৫ম পর্বঃ মেঘ বালিকা
18-01-23
০৫ মাঘ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
শুভ সকাল 🌼🦋। কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছেন! যাক, আপনাদের সাথে ইতোমধ্যে একটি গল্প শেয়ার করেছিলাম! গল্পের কয়েকটি পর্ব আপনারা ইতোমধ্যে পড়েছেন। আজকে গল্পের পঞ্চম পর্বটি লিখলাম! আশা করি আজকের পর্বটিও উপভোগ করবেন।
৪র্থ পর্বের পর থেকে
টুম্পা সবসময় রিধির জন্য বাজারের মোড়ে দাড়িঁয়ে থাকে! রিধিকে নিয়েই কলেজ যায়! রিধির বাড়ি থেকে বাজারের মোড় আবার কিছুটা পথ! হেটেঁই আসতে হয় রিধির! একদিন রিধি কলেজে আসার পথে মিনহাজ ভাইকে দেখতে পায়! দূরে শিমুল গাছের নিচে দাড়িঁয়ে আছে! মিনহাজ ভাই এখন পর্যন্ত রিধির সাথে কথা বলার সাহস পায়নি! যদিও রিধি অনেক লাজুক মেয়ে! মিনহাজ ভাই তার চেয়েও বেশি লাজুক! সকাল সকাল রাস্তায় তেমন মানুষজনও থাকে না! রিধি হাটঁছে। তার পিছন পিছন মিনহাজ ভাইও হাটঁছে! এই নির্জন রাস্তায় একটা মেয়ের পিছনে হাটঁলে মানুষ কি মনে করবে! রিধি হাটাঁর গতি বাড়িয়ে সোজা বাজারের মোড়ে চলে আসে! পিছন ফেরে তাকাতেই মিনহাজ ভাইকে আর দেখতে পায়নি! মনে হয় মিনহাজ ভাই চলে গেছে।
-কি দেখছিস পিছনে? (টুম্পা)
-কিছু না, চল!
-কোনো ছেলে ডিস্টার্ভ করেছিল! আমাকে বলতে পারিস!
-আরে না! আমাদের এখানকার একটা ছেলে হঠাৎ করেই আমার পিছু পিছু হাটঁছিল! আমি মিনহাজ ভাই বলেই ডাকি! জানিস, মিনহাজ ভাই আমার পিছনে দুই বছর ধরে ঘুরছে কিন্তু আজ পর্যন্ত আমি কথা বলে নি!
-হুমম, বুঝতে পেরেছি! ছেলেটি মনে হয় ভীতু টাইপের! এতোদিন পেটে রাখে কথা!
-তুই যেমনটা ভাবছিস এমনটা না! এসব প্রেম-টেম আমাকে দিয়ে হবে না!
-হুম দেখবো দেখবো, হয় কি না, হাহা!
-ওসব বাদ দে, মিন্টু স্যারের বাড়ির কাজগুলো করেছিস?
-কোনগুলো??
-মনে নেই তোর! ফ্রেইস এন্ড আইডমস! করিসনি প্র্যাকটিসগুলা!
-না, আমার মাত্র মনে হলো!
-তাহলে, কলেজ গিয়ে বসে বসে বাড়ির কাজগুলা করা যাবে!
-হুমম! তাহলে চল দ্রুত কলেজে!
যাওয়ার পথে রিধির মাথায় শুধু মিনহাজ ভাই! এতোদিন পরে মিনহাজ ভাই এলো! মিতুর বিয়ে হওয়ার দশদিন আগে মিনহাজ ভাইকে দেখেছিল রিধি! এর পরে আর দেখা নাই! তবে মিনহাজ ভাইকে নিয়ে রিধি অন্যকিছু ভাবতে চাই না! যেভাবে জীবন যাচ্ছে সেভাবেই ভালো! সামনে ফার্স্ট ইয়ার পরীক্ষা সেদিকেই মনোযোগ দেয়াই ভালো! দেখতে দেখতে কলেজে চলে আসে টুম্পা আর রিধি! কলেজে এখন তেমন স্টুডেন্ট আসেনি! টুম্পা আর রিধি প্রতিদিনের মতো পিছনের বেঞ্চে বসে পড়ে! মিন্টু স্যারের বাড়ির কাজ! আজকে জমা না দিতে পারলে লজ্জা দিবে স্যার! স্যার আবার কাউকে মারধর করে না! তবে এমন কথা বলে মাথা নিচুঁ করে বসে থাকতে হয়! এই ভয়টাই রিধি আর টুম্পার মনে।
স্যারের প্রিয় ছাত্রী হওয়ায় রিধিকে আবার তেমন কিছু বলে না! বাড়ির কাজ সবসময় করে রাখে! রিধি বাড়ির কাজ করছে! ঠিক পাশে বেঞ্চের উপরে রাখা টুম্পার ফোন বাজছে! টুম্পার মা ফোন দিয়েছে! একটা মাত্র মেয়ে টুম্পা! ছোটবেলা থেকেই অনেক আদরের মধ্যেই বড় হয়েছে! টুম্পার মা ফোন দিয়ে বলে, "তোর ব্যাগে নারকেলের তক্তি রাখা আছে! রিধিকে নিয়ে খেয়ে নিস! "
-ঠিক আছে মা! (এই বলে ফোন রেখে দেয়)
ব্যাগের ভিতর থেকে টুম্পা টিফিন বক্স বের করে! তার ভেতর গোল গোল নারকেলের তক্তি! রিধির তক্তি ভীষণ পছন্দের! তবে ফ্রেন্ডদের কাছ থেকে রিধি এখন পর্যন্ত কিছু খাইনি!
