শেষ পর্ব || পাওয়ার সেক্টরে চাকরির পরীক্ষা দেয়ার অভিজ্ঞতা
10-04-2024
২৭ চৈত্র , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো সকলের সুস্থ্যতা কামনা করছি। কাল পবিত্র ঈদুল ফিতর। তাই সবাইকে অগ্রীম মোবারকবাদ জানাচ্ছি। সবাইকে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। হাসি আনন্দে ভরে উঠুক আপমাদের জীবন এমনটাই প্রত্যাশা করছি। যাইহোক, আজকে চলে এলাম আপনাদের সাথে পাওয়ার সেক্টরের পরীক্ষা দেয়ার দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব শেয়ার করার জন্য। আশা করছি শেষ পর্যন্ত পাশে থাকবেন।
১ম পর্বের পর
তিতুমীর কলেজের এখানে গিয়ে দেখি অনেকেই বসে আছে। এতো সকাল সকাল অনেকেই চলে এসেছিল পরীক্ষা দেয়ার জন্য। সবাই দেখলাম ফুট ওভার ব্রিজের এখানটায় বসে পড়ছে। কেউ কেউ আবার কলেজে ভিতরে বসে পড়ছে। যেহেতু পরীক্ষা সকাল দশটায় হবে তো সে হিসেবে প্রায় ২ ঘন্টার উপরে সময় ছিল হাতে। এতোক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকাটাও কঠিন ব্যাপার ছিল। আমরা গিয়ে ফুট ওভার ব্রিজের নামার সাইডে গিয়ে বসে পড়লাম। সেখানে বসে যা দেখলাম আসলে! সকাল সকাল দেখলাম তিনটা ছেলে বয়স অনুমানিক ৭-৮ হবে হয়তো! কাগজ দিয়ে নেশা করছে! তিনটা পিচ্চিই নেশা করে মাতালভাবে কথা বলছে। আমরা তাদেরকে বললাম সামনে গিয়ে বসতে। বলতেই অবশ্য চলে গেল। তবে ঢাকা শহরে এমন চিত্র আর নতুন না! বিশেষ করে পথশিশু বা টুকাই যারা, তারা এমন নেশায় আসক্ত বেশি। ফুটওভার ব্রিজ, ওভার ব্রিজ, রেলওয়ে স্টেশনে তাদেরকে বেশি দেখা যায়। আর সেখানেই তারা নেশার আড্ডা জমায়!
মজার ব্যাপার হলো প্রশাসন ও সাধারণ জনগণ কিছু বলছে না তাদেরকে। তারা ইচ্ছেমতো চলাফেরা করছে। তো যায়হোক, আমার ফোনে চার্জও ছিল না। পাওয়ার সেক্টরের একটা পিডিএফ প্রশ্নোত্তর ছিল। সেটা কিছুক্ষণ পড়লাম। পড়ার পরে ফোনের চার্জ প্রায় ১% এ চলে এসেছিল। তো আর পড়েনি। তারপর আমরা তিন ফ্রেন্ড মিলে কতোক্ষণ কথা বলতে থাকলাম। যেহেতু সেহেরীর পর ঘুমায়নি তাই খুব পাচ্ছিল তিনজনরই। তবে আমি রাতে আর্লি ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম এজন্য তেমন ঘুমের চাপ অনুভূত হয়নি। নুরুজ্জামান বন্ধুকে বললাম কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নেয়ার জন্য। আমি কিছুক্ষণ বসে থাকলাম। তবে একটা জিনিস খেয়াল করে দেখবেন! আমরা যখন সময়ের দিকে বারবার তাকাই তখন সময় মনে হয় যেন যেতেই চাইছে না। আর অপেক্ষা করাটাও অনেক কঠিন একটি বিষয়। কথায় আছে অপেক্ষার থেকে মৃত্যুই শ্রেয়!
