এক টাকার বাবল গাম
28-04-2023
১৫ বৈশাখ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই অনেক ভালো ও সুস্থ্য আছেন। আমিও ভালো থাকার চেষ্টা করছি। তবে সময়টা যেন ভীষণ খারাপ যাচ্ছে! মাঝে মাঝে কোনো কারণ ছাড়াই মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। হৃদয়ে শূন্যতাও যেন অনুভব হয়। যাক, জীবনকে তো চলাতে হবে নাকি! জীবন জীবনের নিয়মেই চলবে। মৃত্যু অবধি এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
আচ্ছা, আপনাদের নিশ্চয় ছোট বেলার সেই বাবল গাম মামার কথা আছে! এক টাকার বাবল গাম! ছোট বেলায় যারা এই বাবল গামের সাথে পরিচয় হননি আমার মনে হয় একটা কিছু মিস করে ফেলেছেন জীবনে। সাদা কালো বিটিভিতে বাবল গাম মামার এডভেটাইস দেখলেই মনে হতো। শৈশবের সেই বাবল গাম মামার সাথেও আমাদের একটা শৈশবের একটা অংশ মিশে আছে। ৫-৭ বছরের সময়টাতে সবচেয়ে বেশি সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল বাবল গাম মামার সাথে। বাবল গাম মামাকে আপনারা চিনতে পারছেন তো নাকি! যেটাকে সুইংগাম বলেও ডাকে মানুষ!
বাবল গাম মামার উপরের কাগজটা রঙিন থাকতো। দেখতে সুন্দর। ভিতরে কাগজে মোড়ানো থাকতো সুইংগাম! মুখে দিয়েই শুরু হতো স্বাদ উপভোগ করা! সবথেকে মজার ব্যাপার ছিল ফুটকা ফুলানে। সুইংগাম দিয়ে তৈরি করা হতো ফুটকা! কেউ কেউ কতো চেষ্টা করেও ফুটকা ফুলাতো পারতো না। বারবার শুধু ব্যর্থ হতো। জিহ্বা দিয়ে দেখতাম বড়রা খুব সহজেই ফুটকা ফুলিয়ে ফেলতো। তখন কি যে ভালো লাগতো। একটা দিয়ে একটা বাবল গাম! সেটা মুখে চিবিয়ে নিলে আরও ছোট হয়ে যেত। ফুটকা ফুলাতেও হতো কষ্ট! আমাদের মূল টার্গেট থাকতো ফুটকা ফুলানো। কে কার থেকে বড় ফুটকা ফুলাতে পারবে। যে বড় ফুটকা ফুলাতে পারবে সে বিজয়ী!
তবে ছোটবেলায় বাবল গাম দিয়ে ফুটকা ফুলানোটা আমার জন্য এক কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল। কতবার যে চেষ্টা করেছি! কিন্তু না! সবার ফুটকা হয় কিন্তু আমারটা হয় না। তাই আমি প্লেন করেই দোকান থেকে তিনটা বাবল গাম কিনেছিলাম দোকান থেকে। তিন টাকা দিয়ে। বাবল গামে আবার স্টিকার থাকতো বিভিন্ন রকমের। গডজিলা, গাড়ি, রোবট টাইপের সব স্টিকার! হাতে ছাপ দিয়ে বসালেই সেখানে দেখা যেত স্টিকার! যাক, তিনটা বাবল কিনে আবার চেষ্টা করলাম। অনেকটা সুইংগাম হয়েছিল। কয়েকবার চেষ্টা করার পর ফাইনালি ফুটকা ফুলাতে পেরেছিলাম। আহা! কি যে এক অনুভূতি তা কি আর বলে বুঝানো যায়।
তবে বাবল গাম খেতে গিয়ে একবার হয়েছিল বিপত্তি! ছোটবেলায় তো বুঝতাম না যে কতক্ষণ চিবিয়ে ফেলে দিতে হয় বাবল গাম। কিন্তু আমি করতাম কি বাবল গাম না ফেলে দিয়ে গিলে ফেলতাম। একবার তো সেই ঝামেলায় পরে গিয়েছিলাম! বাবল গাম গিলতে গিয়ে গলায় আটকে যায়! তখন খুব ভয় পেয়েছিলাম! তারপর বমি করে বের করতে হয়েছিল। এর পর থেকে বাবল গাম থেকে একটু দূরে ছিলাম। বাবল গাম খেলেও কখনো গিলার সাহস হয়নি, হাহা!
