পরোপকারী সুমনা আপুর নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার কাহিনী||পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago (edited)
" আজ বুধবার ১৩ই চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৭শে মার্চ ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ, ১৬ রমজান ১৪৪৫ হিজরি "

মার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।

pexels-andres-ayrton-6551139.jpg

Source

আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে। আজ আমি পরোপকারী এক ব্যক্তির নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার কাহিনী নিয়ে হাজির হয়েছি। পরোপকার করতে গিয়ে একজন মানুষ চোখের সামনে কিভাবে ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে, তাই আজ আপনাদের মাঝে বর্ণনা করার চেষ্টা করব। হয়তো আপনারা অনেকেই ভাবছেন পর উপকার করতে গিয়ে কিভাবে আবার এমন ঘটনা ঘটতে পারে। তবে বিশ্বাস করুন আজ আমি একদম বাস্তব জীবনের সত্য ঘটনা আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো।

আমি যার কথা আজ আপনাদের মাঝে তুলে ধরব তার সঠিক নাম আপনাদের মাঝে প্রকাশ করব না। তাই যে ব্যক্তির এমন ঘটনা ঘটেছে তাকে আমি সুমনা আপু নামে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি। আর এই সুমনা নাম হচ্ছে তার ছদ্মনাম। যাইহোক এই আপু একজন সরকারি চাকরিজীবী। বেশ কয়েক বছর হয়েছে সে সরকারি চাকরিতে কর্তব্যরত আছে। আর এই চাকরি বোধ হয় সুমনা আপুর জীবনে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটা সরকারি চাকরির জন্য মানুষ কত কিছুই না করে। সুমনা আপু ঠিক ততটাই উদগ্রীব ছিল তার এই চাকরির জন্য।

সুমনা আপুরা ছিল তিন বোন এক ভাই। ভাইয়ের সাথে তেমন একটা যোগাযোগ নেই বললেই চলে। তবে বোন দুটোর সাথে বেশ ভালই সুসম্পর্ক ছিল। আর এই সুসম্পর্কের কারণে, সুমনা আপুর মেঝ বোন সুমনা আপুর কাছে কয়েক লাখ টাকা ধার চেয়ে বসে।তবে সুমনা আপুর চাকরির বয়স খুব একটা না হওয়ার কারণে, তার কাছে এতগুলো জমানো টাকা না থাকায়, সে খুব চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল। তাই সুমনা আপু দুটি ব্যাংক থেকে ৫ লাখ টাকা ঋণ করে এবং তার কলিগদের কাছ থেকে প্রায় তিন লাখ টাকা ধার চেয়ে বসে। এই হলো মোট ৮ লাখ টাকা।

আর এই সমস্ত কষ্টের টাকা তিনি তার মেজ বোনকে কয়েক মাসের জন্য ধার দিয়েছিল। কিন্তু মেজ বোনের মনে ছিল ছলচাতুরি। আর তাই তো টাকা পাওয়ার পর সে তার ছোট বোনের সাথে তেমন একটা যোগাযোগ রাখেনি। এদিকে আবার সুমনা আপুর ননদ ছিল দুজন। আর এই ননদের মধ্যে যে বড় ছিল তার সাথে সুমনা আপুর বেশ ভালো সুসম্পর্ক ছিল। তাই সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য সুমনা আপু আবারও একটা ভুল করে ফেলেছিল। আর তাইতো তার বড় ননদ তার কাছে টাকা ধার চাইতেই সে আবারো একটি এনজিও থেকে তার ননদকে চার লাখ টাকা ঋণ করে টাকা ধার দিয়েছিল।

এখানেও সে মস্ত বড় একটি ভুল করে বসে। একদিকে তার বোন লাখ লাখ টাকা নেয়ার পর তার সাথে কোন যোগাযোগ রাখেনি। এতে করেও তিনি বিন্দুমাত্র চিন্তা ভাবনা না করে, আবার নতুন করে তার ননদকে ৪ লাখ টাকা ধার দিয়ে নতুন করে বিপদে পড়ে। একদিকে ৮ লাখ টাকা আবার অন্যদিকে চার লাখ টাকা, এই হচ্ছে টোটাল ১২ লক্ষ টাকা। আর এই পুরো টাকাটাই ছিল সুমনা আপুর ঋণের বোঝা। আর এই ঋণের বোঝা শুধুমাত্র তার নিজের বোন ও ননদের জন্য হয়েছিল। যেহেতু তারা দুজনেই সুমনা আপুর খুবই আপনজন ছিল, তাই তাদের বিরুদ্ধে কোন অ্যাকশন নিতেও পারেনি।

