৭ম পর্বঃ মেঘ বালিকা
31-01-23
১৮ মাঘ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
শকেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্য আছেন!🌼🦋 আমি ভালো খারাপ মিলিয়েই আছি! তবে টাইম ম্যানেজমেন্টটা যেন এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একটা কাজ শেষ না করে আরেকটা কাজে হাত দেয়া যাচ্ছে। আপনার লক্ষ্য যদি অটুট থাকে তাহলে দেখবেন সেই লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অন্য কাজে মনোযোগ দেয়াও কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে! আশা করি টাইম ম্যানেজমেন্ট সঠিকভাবে করতে পারবো! সারাদিন মাত্র ফ্রি হলাম! ফ্রি হয়েই গল্পের আরেকটি পর্ব লিখলাম। গল্পের কয়েকটি পর্ব আপনারা ইতোমধ্যে পড়েছেন। আজকে গল্পের সপ্তম পর্বটি লিখলাম! আশা করি আজকের পর্বটিও উপভোগ করবেন।
৬ষ্ঠ পর্বের পর থেকে
কাছে আসতেই মিনহাজ ভাই টুম্পাকে সালাম দেয়! আসসালামুআলাইকুম! কেমন আছেন?
-জ্বি, ভালো! আপনি?
-জ্বি, আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি! আপনাকে একটা কথা বলার জন্য আসলাম!
-জ্বি বলুন!
-কিছু মনে করবেন না! রিধি কি অসুস্থ? শেষ পরীক্ষা শেষে দেখেছিলাম হেটেঁ হেটেঁ আসছে। মুখ শুকিয়ে গেছে! হাটাঁর শক্তি নেই! আমি দূর থেকেই বুঝতে পেরেছিলাম।
-জ্বি, রিধি কিছুদিন ধরে অসুস্থ! আমি রিধিদের বাড়ির দিকেই যাচ্ছি!
-ওহ আচ্ছা! আমি যে আপনাকে তা বলেছি রিধিকে তা বলবেন না আশা করি!
-কেন বলেন তো?
-শুনলে অন্য কিছু ভাবতে পারে রিধি ! আমি রিধির সাথে এখন পর্যন্ত কথা বলেনি, যেদিন থেকে শুনেছি রিধি ছেলেদের সাথে কথা বলতে লজ্জা! কম্পোর্ট ফিল করে না!
-জ্বি, রিধি একটু লাজুক মেয়ে! কারো সাথে তেমন কথা বলে না। আপনার কথা বলবো না, সমসস্যা নেই।
-আপনাকে ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন! (এই বলে মিনহাজ ভাই চলে যায়)
টুম্পা মিনহাজ ভাইয়ের ব্যাপারটা সিরিয়াসলি নিচ্ছে! মনে মনে ভাবছে মিনহাজ ভাই রিধিকে অনেক ভালোবাসে। কিন্তু বলতে পারে না! ভাবতে ভাবতে রিধিদের বাড়িতে চলে আসে টুম্পা! রিধি বিছানার এক পাশে শুয়ে আছে। চোখ-মুখ হলদেভাব! জ্বরে মানুষ এতোটা দূর্বল হয়ে যায় রিধিকে না দেখলে টুম্পা কখনো বুঝতোই না!
-কিরে, শরীরটা এখন কেমন তোর?
-আগের থেকে একটু ভালো! হঠাৎ করে এতো অসুস্থ হয়ে যাবো!
-পরীক্ষার প্রেসারটা বেশি নিয়ে ফেলেছিলি!!
-কই, তেমন পড়িই নাই!
-আচ্ছা বাদ দে! মা, তোর জন্য পিঠা বানিয়ে পাঠিয়েছে! তোর ফেভরিট পিঠাগুলো!
-না রে! আমি এখন খেতে পারবো না! জ্বরে মুখ তিতা হয়ে আছে।
-তাহলে পরেই খেয়ে নিস!
-ঠিক আছে! শেষ পরীক্ষায় তোর সাথে কথা বলতে পারিনি! পরীক্ষা কেমন হয়েছিল?
-পাস করতে পারলেই আমি খুশি! ক্যামিস্ট্রি ভালো হয়নি!
-আম্মার সাথে দেখা করেছিস?
-না, আন্টিকে পায়নি!
-কোথায় গেল তাহলে! আম্মা তোর কথা বলতেছিল কয়েকদিন ধরে! তোকে যেন বাড়িতে আসতে বলি!
-এসে পায়নি! আচ্ছা শোন! কিছু মনে করবি না তো?
-না, কি, বল শুনি!
-আসার সময় মিনহাজ ভাইকে পেয়েছিলাম! তোর কথা জিজ্ঞেস করেছিল, আমাকে বলেছিল যেন না বলি!!
