🙏 নমস্কার 🙏

নীলমের লেখামিতে আপনাদের স্বাগত

🪷🪷🦋🪷🪷

---

---

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা, সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।

---

---

ব্যাকগ্রাউন্ড টা ক্যানভাতে বানিয়েছি

আজ সকাল থেকেই প্রবল বৃষ্টি। না ঠিক সকাল থেকে নয় যখন থেকে ঘুম ভেঙেছে আমি বুঝতেই পারিনি সকাল হয়েছে না মাঝরাত৷ এত অঝরে বৃষ্টি পুনেতে আমি কখনো দেখিনি। বৃষ্টি বলে তো আর দৈনন্দিন জীবন থেমে যায় না। মহারাষ্ট্রের পশ্চিমঘাট অংশ এরকম ওয়েদারের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে বহু বছর ধরেই। তবে শুনেছিলাম পুনেতে এত বৃষ্টি হয় না কিন্তু এখানে থাকার পর দেখছি না এখানেও হয়। এই বৃষ্টিটা দেখতে খুব মজাদার হয়। কেন জানেন? হঠাৎ হঠাৎ করেই দেখবেন মেঘ নেমে এসে ঢুকে পড়েছে আপনার ঘরের মধ্যে। আজও হয়েছিল বেশ কয়েকবার কিন্তু দরজা বন্ধ থাকার জন্য ঘরে ঢুকতে পায়নি, ব্যালকনিতে বসে আসর জমিয়েছিল। একেকবার মনে হয় ওই মেঘগুলো এখানেই যেন জমাট বেঁধে বৃষ্টি হবে। কিন্তু সেরকমটা হয় না মেঘ আসে থাকে আবার উড়ে চলে যায়। এই মেঘের হটচট নেমে চলে আসাটা অদ্ভুত সুন্দর লাগে।

এরকম ওয়েদারে খুব ইচ্ছে করলো আজ রং তুলি নিয়ে বসি। রং তুলে নিয়ে করবো কি অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম আরেকটা ম্যান্ডেলা আর্ট বানাই। অথেন্টিক ম্যান্ডেল আর্ট তো বানাতে পারিনা তাই এদিক ওদিক ফিউশন করে যা পারি।

এই আর্টফর্মটি বানাতে আজ খুব একটা বেশি সময় লাগেনি। সারাদিন ধরেই কাজের ফাঁকে ফাঁকে একটু একটু করে করে নিয়েছি। সে কারণেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রগুলো ঘরজুড়েই পড়েছিল।

চলুন বন্ধুরা দেখে নিই কি কি জিনিসপত্র লেগেছে আমার।

আজকের ম্যান্ডেলা আর্টটি যখন বানাতে শুরু করি তখন ভেবেছিলাম সম্পূর্ণ আর্টটাই লাল কালো জেল পেন দিয়ে বানাবো। তাই এই সামান্য জিনিসপত্র নিয়ে শুরু করেছিলাম। কিন্তু আমার কাজ তো, যা ভেবে শুরু করি আর শেষ হয় একেবারেই অন্যরকম কিছু। পরবর্তীতে উপকরণ আরো যা কিছু লেগেছিল তার একটা ছবি আলাদা করে দিচ্ছি।

মানে ওই আমার জলরঙে বাক্স, তুলি, আর রঙিন পেন্সিলগুলো।

সবার শেষে এইগুলো লাগলেও শুরু করেছিলাম একেবারেই সাদামাটা করে। তো চলুন ছবির মাধ্যমে দেখে নিই কিভাবে আমি আজকের ম্যান্ডেলা আর্টটি বানিয়েছি।

একাধিক ছোট থেকে বড় মাপের বৃত্ত আঁকার পর আবার মোছামুছি করে একখানা প্রজাপতি আঁখলাম। এই হচ্ছে আমি। প্রজাপতির কথাটা প্রথম থেকে ভাবিনি। কিন্তু আঁকতে কি ভাবলাম এখানে একটা প্রজাপতি বা অর্ধেক ফুল দিলে কেমন হয় কিংবা মৌমাছি। কিন্তু মনে পড়লো আগের দিনই একটা ফুলের ওপর ম্যান্ডেলা বানিয়েছিলাম। তাই খানিকটা মুছে দিয়ে প্রজাপতি এঁকে নিলাম।

যথারীতি ওই বৃত্তাকার চাঁদা টি দিয়ে সমানভাবে ভাগ করে বেশ কিছু লাইন আমি এঁকে নিয়েছি। সাথে প্রয়োজনীয় বৃত্তগুলো কালো রঙে জেল পেন দিয়ে আঁকতে শুরু করলাম। এরপর ধাপে ধাপে একটু একটু করে বৃত্তটি নানান রকম কলকা দিয়ে ভরিয়ে তুলেছি।

