হৃদয়বিদারক একটি ঘটনা (দ্বিতীয় পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

বিসমিল্লাহি ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলাইকা ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

আসসালামু আলাইকুম
সবাই কেমন আছেন? আশা করি আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো সুস্থ আছি। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে নতুন ব্লগ শুরু করলাম।

2022-10-23-22-44-33-469.jpg

(প্রথম পর্বে) আমরা জেনেছি অন্তর সম্পর্কে। যারা প্রথম পর্ব দেখেননি তারা এই লিংকে ক্লিক করে প্রথম পর্ব পড়ে নিবেন। তারপরও সংক্ষেপে প্রথম পর্ব থেকে কয়েকটি কথা বললাম। মা বাবার একমাত্র সন্তান ছিলেন অন্তর। স্কুল কলেজের মধ্যে মেধাবী একজন স্টুডেন্ট ছিলেন তিনি। ভালো ফলাফল নিয়ে প্রত্যেকটি ক্লাস উত্তীর্ণ হয়েছেন। স্কুল কলেজের প্রতিটি টিচার তাকে খুবই ভালোবাসতেন। কলেজে একটি মেয়ের সাথে সম্পর্ক হয়েছিল তার। দীর্ঘ ছয় বছরের সম্পর্ক ছিল তাদের। হঠাৎ তাদের সম্পর্কের কথা মেয়ের পরিবার জানতে পারে। এরপর হঠাৎ করেই ঘটলো আসল ঘটনা।

মেয়ের পরিবার, মেয়েকে গোপনে শহরে নিয়ে গেল। সেখানে জোর করে মেয়েটিকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দিল। দীর্ঘদিন ছেলেটা মেয়েটির কোন খোঁজ পাচ্ছিলনা। কই আছে কেমন আছে কোন কিছুর খবর নিতে পারতেছে না। দীর্ঘ ৬ মাস পর হঠাৎ করে ছেলের নাম্বারে একটি কল আসে। ওই পার থেকে কে যেন খুব বেশি কান্না করতেছে। কান্নার আওয়াজ শুনে ছেলেটি বুঝতে পারল। ছেলেটিও কান্না করতে শুরু করলো। দুইজন দুই পার থেকে অনেকক্ষণ পর্যন্ত কান্না করলো। কিন্তু কথা বলার অবস্থায় ছিল না দুই জন। মেয়েটি শুধু বলেছে ছয় মাস আগে আমি মারা গিয়েছে। এই কথা বলে কল কেটে দিল। কল কাটার পর ছেলেটি একটি মেসেজ দেখতে পেল। সেখানে অনেক কিছুই বলেছিল মেয়েটি। শেষে ক্ষমা চেয়ে ছয় মাস আগে যে তার বিয়ে হয়ে গিয়েছে তা বলল।

সেই লেখাটি পড়ে ছেলেটি হঠাৎ করে মাথা ঘুরে পড়ে গেল। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির সবাই তাকে হাসপাতালে নিল। ডাক্তার পরীক্ষা করে দেখলো ছেলে স্টক করেছে। কিছুদিন হাসপাতালে থেকে বাড়িতে চলে গেল। কিন্তু ছেলের পাগলামি কোনোভাবেই থামতে ছিল না। সারাক্ষণ মেয়ের নাম ধরে ধরে ডাকতে লাগলো। তার কয়েক মাস পর ছেলের বাবা প্রবাস থেকে বাড়িতে আসলো শুধু ছেলের কারণে। ছেলেকে দেখে বাবার অবস্থা আরো খারাপ হয়ে গেল। ধীরে ধীরে ছেলেটি পাগল হতে শুরু করলো। আত্মীয়-স্বজন মা-বাবা কাউকেই চিনতে পারছে না। শুধু মেয়ের নাম ধরে ডাকে । ছেলের এই অবস্থা দেখতে দেখতে ছেলের মা ও ছেলের জন্য পাগল এর মত হয়ে গেল। কিছুদিন পর একটি মানসিক হাসপাতালে ছেলেকে দেখালো।

ডাক্তার বলেছে ছেলের অবস্থা খুবই খারাপ। ভালো চিকিৎসা দিতে না পারলে ছেলে পুরোপুরি পাগল হয়ে যাবে। এর মধ্যে ছেলের জন্য অনেক টাকা খরচ করে ফেলল বাবা। ছেলেকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করে, বাবা বাড়িতে থাকতে শুরু করল। ছেলের জন্য মায়ের অবস্থাও খুবই খারাপ। মাকে ডাক্তার দেখালো ,ডাক্তার বলল মাও মানসিকভাবে অসুস্থ। তারও ভালো চিকিৎসা দরকার। মা ছেলের জন্য, ছেলে একটি মেয়ের জন্য পাগল হয়ে গেল। বাবা অসহায় হয়ে সারাক্ষণ দুজনের জন্য চিকিৎসা করতে লাগলো। ধীরে ধীরে তাদের টাকা-পয়সার কমতে শুরু হল। প্রবাস থেকে বাবা একেবারেই চলে এসেছে তাদের জন্য। ধীরে ধীরে জায়গা সম্পত্তি বিক্রি করতে শুরু করল। কিন্তু কোনভাবেই ছেলে এবং মাকে সুস্থ করতে পারতেছিল না। ছেলে কে মায়ের কাছে রাখল ডাক্তার । ধীরে ধীরে তাদের উন্নতি হওয়ার কোন অবস্থায় নাই। এখনো ছেলে এবং মা এভাবেই রয়েছে। শারীরিক অবস্থার কোন উন্নতি নাই। ছেলেটা সারাক্ষণই মেয়েটার নাম ধরে ডেকে থাকে।

