১ম পর্বঃ মেঘ বালিকা

04-01-23

২১ পৌষ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


শুভ সকাল! কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালো আছেন! সকালের শীতল পরিবেশটা উপভোগ করছেন!! তবে কয়েকদিন ধরে বেশ শৈত্যপ্রবাহ হচ্ছে! কুয়াশার সাথে বাতাস! টিকে থাকা কঠিন ব্যপার! দেখা দিচ্ছে নানান ধরনের ঠান্ডাজনিত রোগ। তবে আমি বলবো বাহিরে গেলে অবশ্যই পর্যাপ্ত শীতের জামা পরিধান করে যাবেন! বেশি বেশি গরম পানি বা চা পান করার চেষ্টা করবেন! যায়হোক, আমি কিন্তু আপনাদের আদেশ দিচ্ছি না, বলতে পারেন পরামর্শ! এই পরামর্শ আবার কেউ পছন্দ করে না। আমি আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি! যাক, আপনাদের সাথে নতুন আরেকটি গল্প নিয়ে হাজির হলাম! আশা করি শেষ পর্যন্ত পাশে থেকে গল্পটি পড়বেন!

book-2170910_1280.jpg

copyright free image from pixabay

রিধির আজ মন ভীষণ খারাপ! ঠিক যেন আকাশে জমে থাকা মেঘের মতো! ঘন কালো আকাশ! কিন্তু ঘন কালো আকাশটা ঠিক কতক্ষণ থাকবে এভাবে? ঠিকই বৃষ্টি হয়ে আকাশ থেকে পড়বে! মেঘের মতোই রিধি! ভীষণ মন খারাপ হলে চোখ থেকে টলটল করে জল পড়তে থাকে। একটা সময় চোখের পানিও শুকিয়ে যায়। জল পরে না! রিধির আজ পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে। যেমন আশা করেছিল তেমনটাও হয়নি! মা-বাবার আশাটাও পূরন করতে পারেনি তার কাছে মনে হচ্ছে! নিজের কাছে অপমানবোধ করছে রিধি! অনেক চেষ্টা করেছে এ+ পাওয়ার জন্য। মা-বাবার স্বপ্নটা পূরণ করার জন্য। হয়তো কপালে ছিল না রিধির । এবার রিধি এইস এস সি পরীক্ষা দিয়েছিল! গ্রামের ভালো একজন মেধাবী ছাত্রী রিধি! সেই ছোটবেলা থেকেই ভালো রেজাল্ট করে আসছে! ক্লাস ফাইভ থেকে এস এস সি অবধি জিপিএ-৫ পেয়ে সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। আর কয়টা মেয়ের মতো রিধি জীবন-যাপন করে না। বাবা মায়ের বড় মেয়ে রিধি! স্বপ্নটাও তাকে নিয়ে।

রিধির বাবাও একজন সহজ-সরল মানুষ। মানুষ যেভাবে ঘুরাই সেভাবেই চলে। এখনো সাধারণভাবেই চলাফেরা করে। গ্রামে ছোট একটা ব্যবসা আছে তা দিয়েই সংসার চলে যায়! রিধির ইচ্ছে তার বাবাকে কখনো ব্যবসা করতে দিবে না! সে বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করবে। তার প্রতি বাবা মায়েরও স্বপ্ন অনেক বড়! সেবার এস এস সি তে যখন রিধি জিপিএ-৫ পেয়েছিল তখন তার বাবা পুরো মহল্লায় মিষ্টি খাইয়ে ছিল! তার বাবা মায়ের মুখে হাসি দেখেছিল সেদিন!

এতো ভালো রেজাল্টের পিছনে রিধির অবদান অনেক! বাবার ফ্যামিলি এতটা স্বচ্ছল নই; প্রাইভেট পড়া হতো না তেমন! শুধুমাত্র গণিত আর রসায়ন-ফিজিক্স পড়া হতো! সেটাও আবার গ্রামের স্যারদের কাছে। এহসান স্যার খুব ভালো গণিত বুঝাতো। রিধি স্যারের পরীক্ষায় সবসময় প্রথম হতো! স্যার রিধিকেও খুব আদর করতো। কতো পুরষ্কার পেয়েছে এহসান স্যারের কাছে! এখন স্যারের দেয়া একটা জ্যামিতি বক্স আছে! স্যার মাঝে মাঝে বাড়িতে আসে দেখা করতে! রিধির পড়াশোনার ব্যাপারে খোজঁ-খবর নিতে!

এহসান স্যার রিধির ফ্যামিলি সম্পর্কে ভালো করে জানতো। রিধির বাবাকে এহসান কাকা বলেই ডাকতো! প্রাইভেট পড়ানোর বেতন অনেক সময় দিতে পারেনি! স্যার নিজে থেকেই নেয় নি। রিধির ভালো রেজাল্টের পিছনে এহসান স্যারের অবদান অনেকাংশে ছিল। তখন স্কুলে রিধি টপ স্টুডেন্টদের মধ্যে একজন ছিল। স্কুলের স্যারেরা অবশ্য রিধির নাম জানে না! কিন্তু যখন সারা স্কুল থেকে তিনজন জিপিএ-৫ পেয়েছিল ঠিক তখন রিধিকে সবাই চিনতে পায়! ক্লাসে বসা সেই চুপচাপ মেয়েটা রিধি! খুব কম কথা বলতো! বান্ধবী হাতেগোণা কয়েকটা। সেটাও আবার এলাকার বান্ধবী! বাড়ির পাশেই একসাথে চলাফেরা করতো! মিতু ছিল রিধির বেস্ট একজন বান্ধবী!

