এক দুঃখিনী মায়ের গল্প
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে। আর আজকের পোস্ট হচ্ছে অসহায় একজন বৃদ্ধ মায়ের অসহায়ত্বের কথা নিয়ে। আর এই অসহায় বৃদ্ধ মা বসবাস করেন আমার অর্ধাঙ্গিনীর স্কুলের পাশেই একটি বাড়িতে। যেহেতু আমি আমার অর্ধাঙ্গিনীকে তার স্কুলে রেখে আসতে যাই, সেই সুবাদে এই অসহায় বৃদ্ধ মায়ের অসহায়ত্বের কথাগুলো শুনে আমি খুবই ব্যথিত হয়েছিলাম। আর সেই ব্যথিত কথাগুলোই আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। তো এই বৃদ্ধ অসহায় মায়ের নিজের কোন সন্তান নেই।
একদম অল্প বয়সে যখন সে স্বামীর ঘরে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে এসেছিল, তখন তার ঘরে ছিল প্রথম স্ত্রীর দুটি ছেলে সন্তান। আর সেই ছেলে সন্তান দুটোকে বুকে জড়িয়ে ধরে বছরের পর বছর লালন পালন করে গেছেন। সন্তান দুটোর মুখের দিক তাকিয়ে অসহায় বৃদ্ধ এই মহিলা আর কোনদিন নিজের সন্তান নেয়ার চিন্তা ভাবনাও করেননি। কেউ যদি তাকে সন্তানের কথা বলতো তাহলে সে অকোপটেই বলে দিত আমার দুটো ছেলে সন্তান রয়েছে।
তাই আর আমার সন্তানের কোন প্রয়োজন নেই। অসহায় এই বৃদ্ধ মা তখনকার দিনে বুঝতেই পারেনি, ভবিষ্যতে তার জন্য কতটা কষ্টের দিন অপেক্ষা করছিল। আর অবশেষে এই বৃদ্ধ বয়সে তাকে সেই কষ্ট ও অসহায়ত্বের সম্মুখীন হতেই হল। কেননা এই অসহায় বৃদ্ধ মা বেশ কিছুদিন আগে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। আর সেই অসুস্থতার কারণে এক হাত ও এক পা অবশ হয়ে গিয়েছিল। যখন তার এই মুমূর্ষ অবস্থা, তখন তার ছেলে দুটো তাকে দেখাশোনা করার জন্য একদম অস্বীকার করেছিল।
এবং এই বৃদ্ধ অসহায় মায়ের বোনদেরকে ডেকে নিয়ে এসেছিল। এবং বোনদেরকে ডেকে এই অসহায় বৃদ্ধ মাকে তাদের সাথে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছিল। কেননা এই অসহায় বৃদ্ধ মহিলার সৎ ছেলে দুটো তার কোন চিকিৎসা করবে না এবং তার কোন দেখভাল করবে না বলে তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছিল। এমন মুমূর্ষ অবস্থায় অসহায় বৃদ্ধ মাকে তার বোনেরা সৎ ছেলেদের বাসায় রেখে আসতে পারেনি। তাই অসহায় বৃদ্ধ মহিলার এক বোন তাকে তার বাসায় নিয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু এখানেও যেন সমস্যার কোন শেষ নেই, অসহায় বৃদ্ধ মাকে দেখেই, বোনের ছেলের বউয়েরা একদম সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, যদি তার এই বোনকে অর্থাৎ অসহায় বৃদ্ধ মাকে তাদের বাসায় রাখে, তাহলে তারা বাড়ি থেকেই বের হয়ে যাবে। এজন্য নিরুপায় হয়ে বৃদ্ধ মাকে আবারো তার সৎ ছেলের বাসায় রেখে আসা হয়। এবার নতুন করে যেন আবারও বিপত্তি শুরু হতে লাগলো। তার সৎ ছেলে দুজনের একজনও অসহায় এই গরিব মাকে না দেখার কারণে, এখন সেই অসহায় বৃদ্ধ মা তার কুঁড়ে ঘরে অবহেলায় অযত্নে দিন যাপন করছে।
তার ভাগ্যে কি জুটবে, তার ভবিষ্যতে কি হবে তার নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছে না। তবে তার দুটো সৎ ছেলে যেভাবে বৃদ্ধ এই মহিলাকে মায়ের সম্মান থেকে বঞ্চিত করেছে, তার ওপর থেকে একদম দৃষ্টি সড়িয়ে নিয়েছে, তাদের নিশ্চয়ই মহান আল্লাহতালা কোনদিন ভালো রাখবে না। মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে দুহাত তুলে এই অসহায় বৃদ্ধ মায়ের জন্য দোয়া প্রার্থনা ছাড়া আমারও আর কিছুই করার নেই। শুধু বলবো অসহায় এই বৃদ্ধ মা যেন ভালো ও সুন্দর থাকে সব সময়।
আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অসহায় এই বৃদ্ধ মায়ের দুঃখের কথাগুলো শুনে খুব খারাপ লাগলো ভাই। সে মা হয়তো চেয়েছিল সৎ ছেলে দুটো তার নিজের ছেলেতে পরিণত হবে। কিন্তু বাস্তবতা যে ভিন্ন তিনি সেটি বুঝতে পারেননি। তিনি বুঝতে পারেননি যে এক গাছের ডাল আরেক গাছে লাগেনা। আর সে কারণেই আজকে তিনি এই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। তবে এটা শুনে অবাক লাগলো যে তার বোনের ছেলের বউরাও তাকে বাসায় রাখতে নারাজ ছিলেন। সত্যি বলতে সৎ দুই ছেলের মত তার বোনের ছেলের বউরাও অমানুষ। যার কারণে এরকম কাজ করতে পেরেছে। যাইহোক অবশেষে আপনার মতই বৃদ্ধ মায়ের জন্য দোয়া ছাড়া কিছুই করার নেই। ধন্যবাদ ভাই এই বাস্তবিক একটি বিষয় আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
দুখিনী মায়ের সৎ ছেলে দুজনেই তো তার মাকে দেখার জন্য অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। আর সেখানে ছেলের বউয়েরা তার সৎ শাশুড়ীর সেবা করবে এই প্রত্যাশা করা অসম্ভব। তবে এই দুখিনী মায়ের সৎ ছেলে দুটো ও ছেলের বউ খুবই স্বার্থপর, তা না হলে হয়তো তারা তাদের সৎ মায়ের সাথে এমন আচরণ করতে পারত না।
যাদের জন্য সে মা সন্তান নেই নি, সেই ছেলে দুইটি বৃদ্ধ মায়ের পাশে দাড়ালো না শেষ পর্যন্ত। আসলে মানুষ অনেকটাই নিষ্ঠুর হয়। সৎ মা হলেও তাদের উচিত ছিল মাকে সম্মান করা এবং সেবা-যত্ন করা। মা তাদেরকে কখনো সৎ সন্তান মনে করেনি। কিন্তু এর প্রতিদান তারা এভাবে দিবে, এটা তিনি নিজেও কখনো কল্পনা করেননি। বৃদ্ধ মায়ের জন্য দোয়া করি যেন তিনি ভালো থাকেন, সুস্থ থাকেন। আর ওনার ছেলেরা এর শাস্তি অবশ্যই পাবে।
আপু এই দুখিনী মা সৎ ছেলে দুটোকেই নিজের ছেলের মতো করে মানুষ করেছে।অথচ আজ সেই ছেলে দুজনেই তার এই সৎ মাকে ভীষণ কষ্ট দিচ্ছে। যাই হোক আপু, আপনার সুন্দর মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
একজন দুঃখিনী মায়ের গল্পটা পড়ে আমার তো অনেক বেশি খারাপ লেগেছে। এই গল্পটা পড়ে সত্যি চোখে জল চলে এসেছে। আসলে মায়েরা এরকমই হয়। সন্তান নিজের হোক বা সৎ, সব সময় নিজের সন্তানের মত দেখে। কিন্তু সেই সন্তানগুলো পরবর্তীতে তাদের সাথে বেঈমানি করে। ওই মায়ের জন্য সবসময় দোয়া করি।
ভাই, আপনার মত আমিও ওই দুখিনী মায়ের জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট দোয়া প্রার্থনা করেছি, যাতে করে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং ভালো থাকেন।
আপনার গল্পটি পড়ে সত্যিই অনেক খারাপ লাগলো ভাইয়া। যে মহিলা বিয়ের পর সৎ ছেলে দুটিকে আপন করে নিয়েছে এবং তার ঘরে কোন ছেলে সন্তান নেই নাই। এতে বুঝা যায় বৃদ্ধ মায়ের মন অনেক বড়। তবে সৎ ছেলে দুটি তার সৎ মাকে দেখাশুনা করবে না এবং ওষুধ ধাবায়ও করবে না কথাটি একদম বলে দিল। তারা চিন্তা করার দরকার ছিল এই মহিলাটি তাদেরকে লালন পালন করেছিল। তবে বৃদ্ধ মায়ের ভাগ্য খারাপ বলতে হবে। এক বোন নেওয়ার পরও আবার তাকে তার সৎ ছেলেদের কাছে রাখতে হল। একদিন সৎ ছেলেগুলো এর বিচার পাবে। বাস্তব একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু আপনি ঠিকই বলেছেন, এই দুখিনী মায়ের ভাগ্য খুবই খারাপ। তা না হলে যাদেরকে নিজের ছেলের মতো করে লালন পালন করেছেন, অথচ তারাই এখন এই দুঃখিনী মায়ের খোঁজ খবর রাখছে না। আপনার সুন্দর মতামতের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।