শেষ পর্বঃ জবার স্বপ্নপূরণ
04-11-2022
২০ কার্তিক ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
শুভ সকাল সবাইকে 🌼। কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয় অনেক ভালো আছেন 🌼। আমি ভালো আছি। যায়হোক, আপনাদের সাথে একটি গল্পের ৩য় পার্ট শেয়ার করেছিলাম। যেহেতু কয়েকটি পার্টে গল্পটি সাজিয়েছিলাম তাই আজকে আপনাদের সাথে গল্পের শেষ পার্টটি শেয়ার করবো। বাকি পর্বগুলো না পড়ে থাকলে লিংকে ঢুকে পড়ে আসতে পারেন। গল্পের প্লট কিছুটা হলেও বুঝতে পারবেন!
৩য় পর্বের পর
তারপর রায়হান জানতে পারে, জবার জন্য ছেলে দেখা হচ্ছে! রায়হান তা শুনে রীতিমত অবাক হয়ে যায়। কারণ জবার বাবার ইচ্ছে ছিল তার একমাত্র মেয়ে আরও কিছুটা পথ সামনে যাক। কিন্তু হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত জবাকে ভেঙে দেয়। জবার স্বপ্নগুলো তাহলে কি পূরণ হবে না! ইচ্ছে যে ছিল ডুয়েটে সে পড়াশোনা করবে। গাজীপুরে এসে কোচিং সেন্টারে এসে ভর্তি হবে। জবার বাবা জবাকে না বলেই ছেলে দেখা শুরু করে দিয়েছে। জবা ভীষণ মন খারাপ নিয়ে এ কয়দিন একা একা সময় কাটিয়েছে। এই একা সময়টাতে সে কারো সাথেই কথা বলেনি। রায়হান বুঝতে পারে জবার অবস্থা। জবা আর বেচেঁ থাকার ইচ্ছে নেই! কারণ কেউ তার মনের কথাগুলো শুনে না! তার স্বপ্নগুলো পূরণ করার জন্যও কেউ এগিয়ে আসে না। সবাই চায় জবার বিয়ে হোক! পড়াশোনা তো শেষ এখন আর বাড়িতে থেকে কি করবে? জবা খুবই আপসেট হয়ে যায়।
রায়হানের কাছে জবা সবকিছু খুলে বলে। কিন্তু রায়হান জবাকে বলে, 'কপালে যা লিখা আছে তাই হবে। ' শুধু শুধু টেনশন করে লাভ নেই। এতো তোমারই ক্ষতি হবে! রায়হানের কথা শুনে জবা কাদঁতে থাকে। এমন পরিস্থির শিকার হলে স্যার! আপনিও বুঝতেন! জবা তখন বলে, তার মা তার কথা শুনতে চায় না! তার বাবা তাকে জোড় করেই ছেলেকে দেখাচ্ছে। ছেলে নাকি বিদেশ থাকে। ভালো টাকা পয়সা আয় রোজগার করে দেশে ফিরেছে! ছেলেটাও নাকি ভালো। এজন্য জবার বাবা মোটামোটি রাজি জবাকে বিয়ে দিতে। কিন্তু জবা মোটেও প্রস্তুত না বিয়ের জন্য। জবা যার সাথে সারাদিন চলাফেরা করতো, সেই শিউলী মেয়েটাও জবার সাথে কোনো একটা কারণে অভিমান করে কথা বলে না। আবদ্ধ ঘরে জবা একাকীত্ব ফিল করতে থাকে।
জবার মাথায় এখন শুধু আত্নহত্যার চিন্তা আসে! নিজের স্বপ্ন যেখানে সে পূরণ করতে পারবে না তাহলে বেচেঁ থেকেই বা কি হবে! রায়হান জবাকে বুঝানোর চেষ্টা করা। আল্লাহ তায়ালা আমাদের আমানত হিসেবে এই দুনিয়াতে পাঠিয়েছে। এখন আমরা যদি আমানতের খেয়ানত করি তাহলে পরকালে এটার শাস্তি অবশ্যই পাবো। ভেঙে গেলে চলবে না। রায়হান তখন জবার কাছে তার বাবার ফোন নাম্বার চাই। তার বাবাকে রায়হান বুঝিয়ে বলবে। যেহেতু তার বাবার কাছেও পরিচয় দিয়েছিল যে সে একজন স্যারের কাছে পড়াশোনা শেয়ার করে। রায়হান স্যার হলো সেই স্যার। কিন্তু জবার বাবা জানেনা যে, রায়হান আর জবা একই শ্রেণীতে পড়াশোনা করে! জবা প্রথম প্রথম তার বাবার নাম্বার দিতে চায়নি। কি না কি বলে বসে রায়হানকে! পরে অবশ্য রায়হানকে জবা তার বাবার ফোন নাম্বার দেয়! রায়হান আবার খুব ভীতু টাইপের ছেলে। অপরিচিত লোকের সাথে তেমন ঘুছিয়ে বলতে পারে না।
