আমরা মানুষ হবো কবে?
23-03-2024
২৮ ফাল্গুন , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো প্রথমেই সবাইকে রমজানুল মোবারকবাদ জানাচ্ছি। পবিত্র মাহে রমজানে সবাই যেন মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে সেই কামনাই করছি। রমজান মাস হলো বরকতময় মাস। সে হিসেবে আমাদের উচিত রমজানে বেশি বেশি দান-সদকা দেয়া। তো যায়হোক, রমজান মাস এসেছে আর এরই মাঝে বাজারে শুরু হয়েছে সিন্ডিকেট! গত পাচঁদিন আগে যে খেজুর ছিল ১২০ টাকা কেজি করে সেটা এখন ১৮০ টাকা করে। আবার বেগুনের দামটাও বাড়ছে। আসলে দাম বাড়ার পিছনে কিন্তু আমরাই দায়ী! ব্যাপারটা হয় কি, কিছু মানুষ আছে যারা রমজান মাস আসার আগেই ব্যাগভর্তি বাজার করে বাসায় নিয়ে রেখে দেয়। তাদের মাথায় টেনশন থাকে না আর। কারণ রমজান মাস আসার আগেই যে সব বাজার করে ফেলেছে। এখন রমজানের একটা মাস আরামছে থাকা যাবে। পণ্যের দাম বাড়লেও ক্ষতি নেই।
কিন্তু তারা সাধারণ মানুষের কথা ভাবে না। রমজানের আগেই বাজার করে যে বাজারের ডিমান্ড বাড়িয়ে দিল! এতে করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সুযোগটা খুব ভালোভাবে কাজে লাগায়। যেহেতু রমজান মাস চলে আসে তাই তারা পণ্যের দামটাও বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু পণ্য দামটা কিন্তু বাড়ার কথা ছিল না। আর যদি বাড়তোই তাহলে এতোটাও পার্থক্য হতো না। আসলে আমরা বরাবরই নিজের স্বার্থ নিয়েই পড়ে থাকি। দিনশেষে অন্য আরেকজনের খবর রাখি না। খবর রাখতে চাইও না। আমাদের মানসিকতার চরম অবক্ষয় বলা যেতে পারে। দিনকে দিন এটা যেন বাড়ছে। কেউ রাস্তায় পড়ে থাকলেও তাকে হাত ধরে উঠানোর প্রয়োজন মনে করি না। এই যে দেখেন,কিছুদিন আগে বেইলি রোডে কি হলো! একটা কটেজ হাউজে আগুন লেগে গেল। আগুনে অনেক মানুষ পুড়ে মারাও গিয়েছিল। যে বিল্ডিং এ আগুন লেগেছিল সেখানে ছোট বাচ্চা অপেক্ষা করছিল কিন্তু সবাই দৌড়াদৌড়ি করলেও সাহায্যে এগিয়ে আসেনি।
এটা না হয় বাদই দিলাম। সেখানে আগুনে অনেকেই মারা গিয়েছে। স্বজনের আহাজারিতে পুরো বেইলি রোডের চিত্র অন্যরকম হয়ে গিয়েছিল। স্বজনদের শোকা কাটাতে না কাটাতেই ঠিক পরের দিন বেইলি রোডের পাশেই বাদশাহর কনসার্ট! একদিকে স্বজনদের আহাজারি অন্যদিকে কনসার্ট! তারমানে আপনি একদিকে আনন্দ করছেন আর অন্যদিকে স্বজন হারানোর বেদনায় আরেকজন কান্না করছে। কথা হলো, কনসার্টটা কি আর কয়েকটা দিন পরে দেয়া যেত না। এটা কি এতোই গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছিল? আপনি আজ অন্যদের সাথে যেমনটা করবেন ঠিক সেরকমই আপনি ব্যাক পাবেন। অন্যের কষ্টে আপনি কষ্ট অনুভব না করলে আমি বলবো আপনি মানুষ হতে পারেননি। মানুষের ধর্মই যেখানে মানবিকতার ব্যাপারটা আসে। মানুষ হতে হলে আগে মানসিকতার পরিবর্তনের সাথে মানবিক হতে হবে।
আমাদের মাঝ থেকে আজ মানবিকতা হারিয়ে যাচ্ছে। আপনি নিজেও কিন্তু এমন অব্সথায় পড়তে পারেন। আগুনের লোহশিখা কিন্তু আপনাকে বা আপনার পরিবারকেও গ্রাস করতে পারে। একটু ভেবে দেখবেন, আপনি অন্যের অভিশাপের কারণ হয়ে যাচ্ছেন না তো! দিনশেষে আমাদের মাঝে হিংসাত্মক মনোভাব থেকেই যায়। কারো কষ্ট যেন হয় আমাদের সুখ! কারো সুখ হয় আমাদের হিংসার কারণ। তো আমি বলবো বড় বড় ডিগ্রি অর্জন করলেই শিক্ষিত হওয়া যায় না! বরং নিজের মনুষ্যত্ববোধ না তৈরি হলে আপনি অমানুষই থেকে যাবেন। একটু না হয় মানবিক হয়েই দেখেন! দেখবেন সমাজের চিত্র অনেকটাই পাল্টে গিয়েছে।
