হৃদয়বিদারক ঘটনা (শেষ পর্ব)
আসসালামু আলাইকুম
সবাই কেমন আছেন? আশা করি আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো সুস্থ আছি। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে নতুন ব্লগ শুরু করলাম।
(প্রথম পর্ব) (দ্বিতীয় পর্ব)
হৃদয়বিদারক ঘটনার দ্বিতীয় পর্ব এবং প্রথম পর্ব আপনাদের সবার খুবই ভালো লেগেছিল। এবং সবারই গল্প পড়ে খারাপ লেগেছে। তৃতীয় পর্বটি ও আপনাদের অনেক ভালো লাগবে। প্রথম পর্বে ছেলেটির সুন্দর দিনগুলো সম্পর্কে শেয়ার করেছি। হাসিখুশি একটি ছেলে ছিল অন্তর। পড়াশোনা করার সময় একটি মেয়ের সাথে পরিচিত হয়েছিল । দীর্ঘ ছয় বছর রিলেশন ছিল তাদের। পরে পরিবারের সবাই তাদের রিলেশন এর কথা জানতে পারে। দ্বিতীয় পর্বে বলেছিলাম, হঠাৎ করেই মেয়েটাকে শহরে নিয়ে বিয়ে দিয়ে দেয় মেয়ের পরিবার। তিন মাস পর ছেলেটি যখন বিষয়টা জানতে পারে তখন স্টক করে। ধীরে ধীরে মেয়েটাকে সারাক্ষণ ডাকতো ছেলেটি। এক পর্যায়ে ছেলেটি মেয়েটির জন্য পাগল হয়ে যায় এবং, মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করায় পরিবার। ছেলের জন্য ধীরে ধীরে ছেলেটির মা ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে মাকেও মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। ছেলেদের পরিবারটি পুরোই ধ্বংস হয়ে যায়। বাবার টাকা-পয়সা কমতে শুরু করল। বিষয়গুলো প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্বে বলেছিলাম।
এরপর বাবা একজন উকিলের সাথে কথা বলে। কথা বলে মেয়েটির পরিবারের নামে মামলা করেছে থানায়। তখন মেয়েরা শহরে থাকতো। থানা থেকে একটি উকিল নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। সেখানে বিষয়গুলো সব উল্লেখ করেছিল ছেলের বাবা। উকিল নোটিসটি পড়ে মেয়েটিও সব জানতে পারে। তখন তাদের পরিবারেও সমস্যা সৃষ্টি হতে শুরু করল। ছেলেদের কথা শুনে মেয়েটি ও অসুস্থ হয়ে গেল। কয়েকদিন পর হঠাৎ করেই মেয়েটি লুকিয়ে ছেলেদের বাড়িতে চলে আসে। ছেলেটি মেয়েটিকে দেখে হতবাক হয়ে গেল, পাগল অবস্থায়ও মেয়েটিকে চিনতে পারল। মেয়েটি যখন ছেলেটিকে দেখেছে তখন মেয়েটি অনেক কান্না করেছিল। কিছুক্ষণ পর ছেলেটির বাবা মেয়েটির আসার কথা শুনেছে, তখন অনেক রাগান্বিত হল। মেয়েটিকে মারধর করার চেষ্টা করেছিল বাবা । এবং অনেক কথা শোনাতে লাগলো মেয়েটাকে। মেয়েটিকে একটি রুমের মধ্যে রেখেছিল এলাকাবাসী। কিন্তু বিষয়টা ছেলেটি মানতে পারতেছিল না।
মেয়েটিকে দেখার পর থেকেই ছেলেটির যেন পরিবর্তন হতে শুরু করল। সবাইকে বুঝানোর চেষ্টা করতেছে যে তার কোন ভুল নেই। এরপর মেয়েটিকে রুমের মধ্যে রেখে তার পরিবার এবং স্বামীর পরিবারকে খবর দিল। এরই মধ্যে ছেলেটির বাড়িতে পুলিশ কে ডেকেছিল ছেলেটির বাবা। কিন্তু ছেলের কারণে মেয়েটিকে কোন ক্ষতি করতে পারল না। দুইদিন পর মেয়েটির পরিবার এবং মেয়ের স্বামীদের পরিবার ঘটনাস্থলে আসলো। তখন মেয়েটিকে ছেলেটির বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে রেখেছিল। এক সপ্তাহের মতো মেয়েটি ছেলেটির বাড়িতে রয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ছেলেটির অনেক পরিবর্তন দেখেছে , ছেলের পরিবার এবং গ্রামের সকল মানুষ।
