অপ্রীতিকর ঘটনা
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট নিয়ে। অনেকদিন আগে আমি একটি মোবাইল কিনেছিলাম আর সেই মোবাইলটি নিয়ে আমার সাথে ঘটে গেল অপ্রত্যাশিত একটি ঘটনা। যা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন আবার হয়তো অনেকেই জানেন না আমি ২০২১ সালে একটি রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করেছিলাম। খুব শখ করে, মনের মত ডেকোরেশন করে, চমৎকার একটি রেস্টুরেন্ট দিয়েছিলাম। আর সেই রেস্টুরেন্টের নাম ছিল "নবান্নরেস্তরা"। গুগলে সার্চ দিলেই আমার এই রেস্তোরাঁ লোকেশন জানিয়ে দিবে।
তবে দুর্ভাগ্য হচ্ছে এই আমি এই রেস্টুরেন্টটি এক বছরের বেশি চালাতে পারিনি। আর কেন চালাতে পারিনি সে বিষয়ে আমি অনেক আগেই একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছিলাম। যাইহোক আমার দুর্ভাগ্য ছিল যার কারণে আমি খুব অল্প সময়ের মধ্যে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলাম। আর সেই রেস্টুরেন্টে বসে আমি একদিন একটি ছেলের কাছ থেকে তার ব্যবহার করা একটি ফোন কিনেছিলাম। সে আমাকে বলেছিল তার নাকি ভীষণ সমস্যা চলছে, যার কারনে মোবাইলটি বিক্রি করা তার খুব প্রয়োজন।
আমি সেই ছেলেটির ফোনটি হাতে নিয়ে দেখি ফোনটি একদম নতুন রয়েছে। আর সেই মুহূর্তে আমারও একটি মোবাইল ফোনের প্রয়োজন ছিল। কেননা রেস্টুরেন্টের জন্য আমার একটি মোবাইল ফোনের বিশেষ দরকার ছিল। কেননা বিভিন্ন জায়গা থেকে খাবারের অর্ডার আসতো যার কারণে আমি আমার পার্সোনাল নাম্বারটি ব্যবহার করতে অনিচ্ছুক ছিলাম। তাই সেই মোবাইল ফোনটি দেখে আমি কোন কিছু চিন্তা ভাবনা না করে, সেই ছেলেটির কাছ থেকে কিছুটা সস্তা দামে মোবাইল ফোনটি কিনে ফেলি। আর এই মোবাইল কিনাটাই ছিল আমার জন্য চরম দুর্ভাগ্যের।
হয়তো সেদিন আমি বুঝতে পারিনি এই মোবাইল ফোনটি আমাকে কতটা ভোগান্তিতে ফেলতে পারে। যখন আমি রেস্টুরেন্ট পরিচালনা বন্ধ করেছিলাম, তখন এই মোবাইল ফোনটি আমি আমার বাসায় রেখে দেই ছেলেমেয়েদের খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য। তো ফোনটি আমার বাসায় বেশ ভালই চলছিল কিন্তু হঠাৎ করে এই সেদিন ফোনটিতে একটি কল আসে, আর কলটি করেছে আমাদের কুড়িগ্রাম থানা থেকে। ফোনটা রিসিভ করেছিল আমার অর্ধাঙ্গিনী। আর সেই ফোনে সিমের মালিক ছিল আমার অর্ধাঙ্গিনী। পুলিশ ফোন দিয়ে আমার অর্ধাঙ্গিনী কে জিজ্ঞেস করেছিল, তার নাম কি। যখন আমার অর্ধাঙ্গিনী তার নাম বলেছিল তখন পুলিশ বলেছিল থানায় গিয়ে যোগাযোগ করতে।
কেননা আমার অর্ধাঙ্গিনীর নামে অভিযোগ রয়েছে। এই কথা শুনে আমার অর্ধাঙ্গিনী অনেকটাই ঘাবড়ে গিয়ে আমাকে ফোন দিয়ে বাসায় ডেকে নেয়। কেননা সেই সময় আমি বাসায় ছিলাম না। তাই বাসায় গিয়ে অর্ধাঙ্গিনির কাছ থেকে সমস্ত কথা শুনে দুজনে মিলে খুব দ্রুত থানায় গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলাম। থানায় যাবার পরে পুলিশ যে অভিযোগের কথা শোনালো, তা শুনে তো আমি ও আমার অর্ধাঙ্গিনী দুজনে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম। কেননা আমরা প্রায় দুই বছর আগে যে মোবাইল ফোনটি কিনেছিলাম তা নাকি ছিল ছিনতাই করা মোবাইল। ফোনটি নাকি রাতের অন্ধকারে তার মালিকের কাছ থেকে ছিনতাই করে নিয়েছিল।
তবে আমরা যখন এই মোবাইল ফোনটি কিনেছিলাম তখন স্বপ্নেও ভাবিনি এই ফোনটি ছিনতাই করা মোবাইল ফোন। আর এই ফোনটি ব্যবহার করার প্রায় ২ বছর পর এরকম একটি ঘটনার সম্মুখীন হয়ে সত্যিই আমরা খুবই লজ্জায় পড়ে গিয়েছিলাম। তবে পুলিশ আমাদের খুবই আশ্বস্ত করেছিল এই বলে, এখন নাকি এরকম ঘটনা হরহামেশাই দেখা যাচ্ছে। তাই বিচলিত না হয়ে আপনারা মোবাইল ফোনটি আমাদেরকে দিয়ে যান। আমরাও কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা সম্মুখীন হবো না ভেবে ই তৎক্ষণাৎ মোবাইল ফোনটি পুলিশকে হস্তান্তর করে দিয়ে আসি।
