২য় পর্বঃ মেঘ বালিকা
07-01-23
২৪ পৌষ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালো এবং সুস্থ্য আছেন! যাক, আপনাদের সাথে ইতোমধ্যে একটি গল্প শেয়ার করেছিলাম! আজকে গল্পের দ্বিতীয় পর্বটি লিখলাম! আপনারা জানেন যে আমি স্টরি লিখে থাকি! চেষ্টা করি আপনাদের সাথে ভালো ভালো প্লটের স্টরি ক্রিয়েট করে শেয়ার করা!
১ম পর্বের পর থেকে
রিধির মামার ফোন! রিধির মায়ের কাছে চয়ন মামা ফোন দেয়! রিধির মামা আবার ভালো একজন ছাত্র ছিলেন! পড়াশোনায় যথেষ্ট মেধাবী! সেই সুবাধে ভালো একটা জবও করেন এখন! চয়ন মামা ফোন দিয়ে রিধির মাকে বলে, রিধিকে যেন গুরুদয়াল কলেজে ভর্তি না করায়! কারণ শহরে থেকে রিধি ভালো করে পড়াশোনা করতে পারনে না! এছাড়া হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করলে ঐভাবে আর পড়াটা হবে। আরও তো খরচ আছেই! যেহেতু এইস এস সি তেও রিধি সায়েন্স সাবজেক্ট নিয়ে পড়াশোনা করবে তাই তার পড়ার পরিবেশের পাশাপাশি বাবা মায়ের সহযোগিতারও দরকার আছে! চয়ন মামার। কথা শুনে রিধির মা বুঝতে পারে! আবার রিধিকে নিয়ে চলে যায় প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে! স্যারের কাছে গিয়ে রিধির মা যে কাগজগুলো জমা দিয়েছিল সেগুলো চাই! কিন্তু প্রিন্সিপাল স্যারকে তো আর বলা যাবে না যে, রিধি এখানে ভর্তি হবে না! বললে কখনোই মেইন সার্টিফিকেট আর মার্কশিট দিবে না!
রিধির মা একটু বুদ্ধি কাটিয়ে প্রিন্সিপাল স্যারকে বলে! "স্যার, মেইন কাগজগুলো একটু দেয়া যাবে! ফটোকপি করে রাখা হয়নি! " তখন প্রিন্সিপাল স্যার তার ডেস্কের নিচ থেকে সার্টিফিকেট বের করে দেয় রিধির মায়ের কাছে! রিধির মা রিধিকে নিয়ে দ্রুত সে স্থান ত্যাগ করে! কলেজে অবশ্য ভর্তির জন্য টাকাও দিয়েছিল! কিন্তু টাকা গেলেও আর এখানে পড়াবে না! মেয়েকে চোখের সামনে পড়াবে! কলেজ থেকে বের হয়ে রিধির মা চয়নকে ফোন দেয়! চয়ন অবশ্য রিধির মা থেকে ছোট! রিধির মামা তখন শুনে খুশি হয় এবং পরামর্শ দেয় রিধিকে যেন গ্রামের একমাত্র মহিলা কলেজে ভর্তি করায়!
রিধির ভর্তি ক্যানসেল হয়ে যাওয়ার পরও রিধি কিছু মনে করেনি! কারণ সে বাবা মায়ের বাধ্য মেয়ে! ছোট বেলা থেকেই অভাব অনটনের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছে! বাবা মায়ের স্বপ্নটাও যে তাকে নিয়ে অনেক বড় রিধি সেটা ভালো করেই উপলব্ধি করতে পারে! বাবা মা রিধিকে দূরে রেখেও পড়াতে রাজি নয়! তাই গ্রামের মহিলা কলেজে ভর্তি করানোর প্লেন করে! রিধির বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা পথ হেটেঁ যাওয়া লাগে কলেজে! রিধিকে ভর্তি করানো হয় সেই কলেজে! ভর্তি করানে পরই রিধির ক্লাস রোল এক! রিধি যে যথেষ্ট মেধাবী মেয়ে কলেজের টিচাররা তাকে দেখেই বুঝে গিয়েছিল! রিধিকে কলেজে ভর্তি করানোর দিন শফিক স্যার রিধির বাবাকে ভালোভাবেই আপ্যায়ন করেছিল! রিধি যে কলেজে ভর্তি হয়েছিল ঠিক একই কলেজে ভর্তি হয়েছিল রিধির একমাত্র বান্ধবী মিতু! একই গ্রামের দুজন! একসাথে কলেজে যাওয়া যাবে।
শুরু হয় রিধির নতুন আরেকটি অধ্যায়ের! রিধি জানে জীবনের এই অধ্যায়টা হয়তো তার জন্য কঠিন হবে! সায়েন্স সাবজেক্ট কঠিন! তবে রিধির কাছে মোটামোটি সহজ লাগে! কলেজে নিয়মিত ক্লাস করলে হয়তো কিছু টপিক বুঝা যাবে! নতুন জীবনের প্রথম ক্লাস ছিল! সোনালী রোদ চারপাশে! মিতু সকাল সকাল কলেজের ড্রেস পড়ে রিধিদের বাড়ি চলে এসেছে! কিন্তু রিধির কলেজ ড্রেস এখনো বানানো। রিধি বোরখা পরেই কলেজ যাবে সিদ্ধান্ত নেয়! কলেজের প্রথম ক্লাসটা অন্তত মিস দেয়া যাবে না! মিতুকে নিয়ে রিধি সোজা কলেজের উদ্দেশ্য রওয়ানা দিয়ে দেয়! ঠিক পথিমধ্যে মিতু দেখতে পায় একটি ছেলে দাড়িঁয়ে আছে! রিধির দিকে তাকিয়ে ছিল! রিধির অবশ্য একটা অভ্যাস ছিল! মাথা নিচু করে চলাফেরা করতো! রিধি সবসময় নিজেকে আড়ালে রাখার চেষ্টা করতো! মিতু ছেলেটাকে দূর থেকে দেখে বুঝতে পারে! রিধির দিকে ছেলেটা তাকিয়ে আছে!
