ক্রিয়েটিভ রাইটিং(গল্প) || অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে (ষষ্ঠ পর্ব)
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি বাস্তব গল্প শেয়ার করবো। এর আগে এই গল্পের পঞ্চম পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম এবং আজকে ষষ্ঠ পর্ব শেয়ার করতে যাচ্ছি। যাইহোক ইমরান যে কোম্পানির মালিকের কাছ থেকে বাংলাদেশী টাকার প্রায় ১০ লাখ টাকা পাবে,সেই কোম্পানির মালিক বললো যে তখন সে টাকা দিতে পারবে না। আরও কয়েকমাস সময় লাগবে টাকা দিতে। তারপর বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে ব্যাপারটা জানালাম। তারপর তারা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে আশ্বাস দিলো। মূলত দক্ষিণ কোরিয়াতে বাংলাদেশীদের সংখ্যা খুব বেশি নয়। বর্তমানে আনুমানিক ২০-২৫ হাজার বৈধ বাংলাদেশী রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়াতে।
সেজন্য বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে মোটামুটি যেকোনো বিষয়ে হেল্প পাওয়া যায়। যাইহোক পরবর্তীতে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে সেই কোরিয়ান মালিকের সাথে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু সে তখনও একই কথা বললো যে, সেই মুহূর্তে ইমরানের পাওনা টাকা দেওয়া সম্ভব নয় এবং তাকে আরও ৪/৫ মাস সময় দিতে হবে। এদিকে ইমরানের লাশ আমাদের সেখানকার হসপিটালের মর্গে থেকে সিউলের মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং সেখান থেকেই তার লাশ বাংলাদেশে পাঠানো হবে। তো আমরা সবাই সিদ্ধান্ত নিলাম যে ইমরানের লাশ দেখতে সিউলের মর্গে যাবো। তাই আমরা ৪/৫ জন ভাই ব্রাদার অফিস থেকে ছুটি নিলাম একদিনের জন্য। যদিও আমাদের অফিসের কোরিয়ান কলিগরা মর্গে লাশ দেখতে যেতে নিষেধ করেছিল। কারণ পরবর্তীতে আমাদের নাকি সেই দৃশ্য বারবার মনে পরবে।
তবুও আমরা কোরিয়ানদের কথা তোয়াক্কা না করে, সিউলের মর্গে চলে গেলাম ইমরানের লাশ দেখতে। যেহেতু সেখানকার ঠিকানা আগে থেকেই জানতাম, তাই ঘন্টা খানেকের মধ্যেই আমরা সেখানে চলে যাই। আমরা যাওয়ার পর সেখানে চাকরিরত একজন কোরিয়ানকে সবকিছু খুলে বললাম। তারপর সেই কোরিয়ান আমাদেরকে ইমরানের লাশের সামনে নিয়ে গেলো। আপনারা বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, ইমরানের লাশ দেখার পর আমরা একেবারে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। কারন এমন অভিজ্ঞতা আমাদের এর আগে কারোরই ছিলো না। ইমরানের মুখটা একেবারে কালচে ধরনের হয়ে গিয়েছিল। বারবার মনে হচ্ছিল ইমরান কয়েকদিন আগেও আমাদের সাথে কত সময় কাটিয়েছে।
আর সেই মানুষটা চোখের সামনে লাশ হয়ে শুয়ে আছে। মানুষের জীবনটা আসলেই অদ্ভুত। যাইহোক এরপর আমি ইমরানের লাশের ছবি তুলেছিলাম। কারণ আমাদের পরিচিত কয়েকজন ভাই ব্রাদার ব্যস্ততার কারণে ইমরানের লাশ দেখতে যেতে পারেনি। তাই তাদেরকে দেখানোর জন্যই মূলত ইমরানের লাশের ছবি তুলেছিলাম। ছবি তোলার পর কয়েকজনের কাছে একটু পরেই পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। যাইহোক আমরা বেশ কিছুক্ষণ সিউলের মর্গে থাকার পর, যার যার বাসায় ফিরে গিয়েছিলাম। আমি মূলত তখন একাই ফ্ল্যাটে থাকতাম। তো রাতের বেলা লাইট বন্ধ করে যখন শুয়ে পরলাম, তখন বারবার ইমরানের লাশ চোখে ভাসছিল। মোটামুটি ভয়ও পাচ্ছিলাম বটে। যাইহোক এরপর কি হলো,সেটা জানতে হলে আপনাদেরকে পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। (চলবে)
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | গল্প(ক্রিয়েটিভ রাইটিং) |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ১১.৬.২০২৪ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!