৬ষ্ঠ পর্বঃ অধরা পরী

12-04-23

২৯ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই অনেক ভালো আছেন!
ভালো থাকাটাই সবথেকে বড় বিষয়। যাক আপনাদের মাঝে নতুন একটি গল্প শেয়ার করেছিলাম। তারই ধারাবাহিকতায় আপনাদের সাথে নতুন একটি পর্ব নিয়ে হাজির হলাম। দেখতে দেখতে গল্পের ৬ষ্ঠ পর্বে চলে এলাম! আশা করি আজকের পর্বটিও উপভোগ করবেন।

heart-3085515__480.jpg

copyright free image from pixabay

৫ম পর্বের পর

এস এস সি ফাইনাল পরীক্ষার তিন মাস আগে। পড়াশোনার প্রেসার তখন একটু বেশি! আসিফের বাবা বুঝতে পেরেছিলেন তার পড়াশোনা হচ্ছে না! ভালো রেজাল্ট করতে হবে। সিদ্ধান্ত হয় আসিফকে কোচিং এ ভর্তি করানো হবে। আসিফ যখন জানতে পারে তাকে কোচিং এ চলে যেতে হবে তখন তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে! ঝর্নাকে রেখে সে কোচিং করবে কিভাবে!! কিন্তু বাবার অবাধ্যও যে হওয়া যাবে না!

শহরে যাওয়ার আগে ঝর্নার সাথে দেখা হয়! একটি খাম ঝর্নার হাতে! হাত বাড়িয়ে আসিফের দিকে এগিয়ে দেয়!
-এটা কি?
-কিছু না!

আসিফ সেখানেই খামটা খুলে! "ভালোবাসি তোমাকে। আমাকে কখনো ছেড়ে যাবে না তো তুমি! আমি অপেক্ষা করবো তোমার জন্য! "

লেখাটা পড়ে আসিফ সেখানেই কেঁদে দেয়! ভালোবাসার মাঝে এক ভালো লাগার কান্না! কেউ একজন তাকে চাই মন থেকে। তাকে কি হারাতে দেয়া যাবে! ঝর্নাও কাদঁছে! "ভালো করে পড়াশোনা করবেন! শরীরের যত্ন নেবেন! "
"তুমিও ভালো করে পড়াশোনা করবে! আমার জন্য দোয়া করবে! "

"আপনার জন্য জন্য সবসময় দোয়া আছে। আমাদের তিন মাসে কোনো কথা হবে না! এস এস সি পরীক্ষার আগে কথা হবে!"

"এতোদিন কথা না বলে থাকবো কিভাবে? আমার কষ্ট হবে খুব! "
"কষ্ট হলেও পারতে হবে। আমি চললাম! "
"আচ্ছা! সাবধানে যাও! "

ঝর্নার সাথে আসিফের শেষ দেখা সেদিনই হয়! বিকালবেলা! শ্রাবণ মাস! আকাশে যেন কালো মেঘেই ঢেকে থাকতো সব সময়! ঝর্নার দেয়া চিঠি তিন ভাজ করে আসিফ তার বুক পকেটে রেখে দেয়! ঝর্না এতোক্ষণে স্কুলে চলে গেছে! আসিফের নতুন গন্তব্য হবে শহরের বুকে। নদীর পার ধরে হাটঁতে হাটঁতে বাসায় চলে আসে আসিফ!

ব্যাগ সব ঘুছিয়ে নেয়া হয়েছে। বাড়িতে আসিফের ছোট বাটন ফোনটিও রেখে যাবে। কারো সাথে বলতে গেলে যোগাযোগ থাকবে না বললেই চলে। তবে শহরে আসিফের এক কাকা আছে! যখন প্রয়োজন হবে তখন তার কাছ থেকেই খবর নেয়া যাবে। আসিফ তার বাবাকে নিয়ে বেরিয়ে পরে। সৌরভের সাথেও দেখা হয়নি! একটিবার বলে যাওয়ার দরকার ছিল।
"আব্বা! সৌরভের সাথে দেখা হইলে বইলো আমি চলে গেছি শহরে কোচিং করার জন্য! "
"ঠিক আছে! এসব নিয়ে তোর ভাবতে হবে না! যে উদ্দেশ্যে শহরে যাচ্ছিস সেটা যেন হয়! "
"জি আব্বা! "

আসিফ মনে মনে ঝর্নার কথায় ভাবছে। অটোতে করে যাচ্ছে আর বাহিরে তাকিয়ে আছে! একের পর এক যেন গাছ চলে যাচ্ছে! ঝর্নার সাথে সময়গুলো দেখতে দেখতে চলে গেল! জীবনের সুন্দর মোমেন্টগুলো বোধহয় ঝর্নার সাথে পার করেছে এ কদিন! গ্রামের কাছেই বাসস্ট্যান্ড! শহরের একমাত্র বাস স্ট্যান্ড এমকে সুপার! সোজা শহরে চলে যায়। শহরে যেতেও বেশিক্ষন লাগে না।

