বাইক ট্যুর (Bike Tour) : পর্ব - ১০... || ১০% বেনিফিশিয়ারী shy-fox এর জন্য
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আমি আমার বাইক ট্যুর (Bike Tour) : পর্ব - ১০... উপস্থাপন করব। গত পর্বে আমরা পদ্মা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম। পদ্মা থেকে ঢাকা আসা পর্যন্ত আমরা যে সুবিস্তৃত রাস্তা দেখে এসেছি তা হয়তো কোনদিন ভোলার নয়। আমরা ধীর গতিতে পদ্মা থেকে ঢাকা বুড়িগঙ্গা পর্যন্ত এসেছিলাম। আর এই বুড়িগঙ্গা নদীতে এসে বুড়ি গঙ্গা নদীর অপরূপ দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে সদরঘাট অবস্থিত। আর এই সদরঘাট আমি কখনো দেখিনি। তাই না দেখা জায়গার প্রতি আমার আলাদা একটা টান থেকে যায়। যতক্ষণ পর্যন্ত সেই নতুন জায়গা দেখতে না পাই, ততক্ষণ পর্যন্ত আমার মনের ভেতর ভীষণ উদ্দীপনা কাজ করে। যখন বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে এসে সদরঘাট দেখতে পেলাম তখন আমার সদরঘাট দেখার বাসনা পূর্ণ হয়ে গেছে। আর এই সদরঘাট নিয়ে আজ আমার পোস্ট উপস্থাপন করব।
এখান থেকে মাওয়া ঘাটের ফোরলেন মহাসড়কটি শেষ হয়ে গেছে। আর যখনই এই মহাসড়ক অতিক্রম করা শেষ করেছি তখন থেকে মনের ভেতর অস্থিরতা শুরু হয়ে গেল। কেননা আমার বারবার মনে হচ্ছিল আমাদের এই ছোট্ট বাংলাদেশের প্রতিটি রাস্তা যদি এই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কের মতো এত উন্নত হতো, তাহলে আমাদের জীবন যাত্রার মান আরো ত্বরান্বিত হতো। কিন্তু কি আর করার, আমার এই চিন্তাভাবনা শুধু চিন্তা ভাবনাতেই থেকে গেল। কখনো বাস্তবায়ন হবে কিনা তা আমার জানা নেই।
আমরা অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে বাবুখা ব্রীজে পৌঁছে গেলাম। এটি বুড়িগঙ্গা নদীর উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এই ব্রিজ টির উপর থেকেই সদরঘাটটি দেখা যাচ্ছে। যেহেতু আমি এই প্রথম সদরঘাট দেখছি, সেহেতু আমার মনের ভেতর ভালো লাগাটা অনেক বেশি কাজ করতে শুরু করল। আমার শুধু মনে হচ্ছিল আর কতক্ষণ পরেই আমি সদরঘাটে উপস্থিত হব। এই ব্রিজে দাঁড়িয়ে থেকে বুড়ির গঙ্গা নদীর অপরূপ দৃশ্য অপলক দৃষ্টিতে উপভোগ করার চেষ্টা করলাম।
অনেকটা পথ জার্নি করার কারণে, প্রচন্ড গরমে, সূর্যের তাপে আমার এই বিধ্বস্ত চেহারার একটি সেলফি তুলে নিলাম স্মৃতি হিসেবে মোবাইল ফোনে ধরে রাখার জন্য। আমি আমার একটি ছেলফি তুলে নিয়ে যখন ব্রিজটি পার হয়ে সামনে এগোচ্ছিলাম, তখন দেখি ব্রিজের শেষ প্রান্তে এসে প্রচুর জ্যামের সৃষ্টি হয়েছে। আর এই জ্যামে পড়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স নিরুপায় হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এই বিষয়টি আমার কাছে মোটেও ভালো লাগেনি। অসুস্থ রোগীর সাথে যে আত্মীয়-স্বজনরা এসেছিল, তারা অ্যাম্বুলেন্সে বসেই অনেক কান্নাকাটি করছিল। এরকম দৃশ্য কারোরই কাম্য নয়। আমি মনে মনে সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করছিলাম, যেন খুব দ্রুত এই জ্যাম থেকে এম্বুলেন্সটি বের হয়ে দ্রুতগতিতে হাসপাতালে পৌঁছাতে পারে।