আর হ্যাঁ একটা কথা বলতে ভুলেই গিয়েছিলাম, সুমনা আপুর মেজ বোন ও হাসবেন্ড দুজনেই বর্তমানে সৌদি আরবে থাকে। যার কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। তবে তারা কেন সুমনা আপুর টাকা ফিরিয়ে দিতে পারছে না, সে বিষয়ে একটি ঘটনা রয়েছে। আর সেই ঘটনাটি আমি পরবর্তী পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে জানিয়ে দিব। সুমনা আপুর মেজ বোন ও ননদ কেন টাকা দিতে পারল না, এবং সুমনা আপু কিভাবে সর্বস্বান্ত হয়ে গেল সে বিষয়ে জানার জন্য আপনাদের অপেক্ষা করতে হবে।



আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkPKDYqZPTyz3HQnPBAZYA84k8k89ixkhuUsFjZkgWkC1gjU36M1oU8J7FbJUoPMtjB5EHLD1usXZox8d6boJGJdTa7jANjx37k.png
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

3q52Dkr5nBe3kDiHrk4F3qdzX6E5VuVcCcF7TDQDco37AUsMDxK7aJ1uasvrAaBSP6D1NgNuBSX2m.gif

3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeSsa63mzHQexuvWRDgxAQmHZjMKhFaYGe2ubQmiC33SnsVy3TGA7BbZJiqfXWxLCKhiShcGVU.png

5ShzsKnKF7vppGeV6VN3m3GSDcLoRruAhMmifZtFSDkYScM8YPF6pckqVBKhKLz9Sc3MX3fi3VB1g8M8UmMjye4LP3cLU4vBEaZXuYNv2MNRa7tBLMG2teRDKvsTf2woLnZkuc2jvLeJTRJWq4uDF3Dx.png

Sort:  
 5 months ago 

সত্যি ঘটনা খুবই দুঃখজনক ৷ আসলে পৃথিবীতে এমন মানুষ আছেই যারা নিজের জন্য অন্যের ভালোর জন্য নিজের সর্বোচ্চ টা দেয় ৷ কিন্তু দিনশেষ যখন ওই মানুষ গুলোর মনে একটু ও বিবেক কাজ করে না ৷ সেই মানুষ গুলো সত্যি মানুষ নয় ৷ তবে ওই সুমনা আপুর এতটা বিশ্বাস করা ঠিক হয় নি ৷ টাকার মানেই কালো সেটা যে কেও বদলে যেতে পারে ৷

একদম ঠিক বলেছেন ভাই, টাকার মানে কালো তবে এ বিষয়ে হয়তো সুমন আপুর তেমন কোন অভিজ্ঞতা ছিল না বলেই এমন বিপদে পড়েছে। আপনার মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 5 months ago 

পরোপকারী সুমনা আপুর নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার কাহিনীটি পড়ে সত্যিই খুব খারাপ লাগলো। পরবর্তীতে সুমনা আপুর বোন এবং ননদ কেন টাকা ফেরত দিতে পারল না সেটা জানার খুব আগ্রহ বেড়ে গেল। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।

আপু, পরোপকারী সুমনা আপুর জীবন কাহিনী সত্যিই খুবই বেদনাদায়ক। চোখে দেখে সহ্য করার মতো নয়। আজ শেষ পর্ব উপস্থাপন করেছি আপু, সময় সুযোগ করে দেখে আসবেন।

 5 months ago 

অবশ্যই দুঃখজনক ঘটনা। এত বড় এমাউন্ট ঋনের বোঝা বহন করা খুবই কঠিন। আপন বোনের কাছে এটা কখনই কাম্য ছিল না। কিন্তু এক্সাক্টলি কি কারণে তারা ফেরত দিতে পারছে না সেটাও ভেবে দেখার বিষয়। বোনরা সাধারণত বোনের সাথে এটা করে না।

সুমনা আপুর কিছু বোকামীও আছে বলব। নিজের কাছে টাকা না থাকলে ঋণ করে কেন এতো টাকা ধার দিতে হবে? কেন বার বার বেলতলায় যেতে হবে?