মোবাইল ফোনটি যদিও বা আমার টাকা দিয়ে কেনা তবুও পুলিশকে হস্তান্তর করতে পেরে আমাদের কাছে খুবই ভালো লেগেছিল। আজ আমি আপনাদের মাঝে এই পোস্ট উপস্থাপন করলাম এজন্যই যে, আপনারাও আমার মত ভুল করে কখনো কোন ডকুমেন্ট ছাড়া মোবাইল ফোন কিনবেন না। তা না হলে আমার মত অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হতে পারেন।
আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাইয়া আপনার পোস্টটি পড়ে খুব খারাপ লাগলো।আপনার রেস্টুরেন্ট ছিল আমার জানা নেই।আজই জানলাম।যাক ছেলেটার কাছে থেকে মোবাইল কিনে আজ এমন ভোগান্তিতে পরলেন।আসলে এ যুগে কোন মানুষকেই চট করে বিশ্বাস করা ঠিক নয়।আর অপরিচিত হলে তো আরো নয়।ফোন দিয়ে এসে ভালো ই করেছেন।আশাকরি আপনার পোস্ট পড়ে সবাই সাবধান হয়ে যাবে।ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার অনুভূতি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য ।
আমার একটি খুব সুন্দর রেস্টুরেন্ট ছিল। তবে আমি পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়ে যাই। কেননা আমি একা একজন মানুষ হওয়ার কারণে ক্যাশে বসার মত বিশ্বস্ত কোন লোক ছিল না। তাই যাকে ক্যাশে বসাইতাম সেই টাকা মেরে দিত। অন্যদিকে হোটেলের স্টাফরা খাবার চুরি করে খেত। যা আমার একার পক্ষে সামলানো সম্ভব হচ্ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে রেস্টুরেন্টটি বাদ দিতে হয়েছে। যাই হোক আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ভাইয়া আপনার ঘটনাটি পড়ে খুবই খারাপ লাগলো, এঁকেতো আপনি রেস্তোরাঁটা বেশি দিন চালাতে পারেননি, তার ওপর মোবাইল নিয়ে এমন বিড়ম্বনায় পড়তে হলো ।তাও আবার দুই বছর পর। আসলে এভাবে ডকুমেন্ট ছাড়া কোন মোবাইল ফোন কেনা উচিত না । খুবই খারাপ লাগলো আপনাদের কাহিনীটা পড়ে।
আপু রেস্টুরেন্ট যখন চালাতে ব্যর্থ হয়েছিলাম তখন যতটা খারাপ লেগেছিল ঠিক ততটাই খারাপ লেগেছে মোবাইল ফোনটি নিয়ে ভোগান্তিতে পড়ে। আমি কখনো ভাবিনি আমাদের মত ছোট্ট জেলাতেও এত কিছু ঘটতে পারে। যাইহোক আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ
আপনার পোস্টটি পড়ে প্রথমে মনটি খারাপ হয়ে গেল যে আপনি ফোনটি নিয়ে একটা বিপদের মধ্যে পড়ে গিয়েছেন।আর ভালো লাগলো যে আপনার এই পোস্টটি পড়ে আমরা সতর্ক হলাম ভবিষ্যতে আমরা কেউ এ ধরনের বিপদে পড়বো না।
বর্তমানে কাউকে বিশ্বাস করা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে আর তাই পুরাতন কোন কিছু কিনলে তার অবশ্যই ডকুমেন্ট নিয়ে কেনা উচিত। তা না হলে আমার মত ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আসলে আমাদের উচিত যে কোন জিনিস কেনার আগে যাচাই-বাছাই করে কেনা। এরকম অপ্রীতিকর ঘটনা বেশিরভাগ মানুষের সাথে ঘটে যায়। আপনি ভেবেছিলেন মোবাইলটি নতুন এবং লোকটিও মোবাইলটা বিক্রি করবে আর আপনারও প্রয়োজন তাই কিনে ফেলেছিলেন। কিন্তু দুই বছর পর এরকম একটা ঘটনার কথা শুনে আপনারা অনেক বেশি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে পুলিশদেরকে মোবাইলটা দিয়েছিলেন। যাইহোক ভালো লাগলো সম্পূর্ণটা।
ভাই, যেহেতু ছেলেটি আমার রেস্টুরেন্টে প্রতিদিন খেতে আসতো তাই আমি তাকে বিশ্বাস করেছিলাম। আর তাই মোবাইল ফোনের কোন ডকুমেন্ট নেয়ার কথা মাথায় আসেনি। তবে সবচেয়ে অবাক হচ্ছি, দুই বছর পর এই ভোগান্তির শিকার হয়ে। যাইহোক ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।