেন এবং আমাকে জানাবেন কেমন লেগেছে। আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন