আল-আমিন এর গল্প : ১ম খন্ড
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারও ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আর আজকের পোস্ট হচ্ছে আমার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী লিপির ছোট ভাইকে কেন্দ্র করে। আমার বান্ধবী যার নাম হচ্ছে লিপি। লিপির আবার দুই ভাই, এক ভাই লিপির থেকে দুই বছরের ছোট যার নাম আলামিন। এবং অন্য ভাই লিপির বয়স থেকে প্রায় সাত আট বছরের ছোট তার নাম আজিজুল। এক বোন ও দুই ভাই নিয়ে তাদের বাবা-মা সহ তারা ভালই দিনযাপন করছিল।
লিপির বাবা ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি করছিলেন। লিপি যখন অনার্স পড়ছিল তখন লিপির ছোট ভাই আলামিন সবেমাত্র এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করে বেরিয়েছে। তবে তার লেখাপড়ার চাইতে বাইরের দেশে যাওয়ার ভিষণ ইচ্ছে ছিল। যার কারণে লিপির ছোট ভাই আলামিন বাইরের দেশে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় ডিবি লটারির টিকিটগুলো কাটতো। হঠাৎ করে একদিন তার ভাগ্যের চাকা এমনই ভাবে ঘুরে যায়, সে বাসায় এসে সবাইকে খুশিতে আত্মহারা হয়ে লটারিতে বাইরে যাওয়ার জন্য টিকিট পেয়েছে বলে জানিয়েছিল। তাও আবার সেই লটারি হচ্ছে আমেরিকায় যাওয়ার জন্য ডিবি লটারি।
এমতাবস্থায় তার পরিবারের সকল সদস্য আলামিনের আমেরিকায় যাওয়ার ডিবি লটারির কথা শুনে খুবই খুশি হয়েছিল। যদিও বা আমি নিজে বেশ কয়েকবার এই লটারির টিকিট কেটেছিলাম। তবে আমার দুর্ভাগ্য কখনোই তা আমার ভাগ্যে ফেবার করেনি। যাই হোক আমার দুর্ভাগ্য হলে কি হবে, আলামিনের সৌভাগ্যের কথা শুনে আমারও কিন্তু আনন্দের সীমা ছিল না। তো দেখতে দেখতে একদিন সকল প্রস্তুতি শেষ করে আল আমিন পাড়ি জমায় আমেরিকায় গিয়ে।
সেখানে গিয়ে সে সিটিজেনশিপ পায় এবং একটি কোম্পানিতে চাকরিও পেয়ে যায়। তবে সে কোম্পানিতে খুব বেশিদিন কাজ করেনি, সেখানে গিয়ে তার ভীষণ শখ হয়েছিল ড্রাইভিং করার। আর তাই পরবর্তীতে সেখানকার সকল নিয়ম-কানুন অনুযায়ী ড্রাইভিং শিখে বর্তমানে সে ড্রাইভার হিসেবে কর্মরত আছেন। আলামিন আমেরিকায় যাওয়ার পরে, তার বাবা মাকে প্রতি মাসে যে টাকা পাঠাতো, সেই সমস্ত টাকাগুলো জমা করে তার বাবা তার জন্য শহরের বুকে চারতলা একটি ফ্লাট বাড়ি তৈরি করেছিল।
আর আমি যখন আমার বান্ধবীর সাথে দেখা করতে তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম, তখন তো তাদের এই চারতালা ফ্ল্যাট বাড়িটি দেখে কিছুটা অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কেননা এটা চারতলা বাড়ি হলেও আমার কাছে একটি রাজপ্রাসাদের মতো মনে হচ্ছিল। কার ভাগ্যে কি থাকে আসলে তা বলা বড়ই মুশকিল। ছোট্ট আল-আমিন যখন আমাদের কাছে একটা সময় জোরপূর্বক পাঁচ দশ টাকা নিয়ে বাদাম কিনে খেত, সেই আলামিন আজ অনেক অর্থ সম্পদ তৈরি করে ফেলেছে। যা সত্যিই আমাকে মুগ্ধ করেছিল।
বেশ কয়েক বছর কেটে যাবার পর আল-আমিন বাংলাদেশে আসলে, তার বাবা আলামিনের খুব ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজন করে। যা ছিল একটি চোখ ধাঁধানো ও জাকজমকপূর্ণ বিয়ের অনুষ্ঠান। আমি নিজেও এ বিয়েতে বরযাত্রী হিসেবে যোগদান করেছিলাম। তবে দুর্ভাগ্য হলো এই, আমি তখন বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত ছিলাম না, যার কারণে ফটোগ্রাফি করার তেমন চিন্তা ভাবনাও ছিল না। যে কয়টা ফটোগ্রাফি করেছিলাম, তা মোবাইল ফোনের মেমোরি কার্ড ডেড হয়ে যাওয়ার কারণে হারিয়ে ফেলেছি।
যাক অবশেষে আমার বান্ধবী তার এই ছোট্ট পরিবার নিয়ে ভীষণ সুখে ছিল বলে আমার কাছেও খুবই ভালো লেগেছিল। তবে এই ভালোলাগাটা খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। তাদের এই ছোট্ট সুখী সংসারে অশান্তির কালো ছায়া এসে বাসা বেঁধে ছিল। কেন তাদের সংসারে অশান্তির কালো ছায়া নেমে এসেছিল তা আমি সামনের পর্বে উপস্থাপন করব।
আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
!upvote 40
This post was manually selected to be voted on by "Seven Network Project". (Manual Curation of Steem Seven. Your post was promoted on Twitter by the account josluds
the post has been upvoted successfully! Remaining bandwidth: 80%
Your post has been rewarded by the Seven Team.
