ভ্রমণ পোস্ট || ওয়াইফকে নিয়ে কক্সবাজার ভ্রমণ (ত্রয়োদশ পর্ব)
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি ভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট শেয়ার করবো। এর আগে আমি আপনাদের সাথে কক্সবাজার ভ্রমণের দ্বাদশ পর্ব শেয়ার করেছিলাম এবং আজকে ত্রয়োদশ পর্ব শেয়ার করতে যাচ্ছি। যাইহোক আমরা নাইক্ষ্যংছড়ি উপবন পর্যটন কেন্দ্রের সামনে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে চারপাশটা দেখে, টিকেট কিনে ভিতরে প্রবেশ করলাম। ভিতরে প্রবেশ করেই আমরা দেখতে পেলাম একটা ওয়াচ টাওয়ারের মতো। তারপর আমরা ভাবলাম ওয়াচ টাওয়ারের উপরে উঠে, দারুণভাবে আশেপাশের চমৎকার দৃশ্য উপভোগ করবো। তো সিঁড়ি দিয়ে আমরা যখন ওয়াচ টাওয়ারের উপরে উঠছিলাম, তখন আমার ওয়াইফ ভয় পেলো। কারণ উঠার সময় সিঁড়ি গুলো নড়ছিলো। তারপর ওয়াইফ এর কথামতো আমরা ওয়াচ টাওয়ারের উপরে না উঠে, তাড়াতাড়ি নেমে পরলাম।
যাইহোক এরপর আমরা একটু সামনে যেতেই দেখলাম যে,চারিদিকে গাছ গাছালি দিয়ে একেবারে ঘেরা। মোটকথা যেদিকে তাকাই সেদিকে শুধু গাছ আর গাছ। তারপর সামনে গিয়ে দেখলাম কৃত্রিম ঝর্ণা রয়েছে এবং বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য দোলনা রয়েছে। তাছাড়া খুব সুন্দর একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। রেস্টুরেন্টে খাবার অর্ডার করে,বাহিরে বসে খাওয়া যায়। তারা গাছের উপরে খুব সুন্দর করে ঘরের মতো তৈরি করেছে। সেখানে বসেও খাওয়া দাওয়া করা যায়। সেই ঘরগুলোতে সিঁড়ির মতো করে তৈরি করে দিয়েছে। এতে করে যে কেউ অনায়াসে উপরে বসে খাওয়া দাওয়া করার পাশাপাশি, আশেপাশের মনোমুগ্ধকর পরিবেশ উপভোগ করতে পারে। উপর থেকে লেকের ভিউ দেখতে দারুণ লাগে। আমাদের ইচ্ছে ছিলো সেই ঘরগুলোতে বসে খাওয়া দাওয়া করার,কিন্তু মানুষের প্রচুর ভিড় ছিলো বলে, শেষ পর্যন্ত সেটা সম্ভব হয়নি।
যাইহোক এরপর আমরা সামনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলাম। কারণ সেখানে যাওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য ছিলো লেক এবং ঝুলন্ত ব্রিজ দেখার। তো আমরা ঠিক করলাম প্রথমে ঝুলন্ত ব্রিজে উঠবো এবং ঝুলন্ত ব্রিজ থেকে চারপাশের পরিবেশটা উপভোগ করবো। তারপর প্যাডেল বোটে চড়ে পুরো লেকটা ঘুরবো। কারণ বোটে চড়তে বরাবরই আমার খুব ভালো লাগে। যদিও আমি এবং আমার ওয়াইফ সাঁতার কাটতে পারি না। যাইহোক ঝুলন্ত ব্রিজের দিকে যাওয়ার জন্য যে সিঁড়ি গুলো রয়েছে, সেগুলো খুব সুন্দর ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। সত্যি বলতে সিঁড়িগুলো দেখে সত্যিই ভীষণ ভালো লেগেছিল। তবে ঝুলন্ত ব্রিজে উঠার পর বুঝতে পারলাম যে, ব্রিজটা একেবারেই নড়বড়ে। ঝুলন্ত ব্রিজে উঠে হাঁটার সময় ব্রিজটা এতটাই নড়ছিলো যে,আমার ওয়াইফ সাথে সাথে নেমে পরলো।