রায়হান জবার বাবাকে ফোন দেয়! ফোন রিসিভ করতেই জবার বাবাকে সালাম দেয় রায়হান! রায়হানকে জবার বাবা চিনে না। আর চিনবেই বা কেমন করে কখনো তো কথায় হয়নি! রায়হান তখন তার পরিচয়টা দেয়! সে জবার টিচার! রায়হান স্যার! আংকেল হিসেবে সম্বোধন করে জবার বাবাকে। রায়হানের পরিচয় পেয়েই বুঝতে পারে জবার টিচার! রায়হান তখন জবা সম্পর্কে কিছু তথ্য জানতে চায়! রায়হানের বাবাও সবকিছু বলে, কিন্তু জবার বিয়ের কথাটা আসেনি। জবার পড়াশোনা তো শেষ, আর জবা বলেছিল ডুয়েট প্রিপারেশন নেয়ার। এখন কি অবস্থা জবার? জবার বাবা তখন বলে, 'একমাত্র মেয়েকে আর বেশিদূরে পাঠাতে চায়না! অনেক পড়ালেখা তো হলো । ডিপ্লোমাও কম্প্লিট হয়েছে। ভালো একটা সম্বন্ধ পেয়েছি! তাই বিয়ের কথা চলছে। রায়হান তখন জবার বাবাকে বুঝানোর চেষ্টা করে। জবার এখন স্নপ্ন পূরণের বয়স। সামনে অনেকটা পথ এখনও বাকি। রায়হান বলে, ' আপনি জানেন, জবা যে আত্নহত্যা করতে চেয়েছিল! ' এটা শুনে জবার বাবা রীতিমত অবাক হয়ে যায়।
রায়হান তখন বলে, জবার ইচ্ছে সে কোচিং করে ডুয়েট প্রিপারেশন নেয়ার। তারও তো একটা ইচ্ছে আছে। হঠাৎ তার উপর বিয়ের বোঝা চাপিয়ে দেয়ায় সে এমন একটি সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা করেছিল। জবার বাবাকে রায়হান বলে, 'এখন সিদ্ধান্ত আপনাকেই নিতে হবে! ' জবার বাবা আর কোনো কথা বলে না! রায়হানের ফোন কেটে দেয়। বাজার থেকে সোজা বাড়িতে চলে যায়! গিয়ে জবার খোজঁ করে। জবা পাশের রুমে বসে আছে। জবার কাছে গিয়েই জবার বাবা কেঁদে দেয়! তার এক মাত্র মেয়েকে হারাতে চায় না! জবার ইচ্ছে পূরণ আগে তারপর বিয়ে। জবার বাবা সবকিছু ক্যানসেল করে দেয়। মেয়ের খুশিতেই বাবা খুশি। জবা ভীষণ খুশি! তার বাবা বুঝতে পেরেছে! জবা এখন ডুয়েট প্রিপারেশন নিচ্ছে! স্বপ্ন পূরণের জন্যই যে এতো কিছু! স্বপ্নকে সামনে রেখে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে জবা।
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Link
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সত্যি বলতে জবার মতো অনেক অনেক ছাত্রছাত্রী রয়েছে নিজেদের স্বপ্ন পূরণে অটুট। আর এদিক থেকে আমাদের দেশে বেশিরভাগ মেয়ে পড়ালেখা করার আগেই তাদের বিয়ে হয়ে যায়। যাই হোক যাব আত্মহত্যার হুমকি দেখি হলেও স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছে। না হয় হয়তো তাকে ধরে বিয়ে দিয়ে দিত। ধন্যবাদ চমৎকার একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
জি ভাইয়া আপনি একদম ঠিক ধরেছেন। ধন্যবাদ আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য!
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
গল্পের শেষ টা দারুণ ছিল ভালো লেগেছে। আমাদের সমাজে অধিকাংশ পরিবার বিয়ের সময় মেয়ের সম্মতি নেয় না। অনেকে তো বলেই ফেলে যে মেয়েদের অতো লেখাপড়া করে কী হবে। তবে রায়হান যেভাবে জবার বাবাকে বুঝিয়েছে সেটা বেশ কাজে দিয়েছে। বেশ দারুণ লিখছেন ভাই। যদিও আমি প্রথম পর্বগুলো পড়িনি।।
জি আগের পর্বগুলো পড়লে গল্পের প্লটটা বুঝতে পারবেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই 🌼