প্রথম অবস্থায় মেয়েটির পরিবারকে অনেক কটু কথা শুনেছিল এলাকাবাসী। মেয়েটির পরিবার সমস্ত বিষয় জানার পর অনেক দুঃখ প্রকাশ করল। এ বিষয়ে মেয়েটির পরিবারের কোন দোষ ছিল না। গ্রামের সবাই ছেলেটির পরিবারকে বলল, ছেলের বাবা বলল, দীর্ঘ ছয় বছরের সম্পর্কের কথা শুনে আপনারা আমাদেরকে কিছু বলতে পারতেন। কিন্তু তা না করে চুরি করে শহরে নিয়ে গিয়ে আপনারা মেয়েটিকে বিয়ে দিয়েছেন। এটি কি ঠিক হয়েছে। মেয়েটির পরিবার বলল আমাদের পছন্দের ব্যাপার ছিল। অনেক আগে থেকেই মেয়েটির হাজবেন্ডের সাথে মেয়েটির বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। এজন্য হুটহাট করে মেয়েটিকে বিয়ে দিয়ে দিলাম।
এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেক বড় একটি বিচার হয়েছিল গ্রামের মধ্যে। সেখানে উপজেলা চেয়ারম্যান সহ থানা প্রশাসন সবাই উপস্থিত ছিল। কিন্তু সবার কথা শুনে আসলেই তাদের পরিবারেরও দোষ দেওয়ার মত অবস্থায় ছিল না। কারণ তাদের মেয়ে তারা বিয়ে দিবে এটাই স্বাভাবিক। এই ঘটনাটি সম্পর্কে মেয়েদের স্বামীদের পরিবারের কিছুই জানা ছিল না।
অনেক বিষয় কথা বলার পর আসলো সমাধানে। মেয়েটির হাসব্যান্ড ছিল অনেক টাকা পয়সার মালিক। ছেলেটির চিকিৎসার জন্য ১০ লক্ষ টাকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এবং ছেলেটি সুস্থ হওয়া পর্যন্ত মেয়েটি ছেলেটির কাছে থাকবে এই আশা দিয়েছে। কারণ এক সপ্তাহের মধ্যে ছেলেটির অনেক পরিবর্তন দেখে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিল। এলাকার সবাই মনে করতেছে মেয়েটি যদি থাকে তাহলে ছেলেটি অনেক তাড়াতাড়ি সুস্থ হবে। ছেলেটি সুস্থ হলে তার মা অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ছেলে এবং মেয়ের পরিবার চলে যায়। কিন্তু মেয়েটির হাজবেন্ড ছেলেদের গ্রামে থেকে যায় মেয়েটির সাথে। কয়েক মাস মেয়েটির সাথে থাকার সিদ্ধান্ত নেলেন ছেলেটি। বিশেষ করে মেয়েটির স্বামীর কথা শুনেই গ্রামের সবাই মুগ্ধ হলো। কারণ সে অনেক ভালো একজন মানুষ ছিলেন। এই বলে গল্পটির শেষ করা হলো।
নিজেকে নিয়ে কিছু কথা
আমার নাম নুরুল আলম রকি। আমার steemit I'd narocky71। আমি বাংলাদেশী নাগরিক । বাংলাদেশে বসবাস করি। তার সাথে সাথে আমি বিশ্বনাগরিক। আমি বাংলা ভাষায় কথা বলি। বাংলা ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করি। আমি বাংলা ভাষাকে ভালবাসি। আমি ফটোগ্রাফি করতে ও ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে জল রং দিয়ে পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। যখনই আমার সময় এবং হাতে টাকা থাকে তখন ভ্রমণ করতে বেরিয়ে পড়ি। বিশেষ করে আমি ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি অনেক বছর আগ থেকে ফটোগ্রাফি করে থাকি। কিন্তু বিশেষ করে ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি বেশি করা হয়। বর্তমানে তার সাথে আর্ট করতে অনেক ভালোবাসি। বর্তমানে আমি বেশি সময় কাটাই আর্ট শিখতে। বর্তমানে আমার স্বপ্ন, আমি একজন ভালো ফটোগ্রাফার, ও একজন ভালো আর্টিস্ট হব। ( ফি আমানিল্লাহ)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
অবশেষে সেই মেয়েটি ছেলেটির জীবনে ফিরে এসেছে জেনে ভালো লাগলো। কিন্তু তার স্বামী যেহেতু তার সাথেই আছে জানিনা তাদের সুন্দর প্রেমের মিষ্টি সমাপ্তি ঘটেছে কিনা। তবে ছেলেটি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেছে এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া। আসলে মেয়েটির স্বামী সত্যিই অনেক ভালো মানুষ। না হলে এভাবে ওই ছেলেটির পাশে দাঁড়াতো না। দারুন লিখেছেন ভাইয়া।
একদমই ঠিক বলেছেন আপু মেয়েটির স্বামীর সত্যিই খুব ভালো একজন মানুষ। না হয় এত বড় সেক্রিফাইজ করত না সে।