হ্যাঁ! মেয়েটার জন্য হাসিখুশি এর পরিবারটা একদমই শেষ হয়ে গেল। ডাক্তার বলেছে যে কোন সময় ছেলেটা মারা যেতে পারে। কারণ প্রথমে একবার স্টক করেছে ছেলেটি। আরেকবার স্টক করলে তাকে বাঁচানো মুশকিল হয়ে যাবে। বর্তমানে ছেলে এবং মা বাড়িতে রয়েছে। হাসপাতাল থেকে বিদায় দিয়ে দিয়েছে।

(গল্পটি লেখার সময় চোখের এক কনে জল চলে আসলো, এই প্রথম কোন গল্প লিখে চোখের জল আসলো)
( ছেলেটির অসুস্থর কথা মেয়েটির জানতে পারলো। তৃতীয় পর্বে মেয়েটির এবং মেয়েটির পরিবারের কি হয়েছিল তা শেয়ার করব। এবং মেয়েটি কিভাবে জানলো?? মেয়েটির পরিবার ও ধ্বংসের মুখে , কিন্তু কিভাবে? তা তৃতীয় পর্বে জানতে পারবেন। একটি সম্পর্কের জন্য দুই পরিবার আজ ধ্বংস )

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

IMG_20210309_131346_125.jpg

আমার নাম নুরুল আলম রকি। আমার steemit I'd narocky71। আমি বাংলাদেশী নাগরিক । বাংলাদেশে বসবাস করি। তার সাথে সাথে আমি বিশ্বনাগরিক। আমি বাংলা ভাষায় কথা বলি। বাংলা ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করি। আমি বাংলা ভাষাকে ভালবাসি। আমি ফটোগ্রাফি করতে ও ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে জল রং দিয়ে পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। যখনই আমার সময় এবং হাতে টাকা থাকে তখন ভ্রমণ করতে বেরিয়ে পড়ি। বিশেষ করে আমি ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি অনেক বছর আগ থেকে ফটোগ্রাফি করে থাকি। কিন্তু বিশেষ করে ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি বেশি করা হয়। বর্তমানে তার সাথে আর্ট করতে অনেক ভালোবাসি। বর্তমানে আমি বেশি সময় কাটাই আর্ট শিখতে। বর্তমানে আমার স্বপ্ন, আমি একজন ভালো ফটোগ্রাফার, ও একজন ভালো আর্টিস্ট হব। ( ফি আমানিল্লাহ)


3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeF5StuMqDPqgYjRhUxqFbXTvH2r2mDgNbWweA4YGBo825oLh4oqEqeynn5EZL11LdCrppngkM (1).gif


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ,
💖ধন্যবাদ💖

Sort:  
 2 years ago 

মেয়েটি শুধু বলেছে ছয় মাস আগে আমি মারা গিয়েছে।
আপনার গল্পের এই লাইনটির অর্থ আমি বুঝলাম না। ভাইয়া আপনার গল্পটা আসলেই হৃদয় বিদারক। আসলে এমন অনেক ঘটনা রয়েছে অনেক সময় ছেলে মেয়ে দুজনেই এরকম অবস্থা হয়ে থাকে কখনো ছেলের কখনো মেয়ের। এখানে ছেলেটা মেয়ের জন্য অনেক বেশি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার কারণে স্ট্রোক করেছে আর মা ছেলের চিন্তায় চিন্তায় মানসিক রোগী হয়ে গিয়েছে। ঘটনাটি পড়ে আসলেই অনেক খারাপ লাগলো।

 2 years ago 

মেয়েটির বিয়ে হয়ে গেছে বিষয়টা সরাসরি বলতে পারল না। এজন্য মেয়েটি বলেছে আমি ছয় মাস আগে মারা গিয়েছে। পরে মেসেজে এসব বিষয় তুলে ধরেছে হ্যাঁ বলেছে।

 2 years ago 

ভাইয়া আপনার প্রথম পর্বটি আমি পড়েছিলাম । এই গল্পের দ্বিতীয় পর্বটিও আজ পড়লাম । সত্যিই হৃদয় বিদারক একটি ঘটনা । ভালোবাসার জন্য ছেলেটার মানসিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছিল যে তাকে মানসিক হসপিটালে পর্যন্ত ভর্তি হতে হয়েছিল । আবার তার মায়ের অবস্থাও সেরকমই । সত্যি খুবই হৃদয়বিদারক ঘটনা উপস্থাপন করেছেন । মেয়েটা ছেলেটার অবস্থা জানার পরে কি করেছিল , পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ।ধন্যবাদ ।

