ষষ্ঠ পর্বঃ মেঘবালিকা
25-01-23
১২ মাঘ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
শুভ সকাল 🌼🦋। কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছেন! যাক, আপনাদের সাথে ইতোমধ্যে একটি গল্প শেয়ার করেছিলাম! গল্পের কয়েকটি পর্ব আপনারা ইতোমধ্যে পড়েছেন। আজকে গল্পের ষষ্ঠ পর্বটি লিখলাম! আশা করি আজকের পর্বটিও উপভোগ করবেন।
৫ম পর্বের পর থেকে
পরীক্ষার আগের কয়েকদিন রিধি অনেক পড়ালেখা করলো! কিন্তু রাত জেগে পড়াশোনা করতে গিয়ে মাঝে মাঝেই অসুস্থ হয়ে যেত রিধি! অসুস্থ হলে তেমন একটা পাত্তা দিত না! টেবলেট পর্যন্ত খেত না! ফার্স্ট ইয়ারের পরীক্ষা রিধির ভালে হয়েছিল! টুম্পারও ভালো হয়েছে। পাস করতে পারলে সেকেন্ড ইয়ারে উঠতে পারবে! কিছুদিন পর চয়ন মামার ফোন তার মায়ের কাছে!
-আপা,রিধিকে বলো বেড়ায় যেতে বাসা থেকে!
-রিধির পরীক্ষা চলছে! এখন আসবে না।
-রিধির পড়াশোনা কেমন চলছে?
-ভালোই চলতেছে! কয়েকটা পরীক্ষা দিয়েছে, সেগুলো নাকি ভালো হয়েছে! আমার মেয়ের সবচেয়ে বড়গুণ নিজের ইচ্ছায় পড়তে বসা! নিজের আগ্রহ আছে বলেই এতেদূর যেতে পেরেছে!
-রিধি ভালো কিছু করবে! পরীক্ষা শেষ হলে আমাদের বাসায় পাঠিয়ে দিও! লিজা প্রেগন্যান্ট, আমি অফিস চলে যায়! বাসায় কেউ থাকে না। কিছুদিনের জন্য রিধিকে পাঠিও!
-আচ্ছা ঠিক আছে।
-আচ্ছা আপা! রাখি তাহলে! ( ফোন কেটে দেয়)
রিধি বড় হওয়ার পর থেকে মামাদের সামনে খুব কমই গিয়েছে! দূর থেকে শুধু মামাদের দেখেছে! অনেক লজ্জা পায় মামাদের সামনে গেলে! রিধির মামা চারজন! কারো কাছ থেকে সে কখনো এক টাকাও চাইনি! তবে চয়ন মামা রিধিকে একটু বেশিই আদর করে! চয়ন মামার স্বপ্নটাও অনেক বড়। রিধিকে ডাক্তারী পড়াবে! গ্রামে একটা ক্লিনিক দিবে। আর সেখানে মামা-ভাগ্নী মানুষের সেবা করবে! একটা পরিবারেরও স্বপ্ন তাকে নিয়ে!
রিধি তার মাকে বলেই দিয়েছে সে চয়ন মামার বাসায় যেতে পারবে না! কারণ মামার সামনে যেতেই লজ্জা লাগে! এ যুগের মেয়ে হয়েও রিধি এতো লজ্জা পায়! তার মায়ের কথা, "তোকে কি তোর মামা মারধর করবে?তোর মামী প্রেগন্যান্ট, কয়েকদিন এর জন্য গিয়ে বেড়িয়ে আস! "
আমি তাহলে মামীর সাথে থাকবো! কয়েকদিন থেকেই চলে আসবো! এখনও দুইটা পরীক্ষা বাকি! পরীক্ষা শেষ করে তারপর যাওয়া যাবে।
শেষ পরীক্ষার আগের দিন! রিধির শরীরে প্রচন্ড জ্বর! মুখে জুলুন্দা বের হয়েছে! গ্রামের ভাষায় জুলুন্দাই বলতো! রাতে কাপঁনি দিয়ে জ্বর উঠলে মুখে জুলুন্দা বের হয়! এসব নিয়ে রিধির এতো মাথা ব্যথা নেই! সে শুধু পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত! শরীরে অসুস্থ নিয়েই শেষের পরীক্ষা দিয়ে আসলো! কিন্তু শরীরের অবস্থা যেন খারাপ হতেই থাকে! জ্বরের পরিমাণটাও বেড়ে যায়! তার মা বিষয়টা খেয়াল করে। গায়ে রিধির প্রচন্ড জ্বর! হঠাৎ করে এতো জ্বর উঠে গেল!
রিধিকে নিয়ে যাওয়া হলো হসপিটালে! ডাক্তার রিধিকে বললো কয়েকদিনের জন্য বিশ্রামে থাকার জন্য! তেমন কিছু হয়নি। টেবলেট খেলেই ঠিক হয়ে যাবে! গ্রামের ডাক্তার তখন কোনো প্রকার চেকআপ ছাড়াই ঔষধ দিয়েছিল! জ্বরের জন্য নাপা আর এন্টিবায়োটিক ঔষধ। সে ঔষধগুলো খেয়ে রিধি কিছুটা সুস্থ্য হলো। তবে রিধি যখন অসুস্থ হয়ে যায় তখন তার সারা শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে! কাজ করার কোনো শক্তি পায় না! কিছুদিন পর টুম্পাও জানতে পারে রিধির অসুস্থতার কথা!
রিধির মায়ের কাছেই ফোন থাকে। কেউ ফোন দিলে তার মা তখন রিধিকে দেয়!
-আন্টি,আসসামুআলাইকুম! রিধি এখন কেমন আছে?