শহরের সব থেকে বড় ব্রিজ! ব্রক্ষ্মপূত্র নদীর উপর অবস্থিত! আসিফ প্রথমবার দেখেছে। এর আগে আসাও হয়নি, দেখাও হয়নি! ব্রিজ পার হলেই বাসস্ট্যান্ড! আসিফের কাকা দাড়িঁয়ে আছে!
"কেমন আছিস তুই!
"জি ভাইজান ভালো! আসিফ, বাবা কেমন আছিস?
"জি কাকা ভালো! "
"এখান থেকে বাসা কতদূর? "
"১০ মিনিট লাগবে যেতে! "
"ওহ, চল তাহলে! "

শহরের মানুষজন যেন সবাই ব্যস্ত! এই ইট পাথরের শহরটাতেই থাকতে হবে আসিফকে! ভাবতেই গাঁ শিউরে উঠে আসিফের! গলির ভিতর দিয়ে বাসা! গাছের দেখা নাই! আসিফ ভাবে, শহরের মানুষ শ্বাসপ্রশ্বাস নেয় কিভাবে? মানিয়ে নিয়েছে শহরের মানুষগুলো!

ছোট একটি রুম! টাইলস করা! ভাড়া তিন হাজার। আসিফের কাকা এখানে থাকে। পাশাপাশি একটা ছোটখাটো জব করছে! এজন্য আসিফের বাবাও অনেকটা চিন্তামুক্ত! শহরের নামকরা সৃজনশীল কোচিং সেন্টারে ভর্তি করায় আসিফকে। আসিফের বাবা সেদিনই বিদায় জানিয়ে চলে আসে। বাবার আদেশ, "কখনো ফোন করার দরকার হলে যেন তার কাকার ফোন দিয়ে ফোন দেয়! "
"জি আব্বা! আপনি সাবধানে চলে যেয়েন! "

কোচিং এ ভর্তি হওয়ার পর আসিফের পড়াশোনা ভালোই চলছিল। মাঝে মাঝে ঝর্নার কথা খুব মনে পরতো! ঝর্নার দেয়া সেই খামে লেখা চিঠি আসিফ মাঝে মাঝেই দেখে! হাসি পায়! মনের ভিতরে অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করে! আসিফের কাকা যখন বাসায় থাকেনা ঠিক তখন আসিফ খাম বের করা ঝর্নার লেখাগুলো পড়ে! চিঠিতে লেখাগুলো যেন আসিফের সঙ্গী! আসিফ বিশ্বাস করে ঝর্না তার সাথে আছে। পড়াশোনার গতিও ঠিকঠাক মতোই চলছিল।

কিন্তু ঠিক তিনমাস পর! আসিফ কোচিং শেষ করে বাসায় চলে আসে। আর তখনই আসিফ জানতে পারে,,,,,,,,,,,



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  
 last year 

সেই শুরু থেকে এই গল্পটা পড়ে আসতেছি আমি। গল্পটার প্রত্যেকটা পর্ব আমার পড়া হয়েছে। আজকে ষষ্ট তম পর্ব পড়ে সত্যি খুবই ভালো লেগেছে আমার কাছে। এখন ভাবছি আসিফ তিন মাস পরে বাড়িতে আসার পরে কি জানতে পেরেছিল। আসলে একটা পর্বে একটা কথা জানতে পারি তার জন্য ভীষণ ভালো লাগে এরকম গল্প গুলো পড়তে। আজকের পর্ব টা খুবই সুন্দর ভাবে লিখেছেন অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী পর্বের।

 last year 

জি আপু! খুব শীঘ্রই পরের পর্ব আসবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু শুরু থেকে সাথে থাকার জন্য 😍

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

অধরা পরী গল্পটির প্রত্যেকটা পর্ব আমি পড়েছিলাম আজকের পর্বটা ও পড়ে ভীষণ ভালো লেগেছে আমার কাছে। আসিফ পড়াশোনা করার জন্য শহরে গিয়েছিল। যাওয়ার সময় ঝর্ণা তাকিয়ে একটা খাম দেয় যার মধ্যে চিঠি ছিল। সেই চিঠিটা আসিফ সব সময় পড়তো। তারপর লেখা ও ভালো যাচ্ছিল জেনে খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু তিন মাস পরে বাড়িতে ফেরার পরে আসিফ কি জানতে পেরেছিল। এখন তো এই বিষয়টা আমাকে অনেক ভাবাচ্ছে। পরের পর্বের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকলাম।

 last year 

জি ভাইয়া । আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ প্রত্যেকটি পর্ব পড়ে আমাকে উৎসাহ দেয়ার জন্য 😍

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59695.98
ETH 2665.47
USDT 1.00
SBD 2.48