এখন বাবল গাম সম্ভবত বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। খুব কম পাওয়া যায়। বিশেষ করে গ্রামের দোকানগুলোতে এখনও পাওয়া যায়। তবে আধুনিকতার ছোয়ায় এখনকার বাচ্চারা বাবল গাম তো চিনবেই না বরং তারা সেন্ট্রার ফ্রুট, সেন্টার ফ্রেশ,ফ্রুটফিল ইত্যাদি এসব সুইংগামই চিনে! আধুনিকতার ছোয়ায় কতো কিছু হারিয়ে যাচ্ছে। অথচ আমাদের সময়ে এই এক টাকার বাবল গামে সুখ খুজেঁ নিতাম!
পোস্টটি যখন লিখছিলাম আমারি অনেক হাসি পাচ্ছিল! শৈশবের দিনগুলি কতো রঙিন ছিল! চাইলেই কি আর সেই দিনগুলোতে ফিরে যাওয়া সম্ভব! শৈশবের সেই দিনগুলো যেন আমার সোনার খাচায় বন্ধি রইল! যাক, আর বেশি কথা বাড়ালাম না! আপনাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ 🌼🦋
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
দারুন একটা বিষয় তুলে ধরেছেন ভাই। আসলে শৈশবের এই মুহূর্তটা মনে পড়লে এখনো ভালো লাগে। আসলে বাবল গাম বা সুইংগাম যেটাই বলি সেটাতে সবচেয়ে মজার বিষয় ছিল স্টিকার লাগানোটা। অনেকে তো বলতো স্টিকার লাগালে নাকি রক্ত চুষে ফেলে তাই স্টিকার লাগানো যাবে না, হাহাহা। আর ফুটকা ফুলানোর ব্যাপারটাও মজা লাগতো। একটা দিয়ে না হলে দুইটা তিনটা দিয়েই ফুটকা ফোলাবার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হতো। তবে বর্তমান সময়ে সেন্টার ফ্রুট বা এইসব জাতীয় সবকিছু দিয়েও মাঝে মাঝে চেষ্টা করা হয় কারণ মাঝে মাঝে সেই ছোটবেলায় ফিরে যেতে ইচ্ছে করে।
হাহাহা! আপনি ঠিক বলেছেন আপু! অনেকেই তাই বলতো। স্টিকার লাগালে রক্ত চুষে খেয়ে ফেলবে 😂
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Your post has been rewarded by the Seven Team.
Support partner witnesses
We are the hope!
বাবল গাম আমার কাছে খুব পরিচিত। ছোটবেলায় এই বাবল গাম এর জন্য কত যে বকা খেয়েছি। যাই হোক আপনি বাবল গাম নিয়ে অনেক সুন্দর কিছু কথা লিখেছেন। বাবল গাম দিয়ে আমিও বেলুন ফুলাতাম, একটা দিয়ে হত না তখন দুটি চিবিয়ে ফুলানোর চেষ্টা করতাম। বাবল গাম এখনো দেখা যায় কিছু দোকানে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
জি ভাইয়া! গ্রামের দোকানগুলোতে পাওয়া যায়। তবে সেই আগের ফিলিংস কি আর আছে 😐
আপনি অনেক মজার একটি পোস্ট আজ আমাদের মাঝে উপহার দিয়েছেন সেটি হচ্ছেএক টাকার বাবল গাম। শৈশবকালে অনেক দুষ্টামি করেছি এই বাবুল গান নিয়ে। অনেক সময় স্কুলে বাবুল গাম পোলানোর সময় বেঞ্চে লাগিয়ে রাখতাম বন্ধুরা বসলেই প্যান্টের সাথে লেগে যেত। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
হাহাহা! কি দুষ্ট ছিলেন আপনি 😂
প্যান্টে লাগিয়ে দিতেন দেখছি
বাবল গাম নিয়ে বেশ দারুন এক অভিজ্ঞতা হয়েছিল আপনার দেখছি।আহারে, কি অবস্থা। যাক বমি করে রক্ষা পেলেন।ছেলেবেলার স্মৃতি অনেকটাই মনে গেঁথে থাকে।খুব ভালো লিখেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
জি আপু! শৈশবের এমন স্মৃতি কি আর ভুলে থাকা যায়
আহা ভাই কি মধুর স্মৃতিগুলোর কথা তুলে ধরেছেন! লেখাগুলো পড়তে পড়তে আপনার মত আমিও একদম ছেলেবেলায় ফিরে গিয়েছিলাম। একটা চুইংগাম আর একটা স্টিকারের লোভে কতই না বায়না ধরেছি। হাতের স্টিকার লাগিয়ে বন্ধুদের সাথে কম্পিটিশন করেছি কার টা বেশি সুন্দর। এখনকার জেনারেশন এই মজাগুলো আর একদম পেল না। শুধু দামি দামি কিন্ডার জয় নিয়েই খেলতে শিখেছে 😅।
হাহাহা! দাদা এখন এসব বাবল গাম পাওয়াই যায় না! পুলাপান সব কিন্ডারজল নিয়েই ব্যস্ত 😁