একসাথেই স্কুলে যাওয়া-আসা করতো! রিধিকে খুঁজতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক পর্যন্ত বাড়ি এসেছিল!! রিধিকে শুভেচ্ছা জানাতে! স্কুলের প্রধান শিক্ষক নূর স্যার! স্যার অনেক খুশি হয়েছিল! রিধি স্কুলে চুপচাপ থাকতো! এতো মেলামেশা করা হয়নি কারো সাথে। এস এস সি তে সেবার রিধি টপ রেজাল্ট করেছিল! প্রধান শিক্ষক যখন বাড়িতে আসে তখন রিধির বাবা মা অনেক খুশি হয়! তাদের মেয়ে কিছু একটা তো করতে পেরেছে!

রিধি খুব কেঁদেছিল সেদিন! আনন্দের কান্না! রিধির মা কেঁদেছিল! তাদের মেয়ে আশা টুকু বাচিঁয়ে রেখেছে! রেজাল্ট পাওয়ার পরই এহসান স্যার মিষ্টি নিয়ে সরাসরি বাড়িতে চলে এসেছিল! এহসান স্যার জানতো রিধি পারবে! কেউ জিপিএ-৫ না পেলেও রিধি ঠিকই জিপিএ-৫ পাবে! এহসান স্যারের ফুল কনফিডেন্ট ছিল! কারণ এহসান স্যারের সব পরীক্ষায় রিধি ফার্স্ট ছাড়া অন্য কিছু হয়নি কখনো! এসএসসি- তে জিপিএ-৫ পাওয়ার পর রিধির মা বাবার স্বপ্নটাও বেড়ে যায়! মেয়েকে মেডিকেলে পড়াশোনা করাবে! রিধিকে ভর্তি করানো হবে শহরের নাম করা গুরুদয়াল কলেজে! তখন অনলাইনে আবেদন করা যেত না! কলেজে যোগাযোগ করে ভর্তি হতে হতো! রিধিকে নিয়ে তার মা সোজা চলে যায় গুরুদয়াল কলেজে! কলেজে প্রধান শিক্ষকের কাছে কথা বলে সবকিছু কনফার্ম করানো হয়! ঠিক তখনই ফোন আসে!

চলবে....



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

রিধি খুবই ভালো এবং মেধাবী একজন স্টুডেন্ট এটা আপনার পোস্ট ভালো করে পড়েই বুঝতে পারলাম। এটা শুনে ভীষণ ভালো লাগলো যে এহসান স্যার এর প্রত্যেক পরীক্ষায় এবং অন্যান্য পরীক্ষায়ও রিধি খুবই ভালো রেজাল্ট করেছে। ও প্রত্যেক পরীক্ষায় ফার্স্ট হয়েছে জেনে ভীষণ খুশি হলাম। রিধির বাবা কলেজের প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে কথা বলে সব কিছু কনফার্ম করে দেয় এরপরে কিসের কল আসলো??? পরবর্তী পর্বে আশা করব খুবই ক্লিয়ার ভাবে পরবর্তী অংশ গুলো শেয়ার করবেন। যাই হোক আপনাকে কিন্তু ধন্যবাদ।

 2 years ago 

পরের পর্বে জানতে পারবেন আপু কিসের কল আসলো! আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু 🌼

 2 years ago 

রিধির মত মেয়ে বাংলার প্রতিটা ঘরে হোক কারণ প্রতিটা মা-বাবা চায় তার মেয়ে তাদের মুখ উজ্জ্বল করুক।এহসান স্যার বেশি কনফিডেন্স ছিল কারণ সে জানে রিধি পারবে। যেহেতু রিধি প্রতিটা পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে সেহেতু এহসান স্যারের কনফিডেন্স হওয়া স্বাভাবিক।
পুরোটা অনেক ভালো লিখেছেন ভাইয়া, আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

আপনি গল্পটি পড়েছেন জেনে ভালো লাগলো! আপনাদের উৎসাহ পেলে সামনে আরও গল্প নিয়ে হাজির হবো!

 2 years ago 

প্রথম পড়বে তো দেখছি রিধির পড়ালেখার বিষয় বলেছেন আমার মনে হচ্ছে দ্বিতীয় পর্বে রিধির ভালোবাসার প্রত্যেকটা কথা তুলে ধরবেন। কারণ এক কথায় ওই ছেলেটিকে সে নাম্বার দিয়ে দিয়েছে তাই বললাম। ওর পড়ালেখার অবস্থান তুমি ভালো এটা জেনে ভীষণ ভালো লেগেছে। রিধির মত এরকম মেয়ে প্রত্যেকটি ঘরে ঘরে দরকার। যেন তারা তাদের বাবা মায়ের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে। এত সুন্দর একটি গল্প পড়ে খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

জি ভাইয়া! গল্পের কনসেপ্ট কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছেন! সামনের পর্বে বুঝতে পারবেন! আপনাকে অনেক ধন্যবাদ 🌼🦋

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 58664.80
ETH 2569.75
USDT 1.00
SBD 2.42