জেনারেল রাইটিং-অবশেষে জীবন দিলো রেমি||
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। মাঝে মাঝে লিখতে অনেক ভালো লাগে। এই বিষয়টা নিয়ে অনেকদিন আগেই লিখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কেন জানি আর লেখা হয়ে ওঠেনি। আসলে মানসিক প্রস্তুতি ছাড়া কখনো লিখা যায় না। আপনারা হয়তো ইতোমধ্যে অনেকেই একটি ভাইরাল ভিডিও দেখেছেন। রাজশাহীর মেয়ে রেমি নিজের কষ্টগুলো প্রকাশ করে আত্মহত্যা করেছিল। সেই বিষয় নিয়েই আজকে কিছু কথা উপস্থাপন করবো।
অবশেষে জীবন দিলো রেমি:
মাঝে মাঝে মনে হয় এই ক্ষণিকের জীবনে ভালো থাকার চেষ্টা করতে করতেই হয়তো আমরা আমাদের জীবনের শেষ প্রান্তে চলে আসি। কখনো ভালো থাকি কখনো বা ভালো থাকার মিথ্যে অভিনয় করি। রেমির জীবনটাও হয়তো তেমনটাই ছিল। ভালোবেসে বিয়ে করেছিল প্রিয় মানুষটিকে। ভালোবাসার মানুষটিকে পেয়েও যেন সে অপূর্ণতার জোয়ারে ভাসছিল। হয়তো তার জীবনে তার ভালোবাসার মানুষটি ছিল কিন্তু ভালোবাসার শূন্যতা রয়েই গিয়েছিল। পারিপার্শ্বিক অবস্থা, ভালোবাসার মানুষটির অবহেলা আর পরিবারের মানুষগুলোর অবহেলা তাকে মানসিকভাবে আহত করেছিল।
হয়ত মেয়েটি ভালো থাকতে চেয়েছিল। হয়তো ভালোবাসা আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চেয়েছিল। নিজের ছোট্ট সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে জীবনের বাকিটা পথ পাড়ি দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাকে কেউ বুঝতে পারেনি। নিজের কাছের মানুষগুলো যেমন বুঝতে পারেনি তেমনি বুঝতে পারেনি ভালোবাসার মানুষটি। মেয়েটি তার ভিডিওতে বলেছিল তার বাবা-মায়ের কথা। আমার কাছেও মনে হয় যখন কোন পরিবারে একটি সন্তান আসে তখন বাবা-মায়ের মাঝে বিচ্ছেদটা না হওয়াই শ্রেয়। হয়তো তারা বিচ্ছেদের পর আলাদা সংসার করে। কিন্তু সেই সন্তানরা যে পরিবার হারা হয়ে পড়ে। অবহেলা, অনাদরে বেড়ে ওঠে তাদের জীবন। হয়তো রেমির ক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছিল।
যেই পরিবারকে আঁকড়ে ধরে রেমি বড় হয়েছে সেই পরিবারের মানুষগুলো যখন রেমিকে বুঝতে পারে না তখন তার যাওয়ার কোন জায়গা থাকে না। হয়তো মান অভিমান কিংবা ভুল বোঝাবুঝির মাঝে রেমির সাথে তার পরিবারের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। অবশেষে ভালোবাসার সেই মানুষটিকে আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ভালোবাসা যে বড্ড অসহায়। যাকে ভালোবেসে বাঁচতে চেয়েছিল সেই মানুষটা তাকে বুঝলো না। যেই মেয়েটি একটি সুষ্ঠু পরিবার পায়নি সেই মেয়েটির মানসিকতা কেমন সেটা তার শ্বশুরবাড়ির পরিবারের মানুষগুলোর বোঝা উচিত ছিল। তার ক্ষতস্থানে আঘাত করাটা সত্যি অনেক ঘৃণ্য কাজ ছিল। হয়তো কারো শরীরের ক্ষত আমরা দেখতে পারি। কিন্তু মনের ক্ষত কখনো দেখতে পারিনা। মেয়েটির মনের ক্ষতগুলো যেন বারবার তাকে আঘাত করছিল। আর তার কাছের মানুষগুলোর কথার আঘাতে সেই ক্ষতর গভীরতা বেড়ে যাচ্ছিল।
শেষ পর্যন্ত নিজেকে ভালো রাখতে কোন এক মানসিক ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়েছিল রে। হয়তো চেয়েছিল একটু ভালো থাকতে। হয়তো চেয়েছিল বিষন্নতা থেকে বেরিয়ে আসতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেষ রক্ষা হলো না। মেডিসিন তার শরীরে হয়তো কাজ করতো। কিন্তু তার আপন মানুষগুলোর আঘাত যে মেডিসিনের চেয়েও শক্তিশালী ছিল। তাই তার মানসিক অসুস্থতা দিনের পর দিন বেড়েই চলছিল। ভালো থাকার জন্য মেডিসিন যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি কাছের মানুষগুলোর মানসিক সাপোর্ট অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ডক্টর দেখানোর পাশাপাশি যদি রিমি মানসিক সাপোর্ট পেতো তাহলে আর বিষণ্ণতায় ভুগতোনা। কিংবা নিজেকে শেষ করে দেওয়ার চিন্তা করতো না।