মানে সে কোনো ভাবেই ঝুলন্ত ব্রিজে উঠবে না। তারপর কি আর করার,আমি অল্প একটু হাঁটাহাঁটি করার চেষ্টা করলাম ঝুলন্ত ব্রিজে। তবে এতো দুর্বলভাবে এই ঝুলন্ত ব্রিজটা তৈরি করা মোটেই উচিত হয়নি। আমি দেশের বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি ঝুলন্ত ব্রিজে উঠেছিলাম, কিন্তু এতো দুর্বল ঝুলন্ত ব্রিজ এর আগে কখনো দেখিনি। যাইহোক তবুও স্মৃতি হিসেবে রাখার জন্য আমার ওয়াইফকে বললাম আমার ২/১ টা ছবি তুলে দিতে। ছবি তোলার পর আমরা ঝুলন্ত ব্রিজ থেকে নেমে, উপরে উঠে গিয়েছিলাম। তারপর আমরা চিন্তা করলাম কিছুক্ষণ বসে বিশ্রাম নিয়ে, তারপর প্যাডেল বোটে চড়বো। তাই রেস্টুরেন্টে গিয়ে দু'জনের জন্য লেমন জুস অর্ডার করলাম। তারপর আমরা রেস্টুরেন্টের ভিতরে না বসে, রেস্টুরেন্টের বাহিরের স্পেসে বসে জুস পান করতে করতে কিছুক্ষণ গল্প করলাম। যাইহোক এরপর আমরা সেখানে আর কি কি করলাম, সেটা পরবর্তী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। (চলবে)
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | ভ্রমণ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ৯.৭.২০২৪ |
লোকেশন | w3w |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
X-promotion
ব্রীজ নড়ানড়ি করছিল বলে ভাবি হয়তো ভয় পেয়েছিলেন। তাইতো নেমে পড়েছিলেন। কক্সবাজার গিয়ে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন দেখে খুবই ভালো লেগেছে। আর সুন্দর মুহূর্ত গুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।
হ্যাঁ ভাই আমরা সেখানে গিয়ে দারুণ সময় কাটিয়েছি। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
ব্রিজ টা দেখেই বোঝা যাচ্ছে বেশ নড়বড়ে। তবে ভয়ের হলেও মাঝে মাঝে এরকম অভিজ্ঞতা অর্জন করা উচিত আমার মতে। আপনারা খুব সুন্দর কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছেন। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে বেশ ভালো লাগলো। জায়গাটা ভীষণ সুন্দর। এরকম প্রাকৃতিক পরিবেশের সময় কাটাতে কার না ভালো লাগবে। মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া
সেখানে গিয়ে আসলেই ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি আপু। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এতো চমৎকার মন্তব্যের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
এরকম সুন্দর কোন জায়গায় প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলাম জেনে খুবই ভালো লাগলো। আর এই ধরনের ব্রিজ গুলো একটু ভয়ঙ্কর হয়। তবে দেখতে কিন্তু ভালোই লাগছে ভাইয়া। দারুন মুহূর্ত গুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
হ্যাঁ আপু ব্রিজটা এমনিতে দেখতে খুব সুন্দর। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এভাবে সাপোর্ট করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আপনার এই ভ্রমণের সবগুলো পর্ব আমি দেখে আসছি। আজকে এর আরও একটি পর্ব দেখে খুবই ভালো লাগলো৷ আজকেরে এই পর্বের মধ্যে আপনি খুব সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফির মাধ্যমে অনেক কিছু ফুটিয়ে তুলেছেন৷ একইসাথে এখানে আপনি খুব সুন্দর বর্ণনাও দিয়েছেন যা পড়ে খুবই ভালো লাগলো৷ পরবর্তী পর্বের আশায় রইলাম৷
এই পর্বে অনেক গুলো সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করার চেষ্টা করেছি। যাইহোক প্রতিনিয়ত এভাবে সাপোর্ট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।