৭ম পর্বঃ অধরা পরী

02-05-23

১৯ বৈশাখ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই অনেক ভালো আছেন!
ভালো থাকাটাই সবথেকে বড় বিষয়। যাক আপনাদের মাঝে নতুন একটি গল্প শেয়ার করেছিলাম। তারই ধারাবাহিকতায় আপনাদের সাথে নতুন একটি পর্ব নিয়ে হাজির হলাম। যেহেতু আমি একসাথ কয়েকটা গল্প লিখে থাকি তাই পর্বগুলো আসতে একটু দেরি হয়ে যায়। যাক, দেখতে গল্পের সপ্তম পর্বে চলে এলাম! আশা করি আজকের পর্বটিও উপভোগ করবেন।

heart-3085515__480.jpg

copyright free image from pixabay

৬ষ্ঠ পর্বের পর থেকে

আর তখনই আসিফ জানতে পারে ঝর্ণার জন্য তার বড় ভাই ছেলে দেখেছে। ছেলে বিদেশ থাকে। ঝর্নাদের পাশের গ্রামেই ছেলের বাড়ি! বিদেশ থেকে এসেছে, টাকা-পয়সা ভালোই কামাই করে নিয়ে এসেছে। গ্রামের মানুষরা তাই মনে করছে। ঝর্না দেখতে সুন্দর। যে কেউ ঝর্নার রূপের অথবা চোখের প্রেমে পরবে। ঝর্নার বড় ভাই ঠিক করে সেই ছেলেটির সাথে ঝর্নার বিয়ে দিবে। কিন্তু এস এস সি পরীক্ষার পর। আগে ভাগেই ছেলেকে চয়েজ করে রেখে দিয়েছে ঝর্নার ভাই। ছেলে পক্ষ চেয়েছিল আংটি পরিয়ে রাখার জন্য। কিন্তু সেটা আর হয় নি।

বাড়িতে এসে আসিফ এমন খবরের জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না। বন্ধু সজিবের কাছ থেকে সব জেনেছে আসিফ। ঝর্নার বাটন ফোনে এখন নতুন সিম। আগের সিম বন্ধ। আসিফ ফোন দিয়ে ঝর্নাকে পায় না। অস্থির হয়ে যায় আসিফ। এক পলক দেখতে চাই ঝর্নাকে। কিন্তু দেখা করবে কিভাবে ঝর্নার সাথে। আসিফ তার বন্ধু সজিবকে বলে ঝর্নার সাথে একবার দেখা করার ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য। ঝর্না স্কুল, প্রাইভেট সবকিছুতে যাওয়া আসা করে না। আসিফ তখন সজিবকে একটা চিঠি লিখে। চিঠিটা ঝর্নাকে দিতে বলে ।

সজিব আসিফের দেয়া চিঠিটা নিয়ে ঝর্নাদের বাড়িতে যায়। বাড়িতে সবাই উপস্থিত। ঝর্নার মা উঠোনে বসে চাল মুড়াচ্ছে।
-কাকি, ঝর্না কোথায়?
-ঘরের ভিতরেই আছে গিয়ে দেখ।

সজিব হাটঁতে হাটঁতে ঘরের ভিতরে চলে যায়। বাড়ির পাশে ছোট একটি জানালা। হাত দুটি জানালার মাঝে দিয়ে বাহিরে আনমনে থাকিয়ে আছে ঝর্না। চোখ দিয়ে পানি পরছে।

-কি রে ঝর্না কি করিস তুই!

সজিবের উপস্থিতি টের পেয়ে ততক্ষণে ঝর্না হাত দিয়ে চোখের জল মুছে নিয়েছে। "কিছু করছি না। কিছু বলবি?"
-হুমম। আসিফ তোকে এই চিঠিটা দিতে বললো! নে ধর।

চিঠিটা দিতেই ঝর্না তাড়াতাড়ি করে সজিবের কাছ থেকে নেয়।
-আসিফ কখন এসেছে বাড়িতে?
-কাল আসলো। আমার সাথে দেখা হয়েছিল সব বলেছি আসিফকে।
-এখন বললে আর কি হবে! (কাদঁতে কাদঁতে) সবকিছু ঠিকই হয়ে গেল।
-আসিফ তোর সাথে দেখা করতে চাইছে। তোর জন্য অস্থির অনুভব করছে। একবার গিয়ে দেখা কর।
-আসিফকে বলিস তোদের বাড়ির পাশে তালগাছটার এখানে এসে যেন দাড়াঁয়।
-ঠিক আছে। আমি যাইরে!

সজিব ঝর্নাদের বাড়ি থেকে চলে আসে। বিকেল তখনও হয়নি। সজিব যেতেই আসিফের দেয়া চিঠিটা ঝর্ণা পড়ে। চোখ দিয়ে পানি পরছে। এতো কষ্ট ঝর্নার কখনো হয়নি। হৃদয়ে যেন ভীষণ শূন্যতা অনুভব করছে। যেমন শূন্যতা অনুভব করে মরুভূমিতে থাকা প্রাণীরা পানির জন্য। প্রিয় মানুষটাকে হারানোর ভয়।

আসিফের চিঠিটা পড়ে বইয়ের ভিতরে যত্ন করে রেখে দেয়। সজিবকে যখন বলেছে, তাই আজ আসিফের সাথে তাহলে দেখা হবে। সজিব বিকাল বেলায় ফোন দেয় আসিফকে।
-আসিফ, ঝর্নাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম আমি। তোর চিঠিটা আমি দিয়েছি ঝর্নাকে।
-ঝর্না কি বললো! আমি যে ঝর্নার সাথে একটিবার দেখা করতে চাই বলসনি।
-হুমম বলেছি। আজকে সন্ধ্যায় আমাদের বাড়ির তালগাছের এখানে দাড়াঁবি। ঝর্না আসবে বললো।
-তোকে যে কি বলে ধন্যবাদ দেয়।

দীর্ঘ কয়েকটা মাস পর প্রিয় মানুষটার সাথে দেখা। এরই মাঝে কতো কিছু হয়ে গেল। ঝর্না কি পরিবর্তন হয়ে গেছে। আগের থেকে সুন্দর হয়ে গেছে! নিশ্চয় চিন্তা করে চোখের নিচে কালো দাগ বানিয়ে ফেলছে। আসিফ ভাবতে ভাবতে নদীর পাড়ে এসে বসে। খোলা আকাশ। নদীর পাড়ে বসে বয়ে যাওয়া বাতাস উপভোগ করছে। পকেট থেকে ফোন বের করে সৌরভকে ফোন দেয়।

-কই আছিস তুই?
-বাড়িতে। কেন?
-এদিকে আসতে পারবি একটু!
-কোনদিকে।
-নদীর পাড়ের দিকে।
-ঠিক আছে। আসতেছি।
-ওকে।

আসিফ ফোন কেটে দেয়। দুঃসময়ের বন্ধু সৌরভ। বিপদে সবার আগে সৌরভকে পেয়েছে সব সময়। ঝর্নার সাথে দেখা করবে, একা কি আর যাওয়া যায়! বন্ধু থাকলে আলাদা ভরসা পাওয়া যায়, কথা বলা শক্তি পাওয়া যায়। যেকোন বিপদ আসলে যেন পেরিয়ে আসা যায়। এমন বন্ধু সবার জীবনে একজন থাকা প্রয়োজন। যার জীবনে আছে সে ভাগ্যবান, অনেক ভাগ্যবান!

চলবে,,,,



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59596.75
ETH 2659.83
USDT 1.00
SBD 2.45