শেষ ভাল যার সব ভাল তার। গল্পটির শেষ টা পুরোপুরি মিলনাত্মক না হলেও, অনেকটা ভাল।ছেলেটি আবার সুস্থ জীবনে ফিরে আসল।আসলে এখানে দোষ কাউকেই দেয়া যায়না।তবে এটা বলতেই হবে মেয়েটির স্বামী মহৎ।এত কিছুর পরেও নিজের স্ত্রীকে কিছু না বলে ছেলেটির চিকিৎসা খরচ দেওয়া,এবং তার স্ত্রীর সাথে ছেলেটির বাড়িতে থাকার মাধ্যমে সে তার মহত্বের পরিচয় দিয়েছেন।ধন্যবাদ ভাইয়া এমন একটি ঘটনা আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
একদমই তাই ভাই। বড় মনের না হলে এত বড় স্যাক্রিফাইস কেউ করে না। আমার লেখা পোস্টটি পড়ার জন্য হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে ধন্যবাদ
আমিও একমত এখানে মেয়েটির পরিবারের কোন দোষ নেই কারণ কোন বাবা মা চাইনা যে তার মেয়ে প্রেম করে বিয়ে করুক। এখানে তারা তার মেয়ের জন্য যেটা ভালো মনে করবে সেটাই করেছে। ৫ বছর সম্পর্কে হোক আর ৬ বছরের সম্পর্ক হোক। ছেলেটি মেয়েটির জন্য বেশি আপসেট হয়ে পড়েছে এটা আসলেই হৃদয়বিদারক। আর মেয়েটি পরবর্তীতে ছেলেটির ঘটনা শুনে ছুটে এসেছে এটা অনেক ভালো লেগেছে। মেয়েটি তাহলে ছেলেটিকে সত্যিই ভালোবাসতো। আর মেয়ের হাজবেন্ড তো এখানে অনেক ভালো একটি কাজ করেছে এটা সবার পক্ষে করা সম্ভব নয়। সে সবকিছু সুন্দরভাবে মেনে নিয়েছে। হৃদয়বিদারক সত্য ঘটনাটি ভালো লাগলো পড়ে।
আসলে আপনি ঠিক বলেছেন আপু। মেয়েটির পরিবারের কোন দোষ ছিল না। গ্রামের সবাই মেয়েটির পরিবারকে দোষ দেইনি কিন্তু মেয়েটির পরিবার হয়তো চাইলে বলতে পারতো। বাস্তবতা বলতে গেলে কেউই বলে না এ সময়।
ভাইয়া আমি আপনার গল্পের প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্ব পড়তে পারিনি তার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। কিন্তু আজ যতটুকু পড়ে বুঝলাম ঘটনাটি সত্যিই অনেক হৃদয়বিদারক ছিল। মেয়টি ফিরে আসাতে ছেলেটি অনেক সুস্থ হয়েছে যেনে ভালো লাগলো। মেয়েটির হাসবেন্ড নিঃসন্দেহে একজন ভালো মনের মানুষ তা না হলে এরকম করে মেয়েটিকে রাখতো না আর এতগুলো টাকাও দিতো না। সবমিলিয়ে অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
বাংলা ব্লগিংয়ে অনেকগুলো গল্প লিখেছি আমি কিন্তু কখনও চোখের জল আসেনি। এই গল্পটি লিখে চোখের জল এসেছে। শেষ পর্বটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আমি মনে করি মেয়েটির পরিবার এখানে অনেক বড় ভুল করেছিল কারণ তারা জানার পরেও মেয়েটিকে বিয়ে দেওয়া তাদের উচিত হয়নি। অবশেষে ছেলে পরিবারে স্বস্তি ফিরে এসেছিল এটা জেনে খুবই ভালো লাগছে। তার পাশাপাশি মেয়েটির স্বামীর যে পদক্ষেপ সেটা খুবই প্রশংসনীয় ছিল। তবে ভাই আপনার এই গল্পের ব্যাপারে আমার ছোট্ট একটা পরামর্শ থাকবে পরবর্তীতে আরো গল্প লিখলে অবশ্যই চরিত্রের নাম গুলো উল্লেখ করলে গল্পটি আরো চমৎকার হয়ে উঠবে।
মনের অন্তস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাই পরামর্শ দেওয়ার জন্য। চরিত্রের নাম উল্লেখ করলে গল্পটি আরো সুন্দর দেখাতো। খুব সুন্দর একটি বিষয় উল্লেখ করেছেন আপনি। অনেক অনেক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রইলো আপনার প্রতি।
গল্পটি খুবই ছোট ছিল কিন্তু নিজের মতো করেই লেখার কারণে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছি। গল্পের সৌন্দর্যের জন্য অনেক কিছু নিচ থেকে বলতে হয়েছে। সবার এত বেশি ভালো লাগবে কখনো আশা করিনি। আগামী দিনে আরও একটি গল্প আসতেছে সেটিও হৃদয়বিদারক