-কি বলেছিল??
-তোর অসুস্থতার কথা! পরীক্ষার শেষের দিন তোকে দেখেছিল!
-ওহ আচ্ছা! এসব বাদ দে। আমি ভাবছি এইস এস সি পরীক্ষা দিয়ে শহরে চলে যাবো! মেডিকেল কোচিং করতে! তোর কি প্লেন?
-আমার প্লেন এইস এস সি তে পাস করা, তারপর বিয়ে করে স্যাটল, হাহাহা!
-তুই ও তাহলে বিয়ে করে ফেলবি! মিতুরও বিয়ে হয়ে গেল!
মিতুর সাথে সেই ছোটবেলা থেকে বন্ধুত্ব! সাংসারিক জীবনটাই এমন হয়তো! সংসার সামলানে রীতিমত কঠিন কাজ! দুজনের মাঝে কতটা গ্যাপ! চাইলেই আর দেখা করা যায় না।
আচ্ছা, আজ উঠি রে! সন্ধ্যার আগেই বাড়ি যেতে হবে। আন্টিকে তো পেলাম না। আমার কথা বলিস! ঠিক আছে।
রিধির জ্বর চারদিন পর কমল! চয়ন মামার ফোন। বাসায় গিয়ে বেড়াতে! কিছুদিন মামার বাসায় বেড়াতে পারলেও ভালো লাগবে। পরদিন রিধি তার মাকে নিয়ে চলে যায় চয়ন মামার বাসায়! শহরের ভিতরে ছোট করে দুটি রুম! ভাড়া দশ হাজারের উপরে! নিরিবিলি পরিবেশ! এতো ছোট বাসায় মামা-মামী থাকে কিভাবে? শহরে থাকতে থাকতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে মামা-মামী! বাসায় গিয়ে মামীকে শুধু পেয়েছে! মামা অবশ্য কাজের জন্য বাহিরে থাকে। সপ্তাহে দুদিন সময় পাই বাসায় থাকার জন্য। সেজন্য রুম সব সময় ফাকাঁ থাকে। তবে শহরে কয়েকদিন থাকার পর রিধির আর ভালোও লাগছিল না! মনে হচ্ছিল আবদ্ধ ঘরে বন্ধি! একটু মুক্তভাবে উড়া দরকার। মামাও আসে না! সেই বৃহস্পতিবার এ বাসায় আসে। আরও দুদিন থাকতে হবে। রিধির মা রিধিকে রেখে আগেই বাড়িতে চলে গেছে!
রিধি মামার বাসায় এসেছিল আরেকটা কাজে! শহরের কোচিং ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে! মেডিকেলের জন্য নাকি রেটিনা ভালো! রিধির কলেজের শিফার বড় বোন রেটিনা থেকে কোচিং করে মেডিকেলে পড়াশোনা করছে! পড়াশোনার পরিবেশ ভালো! থাকা খাওয়ার সব ব্যবস্থায় আছে। শহরের অলিগলি তেমন চেনা-জানা নেই রিধির মামা আসলে কোচিং এর দিকে যাবে মামাকে নিয়ে! বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়ই বলতে বলতে মামা এসে হাজির! রিধি তো মামার সামনে যায়না! অপর রুমে চুপ করে বসে রয়েছে। পাশের রুম থেকে তার মামা ডাকছে, রিধি এদিকে আয়! মাথা সম্পূর্ণ ঢেকে রেখেছে।
শুধু চোখ দুটি ঢেকে রেখেছে! মামার সামনে যেতে অনেক লজ্জা পায়! পর্দার পিছন থেকেই বলেছে, মামা কেমন আছে? ভালো আছি! পড়াশোনা কেমন চলছে? জি, মামা ভালো! ভালো করে পড়! তোকে নিয়েই গ্রামে একটা ক্লিনিক খুলবো! ফ্রিতে সেখানে মানুষকে সেবা দেয়া হবে! রিধি মুচকি হাসছে।
মামা, মেডিকেলের জন্য শুনলাম রেটিনা ভালো কোচিং সেন্টার! হুম,ভালো আছে! এসব পরে দেখা যাবে আগে এইস এস সি তে ভালো রেজাল্ট কর! ঠিক আছে মামা! মামা, আমি বলতেছিলাম কাল চলে যেতে! আর কয়েকটা দিন থেকে যা!! আরেকবার এসে থেকে যাবো নে।
চলবে....