আপনি ঠিকই বলেছেন ভাই, বোনেরা সাধারণত এমন করে না। সুমনা আপুর মেজ বোন বিপদে পড়েই এমন কাজটি করেছে। তবে তার সমস্ত বিপদ এখন সুমনা আপুর মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। আর একটি কথা না বললেই নয়, সুমনা আপু খুবই সহজ সরল ও খুবই আন্তরিক। যার কারণে সকলের সাথেই সে মিলেমিশে থাকতে চায়। আর এজন্যই হয়তো বারবার ভুল করে বসে।

 5 months ago 

দারুন ভাবে আপনি একজন মানুষের নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার গল্পটি তুলে ধরেছেন ভাইয়া। আসলেই সুমনা আপু অগাধ বিশ্বাস করে তার বোন এবং ননদকে টাকা দিয়েছিল কিন্তু তার বিনিময়ে তিনি যে এরকম পরিস্থিতিতে পড়বেন এটা কখনো তিনি কল্পনাও করেননি। আর এই বিশ্বাসের ফলেই তো তাকে পড়তে হয় মহাবিপদে। ৮ লাখ প্লাস চার লাখ মোট 12 লাখ টাকার ঋণ চাট্টিখানি কথা না। তো যাই হোক ভাইয়া কেন তারা সুমনা আপুর টাকা ফেরত দিতে পারছিল না এ বিষয়টি ভালোভাবে জানার জন্য আপনার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

ভাই, ১২ লক্ষ টাকা ধার দেয়ায় সুমনা আপু একদম নিঃস্ব হয়ে গেছে।বর্তমানে সুমনা আপুর দুঃখের শেষ নেই। পরবর্তী পর্ব পড়লেই বুঝতে পারবেন কোথা থেকে কি হয়েছে। যাইহোক ভাই, আপনার মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 5 months ago 

আরে মিয়া ভাই আপনার আজকের গল্পে আমি তো সুমনা আপুর মাঝে নিজেকেই খুঁজে পেলাম। তবে পার্থক্য হলো সুমনা আপু ধরা খেয়েছে আপন মানুষ থেকে আর আমি ধরা খেয়েছি বাহিরের মানুষের থেকে। বেশ মনে ধরার মত গল্প শেয়ার করলেন। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

আপু, আপনিও যেহেতু এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন সেহেতু আপনি অবশ্যই সুমনা আপুর কষ্ট উপলব্ধি করতে পারছেন। তবে সুমনা আপুর কষ্টটা বোধহয় একটু বেশি হয়ে গেছে, নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার কারণে। যাইহোক আপু সময় সুযোগ করে, পরবর্তী পর্বটি পড়লে বুঝতে পারবেন, সুমনা আপুর সাথে কেন এমনটা হয়েছে।

 5 months ago 

আপন এবং কাছের মানুষ বলে সুমনা আপু তাদেরকে টাকা ধার করে টাকা দিয়েছিল। বোন এবং ননদ দুজনেই তার সাথে প্রতারণা করেছে দেখে সত্যি খারাপ লেগেছে। তাদের জন্য ১২ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে তাদেরকে টাকাগুলো দিয়েছে। কিন্তু এরপর তারা তো যোগাযোগই রাখেনি। তারা টাকা দিতে পারেনি এটাই জানার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম এখন। সুমনা আপুর নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার কাহিনী টা জানার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। আশা করছি শীঘ্রই আপনি এটার মূল কাহিনী আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন।

আপু, সুমনা আপুর মেজ বোন হয়তো এত বড় প্রতারণা করতে চায়নি। তবে তিনিও বিপদে পড়ে তার ছোট বোনকে মহা বিপদে ফেলে দিয়েছে। পরবর্তী পর্ব উপস্থাপন করেছি আপু, সময় সুযোগ করে দেখে আসবেন।

 5 months ago 

এত বড় টাকার এমাউন্ট এর ঋণ এখন পুরো ই সুমনা আপুর কাঁধে। এতগুলো টাকা তিনি ঋণ করে ননদ এবং নিজের মেজো বোনকে দিয়েছে। টাকা নেওয়ার পর তো দেখছি উনার মেজ বোন উনার সাথে কোন রকম সম্পর্কই রাখেনি এমনকি যোগাযোগ রাখেনি। আর এত সবকিছুর পরও তিনি ননদকেও টাকা দিয়েছে তাও আবার ঋণ নিয়ে। সর্বমোট ১২ লাখ টাকা হয়ে গিয়েছে। উনার এটা করা উচিত হয়নি। আপনজনদের বিরুদ্ধে কোনরকম অ্যাকশন নেওয়া যায় না। আর তেমনই তিনিও কোনরকম অ্যাকশন নিতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত কি হবে এটা ভাবছি আমি।

ভাই, সুমনা আপু ভেবেছিল সে তার নিজের বোনকে টাকা দিয়ে সাহায্য করেছে যদি ননদকে সাহায্য না করা হয়, তাহলে হয়তো সুমন আপুকে তারা ভুল বুঝবে। এছাড়া সুমনা আপু খুবই মানবিক লোক ছিল, যার কারণে সবাই তাকে ঠকিয়েছে। আপনার মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 58705.75
ETH 2588.87
USDT 1.00
SBD 2.45