Support partner witnesses
We are the hope!
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগল। সত্যি সেই ছোট আলামিন আজ কতো বড় হয়েছে। শহরে বাবা মাকে চারতলা করে দিয়েছে। আসলে ভাইয়া কার ভাগ্য কি আছে বলা মুশকিল। তবে তাদের সংসার ভালোই চলছিল হঠাৎ আবার এমন কি হলে? পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
ঠিক বলেছেন আপু, কার ভাগ্যে কি আছে বলা মুশকিল। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
হা হা হা আপনি বেশ কয়েকবার ডিবি লটারি কিনে চান্স না পেলে কি হবে যাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরে তাদের এমনই হয়। যেমন আল-আমিন লটারি পেয়ে আমেরিকায় গিয়ে রাতারাতি বড়লোক হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া আল-আমিনের বোন যে আপনার বান্ধবী পরে বুঝতে পারলাম। আমেরিকার মত দেশে গিয়ে ভালোমতো কাজ করতে পারলে অনেক অর্থ ইনকাম করা যায়। যা আল-আমিন করতে পেরেছে। ভালো লাগলো আল-আমিন এর সাফল্যের গল্প শুনে।
আপু,আমার নসিবে লটারি নেই তাই আমিও আল আমিনের মত রাতারাতি বড়লোক হতে পারিনি। তবে আলামিন ভালো আছে জেনে আমার কাছে ভালো লাগে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আলামিনের গল্পটি পড়ে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আপনার দেখা সেই ছোট্ট আলামীন এখন অনেক অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে এবং অর্থ সম্পদ তৈরি করে ফেলেছে। তার এরকম সফলতা সত্যি অনেক বড় ভাগ্যের ব্যাপার। এরপর সে বাড়িতে আসে এবং অনেক বড় ধুমধাম করে তার বিয়ে হয়। তাদের আনন্দের কোন সীমা ছিল না এবং অনেক সুখে ছিল। এরপরে তাদের জীবনে কোন কালো ছায়া নেমে এসেছিল তা আমাকে ভাবাচ্ছে?? পরবর্তী পর্বে কি হবে তা জানার জন্যই অপেক্ষায় থাকলাম। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি পরবর্তী পর্ব দেখতে পাবো।
আপু, আল আমিনের বিয়েটা খুব ধুম ধামে হাওয়ায় আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছিল। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ভাই আপনি বাস্তবিক জীবনের গল্প গুলো খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেন। যেমনটা আলামিনের ক্ষেত্রে ফুটিয়ে তুলেছেন । আসলেই ভাগ্য অনেক বড় একটা জিনিস যেটা জোর করে পাওয়া যায় না যেমনটা আল-আমিন পেয়েছিল এখন সফলতা পেয়েছে। আপনি হয়তো অন্য একদিকে সফলতা পাবেন। চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে চেষ্টা মানুষের ভাগ্যকে পরিবর্তন করে। একদিন আপনিও এরকম রাজপ্রাসাদ তৈরি করতে পারবেন।
ভাই, আল আমিনের মত রাজপ্রাসাদ তৈরি করতে হলে বউয়ের রিটায়ার্ড পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আর ততদিনে আমি বুড়ো হয়ে যাব। দেখা যাক ভাগ্যে কি আছে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।