-তোর জন্য মা তক্তি বানিয়ে পাঠিয়েছে!
-আমার জন্য কেন! তুই খেয়ে নে, আমি খাবো না!
-আমাদের আজ ঠাকুর পূজো ছিল! মা প্রতি পূজোতেই নানান রকমের পিঠা বানায়! নারকেল এর তক্তি তার মধ্যে একটি! মা, শখ করে তোর জন্য পাঠিয়েছে! এই নে ধর একটা!
-না, না! আমি খেয়ে এসেছি! (লজ্জাবোধ করছে)
-একটা নে!
-ঠিক আছে!
অনেক জোরাজুরির পর রিধি তক্তি নেয়! একটা খেয়েই রিধির ভালো লেগে যায়! সমাজের একটা প্রচলিত সংস্কৃতি ছিল। হিন্দু পরিবারের কারো কাছ থেকে কিছু খেতে নেই! রিধি এসব সংস্কৃতির পুরো পরিপন্থী! মানুষ অনেকটাই কু-সংস্কারে বিশ্বাসী! টুম্পার মায়ের নারকেলের তক্তি খেয়ে তো ফ্যান হয়ে যায় রিধি! "আরেকবার নিয়ে আসিস! এবার বাড়ির কাজ কর! ক্লাসের সময়ও হয়ে গেছে! "
-আজকে আতিক স্যারের ক্লাস আছে না! (টুম্পা)
-হুমম, আছে! আতিক স্যারের ক্লাসের জন্যই আসা কলেজে!
-হুম।
স্যার ক্লাসে এসে উপস্থিত! তাড়াহুড়ো করে খাতা ব্যাগের ভিতরে রাখে রিধি! যদি দেখে ক্লাসে টাইমে, প্রাইভেটের বাড়ির কাজ করছি তাহলে রক্ষে নেই! আতিক স্যার রসায়ন খুব ভালো করে বুঝায়। একবার বুঝতে পারলে ক্লাসের পড়াটা ক্লাসেই শেষ হয়ে যায়! "আজ তোমাদের পরীক্ষার রুটিন দেয়া হবে! সবাই রুটিন সংগ্রহ করে নিবে! আর তোমাদের প্রথম ছয়টা অধ্যায় থেকে পরীক্ষা নেয়া হবে! আমি সে অনুযায়ী পরীক্ষায় প্রশ্ন করবো! সবাই ভালো করে পড়াশোনা করবে বাসায়! কোনো টপিক বুঝতে সমস্যা হলে আমাকে পার্সোনালি জানাবে!"
আতিক স্যারের কথা শুনে রিধির মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো! স্যার সবেমাত্র দুই অধ্যায় পর্যন্ত পড়িয়েছে এরই মাঝে ছয় অধ্যায়ের পরীক্ষা! রেজাল্ট খারাপ করলেও প্রবলেম। টুম্পার এসব নিয়ে মাথা ব্যথা নেই! পাস করতে পারলেই হলো! কিন্তু রিধি কলেজের ফার্স্ট মেয়ে! যদি সে খারাপ করে তাহলে নোটিশ যাবে বাড়িতে! বাবা-মায়ের যে কত স্বপ্ন তাকে নিয়ে! তাকে পারতেই হবে। বাবা মায়ের স্বপ্নটুকু পূরণ করার চেষ্টা করতে হবে।
চলবে.....
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
twitter share link
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.