 2 years ago 

খুব শীঘ্রই পরবর্তী পোস্ট দেখতে পারবেন। পোস্ট লিখে আমার চোখের জল চলে এসেছে। মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 2 years ago 

ভাইয়া আপনার লেখা গল্পটি পড়ে সত্যিই চোখে পানি চলে আসলো। একটি সম্পর্ক যখন শেষ হয়ে যায় তখন সত্যি অনেক খারাপ লাগে। হয়তো ছেলেটি সেই মেয়েটির বিয়ের কথা শুনে নিজেকে সামলাতে পারেনি। তাইতো তার ভয়ঙ্কর পরিণতি হয়েছে। তার জন্য তার পরিবারও একেবারে শেষ হয়ে গেছে। পরবর্তী পর্বে অবশ্যই জানতে পারবো ছেলেটির কি হয়েছে। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।

 2 years ago 

ছেলেটি এখনো ওই পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু মেয়েটির পরিবারের ঘটনাটি পরবর্তী পোস্টে শেয়ার করব। অনেক ধন্যবাদ পোস্ট করার জন্য।

 2 years ago 

সত্যি বলতে ঘটনাটি একবার মুখে শুনেছি, যেহেতু সত্য ঘটনা তাই মুখে শুনতেও ভালো লেগেছে। আর এখন তোমার পোস্ট আকারে দেখে আরো ভালো লাগলো। তবে আসলে বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক এবং কিছুদিনের মধ্যে হয়তো সে বাড়িতে যেতে পারি আমি আর জুয়েল।

 2 years ago 

যাওয়ার সময় আমাকেও নিয়ে যাইয়েন। ছেলে এবং ছেলের মাকে দেখার খুবই আগ্রহ রয়েছে আমার।

 2 years ago 

ঠিক আছে যাওয়ার সময় তোমাকে বলবো ধন্যবাদ

 2 years ago 

আমাদের সমাজে এসব কারণে হাজারো ছেলে-মেয়ে তাদের জীবন দিয়ে দিচ্ছে। বাস্তব সম্মুখে একটি কাহিনী।পুরো গল্প টি পড়ে আমার কাছে খুবই খারাপ লাগলো মনে হচ্ছে আমার চোখ দিয়েও পানি পড়ে যাচ্ছে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া। অবশ্যই আমারও খুব জানার ইচ্ছে যে মেয়েটি ছেলের অসুস্থতার কথা শুনে কি করলো!

 2 years ago 

আমার নিজেরও একই অবস্থা হয়েছিল আপু। ইনশাআল্লাহ খুব শীঘ্রই দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করব। মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

একটি সম্পর্কের জন্য দুটি পরিবার ধ্বংস হয়ে গেল। মা এবং ছেলের কথা শুনে আমি চোখের পানি আটকে রাখতে পারছিনা। তাদের মনে হয় একটু বেশি খারাপ অবস্থা হয়ে গিয়েছে। মেয়েটির পরিবারে কি ঘটেছে এবং পরের কাহিনী কি হবে তার জন্য অনেক আগ্রহে বসে আছি। পরবর্তী পর্ব দেখার অপেক্ষায় থাকবো।

 2 years ago 

শেষ পর্ব পোস্ট করেছি আশা করি দেখবেন। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ

 2 years ago 

ভাইয়া আপনার প্রথম পর্বটি আমার পড়া হয়নি তবে দ্বিতীয় পর্বটি পড়ে একটু হলেও বুঝতে পেরেছি এটি ভালোবাসা নিয়ে হৃদয় বিদারক একটি ঘটনা বর্ণনা করেছেন। সত্যিই ভালোবাসা হারিয়ে ছেলেটি আজ মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আবার অন্যদিকে তার মায়ের অবস্থা ভালো নেই জেনে খুব খারাপ লাগলো। মেয়েটা ছেলেটির অবস্থা জানার পরেও কি করেছিল তা জানার জন্য আপনার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

পরবর্তী পোস্ট গতকাল করেছি। আশা করি পড়ে নেবেন আপু। খুবই ভালো লাগবে আপনার।

 2 years ago 

আমিও যদিও প্রথম পর্বটি পড়েনি তবুও আপনার দিতে হবে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় যেটা বুঝতে পারলাম একটা ছেলে ও একটা মেয়ের ভালোবাসার করুন পরিণতি এবং সেই সাথে ছেলেটির সংসারের ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাওয়ার বিষয়টি আসলে খুবই দুঃখজনক। আসলেই খুবই খারাপ লাগার একটা বিষয়। যাই হোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম কিভাবে মেয়েটি জানতে পারলো, মেয়েটির পরিবার কিভাবে ধ্বংস হয়ে গেল।

 2 years ago 

আসলেই আপনি ঠিক বলেছেন, গল্পটা খুবই দুঃখজনক একটি গল্প। লিখে আমার নিজের কাছেও ভীষণ খারাপ লেগেছিল

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64349.87
ETH 2775.11
USDT 1.00
SBD 2.65