কেমন হচ্ছে বন্ধুরা? দেখছেন তো প্রত্যেকটা বৃত্তই একেক রকম কলকা দিয়ে একেক রকম ডিজাইনে ভরিয়ে তুলেছি। কারো সাথে কারোর মিল নেই অথচ একে অপরের সাথে জুড়ে রয়েছে। এটা যখন হয়ে যায় তারপর জানিনা কেন কী অপূর্ব দেখতে লাগে। অথচ যখন করি তখন যে কত ভুল ভ্রান্তি হয়, এবং পেনের দাগও একটু আধটু এদিক ওদিক হয়ে যায়। কিন্তু যখন পুরোপুরি শেষ হয়ে যায় ওই ভুল ভ্রান্তি গুলোকে ছাপিয়ে এই সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। চলুন পরবর্তী ধাপ গুলো দেখে নিই।

ধাপ গুলো একটু ভালো করে দেখলেই বুঝতে পারবেন, সর্বশেষ যে বৃত্তটি ছিল সেদিকে আমি পরে পরিমাণ মতো করে কমিয়ে নিয়েছি। এবং যে কটি দাগ টেনেছি ওটিতে ভেবেছিলাম কিছু করব, কিন্তু এই পর্যন্ত করার পর আমার মনে হয়েছিল যে প্রতিটা ম্যান্ডেলা আর্টেই বৃত্তাকার লাইন দিয়ে শেষ না করলেও চলে। তো তারপর আমি ওই বাইরের দুটো অতিরিক্ত লাইন মুছে দিয়েছিলাম। পরবর্তী ছবিগুলোতে সেটি চোখে পড়বে। তবে এই পর্যন্ত ম্যান্ডেলা আর তো মোটামুটি হয়েই গেছে। এরপর আমি উঠেছিলাম একটু চা টা খেলাম তারপরে এসে আবার বসেছিলাম। উঠে যাওয়ার আগে ভেবেছিলাম এই প্রজাপতিটি আমি কালো রং দিয়েই কলকা আঁকবো ঠিক যেমনটা ম্যান্ডেলা আর্টের ভেতরে হয়। তো পেন্সিল হাতে নিলাম,দিয়ে ভাবলাম রং করি তবে এই জিনিসটা আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে । তখন উঠে আলমারি খুলে আমার সমস্ত রঙের জিনিসপত্র বের করে আনলাম এবং রং করতে শুরু করলাম।

প্রজাপতির রং করার সময় মনে ছিল না ছবি তুলতে, এই জিনিসটা আমার বারবারই হয়। তাও এবার মনে করে করে প্রতিটা দাবির ছবি তুলেছিলাম। যাই হোক প্রজাপতির পরে নীল রং দিলাম যাতে আর্টটি আরো সুন্দর দেখতে লাগে এভাবেই আজকে আর্টটি শুরু হয়েছিল এক রকম ভাবে আর শেষ হল আরেক রকম ভাবে। ছবিগুলি যখন তুলি তখন রং শুকনো হয়নি। আসলে এত বৃষ্টির মধ্যে বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে ফ্যান চালানো হয়নি আর রঙে ভেজা কাগজ শুকোতেও অনেক সময় লেগে গেল। তাই ফাইনাল টাচের জন্য আমাকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল।

পেন্সিলের দাগ অনুযায়ী প্রজাপতির গায়ের বাইরে ও ভেতরে কালো কালির পেন দিয়ে দাগ কেটে বর্ডার এঁকেছি। আর বাকি ছবিগুলো আঁকার জিনিসপত্রের সাথে এক্সট্রা পোজ। আসলে এতো কষ্ট করে।সময় নিয়ে আঁকলাম কিছু ছবি আর সাথে ফটোশপের কাজ তো দাবী করেই। এই সব ভেবেই।ক্যানভাতে কিছু ছবি বানিয়েছি। একটা প্রথমে দিলাম। বাকিগুলো নিছে।দিচ্ছি।

কেমন হয়েছে বন্ধুরা আজকের পোস্টটি আশা করি আপনারা কমেন্ট করে জানাবেন। আপনাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় রইলাম। অনেক ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য।

আবার আগামীকাল আসব অন্য কিছু নিয়ে। আজকের ব্লগটি এখানেই শেষ করছি। আপনারা ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আর সমস্ত পচনশীল অসুখ সেরে যায়। আমাদের দেশগুলি হয়ে উঠুক আবর্জনামুক্ত।

পোস্টের বিবরণ

উপকরণ	লাল কালো জেল পেন, পূর্ণ চাঁদা, স্কেল, পেন্সিল কম্পাস, রঙ, তুলি, রঙ পেন্সিল আর অনেকটা সময়
পোস্টের ধরণ	আর্ট পোস্ট
ফটোগ্রাফি	স্যামসাং F54
ব্যবহৃত অ্যাপ	ক্যানিভা, অনুলিখন
ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভার	লিংক

৫% বেনিফিসিয়ারি এবিবি স্কুলকে এবং ১০% বেনিফিসিয়ারি লাজুক খ্যাঁককে