দিনশেষে আমি আপনি একই রক্তে গড়া মানুষ। আর মানুষের প্রধান পরিচয় ফুটে উঠে তার মনুষ্যত্বের মাধ্যমে। সেটা একজন নন ডিগ্রিধারী লোকের মাঝেও থাকতে পারে। আর যার মাঝে মনুষ্যত্ব আছে আমি মনে করি সে ভালো একজন মানুষ। আমরা শিক্ষিত হচ্ছি ঠিকই কিন্তু মনুষ্যত্ববোধটা চলে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ ১০০% শিক্ষিত হলেও কি কোনো লাভ হবে? যদি না আমরা মানুষ হয়েই বাচঁতে পারি! আগে আমাদের হতে হবে একজন প্রকৃত মানুষ! তো যায়হোক, সকলের মানসিকতার পরিবর্তন হোক এমনটাই প্রত্যাশা করছি। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি আল্লাহ হাফেজ 🌼
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
twitter share
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বেশ বাস্তবসম্মত কিছু চিত্র আপনি আপনার আজকের লেখায় তুলে ধরেছেন। উদাহরণ তো বেশ কয়টাই দিলেন। তবে সবগুলোর মূলে কিন্তু একটাই কথা -আত্মকেন্দ্রিকতা! আমরা আসলেই নিজেদেরকে নিয়েই খুব ব্যস্ত। সেখানে আমাদের আশেপাশের মানুষ আছে কি নেই কিংবা কি অবস্থায় আছে সেটি যেন আমাদের দেখার বিষয় নয়- বর্তমানে এমনটাই চিন্তাভাবনা সকলের! বেশিরভাগ মানুষের ভেতর থেকেই মানবিকতা বিষয়টি যেন উঠে যাচ্ছে! পবিত্র রমজান মাসে সকলের আত্মশুদ্ধি হোক! মানুষের চিন্তা ভাবনা আরো বেশি মানবিক হোক এটাই কাম্য!
জি আপু, মানুষ যেন আরও মানবিক হয় সেটাই কামনা করছি।
আপনি আপনার আজকের পোষ্টের সমসাময়িক অনেক বিষয়ে তুলে ধরেছেন। আসলে আমরা মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারেনি । তারই ফল শ্রুতিতে বর্তমান এই অবস্থা। রমজান মাস উপলক্ষে অন্যান্য দেশে সব কিছুর দাম কিভাবে কমানো যায় সেই ধরনের চিন্তাভাবনা থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে কিভাবে সবকিছুর দাম বাড়িয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করে নেয়া যায় সেই চেষ্টা। কিছুই করার নেই নিজের থেকে এই ধরনের মনুষ্যত্ববোধ তৈরি না হলে কখনোই এর পরিবর্তন হবে না।
আসলেই ভাই, আমাদের মানসিকতা দিনকে দিন কোথায় যে যাচ্ছে কি বলবো আর!
আপনি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট করেছেন। আমরা মানুষ হবো কবে কথাটি একদম সঠিক। রমজান আসার আগে আমরাও খেজুর কিনতে গেলাম দেখলাম এক দাম কালকে খেজুর আনার জন্য গেলাম দেখলাম অন্য দাম। আর সবকিছু বাজারের দাম অনেক বাড়তি। তবে কিছু কিছু মানুষ আছে একসাথে ব্যাগ ভর্তি করে পুরো মাসের বাজার নিয়ে যায়। এগুলোর কারণে সবকিছু দাম বাড়তি হয়ে গেল। এবং বেগুনের দামও আমাদের এদিকে অনেক। আসলে শিক্ষিত হলে কি হবে মনুষত্ব যদি না থাকে। সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
সেটাই আপু, শিক্ষিত হলে কি হবে! যদি মনুষ্যত্ব না থাকে
ভাই আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ দিনদিন অমানুষ হয়ে যাচ্ছে। তাইতো কেউ কারো বিপদে এগিয়ে যায় না। এমনকি কারো ব্যাপারে ভাববার সময় পর্যন্ত নেই। শুধুমাত্র নিজের স্বার্থের কথাই সবাই ভাবে এখন। এটা ঠিক রমজান মাসের আগেই, কিছু কিছু মানুষ পুরো রমজান মাসের বাজার করে রেখেছে। আর সেজন্যই রমজান মাস আসার পরপরই জিনিসপত্রের দাম অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। যাইহোক সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক সেই কামনা করছি। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।