তো সময় যত ঘনিয়ে আসছিল মানুষজনের ভীড় ততই বাড়ছিল। অনেকেই রাস্তাঘাটে বসে পরছিল জায়গা না পেয়ে। আবার অনেকেই দাঁড়িয়েছিল রাস্তার পাশে। পরীক্ষা দিতে গিয়ে অনেক বড় ভাইদের সাথেও দেখা হলো। অনেকেই দীর্ঘ পাচঁ বছর ধরে পড়াশোনা করছে চাকরির। আবার অনেকেই দশবছর ধরে পড়াশোনা করছে। এই পিজিসিবি চাকরির পরীক্ষাটা অনেকের আবার শেষ চাকরির পরীক্ষা। কারণ অনেক বড় ভাইয়ের বয়সও শেষ। তো দেখতে দেখতে নয়টা বেজে গিয়েছিল। নয়টা বাজতেই কলেজের মেইন গেইট খুলে দিয়েছিল। সবাই ভিতরে প্রবেশ করছিল। তবে যারা ব্যাগ ও ফোন নিয়ে আসছিল তাদেরকে ভিতরে প্রবেশ করতে নিষেধ করছি । কারণ ভিতরে এগুলা নিয়ে যাওয়া যাবে না। আমি তো টেনশনে পরে গিয়েছিলাম। তারপর এক বন্ধুকে পেয়ে গেলাম রায়হান। যে কিনা ব্যাগ নিয়ে আসছিল। তার ব্যাগেই আমার ফোনটি রেখে গিয়েছিলাম। তবে আমার ফোনটি রেখে যাওয়ার পরে টেনশন হচ্ছিল। কারণ রায়হান ব্যাগটি রেখেছিল বাহিরে!
তো যায়হোক, আমার সিট পরেছিল ড.এম ওয়াজেদ মিয়া হলের গ্রাউন্ড ফ্লোরে! সেখানে গিয়ে একদম কোণায় রুমে আমার সিট খুজেঁ পেলাম। সেখানে গিয়ে বসে পড়লাম। তো যেহেতু এমসিকিউ পরীক্ষা হবে প্রশ্নের মানবণ্টন ছিল একটা সঠিক উত্তর হলে ১.২৫ আবার একটা ভুলের জন্য. ২৫। তার মানে বুঝে শুনে এমসিকিউ দাগাতে হবে। আমি টার্গেট নিয়েই গিয়েছিলাম যেগুলো ১০০% কনফার্ম আমি পারি সেগুলোই দাগাবো, বাকিগুলা টাচ করবো না। তবে কনফিউজড কিছু দাগাবো।। তো ক্লাসে তিনজন টিচার ছিলেন। তারা এসে পরীক্ষার ইন্সট্রাকশন দেয়া শুরু করলো। যারা ফোন নিয়ে এসেছিল তাদেরকে ফোন জমা দিতে বলেছিল। তারপর আমাদেরকে ওএমআর শিট দেয়া হলো। যেখানে বৃত্ত ভরাট করতে হবে। তো ১০ টা বাজতেই দাগানো শুরু করে দিলাম। ম্যাথ পার্টটা আমার কাছে সবচেয়ে ইজি লাগছিল। তবে বাংলা ইংরেজি থেকে তেমন পারি নি। তো যায়হোক, পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে গেলাম। তারপর রায়হান যেখানে দাঁড়াতে বলছিল সেখানে গিয়ে দাড়াঁলাম। তারপর রায়হানের কাছ থেকে ফোনটি নিয়ে বের হয়ে পরলাম। বের হয়ে নুরুজ্জামান বন্ধুকে ফোন দিলাম। তারপর বন্ধুকে সাথে নিয়ে চলে এলাম সোজা গাজীপুরে।
Device | Oppo A12 |
---|---|
Photographer | @haideremtiaz |
Location | Govt.Titumir College, Mohakhali, Dhaka |
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
twitter share
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনি চাকরির পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো।তাছাড়া এভাবে ফোন রাখাটা ঝুঁকি হয়ে যায়,তাছাড়া বাচ্চারা এখন খুবই খারাপভাবে আসক্ত হয়ে পড়ছে।আপনি বাংলা ও ইংরেজি কম পেরে ম্যাথ পার্টটা ভালো পেরেছেন এটা বেশ মজার ছিল।আমার তো ম্যাথ পার্টটা অনেক কঠিন লাগে,শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।