ভেতরে চাপা কষ্ট নিয়ে অবশেষে মেয়েটি হাসিমুখেই জীবন দিয়ে দিল। রিমির সেই হাসির আড়ালে অনেক কষ্ট লুকিয়ে ছিল। ভিডিওটি আমি অনেকবার দেখেছি। মেয়েটির কথাগুলো যখন শুনছিলাম তখন কোথাও গিয়ে যেন অদ্ভুত এক কষ্ট অনুভব করছিলাম। দু চোখের কোনে জল চলে এসেছিল। আসলে জীবনটা এরকমই। হয়তো আমরা কাউকে দেখে বুঝতে পারি না। এমনকি আমাদের আপন মানুষগুলো কখনো আমাদের কষ্ট গুলো বুঝতে চায় না। ভেতরের চাপা কষ্ট গুলো ধীরে ধীরে আহত হৃদয়টাকে আরও বেশি আহত করে ফেলে। কেউ রেমির মত ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে জীবন শেষ করে দেয় কেউবা আহত হৃদয় নিয়ে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়। এভাবেই কোন একদিন জীবনের সব কষ্ট শেষ হয়ে যায়। আর শেষ হয়ে যায় নিজের অস্তিত্ব।
আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://x.com/Monira93732137/status/1818580809475146199?t=J65fb2y1V_3w26FNFfWYJw&s=19
রিমির ঘটনাটা সবাই দেখেছে। আপু খুবই কষ্টের একটি ঘটনা। সত্যি আপু আমাদের সমাজে এরকম অনেক মানুষ আছে যাদের উপর টা দেখে বোঝা যায় না। হয়তো এরকম অনেক রিমি আমাদের চারিপাশে ঘুরছে আমরা বুঝতে পারছি না। যাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছে তার অবহেলা। শ্বশুর বাড়ির লোকের অশান্তি এমনকি তার পরিবারের কাছ থেকেও সে কোন সাপোর্ট পায়নি।আসলে একজন মানসিকভাবে ভেঙে মরা মানুষের জন্য ওষুধের পাশাপাশি সাপোর্ট দরকার। খুব সুন্দর করে ভিতরে কথাগুলো আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
রেমির ঘটনাটি দেখে আমার খুবই খারাপ লেগেছিল। মানসিক সাপোর্ট অনেক বেশি দরকার। যেটা সে পায়নি। ধন্যবাদ আপু মন্তব্যের জন্য।
সত্যি আপু অনেক কষ্টের ঘটনা। আসলে আমাদের সমাজ কারো দুঃখ বুঝে না।সত্যি শরীরে আঘাত করলে সবাই দেখে কিন্তু মনের আঘাত কেউ দেখে না।আর মনের আঘাত শরীরের আঘাতের চেয়েও ভয়ানক। আপনার পোস্ট পড়ে রেমির জন্য অনেক খারাপ লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
সত্যি আপুর শরীরের আঘাত হয়ত সবাই দেখে। কিন্তু মনের আঘাত কেউ দেখেনা। অনেক ধন্যবাদ আপু মন্তব্যের জন্য।
রেমির লাইভে তার হৃদয়বিদারক কষ্টের কথা গুলো শুনেছি।বহুবার ভিডিওটি দেখেছি।প্রথম ভেবেছিলাম অভিনয়।তারপর জানতে পেলাম সত্যি আত্মহত্যা করেছে। কি ঠান্ডা মাথায় মেয়েটি ভিডিও করে আত্মহত্যা করেছে আপু।খুব কষ্ট পেয়েছি রেমিকে নিয়ে ভেবে কয়েক দিন। ধন্যবাদ আপু পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
সত্যি আপু কথাগুলো অনেক কষ্টের ছিল
আমার কাছে খুবই খারাপ লেগেছিল আপু। তাই তো এই বিষয়টি নিয়ে লিখেছি।
রেমির মৃত্যুর আগের যে কথোপকথনের ভিডিও, সেটা মোটামুটি সকলেই দেখেছে। আসলে মেয়েটা ভালোবাসার মানুষের টানে বাপের বাড়ি ত্যাগ করে শ্বশুরবাড়ি এসেছিল, যাতে একটু শান্তিতে থাকতে পারে। কিন্তু সেইখানে যদি সেই পরিবারের লোকজন গুলোই তাকে না বোঝে, বিশেষ করে তার স্বামীই যদি তাকে না বোঝে তাহলে আসলে মেয়েদের যাওয়ার কোন জায়গা থাকে না। ভিডিও টা দেখে আমার নিজেরও অনেক বেশি খারাপ লেগেছিল।
মেয়েটির কপালে কোন শান্তি ছিল না। নিজের বাড়িতে কিংবা পরিবারের কাছেও কখনো ভালো কিছু পায়নি। বিয়ের পর স্বামীর কাছেও অবহেলা পেয়েছে ভাইয়া।