মিতু তখন বলে, " ছেলেটা কে রে! তোর দিকে এভাবে তাকিয়ে রইল!"
-দাড়ি আছে ছেলেটার?
-হুমম! চিনিস নাকি!
-মিনহাজ ভাই! আমাদের সাথেই পড়ে! সেই স্কুলের শুরু থেকে আমার পিছু পিছু ঘুরে!
-তুই কিছু বলিস না কেন!
-তেমন গুরুত্ব দেয়নি! তবে শুনেছি, মিনহাজ ভাই অনেক ভালো ছাত্র! ইংরেজি প্রাইভেট পড়ায়!
-ওহহ! তাহলে তুই ও প্রাইভেট পড়বি নাকি, হাহাহা!
-না! আচ্ছা ওসব কথা বাদ দে!
দেখতে দেখতে দুজনে কলেজ চলে আসে! কলেজের হলরুমে আজ রিধিদের বসতে বলেছে! হলরুম খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে! নতুন জীবনের অধ্যায়টা যেন নতুনভাবে শুরু করতে পারে সেটাই করছে স্যারেরা! হলরুমে অনেক ছাত্রী! গ্রামের বেশিরভাগ মেয়েই এই কলেজে ভর্তি হয়েছে! যদিও এই কলেজের ভালো খ্যাতি রয়েছে! রিধি সেই প্রথম ক্লাসের পর থেকে সিদ্ধান্ত নেয় কলেজ যাবে না! সপ্তাহে এক দুইদিন গেলেই চলবে! এতো এতো ছাত্রীদের মাঝে রিধির মাথায় কিছুই ঢুকবে না! লাইব্রেরী থেকে বই কিনে শুরু হয় রিধির পড়াশোনা! ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি কঠিন সাবজেক্ট হওয়ার পরও একা একা পড়তে থাকে! মিতু অবশ্য বলেছিল মিন্টু স্যারের কাছে ফিজিক্স আর কেমিস্ট্রি পড়তে! কিন্তু সে পড়বে না! মা-বাবার টাকা সে খরচ করাতে চাই না! প্রাইভেট না পড়েই দেখবে, কেমন রেজাল্ট করতে পারে!
চলবে......
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
twitter share link
ভালোই লাগলো গল্পটি।আসলে আপনার কাছে যেমন গল্প লিখতে ভালো লাগে ঠিক আমার কাছেও গল্প পড়তে ভালো লাগে।বিশেষত এইরকম গল্পগুলো আমি দেখলেই পড়ার চেষ্টা করি।দেখা যাক পরবর্তী পর্ব কি হয়,অপেক্ষায় রইলাম।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার গল্পটি পড়ে অনেক ভালো লাগল। আপনি ঠিক বলেছেন গল্প পড়তে ও লিখতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে।রিধি পড়াশোনা ভালো তাই যে কলেজে ভর্তি হোক না কেনো অনেক ভালো রেজাল্ট করবে।রিধির মা বুদ্ধি করে সাটিফিকেট গুলো এনেছিল।যাইহোক রিধি যখন ভালো স্টুডেন্ট দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়।
এটা জেনে ভীষণ ভালো লেগেছে নতুন কলেজে রিধির রোল নাম্বার ১। আসলেই আপনার পোস্ট পড়েই বুঝতে পারছি রিধি একজন মেধাবী স্টুডেন্ট। এই গল্পটি কিন্তু আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে কারণ প্রথম পর্ব ও আমি পড়েছিলাম। এটা কিন্তু সত্যিই অনেক ছাত্র-ছাত্রীর মাঝে মাথায় কিছুই ঢুকে না। আমার মনে হয় রিধি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা যদি খুব সুন্দর ভাবে পালন করে তাহলে অবশ্যই সে ভালো রেজাল্ট করবে পরীক্ষায়। যাইহোক পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম ধন্যবাদ।
গল্প লিখতে বা পড়তে আমারও বেশ ভালো লাগে। আপনার তো ভাইয়া গল্প লেখার হাত বেশ ভালো। রিধির কথা ভাবছিলাম। খুব ভালো লাগলো ওর ব্যক্তিত্ব দেখে। আমার মনে হয় রিধি তার কেনা বইগুলো দিয়েই তার পড়া শিখে নিতে পারবে। দেখা যাক আগামী পর্বে কি হয়।
আপনার উৎসাহ পেলে সামনে আরও ভালো কিছু গল্প পাবলিশ করবো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু 🦋🌼