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
twitter share link
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার গল্প টা পড়ে অনেক ভালো লাগল। আসলে কিছু কিছু মেয়ে আছে এমন লজ্জা পায়, যেমন রিধি পাচ্ছে। মিনহাজ কি সত্যি রিধিকে অনেক ভালো বাসে। টুপ্মার কাছে জিঙ্গাসা করায় টুম্পা তাই ভাবলো।সত্যি মিনহাজ মনে মনে রিধিকো ভালো বাসে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
জি আপু। হয়তো গল্পের প্লট সেখানেই লুকায়িত আছে
আপনাদের ক্রিয়েটিভিটি দেখে অবাক হয়ে যাই।কত সুন্দর করে গুছিয়ে গল্প লিখেন। রিধি মেয়েটি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় এটা বোঝা যাচ্ছে। তবে গল্পটি যেহেতু চলমান পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
আপনাদের কাছে ভালো লাগলেই আমার গল্প লেখা স্বার্থক! চেষ্টা করি সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলার জন্য 🌼
আসলে ভাই খুব চমৎকার ছিল গল্পটি ধন্যবাদ আপনাকে আমার মন্তব্যের ফিডব্যাক দেয়ার জন্য।
অবশেষে রিধি অসুস্থতা থেকে সুস্থ হলো এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। মিনহাজ কি রিধি কে সত্যি সত্যি ভালোবাসে নাকি এমনিতে টুম্পাকে তার কথা জিজ্ঞেস করেছিল এইসব প্রশ্ন শুধু মাথার ভেতর ঘুরপাক খাচ্ছে। রিধি তাহলে তার মামার বাড়িতে বেড়াতে এসেছে।এভাবে যেহেতু টুম্পাকে রিধির কথা জিজ্ঞেস করেছিল মিনহাজ, তাই টুম্পা অন্য মাইন্ডে নিয়ে গিয়েছে এই বিষয় টাকে। জানিনা পরের পর্বে কি আসবে। তাই পরের পর্ব দেখার জন্য একটু বেশি আগ্রহ হচ্ছে। অপেক্ষায় থাকলাম তাহলে।
জি আপু! পরের পর্ব কিছুটা হলেও জানতে পারবেন! শুরু থেকে এখন পর্যন্ত গল্পটি পড়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে আপু 🌼🦋
এই গল্পটি আমি যত পড়ছি ততই আমার কাছে ভালো লাগছে। আসলে আমার কাছে গল্প পড়তে ভীষণ ভালো লাগে আপনার এই গল্পটির প্রত্যেকটি পর্ব আমি পড়েছিলাম ভীষণ ভালো লেগেছিল আমার কাছে। রিধি অনেকদিন ধরে অসুস্থ ছিল চার দিন পর তার জ্বর কমেছে তাহলে। এমনিতেই শহরে বাসায় থাকলে মনে হয় কেমন জানি বন্দি। তাই রিধি আর থাকতে চায়নি তার মামার বাসায়। মিনহাজ ভাইয়ের এ ব্যাপারটি কিন্তু টুম্পা মাইন্ডে নেওয়ারই কথা। যেভাবে উনি টুম্পাকে এ কথাগুলো জিজ্ঞেস করলেন। অপেক্ষায় থাকলাম পরের পর্ব দেখার জন্য।
জি ভাইয়া! আপনার কাছে গল্পটি ভালো লেগেছে জেনে অনেক ভালো লাগলো! সব থেকে ভালো লাগলো আপনি প্রথম থেকে এখন পর্যন্ত আমার গল্পটি পড়ে যাচ্ছেন 🌼🦋
আমার অবশ্য আপনার গল্পের আগের পর্ব গুলো পড়া হয়ে উঠেনি। তবে আজকের পর্ব পড়ে বুঝলাম যে আপনি খুব সুন্দর একটি রোমান্টিক গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে কি সত্যি সত্যি রিধি কে মিনহাজ ভালবাসে। টুম্পার মনে তো মিনহাজের কথা শুনে এধরনের প্রশ্ন আসতেই পারে। আগামী পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
হাহাহা! সামনের পর্বে কিছুটা হদিস পেতে পারেন!
এরকম গল্পগুলো পড়তে আমার কাছে একটু বেশি ভালো লাগে। আপনার মেঘ বালিকা গল্পটির আজকের পর্ব পড়ে ভীষণ ভালো লেগেছে আমার কাছে। রিধি তার মামার বাসায় এসেছিল শহরের কোচিং ব্যবস্থা সম্পর্কে জানার জন্য। রিধি বাসায় এভাবে অনেক দিন থেকে ছিল তাই তার কাছে বন্দি বন্দি লেগেছিল। সেই গ্রামের মেয়ে তো তাই শহরে মানিয়ে নিতে পারেনি এবং কোথাও বের হতেও পারেনি। পরের পর্বে কি হবে তারই দেখার অপেক্ষায় আছি।
আপনাদের কাছে আমার লেখা গল্প ভালো লাগলেই আমি স্বার্থক! আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু