২য় পর্বঃ শেষটা সুন্দর
26-11-2022
১২ অগ্রহায়ণ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয় অনেক ভালো আছেন! আমি ভালো থাকার চেষ্টা করছি। তবে যায়হোক, আপনাদের সাথে ইতোমধ্যে একটি গল্প শেয়ার করেছি। এখনও আরও কয়েকটা পর্ব বাকি। আজকে নতুন একটি গল্প নিয়ে হাজির হলাম! আশা করি এই গল্পটিও আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
১ম পর্বের পর
পরদিন সকালে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ে আবির। ঠিক যে জায়গায় দেখা হয়েছিল সেখানে আসতে বলেছিল জারা! জারার বাসা থেকে একটু দূরে বেলতলী! জারার আজ পরীক্ষার রেজাল্ট দিবে। কিছুদিন আগে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হলো। ভার্সিটি লাইফ শেষের দিকে। আর কদিন পরেই গ্রাডুয়েশন কমপ্লিট হবে জারার। জারা আজ হলুদ রঙের একটি জামা পরেছে। কপালে ছোট করে একটা তিল! আবির গিয়ে দেখে জারা দাঁড়িয়ে আছে। জারাকে দেখে মনে হলো এতো টেনশন কেন?
-আজ রেজাল্ট দিবে! তাই একটু টেনশন ফিল হচ্ছে!
-এখন টেনশন করে লাভ কি? যা হবার তা তো অলরেডি হয়েই গেছে, এখন শুধু পাবলিশের অপেক্ষা!
-তারপরও কেন জানি টেনশন হচ্ছে! পরীক্ষা সব ভালোই দিয়েছিলাম।
-টেনশন করতে হবে না! পাস করলে আমাকে মিষ্টি খাওয়াবেন!
-ঠিক আছে, খাওয়াবো!
জারার ভার্সিটির কাছে চলে আসে আবির! আজও জারা পাঁচশ টাকার নোট দিয়েছে। কিন্তু আবিরের কাছে আজকেও ভাঙতি নেই! জারা টাকা দিয়েই সোজা ভার্সিটির ভিতরে চলে যায়! জারা এগারোটার দিকে বের হতে পারে! এইটুকু সময় বাইক শেয়ার করলেও মন্দ হয়না। আবির পাঠাও এপসে চেক করে কারো বাইক শেয়ার লাগবে না। পেয়ে যায় এক ভদ্রলোককে। ভদ্রলোকের লোকেশন আবিরকে সেন্ড করে পাঠিয়ে দেয়। আবির তখন সেখানে চলে যায়! ভদ্রলোক চোখে মুখে চিন্তার চাপ! আবির যেতেই বলে সোজা হাসপিটালে চলেন! আবির ভদ্রলোককে বাইকে বসিয়ে সোজা হসপিটালের দিকে রওয়ানা দিয়ে দেয়! আবির বাইক চালাচ্ছে। কোনো কথা বলছে না। বাইকের সামনের গ্লাসে তাকিয়ে আবির দেখতে পায় ভদ্রলোক কাদঁছে!
-আপনি কাদঁছেন কেন?
-ভাই,আমার মা খুব অসুস্থ! আমার মা ছাড়া কেউ নেই এ দুনিয়াতে।
-আপনার মায়ের কি হয়েছে?
-কদিন ধরেই জ্বর! তেমন গুরুত্ব দেয়া হয়নি। শুধু প্যারাসিটাল খেয়েছে। মাকে হাসপাতালে যেতে বললেও যায়নি। গতকাল জোর করে মাকে হসপিটালে ভর্তি করিয়েছিলাম! ডাক্তার কিছু রিপোর্ট টেস্ট করার কথা বলেছিল! টেস্ট করে দেখি মায়ের ডেঙ্গু হয়েছে!
-তাহলে তো খারাপ অবস্থা! এখন কেমন আছেন আপনার মা?
-ডাক্তার বলেছে সময় লাগবে। শরীরে এন্টবডি কম এজন্য সারতে সময় লাগবে। আমি ভাই একটা কর্পোরেট জব করি! ঠিক মত সময়ও দিতে পারিনা!
দেখতে দেখতে হসপিটালের কাছে চলে আসে আবির! ভদ্রলোক তখন আবিরকে ভাড়া দিতে চায়। কিন্তু আবির ভদ্রলোকের কাছ থেকে ভাড়া নেয়নি! চলে যেতে বলে। ভদ্রলোক যে অনেকটা খুশি হয়েছে আবির বুঝতে পারে। আবির একটি টং এর দোকানের সামনে গিয়ে বাইক নিয়ে দাড়াঁয়। সকালে কিছু খেয়েও বের হয়নি আবির! টং এর দোকানের মামাকে বলে এক কাপ দুধ চা দেয়ার জন্য। দোকানে ব্রেড রুটি টাঙানো ছিল। আবির সেখান থেকে একটি রুটি নিয়ে চা দিয়ে ভিজিয়ে ভিজিয়ে খেতে থাকে। খাওয়া শেষ করে যেতে হবে জারার ভার্সিটিতে! বেচারি না হয় খুজঁবে। ঘড়িতে তখন সাড়ে দশটা বেজে যায়। আবির বাইক নিয়ে সোজা চলে যায় জারার ভার্সিটির সামনে! আবির সেখানে গিয়ে দাড়িঁয়ে থাকে। কিন্তু এগারোটা বেজে গেলেও জারা এখনও বের হয়নি। আবির সেখানে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকে জারার জন্য।
দুপুর বারোটার দিকে জারা বের হয়!
-আপনি দাঁড়িয়েছেন এখনও!
-মিষ্টি খাওয়াবেন তাই! হাহাহা, রেজাল্ট কেমন হয়েছে?
-খুব ভালো হয়েছে! আপনি যেমনটা বলেছিলেন ঠিক তেমনটাই!
-বলছিলাম না! শুধু শুধু টেনশন করেন না, রেজাল্ট ভালো আসবে!
-আজকে আমি ভীষন খুশি! আজকে আপনার সাথে ঘুরবো। কোনো সমস্যা নেই তো আপনার?
-না, নেই! তবে টাকা কিন্তু বাড়িয়ে দিতে হবে, হাহাহা! কোথায় যাবেন বলেন?
-আমার প্রিয় একটি জায়গা আছে! যাবেন সেখানে?
-চলেন, দেখি আপনার প্রিয় জায়গাটা কেমন!
আবির জারাকে নিয়ে চলে যায় প্রিয় সে জায়গায়। কাশফুলের শহর। জারার কাছে জায়গাটি কাশফুলের শহর নামেই পরিচিত। জারার মন খারাপ হলে আবার খুশি থাকলে এখানে এসে বসে থাকে। বাসা থেকেও কাছে। মাঝে মাঝে বিকালে এখানে এসে জারা বসে থাকে জারা!
-ওয়েদারটা সুন্দর না? (জারা)
-হুমম, সুন্দর! তবে আজ আরেকটু বেশিই সুন্দর ওয়েদারটা!
-কেন?
-কারন বিশেষ কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে এমন ওয়েদারে পাশাপাশি হাটাঁ যায় তাহলে ওয়েদার তো সুন্দর হবেই!
-বিশেষ ব্যক্তিটা কে, শুনি?
-যদি বলি আপনি!
জারা এগিয়ে আরেকটু সামনে চলে যায়। আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে!
-আগলে রাখতে পারবেন আমাকে?
-যদি বলি পারবো!
-আমার হাতটি ধরবেন!
-আবির কাপাঁ কাপাঁ হাতে জারার হাতে ধরে। এই প্রথম কারো হাতের স্পর্শ অনুভব করছে!
-আমার হাতটি আজীবনের জন্য ধরে রাখবেন! আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি!
-আমি আপনাকেও অনেক ভালোবাসি! আপনি না বলে তুমি করে বলা যায় না?
-এতো তাড়াতাড়ি তুমিতে চলে যাবেন?
-আপনি আপনি বললে মনে হয়, তুমি অনেক দূরের কেউ! আমি তুমি করেই বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবো!
-হাহা! আচ্ছা ঠিক আছে।
সেদিন থেকেই শুরু হয় আবির আর জারার ভালোবাসার সম্পর্ক! প্রতিদিন তারা ফোনে কথা বলে। প্রিয় জায়গায় এসে বসে থাকে। সময়গুলো যেন খুব ভালো কাটতে থাকে আবির ও জারার। এদিকে জারার গ্রাডুয়েশন কম্প্লিট হয়ে যায়। তারপরই যেন তৈরি হয় আবির আর জারার মধ্যে দূরত্ব!
চলবে.....
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার এই গল্পটির প্রথম পর্ব আমি পড়েছিলাম আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছিল। দ্বিতীয় পর্বটি পড়ে ও খুবই ভালো লাগলো। এখন তো জারা এবং আবিরের ভালোবাসাটা হয়ে গেল। মনে হচ্ছে তারা একে অপরকে ভীষণ ভালোবেসে ফেলেছে। জারা এবং আবিরের এই ভালোবাসা যেন সবসময় এভাবে থাকে সেই কামনা করি। এই গল্পটির একেবারে শেষের দিকে পড়ে মনে হচ্ছে পরবর্তী পর্বে আপনি তাদের মধ্যে দূরত্বের কথা বলবেন। কাদের মধ্যে কি দুরুত্ব সৃষ্টি হয়ে যাবে আমি শুধু তা ভাবছি। যাই হোক পরবর্তী পর্ব দেখার অপেক্ষায় থাকবো। খুবই ভালো লিখেছেন।
অবশেষে যারা এবং আবিরের মধ্যে ভাব হয়েই গেল। হায় হায় ভালবাসা হতে না হতেই দূরত্ব তৈরি হয়ে গেল 😐। নিশ্চয়ই জারা কে বাসা থেকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিল। যাইহোক সেটা পরবর্তী পর্বতেই জানতে পারবো। আপনার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।