আমরা যখন সদরঘাটে এসে সদরঘাটের রমরমা পরিবেশ দেখতে পেলাম, তখন আমার কাছে খুব খুব ভালো লেগেছিল। আমরা সদরঘাটে আসতেই দেখি হাতের ডান পাশে মালবাহী ফেরি চলাচলের জন্য একটি প্লাটফরম রয়েছে। আর এই প্লাটফরমের পাশেই অনেকগুলো নৌকা একসাথে বেঁধে রেখেছে। আর এই নৌকা এমন ভাবে বেঁধে রেখেছে, দূর থেকে মনে হচ্ছিল নৌকা দিয়ে ফুলের ডিজাইন করে রেখেছে। আমার কাছে দেখতে ভীষণ রকম ভালো লেগে গেল। আর তাই ফটোগ্রাফি করেছি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
সদরঘাটে বুড়িগঙ্গা নদীতে শুধু বড় বড় ফেরি নয়, এখানে ছোট ছোট নৌকা প্রচুর পরিমাণে দেখতে পেলাম। এবার আমরা সদরঘাটের সেই প্লাটফরমে এসে গেলাম।, যেখান থেকে প্রচুর পরিমাণে ফেরিগুলো এসে জমা হয়ে রয়েছে। এখানে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ কথা বলে বুঝতে পারলাম এই ফেরি গুলো সকাল সকাল পটুয়াখালী থেকে এসে ভিড়েছে। যাইহোক এই সদর ঘাটে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ঠান্ডা ঠান্ডা হাওয়া আমাদের শরীরটাকে প্রাণবন্ত করে তুলেছিল। আর সেই সময়কার স্মৃতিগুলো ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।
আশা করি আমার বাইক ট্যুর (Bike Tour) : পর্ব - ১০... পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার বাইক টুর পর্ব ১০, দারুন দারুন ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। সেইসাথে আপনার মনের অনুভূতিগুলো। তবে এই স্মৃতি বিজড়িত অনেকগুলো ফটোগ্রাফি ছিল সদরঘাটের। কিন্তু সময়ের অভাবে ঠিকমতো কাজ করতে না পারায় কারো সাথে শেয়ার করা হয়নি। ইনশাল্লাহ এক দিন শেয়ার করব আপনাদের সাথে। এত সুন্দর ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করার জন্য শুভকামনা রইল।
ভাই আপনার সেই স্মৃতি বিজড়িত ফটোগ্রাফিগুলো পোস্টের মাধ্যমে দেখার অপেক্ষায় রইলাম। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ভাইয়া আপনার বাইক ট্যুরের ১০ তম পর্বে সদরঘাট সর্ম্পকে আপনার অনুভূতি জেনে ভালই লাগলো। সদর ঘাটের ফুলের মত সাজানো নৌকার ছবিটা দেখে অনেক ভাল লাগলো। আর একটি কথা খুব ভাল লাগলো সেটা হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কের মতো যদি কিছু কিছু রাস্তা হতো তাহলে আমাদের জীবন যাত্রার মান আরো উন্নত হতো। ধন্যবাদ ভাইয়া।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া, খুব সুন্দর মন্তব্য করে আমাকে সহযোগিতা করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
আপনি ভ্রমণ বিলাসী মানুষ সেটা আমার জানা ছিল। আপনি পুনরায় আবার ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বের হয়েছেন বাইক নিয়ে জেনে ভালো লাগলো। নতুন জায়গা সম্পর্কে অবগত হতে পারলাম আপনার এই পোস্ট এর মধ্য দিয়ে।
ঠিক বলেছেন ভাই, বাইকে করে ভ্রমন করতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আর তাই মাঝে মাঝে বিভিন্ন জায়গায় বাইকে করে ভ্রমণ করে বেড়াই। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।