-এখন কিছুটা ভালো! ডাক্তার এন্টেবায়োটিক দেয়ার পর থেকে!
-ওহ আচ্ছা! আন্টি রিধিকে একটু ফোনটা দেয়া যাবে!
-দাড়াঁও দিচ্ছি! রিধি, টুম্পা ফোন দিয়েছে, কথা বল!
-তুই অসুস্থ! আমাকে একবারো জানালি না!
-কেমন করে জানায় বল! শরীর নিয়ে উঠতেই পারছিলাম না!
-আচ্ছা ঠিক আছে! আজকে বিকালে আসবো তোদের বাসায়! রোগীর জন্য রুটি-কলা নিয়ে আসবো কি, হাহা!
-খালি হাতে আসিস না!
-হাহা, আচ্ছা। (এই বলে ফোন রেখে দেয়)
এই একটা মেয়েই যে কি না তাকে বোনের মতো দেখে! অথচ দুজনের মাঝে ধর্মের একটি ব্যবধান! কিন্তু তারা দুজনের সম্পর্ক দেখে মনে হয় না তারা অনেক দূরের কেউ! মিতুর বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর টুম্পাকেই পেয়েছে তার মনের মতো! বেস্ট বন্ধু, বোন বললেও ভুল হবে না। টুম্পাদের বাড়ি রিধিদের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে! তবে হেটেঁ আসলে ২০-৩০ মিনিটের পথ। শিমুলতলীর ভিতর দিয়েই যেতে হয়। অজপাড়া একটি গ্রাম! এখনও আধুনিকতার ছোঁয়া পায়নি। রিধির অসুস্থতার কথা শুনে টুম্পার মা কিছু পিঠা বানিয়েছে! তালের পিঠা, চিরুনী পিঠা! পিঠা রিধির পছন্দ টুম্পা ভালো করেই জানে! টুম্পা বিকালে যখন আসতেছিল ঠিক তখন দেখতে পায় শিমুলতলীর মোড়ে লম্বা দাড়িঁওয়ালা মিনহাজ ভাই দাড়িঁয়ে আছে! দূর থেকেই টুম্পাকে দেখে মিনহাজ ভাই এগিয়ে আসে! মিনহাজ লাজুক ছেলে কিন্তু আজ টুম্পার দিকে আসছে কেন?
চলবে....
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
twitter share link
কি করলেন ভাই শেষ পর্যন্ত রিধিকে অসুস্থ্য বানিয়ে দিলেন।বেশ ভালই তো একজন বন্ধু পেয়েছে রিধি। টুম্পার ধর্ম যাই হোক সে তো একজন মানুষ আর একজন ভাল বন্ধু। তাইতো টুম্পার মা রিধির অসুস্থ্যতার কথা শুনে তার জন্য পিঠা বানিয়ে দিয়েছে। গল্পটি মনে হয় আগামীতে বেশ ভালই লাগবে। আগামী পর্ব দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
রিধির অসুস্থতার কথা শুনে খুবই খারাপ লাগলো । টুম্পার মা রিধির জন্য তার প্রিয় পিঠাগুলো বানালো তার অসুস্থতার কথা শুনে। মিনহাজ ভাই কেন টুম্পার দিকে এগিয়ে আসছে টুম্পা কে দেখে সেই কথাটাই ভাবাচ্ছে আমাকে। কিন্তু টুম্পা এবং রিধির গভীর বন্ধুত্বের কথা শুনে বেশ ভালোই লেগেছে আমার কাছে। রিধি বেশ ভালোই একটা ফ্রেন্ড পেলো। ধর্ম আলাদা হলেও বন্ধুত্বের কোনো দিক দিয়ে কমতি হয় না। পরবর্তী পর্বে কি আসবে তারই অপেক্ষায় আছি।
জি আপু! টুম্পার আর রিধির মাঝে ভালো একটা ফ্রেন্ডশীপ হয়েছে! যদিও ধর্ম আলাদা। গল্পটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
রিধি রাত জেগে অনেক পড়াশুনা করেছে তাই একটু বেশিই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সেই সাথে সে ওষুধ ও খায়নি। এরকম অসুস্থতার মধ্যে দিয়েও সে শেষের পরীক্ষাটি দিয়েছে এবং তার প্রত্যেকটি পরীক্ষা ভালো হয়েছে এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। কিন্তু তার অসুস্থতার খবর শুনে খুবই খারাপ লেগেছে। মিতু চলে যাওয়ার পর টুম্পার সাথে বেশি ভালোই সম্পর্ক হয়ে গিয়েছে রিধির। তাদের এই বন্ধুত্বের কথা শুনে কিন্তু ভীষণ ভালোই লেগেছে। টুম্পার মা তো দেখছি রিধির জন্য তার পছন্দের পিঠাগুলো তৈরি করেছে। এর পরের পর্বে কি হবে তারই অপেক্ষায় আছি।
জি আপু। টুম্পার সাথে ভালো একটা বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
রিধি সবসময় পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করে। এই পরীক্ষাটি দেওয়ার সময় সে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল কারণ সে একটু পেশার দিয়ে অনেক রাত পর্যন্ত জেগে পড়েছিল। রিধি অবশ্যই সুস্থ হয়ে যাবে। আমি আপনার এই গল্পটির বেশ কয়েকটি পর্ব পড়েছিলাম যা আমার কাছে কিন্তু ভীষণ ভালো লেগেছে। আজকের পর্বটি পড়েও ভীষণ ভালো লেগেছে। এবার পরের পর্বে কোন বিষয় নিয়ে আসবেন তারই অপেক্ষায় আছি। আশা করছি বেশ শীঘ্রই শেয়ার করবেন আপনি।
জি ভাইয়া! আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি গল্পটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য 🌼