৮ম পর্বঃ মেঘ বালিকা
09-02-23
২৭ মাঘ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
শকেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছেন!🌼🦋 আমি ভালো খারাপ মিলিয়েই আছি! তবে টাইম ম্যানেজমেন্টটা যেন এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একটা কাজ শেষ না করে আরেকটা কাজে হাত দেয়া যাচ্ছে না। সারাদিন মাত্র ফ্রি হলাম! ফ্রি হয়েই গল্পের আরেকটি পর্ব লিখলাম। গল্পের কয়েকটি পর্ব আপনারা ইতোমধ্যে পড়েছেন। আজকে গল্পের অষ্টম পর্বটি লিখলাম! আশা করি আজকের পর্বটিও উপভোগ করবেন।
৭ম পর্বের পর থেকে
পরদিন রিধি বাড়িতে চলে আসে! চয়ন মামা বাসে করে তুলে। বাসস্টপেজ রিধিদের বাড়ির কাছেই! ঠিক সেখানে এসে নেমে চলে আসে! কলেজ বন্ধ! কোনো কাজ নেই বাড়িতে! দুই সপ্তাহ পর কলেজ খুলবে। তারপর আবার ফাইনাল পরীক্ষা। মিন্টু স্যারের প্রাইভেট বন্ধ দেয়নি! মামার বাসায় যাবে বলে স্যারের কাছ থেকে ছুটি নিয়েছিল রিধি! স্যার দিয়েছিল। তবে এটাও বলে দিয়েছিল যে তাড়াতাড়ি যেন চলে আসে! মিন্টু স্যার সেই শুরু থেকেই অনেক আদর করে! প্রাইভেটে ভালো স্টুডেন্ট এর মধ্যে রিধি একজন! কিন্তু অনেকদিন হয়ে গেল টুম্পার সাথে রিধির যোগাযোগ নেই! মায়ের একটি মাত্র বাটন ফোন। স্যার, বান্ধবী সবার কাছে মায়ের নাম্বার দেয়া। মায়ের নাম্বারে ফোন আসলে তারপর রিধি কথা বলে। টুম্পার ফোন আছে। টুম্পার মা-ই কিনে দিয়েছে। রিধি টুম্পাকে মিস করছিল। তখন ফোন দেয় টুম্পার কাছে। কয়েকবার কল দেয়ার পর ফোনটা আর রিসিভ করেনি টুম্পা! হয়তো ব্যস্ত আছে তাই ধরেনি!
কিছুক্ষণ পর টুম্পাই ব্যাক করে ফোন!
-ফোন দিয়েছিলি! আমি বাহিরে ছিলাম তখন!
-হুমম! কি করতেছিলি?
-কিছু না! বাহিরে বসেই ছিলাম! কবে আসলি বাড়িতে?
-আজ আসলাম! এসেই তোকে ফোন দিলাম! মিন্টু স্যারের প্রাইভেটে যাবি কাল?
-হুমম দেখি!
-যাবি না?
-হুমম।
-ঠিক আছে তাহলে! রাখছি।
টুম্পার কথার ধরন একটু চেইঞ্জ হয়ে গেল! কিছু হয়েছে টুম্পার! কাল প্রাইভেটে গেলে জানা যাবে। ভাবতে রিধি ঘরে চলে আসে! বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যে হয়ে এল! সূর্যের লাল আভার আলো এখনো দেখা যাচ্ছে। ঠিক কিছুক্ষণ পরেই পুরো পরিবেশের রঙ হলদেভাব হয়ে গেল! উপরে তাকালে শুধু হলুদ রঙ দেখা যায়! এমন মনোরম দৃশ্য তো কখনো দেখিনি। রিধি এমন পরিবেশ প্রথম দেখেছে। বাড়ির বড় উঠোনের মাঝে দাড়িঁয়ে দেখছে! ঠিক ফাল্গুনের আগের সময়টা এমন হয়! পরিবেশ যেন অন্যরকম সাজে! আকাশের পশ্চিম কোণে হঠাৎই দেখা মিললো রঙধনুর সাত রঙ! । বাকাঁ হয়ে একটি রেখা! যেখানে রঙ ধনুর সাত রঙ দেখা যায়। কিছু রঙ অস্পষ্ট! রঙধনুর আকাশ দেখে রিধির আরো ভালো লাগে!
ঠিক তখন ঘরে রাখা ফোন বাজছে! রিধি ঘরে ছুটে গেল। আননোন নাম্বার! রিধি আননোন নাম্বারে আবার কথা বলে না! তার মায়ের কাছ ফোনটি নিয়ে গেল। ফোনটি রিসিভ করতেই শুনতে পেল ছেলের কন্ঠ!!
-আন্টি, আসসালামুআলাইকুম!
-ওয়ালাইকুম সালাম! তোমাকে বাবা চিনতে পারলাম না!
-জি আন্টি আমাকে চিনবেন না! আমি মিনহাজ, রিধিদের সাথে পড়ালেখা করছি!
-তোমাকে তো চিনেছি,,, রিধি বলেছিল একবার!
-জি আন্টি! আপনার শরীর ভালো আছে?
-হুমম!
-আন্টি,রিধিকে কয়েকদিন ধরে প্রাইভেটে আসতে দেখছি না! কিছু হয়েছে কি?
-কদিন অসুস্থ ছিল! তারপর মামার বাসায় গিয়েছিল,,,
-আন্টি, রিধি কি এখন সুস্থ্য আছে?
-হুমম, বাবা! বাড়িতে এসে বেড়ায় যেও!
-জি, দোয়া করবেন! আসসালামুআলাইকুম
-ওয়ালাইকুম সালাম
সালাম দিয়েই ফোন কেটে দেয়! মিনহাজ ভাইকে রিধির মা আগে থেকেই চিনে এসসিতে দেখেছিল মিনহাজকে। স্কুলের ফার্স্টবয় ছিল মিনহাজ! এখন পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশন করাচ্ছে! রিধির মা অবশ্য কিছু বলেনি রিধিকে!
রিধি মায়ের কাছে দাড়িঁয়ে সব শুনেছে! কিন্তু রিধি ভাবছে অন্য কথা! মিনহাজ ভাই নাম্বার পেল কোথা থেকে! রিধি ভাবছে হয়তো টুম্পা মিনহাজ ভাইকে রিধির নাম্বার দিয়েছে। না হয়,নাম্বার পাবো কোথা থেকে? পরদিন প্রাইভেটে চলে যায় রিধি! আজ টুম্পাকে জিজ্ঞেস করবে মিনহাজ ভাইকে ফোন নাম্বার দিয়েছে কি না! মোড়ের মধ্যেই দেখা টুম্পার সাথে! কিন্তু টুম্পাকে দেখে স্বাভাবিক মনে হলো না। চোখ ফুলা, গাল ফুলা! দেখে মনে হচ্ছে সারা রাত ঘুমায় নি! যুদ্ধ করেই প্রাইভেটে এসেছে! টুম্পাকে দেখে আর মিনহাজ ভাইকে নাম্বার কথা রিধি ভুলেই গেল!
-কি রে! কি হয়েছে তোর? গাল, চোখ ফুলে আছে কেন?
-কই না তো!
-আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি ফুলে আছে! কিছু হয়েছে কি না বল!
-তেমন কিছু হয়নি।
-তাহলে?
-তুই তো জানিস আমাদের একটি মিষ্টির দোকান! বাবা সেই ছোটবেলা থেকে ব্যবসা করে আসছে। রাতে হঠাৎ-ই ম্যাজিস্ট্রেটরা এসে দোকান চেক করে! মিষ্টিতে নাকি ভেজাল পেয়েছে। এক ভদ্রলোক আমাদের দোকানের মিষ্টি খেয়ে নাকি হাসপাতালে ভর্তি আছে!
-কি বলিস এসব!
-বাবাকে পুলিশ এসে ধরে নিয়ে গেছে! জানিস, বাড়ি থেকে আমি আর মা বসে বসে মিষ্টি বানায়! তারপর বাবা সেটা দোকানে নিয়ে বিক্রি করে! আর আজকে মিষ্টির জন্য বাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। জরিমানা ধরেছে সত্তর হাজার টাকা! আমি আর মা সারারাত ঘুৃমাতে পারি নি! মাথায় শুধু এই চিন্তায় হচ্ছে। প্রাইভেটে যাওয়ার মুড ছিল না!! তুই বললি তাই আসলাম!
-কিছু না বুঝে এমন করলো যে! ঐ ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করেনি কেন এমন হয়েছে।
-না, ঐ ভদ্রলোক আবার আমাদের পাশের দোকানদার! আমি গৌতম দাদা বলেই ডাকতাম!
-উনি তাহলে এমন করলো কেন? কোনো শত্রুতা আছে তোদের সাথে!
চলবে.....
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
twitter share link
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগল। এর আগের কয়েক পর্ব মনে হয় পড়েছিলাম। যাইহোক রিধির বান্ধবী টুম্পার বাবার ঘটনা শুনে অনেক খারাপ লাগল। পাশের দোকানে গৌতম বাবু মনে হচ্ছে ইচ্ছে করে টুম্পার বাবাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। যাইহোক ভাইয়া দেখা যাক পরবর্তী পর্বের কি হয়।
জি পরের পর্ব আরও ইন্টারেস্টিং কিছু হবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু 🌼
এরকম গল্প গুলোর মধ্যে অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করে। তাইতো খুবই মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকি। আপনার আজকের এই গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। কিন্তু টুম্পার পরিবার এবং বাবার কথা শুনে খুবই খারাপ লেগেছে। হয়তো যে এই কাজটি করেছে তাদের সাথে কোন শত্রুতা ছিল। পরের পর্বে কি হবে তা দেখার অপেক্ষায় আছি। আশা করছি খুবই শীঘ্রই পরের পর্ব শেয়ার করবেন।
জি আপু! খুব শীঘ্রই পরের পর্ব চলে আসবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু 🌼
আমি তো প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো মিনহাজ ভাইয়ার কথা শুনে রিধির মা রিধি কে বকা দিবে। রিধি হয়তো ভেবেছিল টুম্পা মিনহাজ ভাইকে তার নাম্বারটি দিয়েছে এখনো সে জানতে পারলো না কে দিয়েছেন নাম্বার। টুম্পার পরিবারের অবস্থার কথা শুনে খারাপ লাগারই কথা রিধির। টুম্পার বাবাকে পুলিশ হয়তো দোষী ভেবে ধরে নিয়ে গিয়েছে তার কোন দোষই নেই এখানে। এভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে মিষ্টি তৈরি করলে কি ভেজাল থাকে। যে এই কাজটি করেছে তার অবশ্যই শাস্তি হবে। পুরো পর্বটা পড়ে ভালো লাগলো। এখন তো শুধু পরের পর্বের অপেক্ষায়।
জি ভাইয়া। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ বরাবরের মতো 🌼